গাণিতিক পদার্থবিজ্ঞান

(গাণিতিক পদার্থবিদ্যা থেকে পুনর্নির্দেশিত)

গাণিতিক পদার্থবিজ্ঞান বলতে পদার্থবিজ্ঞানের সমস্যা সমাধানের জন্য গাণিতিক পদ্ধতির প্রয়োগকে বোঝায়। গাণিতিক পদার্থবিদ্যা জার্নাল (The Journal of Mathematical Physics) অনুযায়ী বিজ্ঞানের এ শাখার সংজ্ঞা এরকম: "পদার্থবিজ্ঞানের সমস্যায় গণিতবিদ্যার প্রয়োগ এবং এধরণের প্রয়োগের ও পদার্থবিজ্ঞানের তত্ত্ব প্রস্তুতের উপযুক্ত গাণিতিক প্রণালী গঠন করা"। [] এটি ফলিত গণিত এর একটি শাখা, তবে পদার্থবৈজ্ঞানিক সমস্যাগুলির সাথে বিশেষভাবে সংশ্লিষ্ট।

গাণিতিক পদার্থবিজ্ঞানের একটি উদাহরণ: কোয়ান্টাম ছন্দিত স্পন্দন (বামে) এবং সংশ্লিষ্ট বিস্তারের (ডানে) জন্য শ্রোডিঙ্গারের সমীকরণের সমাধান।

ব্যাপ্তি

সম্পাদনা

গাণিতিক পদার্থবিদ্যার বিভিন্ন স্বতন্ত্র শাখা আছে, যারা নির্দিষ্ট ঐতিহাসিক সময়কালের সাথে অনেকটাই সামঞ্জস্যপূর্ণ।

চিরায়ত বলবিদ্যা

সম্পাদনা

নিউটনীয় বলবিদ্যার কঠোর, বিমূর্ত এবং উৎকর্ষিত সংস্কারণ নানান সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও লাগ্রাঞ্জীয় বলবিদ্যা এবং হ্যামিলটনীয় বলবিদ্যায় গৃহীত হয়েছে। উভয় সংষ্করণ আবার বিশ্লেষণাত্মক বলবিদ্যার মধ্যে নিহিত। এর ফলাফল বহুমুখী। যেমন, এটি বেগবান বিবর্তনকালে প্রতিসাম্য[স্পষ্টকরণ প্রয়োজন] এবং সংরক্ষিত রাশির মধ্যে নিবিড় সংযোগের প্রতি নির্দেশ করে, যা নোথারের উপপাদ্যের সবচেয়ে প্রাথমিক মূল্যায়নের মধ্যে উল্লেখ করা আছে। এই পদ্ধতি এবং ধারণাগুলো পদার্থবিজ্ঞানের অন্যান্য ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা হয়েছে, যেমন পরিসংখ্যানিক বলবিদ্যা, সন্ততি বলবিদ্যা, চিরায়ত ক্ষেত্র তত্ত্ব এবং কোয়ান্টাম ক্ষেত্র তত্ত্ব। এছাড়াও, অন্তরজ জ্যামিতির কিছু মৌলিক ধারণা এবং উদারহণ এই গবেষণা থেকেই উদ্ভূত (যেমন, ভেক্টর বান্ডল তত্ত্ব এবং সিম্প্লেকটিক জ্যামিতির কিছু ধারণা)।

আংশিক অন্তরক সমীকরণ

সম্পাদনা

আংশিক অন্তরক সমীকরণ তত্ত্ব (এবং সম্পর্কিত বিষয়সমূহ চলক ক্যালকুলাস, ফুরিয়ে বিশ্লেষণ, বিভব তত্ত্ব, এবং ভেক্টর বিশ্লেষণ) সম্ভবত গাণিতিক পদার্থবিদ্যার সঙ্গে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। এই বিষয়গুলোর তীব্র বিকাশ ঘটতে শুরু হয় ১৮ শতকের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে ১৯৩০ অবধি, দালেম্ব্য , লেওনার্দ অয়লার, এবং লাগ্রাঞ্জের হাত ধরে। পদার্থবিজ্ঞানে এর বাস্তবিক প্রয়োগের মধ্যে রয়েছে তরল গতিবিদ্যা, জ্যোতির্গতিবিদ্যা, সন্ততি গতিবিদ্যা, স্থিতিস্থাপকতা তত্ত্ব, শব্দবিজ্ঞান, তাপগতিবিদ্যা, তড়িৎবিজ্ঞান, চৌম্বকবিদ্যা, এবং বায়ুগতিবিদ্যা

কোয়ান্টাম তত্ত্ব

সম্পাদনা

পারমাণবিক বর্ণালীবীক্ষণ তত্ত্ব (এবং পরে, কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান) এর প্রায় সমসাময়িক কালে বিকাশ লাভ করে রৈখিক বীজগণিত, অপারেটরের বর্ণালী তত্ত্ব, অপারেটর বীজগণিত এবং ফাংশনাল বিশ্লেষণ, ইত্যাদি গাণিতিক তত্ত্ব। অনাপেক্ষিক কোয়ান্টাম বলবিদ্যা শ্রোডিঙার অপারেটর এর ধারক, এবং পারমাণবিক এবং আণবিক পদার্থবিদ্যার সঙ্গে সম্পর্কিত। এছাড়া কোয়ান্টাম তথ্য তত্ত্বও এর একটি বিশেষায়ন।

আপেক্ষিকতা এবং কোয়ান্টাম আপেক্ষিক তত্ত্ব

সম্পাদনা

বিশেষ আপেক্ষিকতা এবং সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বে একটি ভিন্ন ধরনের গণিতের প্রয়োজন দেখা দেয়। এর প্রভাবে উদ্ভাবিত হয় গ্রুপ তত্ত্ব, যা কোয়ান্টাম ফিল্ড তত্ত্ব এবং অন্তরজ জ্যামিতি উভয় ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। তবে এটি ধীরে ধীরে মহাজাগতিক এবং কোয়ান্টাম ক্ষেত্র তত্ত্বের টপোগাণিতিক এবং ফাংশনাল গাণিতিক বিশ্লেষণ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছে। এক্ষেত্রে সমসংস্থায়ী বীজগণিত এবং ক্যাটাগরি তত্ত্বও গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।

পরিসংখ্যানিক বলবিদ্যা

সম্পাদনা

পরিসংখ্যানিক বলবিদ্যা একটি পৃথক গবেষণাক্ষেত্র হিসেবে বিকশিত হয়েছে, এবং অবস্থা (phase) পরিবর্তন তত্ত্বও এর অন্তর্ভুক্ত। এটি হ্যামিল্টনীয় বলবিদ্যা বা এর কোয়ান্টাম সংস্করণের উপর নির্ভর করে এবং এটি আরও গাণিতিক কার্যপথ (ergodic) তত্ত্ব এবং সম্ভাব্যতা তত্ত্বের অংশবিশেষের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। পরিসংখ্যানিক বলবিদ্যার আলোচনায় গুচ্ছ-বিন্যাসতত্ত্ব এবং পদার্থবিজ্ঞানের পারস্পরিক ক্রিয়া ক্রমবর্ধমান।

প্রয়োগ

সম্পাদনা
 

"গাণিতিক পদার্থবিদ্যা" শব্দটির প্রয়োগ কখনও কখনও খেয়ালী হয়ে প্রতীয়মান হয়। যেমন গণিতের কিছু বিষয়াবলী পদার্থবিজ্ঞানের গবেষণা থেকে উদ্ভূত, তবুও তা গাণিতিক পদার্থবিজ্ঞানের অংশ হিসাবে বিবেচিত হয় না, অন্যান্য বিষয়াবলী আবার ঘনিষ্ঠভাবে পদার্থবিদ্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, সাধারণ অন্তরজ সমীকরণ এবং সিম্প্লেক্টিক জ্যামিতি সাধারণত বিশুদ্ধ গাণিতিক শৃঙ্খলা হিসাবে স্বীকৃত, যেখানে ডাইনামিক্যাল সিস্টেম এবং হ্যামিল্টনীয় বলবিদ্যা গাণিতিক পদার্থবিজ্ঞানের অন্তর্গত। জন হেরাপথ তার ১৮৪৭ সালে লিখিত "প্রাকৃতিক দর্শনশাস্ত্রের গাণিতিক নীতি" শিরোনামের নিবন্ধে তংকালীন গাণিতিক পদার্থবিদ্যাকে বর্ণনা করেছেন এভাবে: "তাপ, গ্যাসীয় স্থিতিস্থাপকতা, মহাকর্ষ, এবং প্রকৃতির অন্যান্য দুর্দান্ত ঘটনার কার্যকারণ"। []

গাণিতিক বনাম তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যা

সম্পাদনা

কখনও কখনও পদার্থবিজ্ঞান বা চিন্তা পরীক্ষার দ্বারা অনুপ্রাণিত সমস্যাগুলি অধ্যয়ন এবং সমাধান করার লক্ষ্যে গাণিতিক কাঠামোগত গবেষণাকে নির্দেশ করতে "গাণিতিক পদার্থবিদ্যা" শব্দ ব্যবহার করা হয়। এই অর্থে, গাণিতিক পদার্থবিজ্ঞান শাখাটি বিস্তীর্ণ একাডেমিক অঞ্চলককে আশ্রয় দেয়, যা কেবল বিশুদ্ধ গণিত এবং পদার্থবিজ্ঞানের সংমিশ্রণ দ্বারা চিহ্নিত। যদিও তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যার সঙ্গে সম্পর্কিত[] হলেও, গাণিতিক পদার্থবিদ্যায় গাণিতিক কঠোরতা উপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করা হয়।

অন্য দিকে, তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান পর্যবেক্ষণ এবং পরীক্ষামূলক পদার্থবিজ্ঞানের আন্ত:সম্পর্কের ওপর জোর দেয়, যার জন্য তাত্ত্বিক পদার্থবিদদের (এবং আরও সাধারণ অর্থে গাণিতিক পদার্থবিদদের) প্রায়শই হিউরিস্টিক, স্বজ্ঞাত এবং আনুমানিক যুক্তির সাহায্য নিতে হয়[]। বিশুদ্ধ গণিতবিদগণ এই ধরনের যুক্তিতে শক্ত গাণিতিক ভিত্তি দেখেন না, যদিও এ ধরনের মনোভাব সময়ের সাথে পরিবর্তিত হচ্ছে।

এ গোত্রের গাণিতিক পদার্থবিদগণ মূলত পদার্থবিদ্যার তত্ত্বসমূহের সম্প্রসার এবং সরলীকরণ করে থাকেন। এই গবেষকেরা প্রায়ই তাত্ত্বিক পদার্থবিদদের সমাধানকৃত বলে গণিত সমস্যার মোকাবিলা করেন। তারা কখনও কখনও প্রমাণ করতে সক্ষম হন যে পূর্বের সমাধানটি অসম্পূর্ণ, ত্রুটিপূর্ণ বা সাদাসিধা ছিল। এধরনের গবেষণার একটি উদাহরণ হল, পরিসংখ্যানিক বলবিদ্যা থেকে তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্র প্রমাণ করার প্রচেষ্টা। অন্যান্য উদাহরণের মধ্যে রয়েছে বিশেষ এবং সাধারণ আপেক্ষিকতার ভিতর সামঞ্জস্যসাধনকারী প্রণালীর সূক্ষ্ম বিষয়য়াবলীর গবেষণা (যেমন সাগনাক প্রভাব এবং আইনস্টাইন সিঙ্ক্রোনাইজেশন)।

পদার্থবিদ্যার তত্ত্বে গাণিতিক কঠোরতাআনয়নের প্রচেষ্টা বহু গাণিতিক উৎকর্ষের জন্ম দিয়েছে। যেমন, কোয়ান্টাম বলবিদ্যা এবং ফাংশনাল বিশ্লেষণের বিকাশ বিভিন্ন দিক দিয়ে প্রায় অনুরূপভাবে অগ্রসর হয়েছে। আবার কোয়ান্টাম বলবিদ্যা, কোয়ান্টাম ফিল্ড তত্ত্ব, এবং কোয়ান্টাম পরিসংখ্যানিক বলবিদ্যার গাণিতিক গবেষণা অপারেটর বীজগণিতে প্রগতিসাধনকারী ফলাফল এনেছে। নির্ভুল কোয়ান্টাম ফিল্ড তত্ত্ব গঠনের প্রচেষ্টা থেকে উপস্থাপনা তত্ত্বের মত ক্ষেত্রগুলিতে অগ্রগতি এসেছে। জ্যামিতিক এবং টপোলজির ব্যবহার স্ট্রিং তত্ত্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বিশিষ্ট গণিতপদার্থবিদগণ

সম্পাদনা

নিউটন-পূর্ববর্তী

সম্পাদনা

গাণিতিক পদার্থবিজ্ঞানের শিকড়ের সন্ধান পাওয়া যায় আর্কিমিডিস (গ্রীস), টলেমি (মিশর), আলহাজেন (ইরাক) ও আল-বিরুনীর (পারস্য) গবেষণার মধ্যে।

১৬ শতকের প্রথম দশকে শখের জ্যোতির্বিদ নিকোলাস কোপারনিকাস সৌরকেন্দ্রিক মতবাদ এর প্রস্তাবনা গঠন করেন, এবং ১৫৪৩ সালে এই বিষয়ে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেন। তিনি টলেমীর মহাবিশ্ব মডেলের ভিত্তি করেই তার তত্ত্বটি গঠন করেন, এবং এর উদ্দেশ্য ছিল কেবল মডেলটির সরলীরকণ করে জ্যোতির্বিদ্যা প্রক্রিয়া সহজ করার প্রচেষ্টা। টলেমীয় মডেলে গ্রহসমূগহের গতিপথের গঠনের মূল উপাদান ছিল বৃত্ত এবং বৃত্তাস্থিত বৃত্ত। অ্যারিস্টটলীয় দর্শন অনুযায়ী বৃত্ত হল জ্যামিতিক গতিপথের সবচেয়ে নিখুঁত রূপ, এবং অ্যারিস্টটলের দর্শনে মহাজগতের পঞ্চম উপাদান —ইথার বা বিশুদ্ধ বায়ু —এর অন্তর্নিহিত গতিপথও ছিল বৃত্তাকার। জোহানেস কেপলার [১৫৭১-১৬৩০], যিনি ছিলেন টাইকো ব্রাহের সহকারী, কোপার্নিকাসের বিবৃত কক্ষপথকে সংশোধন করে উপবৃত্তাকার করেন, এবং গ্রহীয় গতিসূত্রের সমীকরণগুলি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রণয়ন করেন।

উৎসাহী পরমাণুবিদ গ্যালিলিও গ্যালিলেই তার ১৬২৩ সালে লিখিত দ্য অ্যাসাইয়ার গ্রন্থে দাবি করেন যে প্রকৃতির বিধিসমূহ গণিতের ভিত্তিতে গঠিত[]। ১৬৩২ সালের লিখিত আর একটি গ্রন্থে তিনি তার টেলিস্কোপিক পর্যবেক্ষণ সংকলন করেন, যা সৌরকেন্দ্রিকতাকে সমর্থন দেয়[]। পর্যবেক্ষমূলক জ্ঞানচর্চা প্রবর্তন করার পর তিনি এরিস্টটলীয় পৃথিবীকেন্দ্রিক মহাবিশ্বতত্ত্বকে অস্বীকার করেন। গ্যালিলিওর ১৬৩৮ সালের গ্রন্থ দুটি নতুন বিজ্ঞানের আলোচনা (Discourse on Two New Sciences) সমগতিতে পতনের সূত্র এবং জড়তার মূলনীতি প্রতিষ্ঠা করে, যা বর্তমানে চিরায়ত বলবিদ্যার মৌলিক ধারণার অন্যতম বলে স্বীকৃত[]

র‍্যনে দেকার্ত গ্যালিলিওর প্রণীত নীতিগুলোর সাহায্যে কার্তেসীয় পদার্থবিজ্ঞান এর সূচনা করেন, যা একটি পরিপূর্ণ সৌরকেন্দ্রিক মহাজাগতিক মডেল গঠন করেন। কার্তেসীয় তত্ত্বের ব্যাপক স্বীকৃতি এরিস্টটলীয় পদার্থবিজ্ঞানের মৃত্যু ডেকে আনে। দেকার্ত বিজ্ঞানচর্চায় গাণিতিক যুক্তি প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন, এবং এ প্রচেষ্টাকালে জ্যামিতিকভাবে ত্রিমাত্রিক অবস্থান এবং সরণ নির্ণয়ের জন্য কার্তেসীয় স্থানাঙ্ক ব্যবস্থা উদ্ভাবন করেন। []

ক্রিস্টিয়ান হাইগেনস সর্বপ্রথম পদার্থবিজ্ঞানের বিধি বর্ণনা করার জন্য গাণিতিক সূত্র প্রয়োগ করেছিলেন এবং এ কারণে হাইগেনসকে প্রথম তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী এবং গণিত-পদার্থবিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। [][]

নিউটনীয় এবং নিউটন-পরবর্তী

সম্পাদনা

আইজাক নিউটন (১৬৪২-১৭২৭) পদার্থবিজ্ঞানের সমস্যা সমাধানের জন্য ক্যালকুলাস সহ কয়েকটি সাংখ্যিক বিশ্লেষণ (যেমন নিউটনের পদ্ধতি) কৌশলের সমন্বয়ে নতুন গণিত রচনা করেন। ১৬৮৭ সালে প্রকাশিত নিউটনের গতি তত্ত্ব, পরম স্থান কাঠামোয় তিনটি গতি সূত্রের মাধ্যমে সার্বজনীন মহাকর্ষ বিধান প্রণয়ন করে। পরম স্থান হল সবদিকে অসীম পর্যন্ত বিস্তৃত ইউক্লিডীয় জ্যামিতিক তল। এছাড়া এই তত্ত্বে পরম সময় ধারনাটিও স্বীকৃত ছিল, যা পরম স্থানের সাপেক্ষে যেকোন বস্তুর বেগ তথা পরম বেগ নির্ণয়ের সামর্থ্য দেয়। সার্বজনীন গতিসূ্ত্রে নিউটন গাণিতিক শক্ত ভিত্তির ওপর কেপলারের গ্রহীয় গতিসূত্র এবং গ্যালিলীয় গতিসূত্রের সমন্বয় সাধন করেন, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে তার সূত্রে স্থিতিশীলতা ছিল না। [১০]

আঠারো শতকের মধ্যে সুইস গবেষক দানিয়েল বার্নুয়ি (১৭০০-১৭৮২) তরল গতিবিদ্যা, এবং কম্পনশীল স্ট্রিং নিয়ে কাজ করেন। লেওনার্ড অয়লার (১৭০৭-১৭৮৩) পরিবর্তনীয় ক্যালকুলাস, গতিবিদ্যা, তরল গতিবিদ্যা, এবং অন্যান্য এলাকায় বিশেষ ভুমিকা রাখেন। ইতালীয় বংশোদ্ভূত ফরাসি গবেষক জোসেফ-লুই লাগ্রাঞ্জ (১৭৩৬-১৮১৩) বিশ্লেষণাত্মক বলবিদ্যা নিয়ে উল্লেখযোগ্য কাজ করেন। তিনি লাগ্রাঞ্জীয় বলবিদ্যা এবং পরিবর্তনীয় পদ্ধতি প্রণয়ন করেন। আইরিশ পদার্থবিজ্ঞানী, জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং গণিতবিদ, উইলিয়াম রোয়ান হ্যামিল্টন (১৮০৫-১৮৬৫) বিশ্লেষণাত্মক গতিবিদ্যায় হ্যামিল্টনীয় গতিবিদ্যা নামক শাখা গঠনে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। হ্যামিল্টনীয় গতিবিদ্যা বিভিন্ন আধুনিক পদার্থ তত্ত্বের (যেমন কোয়ান্টাম গতিবিদ্যা এবং ক্ষেত্র তত্ত্ব) সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ফরাসি গণিত-পদার্থবিজ্ঞানী জোসেফ ফুরিয়ে (১৭৬৮-১৮৩০) তাপীয় সমীকরণ সমাধানের জন্য ফুরিয়ে সিরিজ প্রবর্তন করেছিলেন, যার থেকে আংশিক অন্তরজ সমীকরণ সমাধানের জন্য একটি বহুলব্যবহৃত পদ্ধতির উদ্ভাবন হয়।

উনিশ শতকের প্রথম দিকে, ফরাসি গবেষক পিয়ের সিমোঁ লাপ্লাস (১৭৪৯-১৮২৭) গাণিতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান, সম্ভাব্যতা ক্ষেত্র তত্ত্ব এবং বিভব তত্ত্বের সর্বাধিক অবদান রাখেন। সিমেওঁ দ্যনি পোয়াসোঁ (১৭৮১-১৮৪০) বিশ্লেষণাত্মক বলবিদ্যা এবং বিভব তত্ত্বের ওপর কাজ করেছেন। জার্মানিতে কার্ল ফ্রিড‌রিশ গাউস (১৭৭৭-১৮৫৫) তড়িৎ, চুম্বকত্ব, বলবিদ্যা এবং তরল গতিবিদ্যার তাত্ত্বিক ভিত্তিতে অবদান রাখেন। ইংল্যান্ডে জর্জ গ্রীন (১৭৯৩-১৮৪১) ১৮২৮ সালে বিদ্যুৎ ও চুম্বকত্ব তত্ত্বের গাণিতিক বিশ্লেষণের প্রয়োগের উপর একটি রচনা প্রকাশ করেন, যা গণিতে উল্লেখযোগ্য অবদান ছাড়াও তড়িৎ ও চুম্বকত্ব গবেষণার গাণিতিক ভিত্তি স্থাপন ও অগ্রসর করেছিল।

নিউটন কর্তৃক আলোর কণা তত্ত্ব প্রকাশের কয়েক দশক আগে ডাচ বিজ্ঞানী ক্রিস্টিয়ান হাইগেনস (১৬২৯-১৬৯৫) ১৬৯০ সালে আলোর তরঙ্গ তত্ত্ব উপস্থাপন করেন। ১৮০৪ সালে থমাস ইয়াংয়ের ডাবল-স্লিট পরীক্ষার ফলাফল তরঙ্গাকার আলোর পক্ষে সমর্থন দেয়, ফলে হাইগেনসের আলোক তরঙ্গ তত্ত্ব এবং আলোকিত এথারের স্পন্দনের মাধ্যমে আলোক প্রবাহের প্রস্তাবনা বৈজ্ঞানিক মহলে গৃহীত হয়। জিন-অগাস্টিন ফ্রেসেল এথারের এই কম্পনের মডেল গঠন করেছিলেন। মাইকেল ফ্যারাডে ক্ষেত্র তাত্ত্বিক ধারণাটি উপস্থাপন করেছিলেন। উনিশ শতকের মাঝামাঝি স্কটিশ জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল (১৮৩১-১৮৭৯) তার তড়িৎচৌম্বক ক্ষেত্র তত্ত্বে বিদ্যুৎ এবং চুম্বকত্বকে সমন্বিত করেন। তার এই তত্ত্বকে অন্যান্য গবেষকরা চারটি সমীকরণে সংকলিত করেন। প্রাথমিকভাবে আলোকবিদ্যা ম্যাক্সওয়েল এর ক্ষেত্র অনুসারী বলে স্বীকৃত ছিল[স্পষ্টকরণ প্রয়োজন]। পরবর্তীতে বিকিরণ এবং তড়িৎচৌম্বক বর্ণালীও এই তড়িৎচৌম্বক ক্ষেত্র সমর্থনকারী প্রতীয়মান হয়েছে।

ইংরেজ পদার্থবিজ্ঞানী লর্ড রেলি (১৮৪২-১৯১৯) শব্দের ওপর গবেষণা করেছিলেন। উইলিয়াম রোয়ান হ্যামিল্টন, জর্জ গ্যাব্রিয়েল স্টোকস (১৮১৯-১৯০৩) এবং লর্ড কেলভিন (১৮২৪-১৯০৭) বেশ কয়েকটি প্রধান উল্লেখযোগ্য অবদান প্রণয়ন করেন: স্টোকস আলোকবিজ্ঞান এবং তরল গতিবিদ্যার গবেষণায় নেতৃস্থানীয় ছিলেন; কেলভিন তাপগতিবিজ্ঞান বিষয়ে সারগর্ভ আবিষ্কার করেছেন; হ্যামিল্টন বিশ্লেষণাত্মক বলবিদ্যার গুরুত্বপূর্ণ শাখা হ্যামিলটনীয় মেকানিক্স এর পত্তন করেছেন (তার কাজে উল্লেখ্য অবদান রেখেছেন তার জার্মান সহকর্মী কার্ল গুস্তাফ ইয়াকপ ইয়াকবি (১৮০৪-১৮৫১), বিশেষত ক্যানোনিক্যাল রূপান্তরের প্রসঙ্গে)। জার্মান হারমান ভন হেলমহোল্টজ (১৮২১-১৮৯৪) তড়িচ্চুম্বকীয় বল, তরঙ্গ, প্রবাহী পদার্থ এবং শব্দের পরীক্ষানিরীক্ষায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জোসিয়াহ উইলার্ড গিবস (১৮৩৯-১৯০৩) এর অগ্রগণ্য কাজ পরিসংখ্যানিক বলবিদ্যার ভিত্তি হয়ে ওঠে। জার্মান লুডভিগ বোলৎসমান (১৮৪৪-১৯০৬) এই ক্ষেত্রে মৌলিক তাত্ত্বিক ফলাফল অর্জন করেছিলেন।

এই গবেষকবর্গের অবদান একত্রে তড়িৎচুম্বক তত্ত্ব, তরল গতিবিদ্যা, এবং পরিসংখ্যানিক বলবিদ্যার ভিত্তি স্থাপন করেছে, এবং প্রচুর অগ্রগতি সাধন করেছে।

আপেক্ষিকতা

সম্পাদনা

১৮৮০ দশক মোতাবেক, একটি স্পষ্ট প্যারাডক্স বিদ্যমান ছিল যে, ম্যাক্সওয়েলের তড়িৎচৌম্বক ক্ষেত্রের অন্তর্গত একজন পর্যবেক্ষক ক্ষেত্রটি পরিমাপে সর্বদা নির্দিষ্ট মান লাভ করেন, ক্ষেত্রস্থিত অন্যান্য বস্তুর তুলনায় পর্যবেক্ষকের আপেক্ষিক গতি ভিন্ন হলেও। তড়িৎচৌম্বক ক্ষেত্রের সাপেক্ষে পর্যবেক্ষকের গতি ক্ষয় হত, কিন্তু ক্ষেত্রস্থিত অন্য বস্তুর সাপেক্ষে তার গতি সংরক্ষিত থাকত। এই আপাত প্যারাডক্ষ সত্ত্বেও বস্তুসমূহের বাস্তবিক মিথষ্ক্রিয়া কোন বিধিবিঘ্নতা প্রদর্শন করে না। ম্যাক্সওয়েলের তড়িৎচৌম্বক ক্ষেত্রের মডেলটি এথারের স্পন্দন হিসাবে গঠিত হয়েছিল, তাই পদার্থবিজ্ঞানীরা অনুমান করেন এথারের অন্তস্থ বিচলন সম্ভবত পর্যবেক্ষকের গতির যৌক্তিক হেরফের এর কারণ। দুটি প্রসঙ্গ কাঠামোর ভিতর কার্তেসীয় স্থানাঙ্কের অবস্থান আদানপ্রদানের জন্য গ্যালিলীয় রূপান্তরের গাণিতিক প্রণালী ব্যবহৃত হত, তবে তা ডাচ বিজ্ঞানী হেন্ড্রিক লরেঞ্জের [১৮৫৩-১৯২৮] আবিষ্কৃত লরেঞ্জ রূপান্তর দ্বারা বিংশ শতকের শুরুতে স্থানচ্যুত হয়।

১৮৮৭ সালে মিকেলসন এবং মর্লি এতার বিচলন শনাক্ত করতে ব্যর্থ হন। তবে একটি স্বীকার্য প্রচলিত ছিল যে, এথারের অন্তর্মুখে গতি, এথার এর সংকোচনের জন্য দায়ী, যে প্রক্রিয়াটি লরেঞ্জ সংকোচন মডেলে ব্যাখ্যা করা হয়। এভাবে সমস্ত জড় প্রসঙ্গ কাঠামোতে ম্যাক্সওয়েলের তড়িৎচৌম্বক ক্ষেত্র এবং গ্যালিলীয় অপরিবর্তনীয়তা নীতির সামঞ্জস্য বিধান করে নিউটন এর গতি তত্ত্বকে বজায় রাখা হয়েছিল।

উনিশ শতকে কার্ল ফ্রিড‌রিশ গাউস অ-ইউক্লিডিয়ান জ্যামিতি চর্চায় যে অবদান রাখেন, তা বার্নহার্ড রিমেন (১৮২৬-১৮৬৬) এর রিমানীয় জ্যামিতি কাঠামোর ভিত্তি স্থাপন করে। অস্ট্রীয় তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী এবং দার্শনিক আর্নস্ট মাখ নিউটন এর স্বীকৃত পরম স্থান ধারণাটির সমালোচনা করেছিলেন। গণিতজ্ঞ অঁরি পোয়াঁকারে (১৮৫৪-১৯১২) এমনকি পরম সময় ধারণার বিপক্ষেও প্রশ্ন তুলেছিলেন। ১৯০৫ সালে পিয়ের ডুহেম নিউটন এর গতির তত্ত্বের ভিত এর একটি বিধ্বংসী সমালোচনা প্রকাশ করেছিলেন।[১০] 1905 সালে, আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯-১৯৫৫) তার বিশেষ আপেক্ষিকতার তত্ত্ব প্রকাশ করেন, যা তড়িৎচৌম্বক ক্ষেত্র এবং গ্যালিলীয় অপরিবর্তনতার সম্পূর্ণ নতুন ব্যাখ্যা দেয়, এবং এথার-সংশ্লিষ্ট সব তত্ত্ব এমনকি সমস্ত এমনকি এথারের অস্তিত্ব পর্যন্ত বাতিল করে দেয়। তার এই তত্ত্বে নিউনীয় কাঠামোর পরম স্থান এবং পরম সময় ধারণা প্রত্যাখ্যান করে বিশেষ আপেক্ষিকতা সম্পর্কিত আপেক্ষিক স্থান এবং আপেক্ষিক সময় প্রতিষ্ঠা করা, যার ফলে বস্তুর ভ্রমণপথ বরাবর দৈর্ঘ্য সংকোচন এবং সময়ের প্রসারণ ঘটে।

১৯০৮ সালে আইনস্টাইনের প্রাক্তন অধ্যাপক হারমান মিনকভস্কি ত্রিমাত্রিক স্থান এবং একমাত্রিক সময়ের সামঞ্জস্য ঘটিয়ে চতুর্মাত্রিক স্থানকাল কাঠামো গঠন করেন, যা স্থান এবং সময়ের পার্থক্য মোচন করে দেয়। আইনস্টাইন প্রাথমিকভাবে একে "অতিরিক্ত বিদ্যা জাহির" বলে অভিহিত করলেও, পরবর্তীকালে তার সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বে মিনকভস্কি স্থানকাল কাঠামো দক্ষতার সঙ্গে প্রয়োগ করেছিলেন[১১]। এর মাধ্যমে তিনি স্থির বা ত্বরিত সবধরনের প্রসঙ্গ কাঠামোতে অপরিবর্তনীয়তার বিস্তার করতে সক্ষম হন। আইনস্টাইন এই আবিষ্কারের কৃতিত্ব মিনকভস্কিকেই দেন, যদিও মিনকভস্কি তার পূর্বেই মারা গিয়েছিলেন। সাধারণ আপেক্ষিকতায় কার্তেসীয় স্থানাঙ্কের পরিবর্তে গাউস স্থানাঙ্ক ব্যবহার করা হয় এবং নিউটনের প্রস্তাবিত অসীম বিস্তারের ভেক্টর মহাকর্ষ বলের পরিবর্তে মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র উপস্থাপন করে। মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রটি প্রকৃতপক্ষে মিনকভস্কি স্থানকাল, একটি চতুর্মাত্রিক টপোলজিসম্পন্ন লরেঞ্জ ম্যানিফোল্ড, যা ভর বা শক্তির সান্নিধ্যে রিমান বক্রতা টেন্সর অনুযায়ী বক্রতা অর্জন করে। (বিশেষ আপেক্ষিকতার অধীনে, ভরবিহীন শক্তিও তার সমতুল্য ভরের মত করে স্থানকালে "বক্রতা" ঘটায়।)

কোয়ান্টাম

সম্পাদনা

বিংশশতকের আরেকটি বৈপ্লবিক আবিষ্কার ছিল কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান, যার সূচনা ঘটেছিল মাক্স প্লাংক (১৮৫৬-১৯৪৭) এর কৃষ্ণবস্তু বিকিরণ এবং আইনস্টাইনের আলোক তড়িৎ ক্রিয়া বিষয়ক যুগান্তকারী গবেষণা থেকে। প্রথমদিকে, এই গবেষণাক্ষেত্রটি আর্নল্ড সমারফেল্ড (১৮৬৮-১৯৫১) এবং নিলস বোর (১৮৮৫-১৯৬২) এর পরিকল্পিত একটি হিউরিস্টিক কাঠামোয় সংগঠিত ছিল। পরে মাক্স বর্ন (১৮৮২-১৯৭০), ভের্নার কার্ল হাইজেনবের্গ (১৯০১-১৯৭৬), পল দিরাক (১৯০২-১৯৮৪), এরভিন শ্রোডিঙার (১৮৮৭-১৯৬১), সত্যেন্দ্রনাথ বসু (১৮৯৪-১৯৭৪), এবং ভোল্‌ফগাং পাউলি (১৯০০-১৯৫৮) এর প্রণীত কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান তত্ত্ব দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। এই বৈপ্লবিক তাত্ত্বিক কাঠামোর ভিত্তি হল পদার্থের অবস্থার একটি সম্ভাব্যতামূলক ব্যাখ্যা, এবং একটি অসীম ভেক্টর স্পেস স্ব-সন্নিহিত অপারেটর (এরমিট অপারেটর) দ্বারা অবস্থান্তর এবং পরিমাপ প্রণালী। এটি হিলবার্ট স্পেস নামে পরিচিত; ডাভিড হিলবের্ট (১৮৬২-১৯৪৩) এবং ফ্রেজিস রিস (১৮৮০-১৯৫৬) এর প্রাথমিক ধারণা প্রবর্তন করেন।

জন ভন নিউম্যান তার আলোচিত গ্রন্থ কোয়ান্টাম মেকানিক্সের গাণিতিক ভিত্তি (Mathematical Foundations of Quantum Mechanics) এর পাতায় এই কোয়ান্টাম বলবিদ্যাকে একটি আধুনিক স্বনির্ধারিত কাঠামোয় সংজ্ঞায়িত করেছিলেন। এখানে তিনি হিলবার্ট স্পেসের সাপেক্ষে আধুনিক ফাংশনাল বিশ্লেষণের প্রাসঙ্গিক অংশ পুনর্গঠন করেছিলেন, বিশেষত বর্ণালী তত্ত্ব।

পরবর্তীতে পল দিরাক তার উদ্ভাবিত ইলেকট্রন এর আপেক্ষিক মডেলে বীজগাণিতিক প্রণালী ব্যবহার করে তার চৌম্বক মোমেন্ট নির্ণয় করেন, এমনকি ইলেক্ট্রনের প্রতিকণা, পজিট্রনের অস্তিত্বের পূর্বাভাস দিতে সক্ষম হন।

বিশ শতকের বিশিষ্ট গণিত পদার্থবিদদের তালিকা

সম্পাদনা

এখানে জন্ম তারিখের ক্রমানুসারে বিশ শতকের গণিত পদার্থবিজ্ঞানে বিশিষ্ট অবদান রেখেছেন এমন কয়েকজন গবেষকের নাম দেয়া হল (যদিও এঁদের ভিতর কেউ কেউ গাণিতিক নন, বরং কেবল তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানী, এবং এখানে আরও অনেকের নাম অনুক্ত রয়েছে):

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Definition from the Journal of Mathematical Physics. "Archived copy"। ২০০৬-১০-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-০৩ 
  2. John Herapath (1847) Mathematical Physics; or, the Mathematical Principles of Natural Philosophy, the causes of heat, gaseous elasticity, gravitation, and other great phenomena of nature, Whittaker and company via HathiTrust
  3. Quote: " ... a negative definition of the theorist refers to his inability to make physical experiments, while a positive one.. implies his encyclopaedic knowledge of physics combined with possessing enough mathematical armament. Depending on the ratio of these two components, the theorist may be nearer either to the experimentalist or to the mathematician. In the latter case, he is usually considered as a specialist in mathematical physics.", Ya. Frenkel, as related in A.T. Filippov, The Versatile Soliton, pg 131. Birkhauser, 2000.
  4. Quote: "Physical theory is something like a suit sewed for Nature. Good theory is like a good suit. ... Thus the theorist is like a tailor." Ya. Frenkel, as related in Filippov (2000), pg 131.
  5. Peter Machamer "Galileo Galilei"—sec 1 "Brief biography", in Zalta EN, ed, The Stanford Encyclopedia of Philosophy, Spring 2010 edn
  6. Antony G Flew, Dictionary of Philosophy, rev 2nd edn (New York: St Martin's Press, 1984), p 129
  7. Antony G Flew, Dictionary of Philosophy, rev 2nd edn (New York: St Martin's Press, 1984), p 89
  8. Dijksterhuis E.J (1950) De mechanisering van het wereldbeeld. Meulenhoff, Amsterdam.
  9. Andreessen, C.D. (2005) Huygens: The Man Behind the Principle. Cambridge University Press: 6
  10. Imre Lakatos, auth, Worrall J & Currie G, eds, The Methodology of Scientific Research Programmes: Volume 1: Philosophical Papers (Cambridge: Cambridge University Press, 1980), pp 213–214, 220
  11. Salmon WC & Wolters G, eds, Logic, Language, and the Structure of Scientific Theories (Pittsburgh: University of Pittsburgh Press, 1994), p 125

গ্রন্থপঞ্জি

সম্পাদনা

সাধারণ পাঠ্যপুস্তক

সম্পাদনা

অধ:স্নাতক অধ্যয়নের পাঠ্যপুস্তক

সম্পাদনা
  • Arfken, George B.; Weber, Hans J. (১৯৯৫), Mathematical methods for physicists (4th সংস্করণ), San Diego: Academic Press, আইএসবিএন 0-12-059816-7  (pbk.)
  • Boas, Mary L. (২০০৬), Mathematical Methods in the Physical Sciences (3rd সংস্করণ), Hoboken: John Wiley & Sons, আইএসবিএন 978-0-471-19826-0 
  • Butkov, Eugene (১৯৬৮), Mathematical physics, Reading: Addison-Wesley 
  • Jeffreys, Harold; Swirles Jeffreys, Bertha (১৯৫৬), Methods of mathematical physics (3rd rev. সংস্করণ), Cambridge, [England]: Cambridge University Press 
  • Kusse, Bruce R. (২০০৬), Mathematical Physics: Applied Mathematics for Scientists and Engineers (2nd সংস্করণ), Germany: Wiley-VCH, আইএসবিএন 3-527-40672-7 
  • Joos, Georg; Freeman, Ira M. (১৯৮৭), Theoretical Physics, Dover Publications, আইএসবিএন 0-486-65227-0 
  • Mathews, Jon; Walker, Robert L. (১৯৭০), Mathematical methods of physics (2nd সংস্করণ), New York: W. A. Benjamin, আইএসবিএন 0-8053-7002-1 
  • Menzel, Donald Howard (১৯৬১), Mathematical Physics, Dover Publications, আইএসবিএন 0-486-60056-4 
  • Stakgold, Ivar (c. 2000), Boundary value problems of mathematical physics (2 vol.), Philadelphia: Society for Industrial and Applied Mathematics, আইএসবিএন 0-89871-456-7  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য) (set : pbk.)

স্নাতক অধ্যয়নের পাঠ্যপুস্তক

সম্পাদনা

অন্যান্য বিশেষায়িত পাঠ্যপুস্তক

সম্পাদনা
  • Baez, John C.; Muniain, Javier P. (১৯৯৪), Gauge fields, knots, and gravity, Singapore ; River Edge: World Scientific, আইএসবিএন 981-02-2034-0  (pbk.)
  • Geroch, Robert (১৯৮৫), Mathematical physics, Chicago: University of Chicago Press, আইএসবিএন 0-226-28862-5  (pbk.)
  • Polyanin, Andrei D. (২০০২), Handbook of linear partial differential equations for engineers and scientists, Boca Raton: Chapman & Hall / CRC Press, আইএসবিএন 1-58488-299-9 
  • Polyanin, Alexei D.; Zaitsev, Valentin F. (২০০৪), Handbook of nonlinear partial differential equations, Boca Raton: Chapman & Hall / CRC Press, আইএসবিএন 1-58488-355-3 
  • Szekeres, Peter (২০০৪), A course in modern mathematical physics: groups, Hilbert space and differential geometry, Cambridge; New York: Cambridge University Press, আইএসবিএন 0-521-53645-6  (pbk.)
  • Yndurain, Francisco J (২০০৬), Theoretical and Mathematical Physics. The Theory of Quark and Gluon Interactions, Berlin: Springer, আইএসবিএন 978-3642069741  (pbk.)

বহি:সংযোগ

সম্পাদনা

টেমপ্লেট:ফলিত গণিত