দিনাজপুর জিলা স্কুল
দিনাজপুর জিলা স্কুল দিনাজপুর সহ উত্তরাঞ্চলের জেলার প্রতিটি ছাত্রের একটি স্বপ্নের নাম। এটি দিনাজপুর শহরের সদর হাসপাতাল সংলগ্ন এবং দিনাজপুর পৌরসভার সামনে অবস্থিত।১৮৫৪ সাল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত স্কুলটি সুনামের সাথে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। দিনাজপুর জিলা স্কুল বহু ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। দেশে যতগুলা জিলা স্কুল আছে তার মধ্যে শুধুমাত্র দিনাজপুর জিলা স্কুলেই দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মানচিত্র পাথরের সুচারুকার্যে তৈরি করা হয়েছে। এটি দেশের অন্যতম সেরা বিদ্যালয়। [১]
দিনাজপুর জিলা স্কুল Dinajpur Zilla School | |
---|---|
অবস্থান | |
সদর হাসপাতাল সংলগ্ন, দিনাজপুর ৫২০০ বাংলাদেশ | |
তথ্য | |
বিদ্যালয়ের ধরন | হাই স্কুল |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৮৫৪ খ্রিষ্টাব্দ |
বিদ্যালয় বোর্ড | দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড |
সেশন | জানুয়ারি-ডিসেম্বর |
ইআইআইএন | ১২০৭১৯ |
অধ্যক্ষ | আখতারা পারভীন |
শ্রেণি | ৩য় শ্রেণি - ১০ম শ্রেণি |
শিক্ষার্থী সংখ্যা | প্রায় ১৮০০ জন |
ক্রীড়া | ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবল ইত্যাদি |
ডাকনাম | D.Z.S |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | মো ইকবালুর রহিম |
ওয়েবসাইট | www.dinajpurzillaschool.edu.bd |
ইতিহাস
সম্পাদনাএক সময় এটি এক প্রাচীন রাজাদের কাচারি ছিল। ১৮৪৮ সালে বিজয় চত্রবর্তী নামে এক সমাজসেবক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। পূর্বে বিদ্যালয়টিতে শুধু প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাই দান করা হত। প্রত্যেক জেলায় একটি করে সরকারি বিদ্যালয় থাকা আবশ্যক, ১৮৫৪ সালে জমিদারের পুরাতন কাঁচারীতে সরকারের শিক্ষা সম্প্রসারণ এই নীতির আওতায় মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠদানের কার্যক্রমও শুর হয় এবং জিলা স্কুলের মর্যাদা লাভ করে। ১৮৫২ সালে বিদ্যালয়টি দিনাজপুর শহরের কেন্দ্রস্থলে স্থানান্তরিত করা হয়। এখানে তৃতীয় শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান করা হয়।
১৯৯২ সালে উক্ত ভবনটি ভেঙ্গে নতুন দ্বিতল ভবন নির্মিত হয়। বর্তমানে এটি ত্রিতল বিশিষ্ট ভবন।[২] এখানে অন্যান্য তিনটি তিনতলা ভবন রয়েছে। অডিটোরিয়াম ও শহিদ মিনার রয়েছে। তিনটি দরজা রয়েছে।
শিক্ষা কার্যক্রম
সম্পাদনাসাধারণত স্কুলটি দুই শিফটে পাঠ কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। প্রতিটি শ্রেণিতে প্রতি শিফটে ২টি করে মোট ৪টি শাখা রয়েছে। এখানে ছাত্রদের জন্য লাইব্রেরি আছে। এছাড়াও রয়েছে কমন রুম, যেখানে ইনডোর গেমস এর সুব্যবস্থা রয়েছে। নিজস্ব হোস্টেল রয়েছে যেখানে বিশাল বড় খেলার মাঠ আছে। এছাড়াও এখানে অন্যান্য সহপাঠ কার্যক্রম রয়েছে, যেমন- স্কাউট, বিএনসিসি, ডিবেট, কালচারাল ক্লাব ইত্যাদি। সুবিশাল অডিটোরিয়াম রয়েছে যেখানে প্রায়ই দিনাজপুরের বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। ৬টি সুবিশাল ভবনঘেরা ২টি মাঠ এর স্বনামধন্য এই স্কুলটি দিনাজপুরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত।
ভর্তি তথ্য
সম্পাদনাদিনাজপুর জিলা স্কুলে প্রতি বছর তৃতীয় এবং ষষ্ঠ শ্রেণিতে ছাত্র ভর্তি নেওয়া হয়। প্রতিবছর প্রায় ২০০০ ছাত্রের ভর্তিযুদ্ধে উত্তীর্ণ ২৪০ জনকে ২ শিফটে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি নেওয়া হয়। এছাড়াও ষষ্ঠ শ্রেণিতে প্রতিবছর ২ শিফটে ২৪ জনকে ভর্তি নেওয়া হয়।
ডাক্তার শামসুল আলম স্কলারশিপ
সম্পাদনাপ্রতিবছর দিনাজপুর জিলা স্কুল এবং দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় উভয় স্কুলেরই ৪ শাখার ৪ জন করে মোট ৫৬ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে ডাক্তার শামসুল আলম স্কলারশিপ প্রদান করা হয়। ২০১১ সাল থেকে এই স্কলারশিপ প্রদান করা হচ্ছে।
উল্লেখযোগ্য প্রাক্তন ছাত্র
সম্পাদনাযে সব খ্যাতনামা ব্যক্তি এই বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন, তাদের মধ্যে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হল:
- আইনুন নিশাত - বাংলাদেশী ইমেরিটাস অধ্যাপক, পানি সম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ।
- আলহাজ্ব নিজামউদ্দিন আহমেদ- দক্ষ সংগঠক ও রাজনীতিবীদ। মাহমুদপুর ইউনিয়ন বোর্ডের নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট(১৯৪৩-১৯৫৪) এবং মাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত প্রথম চেয়ারম্যান ( ১৯৫৯-১৯৬৪)। তৎকালীন সময়ের এন্ট্রান্স পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকারী।
- এ. টি. এম. আফজাল - আইনবিদ এবং ৮ম প্রধান বিচারপতি।
- মোহাম্মদ আনোয়ারুল আজিম - শহীদ বুদ্ধিজীবী।
- মোহাম্মদ ফরহাদ - বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি, জাতীয় সংসদের সাবেক সদস্য, বাকশালের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।
- রামপ্রাণ গুপ্ত - বিখ্যাত ঐতিহাসিক ও লেখক।
- সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম - জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ এবং দিনাজপুর সদরের মেয়র(2011-বর্তমান)
চিত্রশালা
সম্পাদনাআরো দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "দিনাজপুর জিলা স্কুল - বাংলাপিডিয়া"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৩-১৮।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০১৪।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- দিনাজপুর জিলা স্কুল - প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট।