মীজানুর রহমান (শিক্ষাবিদ)

বাংলাদেশী শিক্ষাবিদ
(ড. মীজানুর রহমান থেকে পুনর্নির্দেশিত)

মীজানুর রহমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ উপাচার্য।[] ২০১৩ সালের মার্চ মাসে প্রথমবার এবং ২০১৭ সালের মার্চ মাসে দ্বিতীয় বার বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মীজানুর রহমানকে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন। ২০২১ সালের মার্চে উপাচার্য হিসেবে তার দ্বিতীয় মেয়াদ পূর্ণ হয়।[]

অধ্যাপক ড.
মীজানুর রহমান
চতুর্থ উপাচার্য
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
কাজের মেয়াদ
২০১৩ – ২০২১
পূর্বসূরীমেসবাহউদ্দিন আহমেদ
উত্তরসূরীমো. ইমদাদুল হক
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১৯৫৮
কুমিল্লা, বাংলাদেশ
জাতীয়তাবাংলাদেশী
প্রাক্তন শিক্ষার্থীঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাঅধ্যাপক, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসক

জন্ম ও পরিবার

সম্পাদনা

মীজানুর রহমান ১৯৫৮ সালে কুমিল্লার এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পারিবারিক জীবনে মীজানুর রহমানের সহধর্মিনী চিত্রশিল্পী নাজমা আক্তার।

শিক্ষা

সম্পাদনা

১৯৭৩ সালে তিনি বিবির বাজার উচ্চবিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি. এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে ১৯৭৫ সালে এইচ.এস.সি. পাস করে ১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কেটিং বিভাগে ভর্তি হন। একই বিভাগ থেকে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৪ সালে  ‘ব্যবসায় প্রশাসনে’ পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।[]

রাজনীতি

সম্পাদনা

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন তিনি। তিনি একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক।

কর্মজীবন

সম্পাদনা

মীজানুর রহমান ১৯৮২ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতার পেশায় যোগ দেন। ১৯৮৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। ১৯৯৯ সালে মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক পদে নিযুক্ত হন। পরিবর্তিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব পালন করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেছেন। এরমধ্যে শেখ রোরহানুদ্দীন কলেজের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান, আইসিএমএ-বাংলাদেশের কাউন্সিল মেম্বার, ম্যাকসন্স স্পিনিং-এর পরিচালক, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের ফাইন্যান্স কমিটির সদস্য, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন। বর্তমানে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য। আইসিবি’র সাবসিডিয়ারী এএমসিএল ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ইনডিপেন্ডেন্ট পরিচালক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মার্কেটিং বিভাগের এলামনাই এসোসিয়েশন ও মার্কেটার্স ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট। তিনি ভারত, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, রাশিয়া, বুলগেরিয়া, যুক্তরাজ্য, সুইডেন, ডেনমার্ক, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, নেপাল, নরওয়ে, তুরষ্ক, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কাকানাডায় বিভিন্ন সেমিনার-কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেছেন এবং ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে বাংলাদেশ বিষয়ক বিভিন্ন বক্তৃতা প্রদান করেছেন।[]

সমালোচনা

সম্পাদনা

মীজানুর রহমান বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের বর্তমান কমিটির প্রথম প্রেসিডিয়াম সদস্য। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির দায়িত্ব ছেড়ে যুবলীগের কমিটিতে ফিরে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। ১৮ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে যমুনা টেলিভিশনে টকশোতে এ বক্তব্য দেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হয়।[][]

প্রকাশিত বই

সম্পাদনা

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে মীজানুর রহমানের পঁচিশটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৯২ সালে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত হয় তার গবেষণাধর্মী পুস্তক ‘কৃষিপণ্যের বাজারজাতকরণ (দুই খন্ড)’। এছাড়াও তার রচিত ‘বাজার জাতকরণ’, ‘স্নাতক বাজারজাতকরণ’, ‘বাজারজাতকরণ নীতিমালা’ ও ‘বাজারজাতকরণ (সহজ সংস্করণ)’ ইত্যাদি পুস্তক মার্কেটিং ছাত্র-শিক্ষকদের বহুল ব্যবহৃত পাঠ্যবই। রাজনৈতিক বিশ্লেষণধর্মী তার চারটি বই ‘বঙ্গবন্ধু বাঙলি ও বাংলাদেশ’, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও উন্নয়ন ভাবনা’, ‘উত্তরগণতন্ত্র ও লিংকণের পিপল’ ও ‘বঙ্গবন্ধু মহাকালের মহানায়ক’ মুক্তিযুদ্ধ ও সমসাময়িক বিষয়ে তার অনন্য রচনা।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "জবির নয়া ভিসি মীজানুর"banglanews24। ১১ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০১৯ 
  2. "দ্বিতীয় মেয়াদে জবির উপাচার্য মীজানুর রহমান"Khalerkantho.com 
  3. "দ্বিতীয় মেয়াদে জবির ভিসি হলেন মীজানুর রহমান"সমকাল 
  4. "Vice -chancellor,Jagannath  University"jnu.ac.bd 
  5. "যুবলীগের দায়িত্ব পেলে উপাচার্যশিপ ছেড়ে দেব: জবি ভিসি"Jugantor। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৯ 
  6. "উপাচার্যের বাসনাবিলাস"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৯