খসড়া:মিয়া আবু মোহাম্মদ ফারুকী
Tanbiruzzaman (আলাপ) কর্তৃক ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে জমা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
এই পাতার শীর্ষে থাকা "সম্পাদনা" ট্যাবে ক্লিক করে, এই পাতাটির উন্নতি করতে আপনাকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। আপনার যদি সাহায্যের দরকার হয় বা কোন প্রশ্ন থাকে, তবে সাহায্যকেন্দ্রে জিজ্ঞাসা করুন। উৎস খুঁজুন: "মিয়া আবু মোহাম্মদ ফারুকী" – সংবাদ · বই · স্কলার · মুক্ত চিত্র।
Tanbiruzzaman কর্তৃক ৫৪ দিন আগে প্রত্যাখ্যাত। সর্বশেষ Tanbiruzzaman কর্তৃক ৫৪ দিন আগে সম্পাদিত। পর্যালোচক: লেখককে জানান।
|
আমার নিবন্ধটির বিষয়বস্তু হচ্ছে একজন ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সঙ্গঠকের জীবনী।
ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সঙ্গঠক মিয়া আবু মোহাম্মদ ফারুকী | |
---|---|
জন্ম | ১০ই ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৩ ইং. চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ |
মৃত্যু | ১লা জুলাই, ২০১৬ ইং. চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
পেশা | রাজনীতি |
রাজনৈতিক দল | আওয়ামী মুসলিম লীগ আওয়ামী লীগ |
দাম্পত্য সঙ্গী | রোকেয়া বেগম |
পিতা-মাতা | মাওলানা খলিলুর রহমান ফারুকী (পিতা), সফুরা খাতুন (মাতা) |
মিয়া আবু মোহাম্মদ ফারুকী ১৯৩৩ সালের ১০ই ফেব্রুয়ারি (১৫ই শাওয়াল ১৩৫১ হিজরি, ২৭শে মাঘ ১৩৩৯ বঙ্গাব্দ) চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলাধীন চক্রশালা গ্রামে (বর্তমান কচুয়াই ফারুকী পাড়া) এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মাতা সফুরা খাতুন এবং পিতা বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম স্বাধীনতা সংগ্রামী মাওলানা খলিলুর রহমান ফারুকী। মাওলানা খলিলুর রহমান ফারুকী চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল স্কুলের ধর্মীয় শিক্ষক ও নিখিল ভারত কংগ্রেসের সদস্য ছিলেন। নিখিল ভারত কংগ্রেসে থাকা অবস্থায় মাওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদীর ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে আসেন। ১৯৬১ সালে খালাতো বোন রোকেয়া বেগমকে বিয়ে করেন। দুই ছেলে ও পাঁচ মেয়ের জনক মিয়া মোহাম্মদ ফারুকী।
রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অবদান
সম্পাদনা১৯৪৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পড়া অবস্থায় মিয়া ফারুকী আওয়ামী মুসলিম লীগের পটিয়া মহকুমার স্থানীয় ইউনিয়ন কমিটিতে যোগ দেন। পরে চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য থেকে সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৫২ সালে ঢাকায় ভাষা আন্দোলন শুরু হলে তিনি এবং প্রয়াত ন্যাপ নেতা আবুল মাসুদ চৌধুরী, রিজুওয়ানুল কবির আনছারীসহ আরও বেশ কয়েকজন বন্ধু মিলে বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। সবাই মিলে বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠার জন্য পটিয়ায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও আবদুস সোবহান রাহাত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রদের নিয়ে রাজপথে আন্দোলন করেন। ১৯৬০ সালে অবিভক্ত চট্টগ্রাম জিলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও ১৯৬৯ সালে দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। চট্টল শার্দূল এম. এ. আজিজ কাছের মানুষ হিসেবে মিয়া ফারুকীকে সবসময় সাথে রাখতেন। সেই সুবাদে মিয়া ফারুকী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আস্থাভাজন হন। এম. এ. আজিজ কোনো এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, মিয়া ফারুকী বেশ ভালো বক্তা। এর পর থেকেই চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সভা-সমাবেশে বঙ্গবন্ধু তাঁকে বক্তা হিসেবে নিয়ে যেতেন। ১৯৭৪-৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু তাঁকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর নিযুক্ত করেন।
১৯৫৮ সালে রাজনীতির উত্তাল আন্দোলনের সময় তৎকালীন সরকারের পুলিশ বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়ে ১ মাস ১৩ দিন কারাভোগ করেন। ১৯৬৬'র ছয়দফা আন্দোলনের হরতালের সময়ও গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করেন। পরবর্তীতে আরো ৬-৭ বার তাঁকে জেলে যেতে হয়েছিল রাজনৈতিক কারণে। বাংলাদেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তিনি ছিলেন সক্রিয় ভূমিকায়।
১৯৬৭ সালে বঙ্গবন্ধু জেলে থাকা অবস্থায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিয়ের অন্যতম সাক্ষী ছিলেন তিনি।[১][২] চট্রগ্রামের রাইফেল ক্লাবে শেখ হাসিনার যে বিবাহোত্তর সংবর্ধনা দেয়া হয়েছিল সেখানে এম এ আজিজ, জহুর আহমেদ চৌধুরী, আব্দুল্লাহ আল হারুন চৌধুরী, এম এ হান্নানসহ তৎকালীন নেতাদের সাথে তিনি সেই অনুষ্ঠানটির আয়োজক ছিলেন। ১৯৭৫ এর কালরাত্রিতে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে শহীদ হওয়ার পর বিভিন্ন পটপরিবর্তনের ফলে রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও লেখালেখির মাধ্যমে তিনি রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। মিয়া ফারুকীর চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লায় চট্টল লাইব্রেরি নামে একটি লাইব্রেরি ছিল। পরবর্তীতে দুই দফা নাম পরিবর্তন করে ফারুকীয়া লাইব্রেরি ও শহীদ পুস্তকালয় নাম দেয়া হয়। লাইব্রেরিটি ছিল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে তখনকার আওয়ামী লীগের অঘোষিত কার্যালয়। চট্টগ্রাম সহ দেশের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ ও কৃতি ব্যক্তিত্বদের মিলনস্থল ছিল এটি। চট্টগ্রামের তৎকালীন প্রবীণ রাজনীতিবিদ আতাউর রহমান খান কায়সার, এম এ হান্নান, এম এ আজিজ, জহুর আহমদ চৌধুরী, বাঁশখালীর সুলতান আহমেদসহ অনেকে থাকতেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও এই লাইব্রেরিতে এসেছিলেন।[৩][৪][৫][৬][৭]
মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ
সম্পাদনা১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি ভারতের মেঘালয়ে চলে যান। সেখানে ট্রেনিং শেষে বীরবিক্রমে যুদ্ধ শুরু করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন জনাব ফারুকী বিভিন্ন এলাকা ঘুরে অন্যান্য সাথীদের নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতাসহ সংগঠন করে দেশ রক্ষার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করেন। ২৪শে মে পাকিস্তানি বাহিনী তাঁদের বসতবাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক থাকায় তাঁকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ১০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল।[৮][৯][১০][১১]
লেখক ও কলামিস্ট
সম্পাদনামিয়া ফারুকীর প্রকাশিত বই আমার দেখা সেকাল একাল। এতে তিনি মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, ইতিহাসখ্যাত ব্যক্তিবর্গের জীবনী, বর্তমান ও সেকালের রাজনীতির তুলনামূলক পার্থক্য ও দেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি প্রভৃতি তুলে ধরেছেন। তিনি দৈনিক বীর চট্টগ্রাম মঞ্চ ও মাসিক পটিয়াসহ বিভিন্ন পত্রিকায় কলাম লিখতেন।[১২]
ইন্তেকাল
সম্পাদনা২০১৬ সালের ১লা জুলাই পবিত্র রমজান মাসের জুমাতুল বিদা’র দিন সকাল ০৯ টা বেজে ২০ মিনিটে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন।[১৩][১৪]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "শেখ হাসিনার বিয়ের অন্যতম স্বাক্ষী মিয়া ফারুকী আর নেই"। একুশে পত্রিকা, প্রকাশ: জুলাই ১, ২০১৬ খৃঃ।
- ↑ "শেখ হাসিনার বিয়ের স্বাক্ষী মিয়া ফারুকী আর নেই"। পাঠক নিউজ, প্রকাশ: জুলাই ১, ২০১৬ খৃঃ।
- ↑ সাফাত বিন ছানাউল্লাহ। "ভাষাসংগ্রামী জননেতা মিয়া আবু মোহাম্মদ ফারুকী"। সুপ্রভাত বাংলাদেশ, প্রকাশ: জুন ২৩, ২০২২ খৃঃ।
- ↑ "মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গঠক মিয়া ফারুকী আর নেই"। দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন, প্রকাশ: জুলাই ১, ২০১৬ খৃঃ।
- ↑ সাফাত বিন ছানাউল্লাহ। "খ্যাতনামা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মিয়া আবু মোহাম্মদ ফারুকী"। সুপ্রভাত বাংলাদেশ, প্রকাশ: জুন ৩০, ২০২১ খৃঃ।
- ↑ "মিয়া ফারুকী একজন মানবিক দেশ দরদী মানুষ ছিলেন"। দৈনিক আনন্দবার্তা, প্রকাশ: জুলাই ২, ২০২৪ খৃঃ।
- ↑ সাফাত বিন ছানাউল্লাহ। "বীর চট্টলার একজন ইতিহাসের কিংবদন্তি মিয়া আবু মোহাম্মদ ফারুকী"। পরিস্থিতি ২৪ ডট কম, প্রকাশ: জুন ৩০, ২০১৯ খৃঃ।
- ↑ রশিদ এনাম। "মুক্তিযুদ্ধ সংগঠক পটিয়ার মিয়া আবু মোহাম্মদ ফারুকী"। বন্ধুসভা, প্রকাশ: জুলাই ১, ২০২৪ খৃঃ।
- ↑ "মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠজন মিয়া ফারুকী"। দৈনিক জনকণ্ঠ, প্রকাশ: জুলাই ১, ২০১৮ খৃঃ।
- ↑ "মিয়া ফারুকী ইতিহাসে অমর-অক্ষয় হয়ে থাকবেন"। একুশে সংবাদ ডট কম, প্রকাশ: জুলাই ৩, ২০২২ খৃঃ।
- ↑ "মুক্তিযোদ্ধা আবু ফারুকী ছিলেন আলোকিত ব্যক্তিত্ব"। দৈনিক আজাদী, প্রকাশ: জুলাই ১, ২০২২ খৃঃ।
- ↑ রশীদ এনাম। "ভাষা সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধ সংগঠক মিয়া আবু মোহাম্মদ ফারুকী"। দৈনিক পূর্বদেশ, প্রকাশ: জুলাই ১, ২০২৪ খৃঃ।
- ↑ সাফাত বিন ছানাউল্লাহ। "মিয়া আবু মোহাম্মদ ফারুকী : মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক"। দৈনিক পূর্বকোণ, প্রকাশ: জুলাই ৫, ২০২১ খৃঃ।
- ↑ "শোকঃ মিঞা আবু মুহাম্মদ ফারুকী"। দৈনিক প্রথম আলো, প্রকাশ: জুলাই ২, ২০১৬ খৃঃ।