জোহরা বেগম কাজী
ডাক্তার জোহরা বেগম কাজী (জন্ম: ১৫ অক্টোবর ১৯১২ - মৃত্যু: ৭ নভেম্বর ২০০৭) প্রথম বাঙালি মুসলিম মহিলা চিকিৎসক ছিলেন।[১]
ডা. জোহরা বেগম কাজী | |
---|---|
জন্ম | ১৫ অক্টোবর ১৯১২ |
মৃত্যু | ৭ নভেম্বর ২০০৭ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশি |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশ |
পেশা | চিকিৎসা |
পরিচিতির কারণ | প্রথম বাঙালি মুসলিম নারী চিকিৎসক |
পুরস্কার | একুশে পদক |
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
সম্পাদনাজোহরা বেগম কাজী ১৯১২ সালের ১৫ অক্টোবর অবিভক্ত ভারতের মধ্য প্রদেশের রাজনান গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ডাক্তার কাজী আব্দুস সাত্তার ও মায়ের নাম মোসাম্মৎ আঞ্জুমান নেসা। তার পৈতৃক নিবাস ছিল বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলার কালকিনি থানার গোপালপুর গ্রামে। তিনি ১৯২৯ সালে আলিগড় মুসলিম মহিলা স্কুল থেকে প্রথম বাঙালি মুসলিম আলিগড়ি-অধ্যেতা হিসাবে এসএসসি পাশ করেন। ২৩ বছর বয়সেই তিনি দিল্লির লেডি হাডিং মেডিক্যাল কলেজ থেকে ১৯৩৫ সালে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে এমবিবিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।[২] এজন্য পুরস্কার হিসেবে পান ভাইসরয় পদক।
কর্মজীবন
সম্পাদনা১৯৩৫ সালে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করার পর জোহরা কাজী কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। তিনি প্রথমে ইয়োথমাল ওমেন্স পাবলিক হাসপাতালে ডাক্তার হিসেবে যোগ দেন। এরপর বিলাসপুর সরকারি হাসপাতালে যোগ দেন। পরবর্তীকালে মানুষের সেবার জন্য মহাত্মা গান্ধী নির্মাণ করেন সেবাগ্রাম৷ এই সেবাগ্রামে অবৈতনিকভাবে কাজ করেন জোহরা। এছাড়াও তিনি ভারতের বিভিন্ন বেসরকারি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে ডাক্তার হিসেবে নিরলসভাবে কাজ করেছেন। বঙ্গভঙ্গের পর তিনি ঢাকায় চলে আসেন। ১৯৪৮ সালে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে যোগ দেন। ঢামেক হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় অবসর সময়ে তিনি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (ঢাকা)-এ সাম্মানিক কর্নেল হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন। মিটফোর্ড মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (বর্তমানে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল) এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের প্রধান ও সাম্মানিক অধ্যাপিকা ছিলেন। ১৯৭৩ সালে চাকরি থেকে অবসর নেবার পর বেশ কিছু বছর হলি ফ্যামিলি রেডক্রিসেন্ট হাসপাতালে পরামর্শক (কনসালট্যান্ট) হিসাবে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। পরবর্তীকালে তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজে সাম্মানিক অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেন।
ঢাকা মেডিকেলে দায়িত্ব পালন করার সময় নারী রোগীদের চিকিৎসা সংক্রান্ত কুসংস্কার তাকে আহত করে। তিনি তাদের সাথে সরাসরি কথা বলে তাদের ভুল ধারণা দূর করার চেষ্টা করতেন। তার কারণে পরবর্তীতে চিকিৎসা শাস্ত্রে এদেশে নারী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বৃদ্ধি পায়।[৩]
পুরস্কার, স্বীকৃতি ও সম্মাননা
সম্পাদনা- তমঘা-ই-পাকিস্তান (১৯৬৪)
- একুশে পদক (২০০৮)
- বেগম রোকেয়া পদক (২০০২)
- ২০২০ সালের ১৫ অক্টোবর তার জন্মদিনে গুগল ডুডল প্রকাশ করে সম্মান প্রদর্শন করে।[৪]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ http://bn.banglapedia.org/index.php?title=%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A7%80,_%E0%A6%9C%E0%A7%8B%E0%A6%B9%E0%A6%B0%E0%A6%BE_%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%97%E0%A6%AE
- ↑ শাহলা খাতুন। "আমার প্রিয় শিক্ষক"। দৈনিক প্রথম আলো। ২০২০-০৮-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০১-০৩।
- ↑ মুহাম্মাদ মুরাদ লতিফ। "A tribute to Dr Zohra Kazi"। দ্য ডেইলি স্টার।
- ↑ "গুগল ডুডলে বাঙালির প্রথম মুসলমান নারী চিকিৎসক জোহরা বেগম কাজী"। চ্যানেল আই। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০২০।