কামরাঙা শিম (বৈজ্ঞানিক নাম: Psophocarpus tetragonolobus) বরবটিশিমের মতো লতা জাতীয় উদ্ভিদ। গাছের লতা, ফুল, পাতা, ফল, শিকড় সব অংশই খাওয়া যায়। পশ্চিম আফ্রিকা কামরাঙা শিমের আদি স্থান।[][][][][][][]

কামরাঙা শিম
Psophocarpus tetragonolobus
ধরনতরকারি
অঞ্চল বা রাজ্যআদি স্থান পশ্চিম আফ্রিকা। ভারত বাংলাদেশ সহ মিয়ানমার, মাদাগাসকার, পাপুয়া নিউগিনি, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়া
পরিবেশনপ্রধানত ভাত ও রুটির সাথে
প্রধান উপকরণসবজি

নামকরণ

সম্পাদনা

ফলের আকৃতি পাখা বা শিরা বিশিষ্ট কামরাঙা ফলের মতো দেখতে । এজন্য এই শিমের নামকরণ করা হয়েছে কামরাঙা শিম।[]

পরিচিতি

সম্পাদনা

বরবটি বা শিমের মতো লতা গাছ। এ শিম চওড়ায় ২-৩ সেন্টিমিটার ও লম্বায় বেশি ২০ সেন্টিমিটার হয়। ১০-১৫ ফুট লম্বা হয় একটা পূর্ণাঙ্গ শিম গাছ। প্রতিটি গাছে ৪০-৫০টা ফল ধরে। যখন শিম শক্ত হয় তখনই সবজি হিসেবে খাওয়া যায় না। শিমে বীজ আসলে মটরশুঁটির মতো খাওয়া যায়। ফল ধরা শুরু হলে ৩ মাস পর্যন্ত কামরাঙা শিম সবজি সংগ্রহ করা যায়।[][]

ইতিহাস

সম্পাদনা

পশ্চিম আফ্রিকা হলো কামরাঙা শিমের আদি স্থান। কৃষি গবেষণা মতে এটি ভারত উপমহাদেশে প্রথমে চাষ শুরু হয়। কামরাঙা শিম আবাদ তুলনামূলকভাবে বেশি দক্ষিণ ও পূর্ব দক্ষিণ এশিয়ায়। এছাড়া পাপুয়া নিউগিনি, মিয়ানমার, মাদাগাস্কার, আমেরিকাঅস্ট্রেলিয়ায় অনেক বছর আগে থেকেই এ শিমের চাষ হতো। সমুদ্র স্তর থেকে ১৫০০-২৫০০ ফুট উচ্চতায় এ সবজি চাষের বেশি উপযোগী তাই পার্বত্য অঞ্চলে কামরাঙা শিমের চাষাবাদ বেশি। অতি আর্দ্রতা-উষ্ণ আবহাওয়া চাষের জন্য বেশি উপযোগী। কামরাঙা শিমের চাষে পানির প্রয়োজনীয়তা কম তাই শুকনা এলাকায় চাষের বেশি হয় এ শিম। জমিতে নাইট্রোজেন যোগ করে এ সবজির চাষ। [১০]

পুষ্টিগুণ

সম্পাদনা

কামরাঙা শিমে প্রোটিন অনেক বেশি। বীজে সয়াবিনের মতো প্রোটিন থাকে (৩০-৩৯%)। আরও আছে মিনারেলস, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট। কার্বোহাইড্রেট ও সোডিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে ও কোলেস্টেরল থাকে না। ক্যালসিয়ামের উপস্থিতি এতে খুব বেশি। শিকড়েও প্রচুর প্রোটিন থাকে। টিউবার বা শিকড়ে প্রোটিনের উপস্থিতি প্রায় ২০%। অনেক হারবাল মেডিসিন উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কামরাঙা শিম পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ‘ফডার’ হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে। লিগুমিনাস দলীয় ফসল হওয়ার কারণে জমির স্বাস্থ্য রক্ষা করে।[১১][১২][১৩]

চিত্রশালা

সম্পাদনা

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "বারি কামরাঙা শিম | অন্যান্য | The Daily Ittefaq"archive1.ittefaq.com.bd। ২০১৯-০৭-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-১৫ 
  2. "কামরাঙা শিম"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য। ১৫ জুলাই ২০১৯। ১৫ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০১৯ 
  3. "বিচিত্র সবজির বিপুল সমারোহ"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-১৫ 
  4. "শাকসবজি - বাংলাপিডিয়া"bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-১৫ 
  5. Khan, T. (১৯৮২)। Winged Bean Production in the Tropics। Food and Agriculture Organization of the United Nations। পৃষ্ঠা 1। 
  6. Hymowitz, T; Boyd, J. (১৯৭৭)। "Ethnobotany and Agriculture Potential of the Winged Bean"। Economic Botany31 (2): 180–188। ডিওআই:10.1007/bf02866589 
  7. Council, National Research (১ জুন ২০০২)। Underexploited Tropical Plants with Promising Economic Value (ইংরেজি ভাষায়)। The Minerva Group, Inc.। আইএসবিএন 9780894991868 
  8. National Research Council (U.S.). (1975). Underexploited Tropical Plants with Promising Economic Value. 2nd Edition. U.S. National Academies.
  9. Yang, J., Tan, H. (মে ২০১১)। Winged Bean MilkInternational Conference on New Technology of Agricultural Engineering, Zibo। পৃষ্ঠা 814–817। আইএসবিএন 978-1-4244-9574-0ডিওআই:10.1109/ICAE.2011.5943916 
  10. Fagbenro, A. (1999). Comparative evaluation of heat-processed Winged bean Psophocarpus tetragonolobus meals as partial replacement for fish meal in diets for the African catfish Clarias gariepinus. Aquaculture 170 (1999), 297-305.
  11. National Research Council. The winged bean : a high-protein crop for the tropics : report of an ad hoc panel of the Advisory Committee on Technology Innovation. Board on Science and Technology for International Development, 1981
  12. National Research Council (U.S.), 1975
  13. Village Earth. (2011). Appropriate Technology: Sustainable Agriculture. Appropriate Technology Library. Chapter: Tropical Legumes. Retrieved from http://villageearth.org/pages/sourcebook/sustainable-agriculture ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৭ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা