কানসাট (মিষ্টি)
মালদহের কানসাট বাংলার আশ্চর্য মিষ্টান্নর মধ্যে অন্যতম।[১][২] মালদহের আমের পরই জেলার বিখ্যাত নাম হিসাবে কানসাটের নাম আসে। বর্তমান বাংলাদেশের কানসাট ইউনিয়নের নামেই এ মিষ্টির নামকরণ। বাংলাদেশের শিবগঞ্জ জেলার প্রসিদ্ধ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী মহেন্দ্রনাথ সাহা এই মিষ্টির উদ্ভাবক।[৩] পরে তার পুত্র বিজয় কুমার সাহা মালদায় কানসাটের যাত্রা শুরু করেন।
অন্যান্য নাম | মালদার কানসাট |
---|---|
উৎপত্তিস্থল | বাংলাদেশ/ভারত |
অঞ্চল বা রাজ্য | বঙ্গ |
প্রস্তুতকারী | মহেন্দ্রনাথ সাহা, বিজয়কুমার সাহা |
পরিবেশন | সাধারণ তাপমাত্রা |
প্রধান উপকরণ | ছানা, ক্ষীর |
ইতিহাস
সম্পাদনাঐতিহ্যবাহী এই মিষ্টির কারিগির হলেন বর্তমান বাংলাদেশের মহেন্দ্রনাথ সাহা। দেশ ভাগের পর ১৯৪৭ সালে পূর্ববঙ্গের(বর্তমান বাংলাদেশ) শিবগঞ্জের কানসাট অঞ্চল থেকে দলে দলে মিষ্টি কারিগররা মালদায় চলে আসেন।[৪] কানসাটের প্রসিদ্ধ মিষ্টি ব্যবসায়ী মহেন্দ্রনাথ সাহার পুত্র বিজয় কুমার সাহা বাবার শেখানো মিষ্টি তৈরির কৌশলে পশ্চিমবঙ্গের মালদহে এসে কানসাটের যাত্রা শুরু করেন। বর্তমানে এ পরম্পরাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তাঁর দুই পুত্র বিশ্বজিৎ সাহা আর জয়দেব সাহা।[৩]
নামকরণ
সম্পাদনাবাংলাদেশে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় এই মিষ্টির নামে আস্ত একটা জনপদ আছে। মহেন্দ্রলালের পুত্র বিজয় কুমার তাদের পৈতৃক ভূমির নামেই বাবার শেখানো মিষ্টির নাম রাখেন, শুধু তাই নয় এই মিষ্টির নাম দিয়ে দোকানের নাম রাখার ভাবনা তাঁরই। দেশভাগের স্মৃতি বয়ে নিয়ে যাচ্ছে মালদার এই প্রসিদ্ধ মিষ্টি।[৩]
প্রস্তুত প্রণালী
সম্পাদনাকানসাট তৈরির মূল উপাদান ভালো ক্ষীর হলেও ছানার গুণমানের উপরেও এর স্বাদ নির্ভর করে। কাঠের আগুনের উপর নির্ভর করে ছানার তৈরি জালটা কেমন হবে? ভাল করে ঠিক ঠাক জাল হলে সেই জলের উপরে ভাজা ক্ষীর বা খোয়া ক্ষীর ছড়িয়ে দিলেই তৈরি হয় কানসাট।[৫] ঠিক মতন জালের উপরই নির্ভরকরে ভিতরে কতটা মৌমাছির চাকের মতো চাক দেখা যাবে এবং সেটাই নির্ভর করে আঁচের উপর। সাহাদের বিখ্যাত কানসাট এই আঁচের অভিজ্ঞতার উপরেই স্বাদ তৈরী করে মন জয় করেছে। তবে পুরোনো বা বাসি হলেই এর আসল স্বাদ হারিয়ে যাবে।[৬]
বিশিষ্টজনের সমাদর
সম্পাদনাকানসাটের দৌলতে মালদহের নাম এখন দেশের গণ্ডি ছড়িয়েছে বলে জানান বিশ্বজিতবাবু। তাঁর কথায়,
“ | এই শহরের বহু মানুষ বিদেশে থাকেন। এদেশের আত্মীয় মারফত আমাদের দোকানের কানসাট তাঁদের কাছে পৌঁছে যায়। এমনকী ইন্দিরা গান্ধিও আমাদের দোকানের কানসাটের স্বাদ পেয়েছেন। গনি খান পরিবারে কোনও ভিআইপি অতিথি এলে কানসাট যায়। গনি সাহেবও কানসাট দারুণ পছন্দ করতেন।’’[৩] | ” |
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ সংবাদ প্রতিদিন (১৪ নভেম্বর ২০১৭)। "রসগোল্লা 'জাতে' উঠেছে, কম যায় না বাংলার বাকি মিষ্টিগুলিও"। ১৮ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "About Malda"। India tourist। ১৬ জুন ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ ক খ গ ঘ "কানসাট: বাংলার মিষ্টি ব্র্যান্ডিংয়ের প্রাচীন স্ট্র্যাটেজি"। ১৪ মার্চ ২০১৭।
- ↑ আনন্দবাজার (১৬ অক্টোবর ২০১৩)। "হালুয়াপট্টি নেই, উধাও টাঁড়ার খাজা, মনাক্কাও"।
- ↑ "Chef Suman Chakraborty sets out on a trip across Bengal in search of its hidden gems — Mishti!"। The Telegraph। ১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ আবেক্ষণ। "রসকদম্ব-কানসাট"। ১৯ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।