নরকের দরজা (তুর্কমেনীয়: লাতিন: Jähennem derwezesi, সিরিলীয়: Җәхеннем дервезеси, জ্যাহেন্‌নেম্‌ দের্‌ওয়েজেসি, অনুবাদ: "জাহান্নামের দরজা") তুর্কমেনিস্তানের দরওয়াজা শহরের একটি প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্র।[] দীর্ঘদিন ধরে অগ্নিমুখটি অনবরত জ্বলছে বলে একে নরকের দরজা বলা হয়। কারাকুম মরুভূমিতে অবস্থিত অগ্নিমুখটির ব্যাস ৬৯ মিটার (২২৬ ফু) ও গর্ত ৩০ মিটার (৯৮ ফু) দীর্ঘ। ভূতত্ত্ববিদগণ মিথেন গ্যাসের বিস্তার প্রতিরোধ করার জন্য জ্বলামুখটিতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিলেন এবং এটি ১৯৭১ সাল থেকে ক্রমাগত জ্বলছে।[]

নরকের দরজা
২০১১ সালের দৃশ্য
দেশতুর্কমেনিস্তান
অঞ্চলদরওয়াজা, আহেল প্রদেশ
সমুদ্রতীরাতিক্রান্ত/ডাঙাবর্তীউপকূলবর্তী
ক্ষেত্রের ইতিহাস
আবিষ্কার১৯৭১
২০১০ এর এক রাতের দৃশ্য

অগ্নিমুখটি দেখতে প্রতিবছরই পর্যটকরা দরওয়াজা শহরে আসেন। ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার পর্যটক স্থানটি পরিদর্শন করেছেন।[] গ্যাসক্ষেত্রেটি ৫৩৫০ বর্গমিটার স্থান পরিবেষ্ঠিত এবং আশেপাশের স্থানও বন্য মরুভূমি ক্যাম্পিং-এর জন্য বিখ্যাত।

ইতিহাস

সম্পাদনা

এটি কোন প্রাকৃতিক গর্ত নয়। ১৯৭১ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নে প্রাকৃতিক গ্যাসসমৃদ্ধ দারউয়িজি এলাকায় অনুসন্ধানের সময় ক্ষেত্রটি আবিষ্কার করে। প্রথমে তারা মনে করেছিল এটি একটি তেল ক্ষেত্র তাই ড্রিলিং মেশিন দিয়ে তেল উত্তোলনের জন্য সেখানে ক্যাম্প স্থাপন করে।[] কিন্তু পরে তারা সেখান থেকে বিষাক্ত গ্যাস বের হতে দেখে।

গ্যাস অনুসন্ধানের সময় অনুসন্ধানকারীরা গ্যাসবহুল গুহার মধ্যে মৃদু স্পর্শ করলে দুর্ঘটনাক্রমে মাটি ধসে পুরো ড্রিলিং রিগসহ পড়ে যায়। যদিও এই দুর্ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। প্রাথমিকভাবে গবেষণা করে বিষাক্ত মিথেন গ্যাসের ব্যাপারে গবেষকরা নিশ্চিত হন। পরিবেশে বিষাক্ত গ্যাস প্রতিরোধ করার জন্য ভূতত্ত্ববিদরা তখন গ্যাস উদ্গিরণ মুখটি জ্বালিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। তাদের ধারণা ছিল এখানে সীমীত পরিমাণ গ্যাস থাকতে পারে। কিন্তু তাদের ধারণা ভুল প্রমাণ করে এটি ১৯৭১ সাল থেকে অনবরত জ্বলছে।[][]

ভবিষ্যত গ্যাসের উত্তোলনের উপর প্রভাব

সম্পাদনা

২০১০ সালের এপ্রিলে তুর্কমেনিস্তানের রাষ্ট্রপতি গ্যাসক্ষেত্রটি পরিদর্শন করে এটি বন্ধের কথা বলেন। তিনি বলেন তা না হলে ওই এলাকার অন্যান্য প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনের উপর এর প্রভাব পড়তে পারে। বর্তমানে তুর্কমেনিস্তান তার প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা করছে। বর্তমান ৭৫ মিলিয়ন কিউবিক মিটার থেকে গ্যাস উত্তোলন করে ভারত, রাশিয়া, চীন, ইরানপশ্চিম ইউরোপে পরবর্তী ২০ বছর তারা রপ্তানি করার চিন্তা করছে।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "নরকের দরজা"। ১৪ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ এপ্রিল ২০১৩ 
  2. Christina Nunez (২০১৪-০৭-১৪)। "Q&A: The First-Ever Expedition to Turkmenistan's "Door to Hell""। National Geographic। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-২৮ 
  3. "Turkmenistan hopes 'Door to Hell' will boost tourism"। Relaxnews। ২০১৪-০৬-২২। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-২৮ – CTV News-এর মাধ্যমে। 
  4. American Geological Institute (জানুয়ারি ২০১০)। Earth। American Geological Institute। পৃষ্ঠা 22। 
  5. "The Door to Hell: Take a look inside a giant hole in the desert which has been on fire for more than 40 YEARS"Mail Online। ২০১২-০৭-২৭। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-২১ 
  6. "Maximilian Büsser and Friends"Maximilian Büsser and Friends (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০৩-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-২১ 
  7. "Turkmen president wants to close "Hell's Gate""Reuters (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১০-০৪-২০। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-২১ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা

  উইকিমিডিয়া কমন্সে নরকের দরজা সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।