নরি কন্ট্রাক্টর

নরি কন্ট্রাক্টর
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম	নারিম্যান জামসেদজী নরি কন্ট্রাক্টর
জন্ম	৭ মার্চ ১৯৩৪ (বয়স ৯০); গোদরা, গুজরাত, ভারত
ব্যাটিংয়ের ধরন	বামহাতি
বোলিংয়ের ধরন	ডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকা	ব্যাটসম্যান, অধিনায়ক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল	ভারত (১৯৫৫ - ১৯৬২);
টেস্ট অভিষেক ; (ক্যাপ ৭৭)	২ ডিসেম্বর ১৯৫৫ বনাম নিউজিল্যান্ড
শেষ টেস্ট	৭ মার্চ ১৯৬২ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
	উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৮ আগস্ট ২০১৭

নারিম্যান জামসেদজী নরি কন্ট্রাক্টর (উচ্চারণ^ⓘ; হিন্দি: नरी कांट्रेक्टर; জন্ম: ৭ মার্চ, ১৯৩৪) গুজরাতের গোদরা এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিশিষ্ট সাবেক ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। পাশাপাশি ভারত দলকে টেস্ট ক্রিকেটে নেতৃত্বও দিয়েছেন। দলে তিনি মূলতঃ বামহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে অংশগ্রহণ করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শিতা দেখিয়েছেন নরি কন্ট্রাক্টর।

প্রারম্ভিক জীবন

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে নাটকীয়ভাবে কন্ট্রাক্টরের সূচনা ঘটে ও প্রভূতঃ সফলতা পান। সকালের শুরুতেই গুজরাতের অধিনায়কের আঘাতপ্রাপ্তির ফলে তাকে গুজরাত ক্রিকেট দলের সদস্যরূপে অন্তর্ভুক্ত হন। অভিষেক খেলাতেই কন্ট্রাক্টর তার উভয় ইনিংসে জোড়া শতক হাঁকান। এরফলে, আর্থার মরিসের পর দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে এ সাফল্য লাভ করেন নরি কন্ট্রাক্টর। এরফলে, প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের শুরুতেই দূর্দান্ত প্রভাববিস্তারের প্রেক্ষিত দল নির্বাচকমণ্ডলীর দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষমতা দেখান।

খেলোয়াড়ী জীবন

২ ডিসেম্বর, ১৯৫৫ তারিখে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১৯৫৯ সালে লর্ডসে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসের শুরুতেই ব্রায়ান স্ট্যাদামের বলে দুই উরুতেই আঘাত পান। তাস্বত্ত্বেও তিনি ৮১ রানের অনবদ্য ইনিংস উপহার দেন। ঐ বছরের শেষদিকে কানপুরে দ্বিতীয় ইনিংসে করেন ৭৪ রান। এরফলে ভারত সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাদের ইতিহাসের প্রথম জয়ের সন্ধান পায়। ঐ সময়ে বামহাতি স্পিন বোলিংকারী অ্যালান ডেভিডসনের বলকে পুল করতে গিয়ে তার ইনিংস থেমে যায়। নীল হার্ভে শর্ট লেগ অঞ্চলে অবস্থান করছিলেন ও তার পায়ে লেগে বল শূন্যে উঠে ক্যাচে পরিণত হয়।

১৯৬১-৬২ মৌসুমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের সিরিজ জয়ে নেতৃত্ব দেন নরি কন্ট্রাক্টর। একই মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিনি দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ৭ মার্চ, ১৯৬২ তারিখে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশগ্রহণ করেন কন্ট্রাক্টর। ঐ টেস্টে গুরুতরভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হলে তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জীবনের অকাল সমাপ্তি ঘটে। বার্বাডোস দলের বিপক্ষে খেলাকালীন তিনি গ্রিফিথের মুখোমুখি হয়েছিলেন। ঐ টেস্টে এক মুহুর্তের জন্য চার্লি গ্রিফিথের দিকে মনোনিবেশ ঘটান। তার দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ ডেলিভারিটি প্যাভিলিয়নে অবস্থানকারী কোন একজনকে জানালা খুলতে সহায়তা করে। ঐ সময়ে সাইট স্ক্রিন ছিল না। আমিও শতভাগ ঐ ডেলিভারির দিকে নজর রাখতে পারিনি। বলটি আঘাতের ইঞ্চিখানেক পূর্বে এটি লক্ষ্য করি। কিন্তু এটি সত্য নয় যে, আমি শূন্য রানে আউট হয়েছি।^[১] কন্ট্রাক্টর তার মাথার খুলির পিছন দিকে বিদ্যুৎগতিতে আঘাত অনুভব করেন ও ছয়দিন চেতনাবোধ থেকে দূরে থাকেন।^[২] সুস্থতার জন্য রক্ত সঞ্চালনের প্রয়োজন পড়ে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক ফ্রাঙ্ক ওরেল প্রথম ব্যক্তি হিসেবে রক্তদান করেন।^[৩] কন্ট্রাক্টরের জীবন সচল হলেও এ ঘটনায় তার খেলোয়াড়ী জীবনের অকাল সমাপ্তি ঘটতে বাধ্য করে। সাম্প্রতিক এক স্বাক্ষাৎকারে জানান যে, এ আঘাতের পর তিনি আর একটি টেস্টে অংশ নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দর্শকেরা এ ঘটনা আর দেখতে চায় না।^[১] লক্ষ্যণীয় যে, ঐ সময়ে গুরুতরভাবে আঘাতপ্রাপ্তির বিষয়টিতে হেলমেটের প্রচলন ঘটেনি, যা বর্তমানে রয়েছে।

ব্যক্তিগত জীবন

তার খেলোয়াড়ী জীবনে কন্ট্রাক্টরকে ভারতীয় ক্রিকেটের সুপুরুষ হিসেবে বিবেচনা করা হতো। জানুয়ারি, ১৯৯৯ সালে সিমি গারেওয়ালের সাথে তামিলনাড়ুর সাবেক মূখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা জানিয়েছিলেন যে, বিদ্যালয়ের ছাত্রী থাকা অবস্থায় তিনি কন্ট্রাক্টরকে মনে-প্রাণে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হতে চেয়েছিলেন।

বর্তমানে কন্ট্রাক্টর মুম্বইয়ে বসবাস করছেন। সেখানে তিনি ইন্ডিয়া একাডেমি ক্রিকেট ক্লাবে প্রশিক্ষণের দায়িত্বে রয়েছেন। ২০০৭ সালে সি.কে. নায়ড়ু আজীবন সম্মাননা পুরস্কার লাভ করেন তিনি।^[৪]