টেলি সামাদ
আবদুস সামাদ (৮ জানুয়ারি ১৯৪৫ – ৬ এপ্রিল ২০১৯) যিনি টেলি সামাদ নামেই অধিক পরিচিত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের শক্তিশালী ও জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা।[১][২] তিনি টেলিভিশন ও মঞ্চ নাটকেও অভিনয় করেছিলেন।[৩] এছাড়াও তিনি গায়ক এবং সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন।[৪][৫]
টেলি সামাদ | |
---|---|
জন্ম | আবদুস সামাদ ৮ জানুয়ারি ১৯৪৫ মুন্সীগঞ্জ, বাংলাদেশ |
মৃত্যু | ৬ এপ্রিল ২০১৯ স্কয়ার হাসপাতাল, ঢাকা | (বয়স ৭৪)
মৃত্যুর কারণ | খাদ্য নালীতে প্রদাহ, ডায়াবেটিস |
সমাধি | নয়াগাঁও, সদর, মুন্সীগঞ্জ, বাংলাদেশ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
শিক্ষা | চারুকলা |
মাতৃশিক্ষায়তন | চারুকলা ইন্সটিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | অভিনেতা, গায়ক, সঙ্গীত পরিচালক |
কর্মজীবন | ১৯৭৩-২০১৫ |
পরিচিতির কারণ | কৌতুক অভিনয় |
আদি নিবাস | মুন্সীগঞ্জ |
সন্তান | সোহেলা সামাদ কাকলী(কন্যা) দিগন্ত সামাদ(পুত্র) |
আত্মীয় | ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ(চাচা) |
পরিবার | আব্দুল হাই (ভাই) |
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনাটেলিসামাদ ১৯৪৫ সালের ৮ জানুয়ারি মুন্সীগঞ্জের (তৎকালীন বিক্রমপুর) সদর উপজেলার নয়াগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[৬] তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা থেকে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করেন। তার বড় ভাই চারুশিল্পী আব্দুল হাই। সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন আহমেদ তার চাচা।[৫] সোহেলা সামাদ কাকলী[৭] ও দিগন্ত সামাদ[৮] নামে তার কন্যা ও পুত্র।
চলচ্চিত্র জীবন
সম্পাদনা'একদিন বিটিভির অনুষ্ঠানের আমন্ত্রিত হই। তখন সেখানে বিটিভির ক্যামেরাম্যান মোস্তফা মামুন বলেন, ‘সামাদ শুন, আজ থেকে তোর নাম টেলি সামাদ। সেই থেকেই আমি আবদুস সামাদ থেকে হয়ে গেলাম টেলি সামাদ।’
—যুগান্তর পত্রিকাকে টেলি সামাদ[৩]
১৯৭৩ সালে ‘কার বউ’ চলচ্চিত্রে কৌতুকাভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন। নয়নমনি ও ‘পায়ে চলার পথ’-এর মত চলচ্চিত্রের মাধ্যমে দর্শকপ্রিয়তা লাভ করেন। ‘মনা পাগলা’ চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিচালনার পাশাপাশি ৫০টির মত চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দেন।[৪] অভিনয়জীবনে চার দশকে ৬০০’র মত চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।[৯]
বাংলাদেশ টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যান মোস্তফা মামুন তার ডাক নাম দিয়েছিলেন টেলিসামাদ। তারপর থেকে তিনি এ নামেই পরিচিত হন।[৩] ২০১৫ সালে তার অভিনীত সর্বশেষ চলচ্চিত্র জিরো ডিগ্রী মুক্তি পায়।[১০]
অসুস্থতা ও মৃত্যু
সম্পাদনা২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে তার বাইপাস সার্জারি করা হয়।[১০] ২০১৮ সালের শেষ দিকে তার রক্তে লোহিত রক্তকণিকার স্বল্পতা দেখা দেয়। এছাড়াও টেলি সামাদের খাদ্য নালীতে সমস্যার পাশাপাশি বুকে সংক্রমণ, ডায়াবেটিস ছিল।[৭] টেলি সামাদ ২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল দুপুরে অসুস্থতাজনিত কারণে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।[১১]
উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র
সম্পাদনা- জিরো ডিগ্রী (২০১৫)
- কুমারী মা (২০১৩)
- সাথী হারা নাগিন (২০১১)
- মায়ের চোখ (২০১০)
- আমার স্বপ্ন আমার সংসার (২০১০)
- রিকসাওয়ালার ছেলে (২০১০)
- মন বসে না পড়ার টেবিলে (২০০৯)
- কাজের মানুষ (২০০৯)
- মায়ের হাতে বেহেস্তের চাবি (২০০৯)
- কে আমি (২০০৯) - হাশেম
- কেয়ামত থেকে কেয়ামত (১৯৯৩)
- মিস লোলিতা (১৯৮৫)
- নতুন বউ (১৯৮৩)
- মাটির ঘর (১৯৭৯)
- নাগরদোলা (১৯৭৯)
- গোলাপী এখন ট্রেনে (১৯৭৮) - বঙ্গা
- অশিক্ষিত (১৯৭৮) - কালা
- জয় পরাজয় (১৯৭৬)
- গুন্ডা (১৯৭৬) - জব্বার
- সুজন সখী (১৯৭৫) - বগা
- চাষীর মেয়ে (১৯৭৫)
- রঙিন রূপবান
- ভাত দে
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "অভিনেতা টেলি সামাদ আর নেই"। চ্যানেল আই। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ "কৌতুক অভিনেতা টেলিসামাদ আর নেই"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ ক খ গ "যেভাবে নামের আগে 'টেলি' যুক্ত হলো সামাদের"। Jugantor। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৫।
- ↑ ক খ "কৌতুক অভিনেতা টেলি সামাদ আর নেই | বিনোদন"। ittefaq। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৫।
- ↑ ক খ "এফডিসিতে অভিনেতা টেলি সামাদের জানাজা সম্পন্ন"। Jugantor। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৫।
- ↑ "অভিনেতা টেলি সামাদ আর নেই"। কালের কণ্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ ক খ "জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা টেলি সামাদ আর নেই"। Jugantor। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-০৬।
- ↑ "প্রথম গান নিয়ে হাজির টেলিসামাদের ছেলে দিগন্ত | Purboposhchimbd"। Purboposchim। ২০১৯-১০-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-২৩।
- ↑ glitz.bdnews24.com কৌতুকের স্থান নিয়েছে ভাঁড়ামো: টেলি সামাদ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৬ জুলাই ২০১৭ তারিখে
- ↑ ক খ "জনপ্রিয় অভিনেতা টেলি সামাদ আর নেই"। বিডিনিউজ২৪। ৬ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ "কাঁদিয়ে চলে গেলেন হাসির রাজা টেলি সামাদ | বাংলাদেশ প্রতিদিন"। Bangladesh Pratidin (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-০৬।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে টেলি সামাদ (ইংরেজি)