পঞ্চানন মণ্ডল
ড.পঞ্চানন মণ্ডল (১৯১৭ - ?) ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি লেখক, গবেষক ও পুঁথি বিশারদ। বাংলা সাহিত্যের পাণ্ডুলিপি অন্বেষণকারী অন্যতম ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। বিশ্বভারতীর সমৃদ্ধ পুঁথিশালা গড়তে তার অসামান্য অবদান ছিল। [১][২]
পঞ্চানন মণ্ডল | |
---|---|
জন্ম | ১৯১৭ ছোট বৈনান গ্রাম, বর্ধমান ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ, ভারত |
মৃত্যু | মৃত্যু অজানা |
পেশা | অধ্যাপক, গবেষক ও পুঁথি সংগ্রাহক |
ভাষা | বাংলা |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান | বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় |
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি | পুঁথি পরিচয় |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | সুধা বসু পুরস্কার (কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়) |
সন্তান | সুমিত্রা কুণ্ডু (কন্যা) |
জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাপঞ্চানন মণ্ডলের জন্ম ব্রিটিশ ভারতের অধুনা পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার রায়না ২নম্বর উন্নয়ন সংস্থার ছোট বৈনান গ্রামে। তার বিদ্যালয়ের পড়াশোনা বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল স্কুলে। আই.এ পাশ করেন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে বি.এ পড়তে আসেন শান্তিনিকেতনের আশ্রম বিদ্যালয়ে।[২] রবীন্দ্রনাথ তার হাতে প্রাচীন মুদ্রা তুলে দিয়ে আশীর্বাদ করে বলেছিলেন-
‘এই আশ্রম বিদ্যালয়ের ছাত্র হয়ে বড় গবেষক হও৷’
[১] শিক্ষা শেষে, শান্তিনিকেতনের প্রাক্তন ছাত্র অধ্যাপক ডক্টর পঞ্চানন মণ্ডল ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বভারতীতে পুঁথি সংরক্ষণের প্রকল্প চালু হলে, তিনি প্রথম দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বিশ্বভারতীতে পুঁথিশালা গড়তে তিনি বাংলার গ্রামের পর গ্রাম বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রাচীন পুঁথি সংগ্রহ করেছিলেন৷ পরে নিষ্ঠা ও ধৈর্যের সঙ্গে নিরলস পরিশ্রমে সঃগৃহীত পুঁথিসমূহের বিষয়বস্তু লিপিবদ্ধ করেন এবং এক সমৃদ্ধ পুঁথিশালা গড়ে তোলেন। তপনকুমার মুখার্জী, অণিমা মুখোপাধ্যায়, যুথিকা বসু (ভৌমিক), সুমিত্রা মন্ডল, বলাই দাস, বিশ্ববিজয় রায়, দেবাশিস ঘোষ সহ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের বহু ছাত্র-ছাত্রী তার অধীনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করেন। তিনি রাঢ় গবেষণা পরিষদ (রাঢ় রিসার্চ ফোরাম) প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি তেইশটি গবেষণা গ্রন্থ ও পাঁচ শতাধিক প্রবন্ধ রচনা করেছেন। [২]
রচিত গ্রন্থসমূহ
সম্পাদনা- সাহিত্য প্রকাশিকা (৩ খণ্ড)
- চিঠিপত্রে সমাজচিত্র (২ খণ্ড)
- রূপরামের ধর্ম্মমঙ্গল (সুকুমার সেনের সঙ্গে যৌথভাবে সম্পাদিত)
- রবীন্দ্র সাহিত্যে মৃত্যুরূপ ও জীবনবাদ
- পুঁথি পরিচয়, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়
- ভারতশিল্পী নন্দলাল (১৯৬৮),
সম্মাননা
সম্পাদনাঅধ্যাপক পঞ্চানন মণ্ডলের গবেষণা, নিরলস কর্মসাধনা এবং পুঁথি গবেষণার কাজের জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সুধা বসু পুরস্কারে ভূষিত করে। [১]
উত্তরাধিকার
সম্পাদনা২০১৭ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বভারতীর উদ্যোগে পালিত হয় পুঁথি বিশারদ পঞ্চাননের জন্ম শতবর্ষ। ২০২২ খ্রিস্টাব্দের ২১ আগস্ট বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত হয় পঞ্চানন মণ্ডল স্মারক বক্তৃতা। ভাষণ দেন তার সুযোগ্যা ছাত্রী ও পুঁথি প্রাজ্ঞিক পঞ্চানন মণ্ডল: চর্চা ও চর্যা গ্রন্থের অন্যতম রচয়িতা অণিমা মুখোপাধ্যায়। তিনি সম্মানিত হলেন পঞ্চানন মণ্ডলের নামাঙ্কিত সম্মাননায়। [৩]
আরো পড়ুন
সম্পাদনা- প্রাচীন পুঁথি বিশেষজ্ঞ ড. পঞ্চানন মণ্ডল স্মারক গ্রন্থ- সুখময় মুখোপাধ্যায় সুমিত্রা কুণ্ডু, ধানসিঁড়ি
- পুঁথি প্রাজ্ঞিক পঞ্চানন মণ্ডল: চর্চা ও চর্যা- অণিমা মুখোপাধ্যায়, সুমিত্রা কুণ্ডু, প্রণবকুমার সাহা, প্রকাশক সোপান; আইএসবিএন ৯৭৮-৯৩-৮২৪৩-৩৮৫-৯
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ "পুঁথি বিশারদ পঞ্চাননের জন্ম শতবর্ষ বিশ্বভারতীতে"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-১৮।
- ↑ ক খ গ "Panchanan Mondal, 'manuscript seeker' of Bengal"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-০৪।
- ↑ "কলকাতার কড়চা- পুঁথি নিয়ে"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-১৮।