ফিল মিড
চার্লস ফিল মিড (ইংরেজি: Phil Mead; জন্ম: ৯ মার্চ, ১৮৮৭ - মৃত্যু: ২৬ মার্চ, ১৯৫৮) সারের ব্যাটারসী এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯০৫ থেকে ১৯৩৬ মেয়াদকালে ইংল্যান্ড দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। দলে তিনি মূলতঃ বামহাতে ব্যাটিং করে স্বীয় সক্ষমতা দেখিয়েছেন। পাশাপাশি স্লো লেফট আর্ম অর্থোডক্স বোলিং করতেন। ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে হ্যাম্পশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন ফিল মিড।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | চার্লস ফিলিপ মিড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | ব্যাটারসী, লন্ডন, ইংল্যান্ড | ৯ মার্চ ১৮৮৭|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ২৬ মার্চ ১৯৫৮ বসকম্ব, বোর্নমাউথ, ইংল্যান্ড | (বয়স ৭১)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | বামহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | ব্যাটসম্যান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১৭৪) | ১৫ ডিসেম্বর ১৯১১ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ৩০ নভেম্বর ১৯২৮ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯০৫-১৯৩৬ | হ্যাম্পশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯১০-১৯২৯ | মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৩৮-১৯৩৯ | সাফোক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৮ মে ২০১৬ |
শৈশবকাল
সম্পাদনাপরিবারের সাত সন্তানের মধ্যে তার অবস্থান ছিল দ্বিতীয়।[১] শৈশবে সাউথ লন্ডন স্কুলের পক্ষে খেলতেন। পরবর্তীতে শিলিংস্টোন স্ট্রিট স্কুলে অধ্যয়ন করেন। বিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থাতেই বিখ্যাত ইংরেজ ক্রিকেটার সি বি ফ্রাই ওভালে ফিল মিডের খেলা দেখে তার ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা চিহ্নিত করেন ও ক্রিকেট খেলাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করার জন্য উৎসাহিত করেন। ১৯০২ সালে সারে দলের গ্রাউন্ড স্টাফ হিসেবে যোগ দেন। সারে দলের অনুশীলনীতে প্রথমে যোগ দেন। কিন্তু সারে ক্লাবের শক্তিশালী ব্যাটিং অবস্থানের কারণে তার অন্তর্ভুক্তিতে ব্যাঘাত ঘটে ও হ্যাম্পশায়ারের পক্ষে চুক্তিবদ্ধ হতে হয়েছিল। এছাড়াও ফ্রাইয়ের হ্যাম্পশায়ারের সাথে সম্পর্ক মূখ্য ভূমিকা পালন করে।
কাউন্টি ক্রিকেট
সম্পাদনা১৭ বছর বয়সেই প্লেয়ার্স অব দ্য সাউথের সদস্যরূপে জেন্টলম্যানের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেকের কথা ছিল। কিন্তু বিখ্যাত ইংরেজ ক্রিকেটার ও অধিনায়ক ডব্লিউ. জি. গ্রেস কর্তৃক বয়সের বিষয়ে আপত্তির কারণে তা হয়নি।
১৯১২ সালে সাউদাম্পটনে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হ্যাম্পশায়ারের ঐতিহাসিক বিজয়ে নেতৃত্ব দেন। খেলায় তিনি উভয় ইনিংসে অপরাজিত ১৬০* ও ৩৩* তুলেছিলেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধকালীন শারীরিক অক্ষমতাবশতঃ সক্রিয় ছিলেন না। ঐ সময় কাউন্টি ক্রিকেট বাঁধাগ্রস্ত হয়।
৪৮,৮৯২ রান তুলে ফিল মিড হ্যাম্পশায়ার ক্রিকেট ক্লাবের শীর্ষস্থানীয় রান সংগ্রাহক হিসেবে রয়েছেন। ১৯০৫ থেকে ১৯৩৬ সময়কালে হ্যাম্পশায়ারের পক্ষে ৭০০ খেলায় অংশ নিয়েছেন তিনি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
সম্পাদনাঘরোয়া ক্রিকেটে মনোজ্ঞ ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের কারণে ১৯১১-১২ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে যাবার জন্য ইংল্যান্ড দলে অন্তর্ভুক্ত হন। অস্ট্রেলিয়ায় প্রত্যাশিত কিছু না করা স্বত্ত্বেও ১৯১৩-১৪ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সেঞ্চুরি করেন ও তুলনামূলকভাবে ভালো করেন। ১৯২১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম তিন টেস্টে অনুপস্থিত থাকার পর ওভালে অনুষ্ঠিত শেষ টেস্টে অপরাজিত ১৮২* তুলে নিজেকে মেলে ধরে উপেক্ষিত হবার সমূহ জবাব দেন।
কাউন্টি ক্রিকেটে ১৯২২ থেকে ১৯২৮ মেয়াদে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করলেও হার্বার্ট সাটক্লিফ, ওয়ালি হ্যামন্ড, জ্যাক হবস ও ফ্রাঙ্ক ওলি'র ন্যায় বিখ্যাত ব্যাটসম্যানদের আধিপত্যবাদের কারণে টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ খুব কমই পেয়েছেন। ১৯২৮ সালে ৩,০০০-এরও অধিক রান তোলার সুবাদে দ্বিতীয়বারের মতো অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। কিন্তু প্রথম টেস্টের পরই দল থেকে বাদ পড়েন তিনি।
খেলার ধরন
সম্পাদনাব্যতিক্রমী পন্থায় সোজা ব্যাট চালাতেন ও নিজের বিশাল শরীরের সাথে তাল মিলিয়ে দ্রুত ফুটওয়ার্কে সিদ্ধ ছিলেন। এরফলে তার সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে তাকে আউট করা বেশ কষ্টসাধ্য বিষয় ছিল। কাউন্টি ক্রিকেটের সেরা স্পিন বোলারদের বিপক্ষে বাজে পিচেও তিনি তার সহজাত ব্যাটিং প্রদর্শন করতেন। তাছাড়াও দ্রুততম ফাস্ট বোলারদের বিপক্ষেও স্বাচ্ছন্দ্যে খেলেছেন মূলতঃ লাইন বরাবর অবস্থানের কারণে।
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনাদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তার চোখের সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে। তার এ সমস্যা ১৯৪১-৪২ থেকে শুরু হলেও তিনি তা গোপন রাখেন। আর্থিক দূরাবস্থা কাটাতে হার্বার্ট সাটক্লিফ ফিল মিড ও লেন ব্রন্ডের সাহায্যার্থে তহবিল গঠন করেন। তাস্বত্ত্বেও ক্রিকেটের প্রতি তার দুর্নিবার আকর্ষণ ছিল ও ডিন পার্কে অনুষ্ঠিত হ্যাম্পশায়ারের খেলাগুলোয় উপস্থিত থাকতেন।
১৯০৮ সালে বিট্রাইস ইঙ্গলফিল্ডের সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। এ দম্পতির রোনাল্ড ও ফ্রাঙ্ক নামীয় দুই পুত্র সন্তান রয়েছে। তন্মধ্যে বিট্রাইসের ভাই ফ্রাঙ্ক ইঙ্গলফিল্ড স্থানীয় ফুটবলার হিসেবে ১৮৯৯ সালে সাউদাম্পটনের পক্ষে একটি খেলায় অংশগ্রহণ করেছেন।[২] ২৬ মার্চ, ১৯৫৮ তারিখে ফিল মিডের দেহাবসান ঘটে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Jenkinson N. C P Mead. Southampton, Paul Cave Publications, 1993.
- ↑ Duncan Holley & Gary Chalk (১৯৯২)। The Alphabet of the Saints। ACL & Polar Publishing। পৃষ্ঠা 118। আইএসবিএন 0-9514862-3-3।
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে ফিল মিড (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে ফিল মিড (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)