নারায়ণ রায়

ব্রিটিশ বিরোধী বাঙালি বিপ্লবী

ডা. নারায়ণ রায় (১৯০০ - ১ নভেম্বর, ১৯৭৩) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী। তিনি ছিলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মেধাবী ছাত্র, সমাজসেবী, চিকিৎসক ও প্রখ্যাত কমিউনিস্ট নেতা। তিনি ১৯৩০-এর দশকে আন্দামান সেলুলার জেলে "কমিউনিস্ট সংহতি" গড়ে তোলার প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন। বিপ্লবী দলের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিলো এবং ডালহৌসী স্কোয়ার ও কলকাতা বোমা মামলায় তিনি ১৯৩০ সনে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন।[]

নারায়ণ রায়ের জন্ম কলকাতায়। তার পিতা ডা. ক্ষেত্রনাথ রায়।[]

ডালহৌসী স্কোয়ার বোমা মামলা

সম্পাদনা

২৫ আগস্ট, ১৯৩০ তারিখে অনুজাচরণ সেনদীনেশচন্দ্র মজুমদার অত্যাচারী কুখ্যাত চার্লস টেগার্ট সাহেবের গাড়ীতে বোমা নিক্ষেপ করেন। টেগার্ট বেঁচে যান কিন্তু দীনেশ মজুমদার ধরা পড়েন। অনুজাচরণ ঘটনাস্থলেই মারা যান। বিচারে দীনেশ মজুমদারের যাবজ্জীবন দ্বীপান্তর দণ্ড হয়। এই উপলক্ষে পুলিস বহু বাড়ি খানাতল্লাশ করে এবং বহু লোককে গ্রেপ্তার করে। এই সম্পর্কে শোভারানি দত্ত, কমলা দাশগুপ্ত, শৈলরাণী দত্ত, ডা. নারায়ণ রায়, ভূপালচন্দ্র বসু, অদ্বৈত দত্ত, অম্বিকা রায়, রসিকলাল দাস, সতীশ ভৌমিক, সুরেন্দ্র দত্ত, রোহিণী অধিকারীসহ অনেকে ধৃত হন। বিচারে নারায়ণ রায় ও ভূপাল বসু ১৫ বছরের দ্বীপান্তর দন্ড হয়। নারায়ণকে প্রথমে আলিপুর জেলে এরপর বোম্বের যারবেদা জেলে পাঠানো হয়। তাকে সলিটারি সেলে রাখা হলে তিনি পড়াশোনা করতে থাকেন মার্ক্সবাদী তত্ত্ব ও লেনিন রচনাসমগ্র। নারায়ণকে আবার নিয়ে আসা হল কলকাতায় এবং তারপর সেলুলার জেলে। তিনি জেলে মার্ক্সিস্ট স্টাডি গ্রুপ গঠন করেন। অন্যান্যদের মধ্যে সুরেন্দ্র দত্তর ১২ বছর, রোহিণী ৫ বছর ও সতীশ ২ বৎসর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হন এবং অন্যান্য সকলে মুক্তি পান। তারা সকলেই তরুণ বিপ্লবী দলের সদস্য ছিলেন।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৩৫৩-৩৫৪, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  2. ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী, জেলে ত্রিশ বছর, পাক-ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ধ্রুপদ সাহিত্যাঙ্গন, ঢাকা, ঢাকা বইমেলা ২০০৪, পৃষ্ঠা ১৮৪।