দীপলক্ষ্মী পুতুল

দীপলক্ষ্মী পুতুল বা দিওয়ালি পুতুল পশ্চিম মেদিনীপুর ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অন্যতম বিখ্যাত পুতুল। শুধুমাত্র কালী পূজার দিন এই পুতুল তৈরি করে প্রদীপ জ্বালানো হয়। অশুভকে বিনাশ ও ধন সম্পত্তির জন্যই এই পূজা করা হয়। অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলা ও পুরুলিয়াতে এই পুতুল পাওয়া যায়। তবে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এই পুতুলের প্রচলন বেশি।

দীপলক্ষ্মী পুতুল
উৎপত্তিকাল	১৯শ শতাব্দী
উৎপত্তিস্থল	বলরামপুর, ছাতাটাঁড় ও কুক্কড়ু গ্রাম, মানভূম জেলা (বর্তমান পুরুলিয়া জেলা)
উপাদান	মাটি
আকৃতি	নারীমূর্তি
ব্যবহার	দীপবলীর আলোকসজ্জা, ঘর সাজানো
সংশ্লিষ্ট উৎসব	দীপাবলী

ইতিহাস

অষ্টাদশ শতাব্দীতে কোন এক সময় অধুনা ঝাড়খণ্ড অঞল থেকে একদল কুমোর এসে বর্তমান পুরুলিয়া জেলার বলরামপুর, ছাতাটাঁড় ও কুক্কড়ু গ্রামে বসবাস করতে শুরু করেন। এখানেই তারা প্রথম তৈরী করেন দেওয়ালি পুতুল। তারপর সেই পুতুলের চল ক্রমে ছড়িয়ে পড়ে বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। সাধারণভাবে মনে করা হয় দেওয়ালি পুতুল দু'শো বছর ধরে তৈরী হচ্ছে। ১৮৫৭ সালে মেদিনীপুরের মির্জাবাজারের কুমোরপাড়ার পত্তন হয়। সেই থেকে মেদিনীপুরে দেওয়ালি পুতুল তৈরী হয়।

গঠন বর্ণনা

সম্পূর্ণ পুতুলটি তিনটি স্তরে করা হয়। পুতুলের নিচের অংশটি চাক বা চাকায় করা হয়। মাঝের অংশটি ছাঁচে তৈরি করে নিয়ে একসাথে জুড়ে দেওয়া হয়। এরপর বাকি অংশ হাতে করে নিয়ে পুরো পুতুল সম্পূর্ণ করা হয়।

রকমারি

সাবেকি পুতুল ছাড়াও আরো নানা রকমের পুতুল তৈরি করা হয়। দু হাতে কেরোসিনের কুপি ধরা পুতুলও করা হয়। মির্জাবাজারে নানা ধরনের পশু পাখি দেওয়া পুতুলও করা হয়।

উল্লেখযোগ্যতা

সুপ্রাচীন কাল থেকেই দীপলক্ষ্মীর উল্লেখ আছে। সংস্কৃত ভাষার নানা পুঁথি পত্রে এর উল্লেখ পাওয়া যায়। জ্যোতিলক্ষ্মী স্তোত্রমে উল্লেখ পাওয়া যায়।

“

জ্যোতিস্স্বরূপিণী মাতা দীপলক্ষ্মী সুমঙ্গলা।
সা মাং পাতু সদা ক্ষেমমঙ্গলপ্রদমাতৃকা॥
-জ্যোতিলক্ষ্মী স্তোত্রম

”