দীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
দীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় (১০ নভেম্বর ১৯৩৩ - ১৪ জানুয়ারি, ১৯৭৯) একজন বাঙালি সাহিত্যিক ও প্রথিতযশা সাংবাদিক।
দীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় | |
---|---|
জন্ম | ১০ নভেম্বর, ১৯৩৩ |
মৃত্যু | ১৪ জানুয়ারি, ১৯৭৯ |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
পেশা | সাহিত্যচর্চা, সাংবাদিকতা |
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাদীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদি বাড়ি বিক্রমপুর ঢাকায়। তবে তিনি কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম ছিল ধীরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। দেওঘরে পড়াশোনা শেষ করে কলকাতার প্রেসিডেন্সী কলেজে ভর্তি হন। ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
কমিউনিস্ট পার্টিতে
সম্পাদনাছাত্রাবস্থা থেকে বামপন্থী রাজনীতির সাথে যুক্ত দীপেন্দ্রনাথ ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন ১৯৫৪ সালে। ১৯৫৮ সাল থেকে সর্বক্ষনের পার্টি কর্মী হিসেবে কাজ করতে থাকেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন ছাত্র ফেডারেশন এর নেতা হন এবং ছাত্র সংসদের পত্রিকা 'একতা'র সম্পাদনা করতেন। ১৯৫৩ সাল থেকে বিখ্যাত সাহিত্য পত্রিকা 'পরিচয়' এ সম্পাদনা ও লেখালিখি করেছেন। পরিচয়ে তার ছদ্মনাম ছিল কজ্জল সেন, দ্বীপান্বিতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইত্যাদি। ১৯৫৭ সালে 'ছাত্র অভিযান' পত্রিকাও সম্পাদনা করেন তিনি।[১]
সাংবাদিকতা
সম্পাদনাসিপিআই পার্টির মুখপত্র কালান্তর দৈনিকের সম্পাদনার মাধ্যমে তার সাংবাদিক জীবন শুরু হয়। প্রকাশকালের শুরু থেকে তিনি এখানে সাংবাদিকতা করেছেন। কালান্তরে 'জনমত' বিভাগে শ্রীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, তপন উপাধ্যায়, নচিকেতা দাস, সিরাজ ইসলাম ইত্যাদি ছদ্মনামে লিখতেন। তার 'রিপোর্টাজ'গুলি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং সাহিত্যগুনে সমৃদ্ধ ছিল। সারা ভারত প্রগতি লেখক সংঘের সম্পাদক ছিলেন। মস্কো ও লেবাননে সাহিত্যসভায় ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি।[১] বাংলাদেশ সহায়ক শিল্পী-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের জন্যে অর্থ সংগ্রহ ও তহবিল গঠন করার কাজে ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি।
সাহিত্য
সম্পাদনাদীপেন্দ্রনাথের রচনা মননশীল পাঠকদের কাছে অত্যন্ত সমাদরপ্রাপ্ত ও অগ্রগণ্য। তার উপন্যাস ও ছোটগল্প ছাড়াও রিপোর্টাজগুলি উন্নতমানের সাহিত্য হিসেবে বিবেচিত হয় বাঙালি পাঠকমহলে। তার প্রথম উপন্যাস 'আগামী (মাঝি)' প্রকাশিত হয় ১৯৫১ খ্রীষ্টাব্দে (১৩৫৮ বঙ্গাব্দের ১৫ কার্তিক)। অন্যান্য উপন্যাসগুলির মধ্যে 'তৃতীয় ভুবন (অক্টোবর ১৯৫৭)', 'গগন ঠাকুরের সিঁড়ি (চৈত্র ১৩৬৮)' এবং 'বিবাহবার্ষিকী (অক্টোবর ১৯৭৭)' পাঠকমহলে সাড়া ফেলে। গল্পগুলোর মধ্যে 'গ্রহণ (১৯৫২)', না (১৯৫২), শাঁখা-সিঁদুর (১৯৫৬), ঘাম (১৯৫৮), চর্যাপদের হরিণী (১৯৫৯), অশ্বমেধের ঘোড়া (১৯৬০), উৎসর্গ (১৯৬২)[২] ইত্যাদি তার সাহিত্যমেধার পরিচয়জ্ঞাপক। নকশাল বিদ্রোহ ও ভারতের কমিউনিস্ট পার্টিগুলির আভ্যন্তরীণ ভাঙ্গন বিষয়ে তার গল্প 'শোকমিছিল (১৯৭৭)' এক মর্মস্পর্শী আখ্যান পেশ করে সেই সময়ের দলিল হিসেবে।
মৃত্যু
সম্পাদনাসাহিত্যিক, সাংবাদিক দীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ১৪ জানুয়ারি, ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দে মারা যান।[৩]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ প্রথম খন্ড, সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত (২০০২)। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ২০৯।
- ↑ দীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, সম্পাদনা অনিশ্চয় চক্রবর্তী (জানুয়ারি, ২০০৫)। গল্প সমগ্র। কলকাতা: একুশ শতক। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ "সৃজন কথা"। আনন্দবাজার পত্রিকা। ১৩ জানুয়ারি ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৩.০২.১৭। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য)