ফয়েজ লেক
ফয়‘স লেক চট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকায় অবস্থিত একটি কৃত্রিম হ্রদ। এটি ১৯২৪ সালে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে খনন করা হয় এবং সেসময় পাহাড়তলী লেক হিসেবে পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে ইংরেজ রেল প্রকৌশলী ফয়-এর (Foy) নামে ফয়'স লেক নামকরণ করা হয়।[১][২][৩]
ফয়'স লেক | |
---|---|
অবস্থান | পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম |
স্থানাঙ্ক | |
ধরন | জলাধার |
অববাহিকার দেশসমূহ | বাংলাদেশ |
বর্ণনা
সম্পাদনাহ্রদটি তৈরির উদ্দেশ্য ছিল, রেল কলোনিতে বসবাসকারী লোকদের নিকট পানি পৌঁছানো। বর্তমানে এটি বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাভুক্ত। বেশ বড় মাপের (৩৩৬ একর জমির উপর) এই হ্রদটি পাহাড়ের এক শীর্ষ থেকে আরেক শীর্ষের মধ্যবর্তী একটি সংকীর্ণ উপত্যকায় আড়াআড়ি ভাবে বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে সৃষ্ট। বাঁধটি চট্টগ্রাম শহরের উত্তর দিকের পাহাড় শ্রেণীর থেকে নেমে আসা পানির প্রবাহের দিক পরিবর্তনের মাধ্যমে এই লেকটিকে সৃষ্টি করেছে। ভূ-তাত্ত্বিকভাবে এইসব পাহাড় শ্রেণী দুপিটিলা স্তর সমষ্টির শিলা দ্বারা গঠিত। ফয়েজ হ্রদের পাশেই আছে চট্টগ্রাম শহরের সবচেয়ে উঁচু পাহাড় বাটালি পাহাড়।[২]
পাহাড়তলী রেলস্টেশনের দক্ষিণ কোল ঘেঁষে আরেকটি কৃত্রিম হ্রদ রয়েছে। ফয়েজ হ্রদ তৈরির পূর্বে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ১৯২০ সালে এটি খনন করে। দুটি হ্রদই আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়। চট্টগ্রাম শহরের ব্যাপক এলাকায় বিশেষ করে নিকটবর্তী রেলওয়ে কলোনিতে পানি সরবরাহের জন্য এই জলাধার দুটি খনন হয়েছিলো।[৪]
হ্রদটিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান কনকর্ড ফয়েজ লেক কনকর্ড নামে একটি বিনোদন উদ্যান স্থাপন করে, যেখানে দর্শনার্থীদের জন্য হ্রদে নৌকাভ্রমণ, রেস্তোরাঁ, ট্র্যাকিং এবং কনসার্ট এর আয়োজন করা হয়ে থাকে। বর্তমানে এখানে বিরল প্রজাতির পাখি এবং পার্কে হরিণ দেখার ব্যবস্থা আছে। ফয়েজ হ্রদের পাশেই অবস্থিত চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। এছাড়াও দর্শনার্থীরা কটেজ ভাড়া করে থাকতে পারেন। ফয়েজ হ্রদের আশেপাশের মনোরম পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আকর্ষণে প্রতি বছর দেশি বিদেশি বহু পর্যটক ছুটে আসেন।[৫]
পর্যটন কেন্দ্র
সম্পাদনাচট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকার প্রকৃতির মাঝে অনন্য সুন্দর একটি পর্যটন কেন্দ্র ফয়’স লেক। ছোট ছোট পাহাড় আর টিলার বাঁকে বাঁকে বিস্তৃত এই পর্যটন কেন্দ্রটির অবস্থান।
চট্টগ্রামের পাহাড়তলীর খুলশী এলাকার প্রধান সড়কের পাশে ফয়’স লেকের তোরণ। সেখান থেকে কিছুটা ভেতরে এর মূল প্রবেশ পথ। শুরুতেই ফয়’স লেকের অ্যামিউজমেন্ট ওয়ার্ল্ড।
বেশ কিছু আধুনিক রাইড আছে এখানে। সার্কাস সুইং, বাম্পার কার, বাম্পার বোট, ফ্যামিলি রোলার কোস্টার, জায়ান্ট ফেরিস হুইল, ড্রাই স্লাইড, ফ্যামিলি ট্রেইন, প্যাডেল বোট, ফ্লোটিং ওয়াটার প্লে, পাইরেট শিপের মতো মজাদার সব রাইড।
এখান থেকে উপরে টিলায় আছে বনভোজন কেন্দ্র। সেখান থেকে আরেকটি টিলার উপরে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। চট্টগ্রাম শহরের বার্ডস আই ভিউ দেখা যায় জায়গাটি থেকে। প্রকৃতির মাঝে নির্জনতায় অবকাশ যাপনের জন্য ফয়’স লেকে আছে বেশ কিছু রিসোর্ট। সি-ওয়ার্ল্ডের পাশেই এর অবস্থান। রিসোর্টেও যেতে হয় নৌকায় চড়ে। নির্জনতায় সময় কাটানোর জন্য আদর্শ জায়গা এসব রিসোর্ট।[৬]
চিত্রমালা
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ডেস্ক, লাইফস্টাইল; ডটকম, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর। "ফয়'স লেকে ভ্রমণ"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ২০১৯-০৮-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-১৫।
- ↑ ক খ "ঈদ বিনোদনে উপচেপড়া ভিড় পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে"। Risingbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-১৫।
- ↑ "নান্দনিক সৌন্দর্যের অভয়ারন্য ফয়েজলেক"। একুশে টিভি। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-১৫।
- ↑ "ঘুরে আসুন ফয়'স লেক থেকে"। প্রিয়.কম। ২০১৯-০৮-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-১৫।
- ↑ "চট্টগ্রামের ফয়েজ লেকে সব বয়সী মানুষের ভিড়"। somoynews.tv। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-১৫।
- ↑ মুস্তাফিজ মামুন। "ফয়'স লেকে ভ্রমণ"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৭-৩১।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ফয়েজ লেক[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], পর্যটন তথ্যসমূহ।