জিঞ্জার রজার্স

মার্কিন অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী

জিঞ্জার রজার্স (ইংরেজি: Ginger Rogers) নামে পরিচিতি ভার্জিনিয়া ক্যাথরিন ম্যাকম্যাথ (ইংরেজি: Virginia Katherine McMath; ১৬ই জুলাই ১৯১১ - ২৫শে এপ্রিল ১৯৯৫) ছিলেন একজন মার্কিন অভিনেত্রী, নৃত্যশিল্পী ও গায়িকা। তিনি ফ্রেড অ্যাস্টেয়ারের সাথে আরকেওর সঙ্গীতধর্মী চলচ্চিত্রসমূহে অভিনয়ের জন্য সর্বাধিক পরিচিত। তিনি বিংশ শতাব্দী জুড়ে মঞ্চ, টেলিভিশন ও বেতারে কাজ করেছেন।

জিঞ্জার রজার্স
Ginger Rogers
১৯৪১ সালে রজার্স
জন্ম
ভার্জিনিয়া ক্যাথরিন ম্যাকম্যাথ

(১৯১১-০৭-১৬)১৬ জুলাই ১৯১১
মৃত্যু২৫ এপ্রিল ১৯৯৫(1995-04-25) (বয়স ৮৩)
র‍্যাঞ্চো মিরেজ, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
সমাধিওকউড মেমোরিয়াল পার্ক সিমেট্রি, চ্যাটসওর্থ, ক্যালিফোর্নিয়া
পেশাঅভিনেত্রী, নৃত্যশিল্পী, গায়িকা
কর্মজীবন১৯২৫–১৯৮৭
দাম্পত্য সঙ্গী

মিজুরির ইন্ডিপেন্ডেন্সে জন্ম নেওয়া ও কানসাস সিটিতে বেড়ে ওঠা রজার্স পরবর্তীতে স্বপরিবারে টেক্সাসের ফোর্ট ওর্থে চলে যান। ১৯২৫ সালে চার্লস্টন নৃত্য প্রতিযোগিতা জয়ের পর তিনি ভডেভিলে তার কর্মজীবন শুরু করেন এবং ব্রডওয়েতে তার প্রথম মঞ্চনাটক গার্ল ক্রেজি দিয়ে খ্যাতি অর্জন করেন। এই সাফল্যের ফলে প্যারামাউন্ট পিকচার্স তার সাথে পাঁচ বছরের চুক্তি করে। রজার্সের প্রথম সফল চলচ্চিত্র ভূমিকা ছিল ফোর্টি সেকেন্ড স্ট্রিট (১৯৩৩) চলচ্চিত্রে পার্শ্ব ভূমিকায় অভিনয়। ১৯৩০-এর দশকে তিনি আস্টাইয়ারের বিপরীতে ১০টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন এবং এর মধ্যে সুইং টাইম (১৯৩৬) ও টপ হ্যাট (১৯৩৫) ব্যাপক সফলতা পায়। আস্টাইয়ারের বিপরীতে দুটি চলচ্চিত্র বাণিজ্যিকভাবে ব্যর্থ হলে তিনি নাট্যধর্মী ও হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন। সমালোচক ও দর্শকেরা তার অভিনয়ের প্রশংসা করেন এবং তিনি ১৯৪০-এর দশকের অন্যতম বক্স অফিস তারকা হয়ে ওঠেন। ১৯৪০ সালে কিটি ফয়েল চলচ্চিত্রে তার অভিনয় তাকে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জন্য একাডেমি পুরস্কার পাইয়ে দেয়।[]

রজার্স ১৯৪০-এর দশক জুড়ে সফল ছিলেন এবং এক পর্যায়ে তিনি হলিউডের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক প্রাপ্ত অভিনেত্রী হয়ে ওঠেন। এই দশকে শেষের দিকে তার জনপ্রিয়তা আরও বৃদ্ধি পায়। ১৯৪৯ সালে তিনি পুনরায় আস্টাইয়ারের বিপরীতে দ্য বার্কলিস অব ব্রডওয়ে ছবিতে কাজ করেন এবং ছবিটি ব্যবসাসফল হয়। ১৯৫০-এর দশকে তার কর্মজীবন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয় এবং ১৯৬৫ সালে তিনি ব্রডওয়ে ফিরে যান ও হেলো! ডলি! মঞ্চনাটকে অভিনয় করে সফল হন। এই সাফল্যের পর তিনি আরও কয়েকটি মঞ্চনাটকে কেন্দ্রীয় ভূমিকায় কাজ করেন এবং ১৯৮৫ সালে অফ-ব্রডওয়েতে বেবস ইন আর্মস মঞ্চনাটক দিয়ে তার নাট্য পরিচালনায় অভিষেক হয়। ১৯৮৭ সালে টেলিভিশন পর্দায় কাজ শুরু করেন। ১৯৯২ সালে তাকে কেনেডি সেন্টার সম্মাননা প্রদান করা হয়। ১৯৯৫ সালে তিনি ৮৩ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।[]

প্রারম্ভিক জীবন

সম্পাদনা
 
জিঞ্জার রজার্সের জন্মস্থান, ১০০ মুর স্ট্রিট, ইন্ডিপেন্ডেন্স, মিজুরি

রজার্স ১৯১১ সালের ১৬ই জুলাই মিজুরি অঙ্গরাজ্যের ইন্ডিপেন্ডেন্স শহরের ১০০ মুর স্ট্রিটে জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্মনাম ভার্জিনিয়া ক্যাথরিন ম্যাকম্যাথ।[] তার পিতা উইলিয়াম এডিনস ম্যাকম্যাথ (১৮৮০-১৯২৫) ছিলেনে একজন তড়িৎ প্রকৌশলী এবং মাতা লেলা ইমোজিন (জন্মনাম: ওয়েন্স, ১৮৯১-১৯৭৭)।[] তার পূর্বপুরুষগণ স্কটিশ, ওয়েলশ ও ইংরেজ ছিলেন। তিনি তার পিতামাতা একমাত্র জীবিত সন্তান ছিলেন। তার মাতা চান নি যে তিনি হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করুক, কারণ তার পূর্বের একটি সন্তান হাসপাতালে মারা যান।[] তার জন্মের অল্প কিছুদিনের মধ্যে তার পিতামাতা আলাদা হয়ে যান।[] তার নানা-নানী ওয়াল্টার উইফেল্ড ওয়েন্স উইলমা স্যাফ্রোনা (জন্মনাম: বল) তাদের নিকটবর্তী কানসাস সিটিতে বসবাস করতেন।[] তার পিতা ম্যাকম্যাথ কয়েকবার পুনরায় পরিবারে ফিরে আসার চেষ্টা করেন, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে তিনি দুইবার তার মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যান।[] রজার্স বলেন, তিনি তার পিতাকে কখনো স্বাভাবিক হতে দেখেন নি।[] তার মাতা কিছুদিন পরে তাকে তালাক দেন।

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. অলিভার, মির্না (২৬ এপ্রিল ১৯৯৫)। "From the Archives: Movie Great Ginger Rogers Dies at 83 – LA Times"লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৫ এপ্রিল ২০১৮ 
  2. রজার্স (১৯৯১), পৃ. ১, ২।
  3. রজার্স (১৯৯১), পৃ. ৯, ১০, ১৬।
  4. রজার্স (১৯৯১), পৃ. ১১।
  5. রজার্স (১৯৯১), পৃ. ১, ২, ১১।
  6. রজার্স (১৯৯১), পৃ. ৩।
  7. রজার্স (১৯৯১), পৃ. ৭, ১৫।
  8. রজার্স (১৯৯১), পৃ. ১৫।

গ্রন্থপঞ্জি

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা