ডাকাত কালীমন্দির, বাসুদেবপুর

বাসুদেবপুরে অবস্থিত কালীমন্দির

ডাকাত কালীমন্দির পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার মগরার নিকট বাসুদেবপুর গ্রামে অবস্থিত একটি প্রাচীন কালী মন্দির

ডাকাত কালীমন্দির, বাসুদেবপুর
বাসুদেবপুর ডাকাতকালী মন্দির
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিহিন্দুধর্ম
জেলাহুগলি
ঈশ্বরকালী
উৎসবসমূহকালী পূজা
অবস্থান
রাজ্যপশ্চিমবঙ্গ
দেশভারত
ডাকাত কালীমন্দির, বাসুদেবপুর পশ্চিমবঙ্গ-এ অবস্থিত
ডাকাত কালীমন্দির, বাসুদেবপুর
পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান
স্থানাঙ্ক২২°৪৮′৫৫″ উত্তর ৮৮°১৪′৫০″ পূর্ব / ২২.৮১৫২০° উত্তর ৮৮.২৪৭১১° পূর্ব / 22.81520; 88.24711

একচূড়াবিশিষ্ট ডাকাত কালীমন্দির বিখ্যাত রঘু ডাকাতের ভাই বুধো নামক এক ডাকাত প্রতিষ্ঠা করেন। বুধো ডাকাতের প্রতিষ্ঠিত কালীমূর্তিটির বর্তমানে কোন অস্তিত্ব নেই। সাত ফুট উচ্চ বর্তমান বিগ্রহটির পদতলে শায়িত শিব। বুধো ডাকাতের প্রতিষ্ঠিত হলেও এই কালী রঘু ডাকাতের কালী নামে জনপ্রিয় ও সিদ্ধেশ্বরী কালী হিসেবে পূজিতা হন।[১]:৯৭

ইতিহাস

সম্পাদনা

কথিত আছে প্রায় ৫০০ বছর আগে বাগহাটির জয়পুরের বাসিন্দা বিধুভূষণ ঘোষ ও তার ভাই রঘু ঘোষ ঘন জঙ্গলের কালী মূর্তি স্থাপন করে। দিনের বেলায় দুই ভাই দিনমজুরের কাজ করলেও রাতে ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বাড়িতে ডাকাতি করত। ডাকাত দলের ভয়ে দুপুরের পর থেকে এই রাস্তা দিয়ে মানুষ চলাচল করত না। সাধক কবি রামপ্রসাদ সেন কোনও এক সময়ে এই রাস্তা ধরে ত্রিবেণী ফেরিঘাটে ফিরছিলেন। ওই সময়ে রঘু ডাকাতের লোকজন তাকে নরবলি দেওয়ার জন্য ধরে নিয়ে এসে বেঁধে রাখে। রাতে রামপ্রসাদকে বলি দেওয়ার জন্য সমস্ত প্রস্তুতি সেরে ফেলার পর বলি দেওয়ার আগের মুহূর্তে তিনি রঘু ডাকাতকে বলি দেওয়ার আগে মাকে একটি গান শোনানোর আর্জি করেন। সেই আর্জি মেনে রঘু ডাকাত গান শোনানোর অনুমতি দিলে রামপ্রসাদ ‘তিলেক দাঁড়া ওরে শমন বদন ভরে মাকে ডাকি’ বলে একটি গান ধরেন। তারপরেই রঘু ডাকাত বলির হাড়িকাঠে রামপ্রসাদের পরিবর্তে মাকে দেখতে পায়। এরপর থেকে রঘু ডাকাত বলি বন্ধ করে রামপ্রসাদের সেবার ব্যবস্থা করে।[২]

রঘু ডাকাতের আমল থেকেই মন্দিরের পুজো চলছে। মন্দিরে নরবলির প্রথা বহু পূর্বে বন্ধ হয়েছে। তবে এখনও মানত করা ছাগবলি হয়।[৩]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. তিন তীর্থে, শিবশঙ্কর ভারতী, সাহিত্যম্‌, ১৮বি, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিট, কলকাতা-৭৩, প্রথম প্রকাশ- ১৮ই জানুয়ারী, ২০০১
  2. পিনাকী বিশ্বাস (২০২০)। বাংলার ডাকাতকালী, মিথ ও ইতিহাস। কলকাতা: খড়ি প্রকাশনী। পৃষ্ঠা ১১৬, ১১৭। আইএসবিএন 978-81-942305-5-7 
  3. "Raghu Decoit Majesty"। ১৮ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ নভেম্বর ২০১৮