নুরুল মোমেন
নুরুল মোমেন ( নভেম্বর ২৫, ১৯০৮ – ফেব্রুয়ারি ১৬, ১৯৯০), ছিলেন একজন বাংলাদেশী অধ্যাপক, শিক্ষাবিদ, নাট্যকার ও নির্দেশক, রম্য সাহিত্যিক, পথিকৃৎ মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, অনুবাদক, কবি এবং প্রাবন্ধিক।[১][২][৩] তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় -এর আইন অনুষদের ডীন এবং অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আধুনিক বাংলা নাটকে অগ্রণী ভুমিকার জন্য তাকে "নাট্যগুরু" হিসেবে সম্বোধন করা হয়।[৪][৫]
নুরুল মোমেন | |
---|---|
জন্ম | আলফাডাঙ্গা, যশোর, বাংলাদেশ | ২৫ নভেম্বর ১৯০৮
মৃত্যু | ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৯০ গুলশান, ঢাকা, বাংলাদেশ | (বয়স ৮১)
পেশা | নাট্যকার, লেখক, শিক্ষাবিদ, |
ভাষা | বাংলা, ইংরেজি |
জাতীয়তা | বাংলাদেশ |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশ |
ধরন | নাটক, ছোটগল্প, প্রবন্ধ |
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি | নেমেসিস · রুপান্তর |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬১) একুশে পদক (১৯৭৮) |
দাম্পত্যসঙ্গী | আমেনা মোমেন (তা. ১৯৯৩) |
সন্তান | ৪ |
প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা
সম্পাদনানুরুল মোমেন নভেম্বর ২৫, ১৯০৬ সালে তৎকালীন যশোর জেলা বর্তমান ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা নুরুল আরেফিন ছিলেন একজন জমিদার ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক।[২] তিনি কলকাতায় প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করে ১৯১৬ সালে খুলনা জিলা স্কুলে ভর্তি হন।[৫] দশ বছর বয়সে তার প্রথম পদ্য "সন্ধ্যা" ১৯১৯ সালে সেসময়কার "ধ্রুবতারা" নামক সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছিল।[৫] ১৯২০ সালে তিনি ঢাকা মুসলিম হাই স্কুল-এ ভর্তি হন এবং সেখান থেকেই ১৯২৪ সালে ম্যাট্রিক, "ঢাকা ইন্টারমেডিয়েট কলেজ" থেকে ১৯২৬ সালে আইএ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৯ সালে বিএ পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রথম বছরেই (১৯২৭) তিনি ক্রীড়া ও নাট্য প্রতিযোগীতায় প্রথম হন। রবীন্দ্রনাথের 'মুক্তধারায়' বটু চরিত্রায়ন করে তিনি প্রথম স্থান অর্জন করেন। সেটি ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বপ্রথম নাট্য প্রতিযোগিতা এবং নুরুল মোমেন তখন থেকেই পূর্ব বাংলার নাটকে পথিকৃৎ ভূমিকা রাখেন। এর পরের ৩ বছর তিনি কার্জন হলে বহু নাটক পরিচালনা ও অভিনয় করেন। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএল ডিগ্রি লাভ করে ১৯৩৬ সালে কলকাতা হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন।[২]
কর্মজীবন
সম্পাদনা১৯৩৯ সালে ঢাকায় "অল ইন্ডিয়া রেডিও" প্রতিষ্ঠা হলে, মোমেন নতুন এই মাধ্যমের সুযোগ গ্রহণ করেন এবং তার প্রথম লেখক হয়ে ওঠেন। ১৯৪১ রেডিওর জন্য রচনা ও নির্দেশনা দেন কমেডি নাটক "রুপান্তর"। এই নাটকের প্রগতিশীল প্লট এবং প্রধান চরিত্র নারী হওয়ার কারণে প্রথাগত মুসলিম বাংলা নাটকের মধ্যে নতুন ধারার উন্মেষ ঘটে যার ফলশ্রুতিতে কবি ও সাহিত্য সমালোচক মোহিতলাল মজুমদার তার প্রশংসা করেন এবং পরবর্তিতে আনন্দবাজার পত্রিকা তাদের পূজা সংখ্যায় নাটকটি প্রকাশ করেছিল।[২][৫]
সাহিত্যকর্ম
সম্পাদনাকর্মতালিকা
সম্পাদনা- রূপান্তর {রচনা, মঞ্চায়ন এবং সম্প্রচার - ১৯৪১। বই আকারে প্রকাশিত হয় ১৯৪৮ সালে, প্রকাশক- শেখ ব্রাদার্স, ঢাকা। আনন্দবাজার পত্রিকা শারদীয়া (গ্রন্থাকার) সংখ্যায় ৪৩ পৃষ্ঠাব্যাপী পাইকা হরফে (রবীন্দ্রনাথের পর, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রচনা হিসেবে) প্রকাশ করে ১৯৪৩ সালে।}
- নেমেসিস (রচনা কাল-১৯৪৪, সজনীকান্ত দাস সম্পাদিত 'শনিবারের চিঠি'তে প্রকাশিত হয় ১৯৪৫ সালে। বই আকারে প্রকাশিত হয় ১৯৪৬ সালে, প্রকাশক-মোমেন পাবলিশিং হাউজ, ঢাকা।)
- যদি এমন হতো ( প্রকাশকাল - জুলাই ১৯৬১, প্রকাশক-মোমেন পাবলিশিং হাউজ, ঢাকা।)
- নয়া খান্দান (রচনা- সেপ্টেম্বর, ১৯৬১; প্রকাশকাল - ১৯৬২, প্রকাশক- বাংলা একাডেমি, প্রচ্চদ কামরুল হাসান)
- আলোছায়া (রচনা - ১৯৬২ ; প্রকাশকাল - অক্তোবর, ১৯৬২, প্রকাশক-মোমেন পাবলিশিং হাউজ, ঢাকা।)
- শতকরা আশি
- আইনের অন্তরালে
- রূপলেখা
- হোসেন সফদারের উইল
- ভাই ভাই সবাই
- এইটুকু এই জীবনটাতে
- যেমন ইচ্ছা তেমন
- আদিখ্যাতা
- লন্ডন প্রবাসে
- হ-য-ব-র-ল
- অন্ধকারটাই আলো (১৯৬৪)
- ঠিক চলার পথ
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Mahmud, Jamil (২৭ নভেম্বর ২০০৮)। "Birth centenary of Professor Nurul Momen"। দ্য ডেইলি স্টার। সংগ্রহের তারিখ ১৮ অক্টোবর ২০১০।
- ↑ ক খ গ ঘ Khan, Tamanna (৩ ডিসেম্বর ২০১০)। "A Pioneer of Modern Drama"। Star Weekend Magazine। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ডিসেম্বর ২০১০।
- ↑ Mahmud, Dr. Faisal (২৫ নভেম্বর ২০১০)। "Natyaguru Nurul Momen (Part 1)"। The New Nation। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১০।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ Rubin, Don (১৯৯৮)। The World Encyclopedia of Contemporary Theatre: Asia। Taylor & Francis। পৃষ্ঠা 104। আইএসবিএন 978-0-415-05933-6।
- ↑ ক খ গ ঘ Chowdhury, Syed Tashfin (৩ ডিসেম্বর ২০১০)। "Father of Bangladeshi theatre"। The Daily New Age।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]