নেপালের জাতীয় প্রতীক
নেপালের জাতীয় প্রতীক নেপাল গৃহযুদ্ধের পরে পুনর্মিলনকালে পুনর্গঠিত করা হয়। ২০০৮ সালের ২৮শে মে সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোর জাতীয় প্রতীকের আদলে একটি নতুন প্রতীক প্রবর্তন করা হয়েছিল।
নেপালের জাতীয় প্রতীক | |
---|---|
আর্মিজার | যুক্তরাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রী নেপাল |
গৃহীত | ২৮ মে ২০০৮ |
ক্রেস্ট | নেপালের জাতীয় পতাকা |
প্রতীকচিহ্নের বিবরণ | মাউন্ট এভারেস্ট, নেপালের মানচিত্র |
সহায়তাকারী | রহোডোডেরন ফুলের মালা |
নীতিবাক্য | জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী (जननी जन्मभूमिश्च स्वर्गादपी गरीयसी) |
গঠনমূলক বিশ্লেষণ
সম্পাদনানেপালের জাতীয় প্রতীক গোলাকৃতির। প্রতীকের মাঝখানে পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়া-মাউন্ট এভারেস্ট শৃঙ্গ রয়েছে। শৃঙ্গের উপরে নেপালের উড়ন্ত জাতীয় পতাকা রয়েছে। সবুজ পাহাড় নেপালের পার্বত্য অঞ্চলের প্রতীক। শৃঙ্গের নিচে সমতল ভূমি ও পাহাড়। হলুদ রং তরাই অঞ্চলের উর্বরতার প্রতীক। প্রতীকের উপরের অংশে নেপালের মানচিত্র। পুরুষ ও নারীর করমর্দনের চিত্র লিঙ্গসমতার প্রতীক। প্রতীকের দুই পাশে নেপালের জাতীয় ফুল ও ধানের শীষ। প্রতীকের নিচে লাল ফিতায় লেখা রয়েছে: জননী ও মাতৃভূমির স্বার্থ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
বৈশিষ্ট্য
সম্পাদনানেপালের জাতীয় পতাকার রং লাল। লাল রক্তের প্রতীক। জাতি, জাতীয় পতাকা এবং জাতীয় প্রতীকে লাল রঙের উপস্থিতি নেপালি জাতির সাহসী মানসিকতাকে উপস্থাপন করে। নেপালের জাতীয় প্রতীকে রয়েছে নেপালের জাতীয় পতাকা, মাউন্ট এভারেস্ট, হরিৎ পর্বত যা নেপালের সবুজ উর্বরতার প্রতীক এবং হলুদ রং যা নেপালের উর্বর তরাই অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করে। প্রতীকটির নিচের দিকে পুরুষ এবং মহিলার হাত রয়েছে যা লিঙ্গ সমতাকে নির্দেশ করে। এছাড়াও নেপালের জাতীয় ফুল রডোডেনড্রন ফুলের মালা প্রতীকটিকে বেষ্টন করে আছে। প্রতীকটিতে নেপালের সাদা রঙের একটি মানচিত্রও ব্যবহার করা হয়েছে।
নীতিবাক্য
সম্পাদনাপ্রতীকের একদম নিচের দিকে একটি লাল স্ক্রোল সংস্কৃত ভাষায় জাতীয় নীতিবাক্য লেখা আছে: জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী (जननी जन्मभूमिश्च स्वर्गादपी गरीयसी) একে সহজ বাংলায় অনুবাদ করলে অর্থ দাড়ায় "মা ও মাতৃভূমি স্বর্গের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ।"[১]
ব্যুৎপত্তি
সম্পাদনালক্ষ্মণ যখন রামকে লঙ্কা অভিযানে লঙ্কারাজ রাবণ এর বিশাল সৈন্যশক্তিকে ভয় পেয়ে ফিরে যাবার জন্য বলছিল তখন রাম বলেছিল যে-
- अपि स्वर्णमयी लंका न मे लक्ष्मण रोचते।
- जननी जन्मभूमिश्च स्वर्गादपि गरीयसी।।
বাংলা অনুবাদ:
- লঙ্কা হতে পারে স্বর্ণের তৈরি কিন্তু আমি লঙ্কা কিংবা লক্ষ্মণের ধার ধারি না।
- একজনের মা এবং তার জন্মভূমি স্বর্গের চেয়েও বেশি মূল্যবান।
ঐতিহাসিক মর্যাদা
সম্পাদনা২৮ শে মে ২০০৮ এর আগে, এই আধুনিক প্রতীকটির আগে নেপালের জাতীয় প্রতীক ছিল কোট অব আর্ম।
জাতীয় প্রতীক (কোট অব আর্ম)
সম্পাদনাপ্রতীকটিতে একটি সাদা গাভী, একটি সবুজ ময়ূর (হিমালয়ে বসবাসকারী মোনাল), দুইজন গোর্খা সৈনিক যাদের মধ্যে একজন কুকরি এবং একটি ধনুক হাতে দাঁড়িয়ে আছে আর অন্যজন একটি রাইফেল ধরে আছে। প্রতীকের উপর দিকে দুটি পরস্পর ছেদকৃত নেপালি পতাকা রয়েছে। তাছাড়াও গোর্খা জাতির অভিভাবক দেবতা গোরক্ষনাথের পদচিহ্ন আছে এই প্রতীকটিতে। গোরক্ষনাথের রাজকীয় মুকুটেরও ছিল এতে। প্রতীকটিতে জাতীয় নীতিবাক্যের সাথে একই লাল স্ক্রোলও রয়েছে। ১৯৩৩ সাল থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত প্রতীকটিতে লাতিন ভাষায় একটি নীতিবাক্য লেখা ছিল। নীতিবাক্যটি হল- ডুলস এট ডেকোরাম ইস্ট প্রো প্যাট্রিয়া মোরি ।
-
নেপাল রাজ্যের কোট অব আর্ম (১৯৩৫)
-
নেপাল রাজ্যের কোট অব আর্ম (১৯৩৫-১৯৪৬)
-
নেপাল রাজ্যের কোট অব আর্ম (১৯৪৬-১৯৬২)
-
নেপাল রাজ্যের কোট অব আর্ম (১৯৬২-২০০৮)
-
নেপালের কোট অব আর্ম (২০০৮ – বর্তমান)
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনাউইকিমিডিয়া কমন্সে নেপালের জাতীয় প্রতীক সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।