ওয়াল্টার কিটন
উইলিয়াম ওয়াল্টার কিটন (ইংরেজি: Walter Keeton; জন্ম: ৩০ এপ্রিল, ১৯০৫ - মৃত্যু: ১০ অক্টোবর, ১৯৮০) ডার্বিশায়ারের শায়ারব্রুক এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৩৪ থেকে ১৯৩৯ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন।[১]
ব্যক্তিগত তথ্য | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | উইলিয়াম ওয়াল্টার কিটন | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | শায়ারব্রুক, ডার্বিশায়ার, ইংল্যান্ড | ৩০ এপ্রিল ১৯০৫||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১০ অক্টোবর ১৯৮০ ফরেস্ট টাউন, ম্যান্সফিল্ড, নটিংহ্যামশায়ার, ইংল্যান্ড | (বয়স ৭৫)||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | – | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | ব্যাটসম্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ২৭৬) | ২০ জুলাই ১৯৩৪ বনাম অস্ট্রেলিয়া | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২২ আগস্ট ১৯৩৯ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯২৬ - ১৯৫২ | নটিংহ্যামশায়ার | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৮ জুন ২০১৯ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
|
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে নটিংহ্যামশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন ওয়াল্টার কিটন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন।
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে দুইটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন ওয়াল্টার কিটন। ২০ জুলাই, ১৯৩৪ তারিখে লিডসে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এরপর ১৯ আগস্ট, ১৯৩৯ তারিখে ওভালে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশগ্রহণ করেছিলন তিনি।
১৯২৬ থেকে ১৯৫২ সময়কাল পর্যন্ত ওয়াল্টার কিটনের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ঘরোয়া ক্রিকেটে অনিন্দ্য সুন্দর ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৪০ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননায় ভূষিত হন।[২] ডানহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান উইলিয়াম কিটন ১৯২৬ থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত নটিংহ্যামশায়ার দলের পক্ষে খেলেছেন। প্রত্যেক প্রথম-শ্রেণীর কাউন্টি দলের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব রয়েছে তার। ১৯৩৯ সালে মিডলসেক্সের বিপক্ষে আট ঘণ্টারও কম সময় নিয়ে অপরাজিত ৩১২ রান তুলেন। অদ্যাবধি তার এ সংগ্রহটি নটিংহ্যামশায়ারের রেকর্ডরূপে চিহ্নিত হয়ে আছে।
ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি ফুটবল খেলায়ও সিদ্ধহস্তের অধিকারী ছিলেন ওয়াল্টার কিটন। পেশাদারী পর্যায়ে নটিংহাম ফরেস্ট ও সান্ডারল্যান্ডের সদস্যরূপে ফুটবল খেলেছেন তিনি। শেষদিকে ইনসাইড ফরোয়ার্ড অবস্থানে খেলতেন।
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনাডার্বিশায়ারের দক্ষিণ-পূর্ব খনিজ এলাকা চেস্টারফিল্ডের শায়ারব্রুকে ওয়াল্টার কিটনের জন্ম। উইলিয়াম ও মেরি অ্যান দম্পতির পুত্র ছিলেন তিনি। কিটনের বড় বোন ডরিস-সহ তারা চেস্টারফিল্ডের উত্তর-পূর্বাংশের আরেকটি খনিজ গ্রামে জন্মেছিলেন। ১৯১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী তার পরিবার খনিজ প্রধান ম্যান্সফিল্ডের ফরেস্ট টাউনে বসবাস করতেন। সেখানে তার বাবা একটি খনিতে স্টলম্যান হিসেবে কাজ করতেন।[৩]
ম্যান্সফিল্ড এলাকাতেই সারাজীবন অতিবাহিত করেছিলেন ওয়াল্টার কিটন। ফরেস্ট টাউনে তার দেহাবসান ঘটে। ১৯২৯ সালে ম্যান্সফিল্ড রেজিস্ট্রেশন ডিস্ট্রিক্টে ফ্লোরেন্স ই. রাসেল নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন।[৪]
কাউন্টি ক্রিকেট
সম্পাদনা১৯২৫ সালে নটিংহ্যামশায়ার দ্বিতীয় একাদশের পক্ষে অভিষেক ঘটে ওয়াল্টার কিটনের। এর পরের বছরই প্রথম একাদশ দলে খেলার সুযোগ পান। কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের দুই খেলায় মাঝারিসারির নিচেরদিকে ব্যাটিংয়ে নামেন।[৫] ১৯২০-এর দশকের শেষদিকে আর্থার কারের অধিনায়কত্বে নটিংহ্যামশায়ার দল বেশ স্থিরতাপূর্ণ অবস্থানে ছিল। অভিজ্ঞ জর্জ গান, উইলফ্রেড পেটন এবং কিছুটা তারুণ্যে উজ্জ্বীবিত উইলিয়াম হোয়াইসল, উইলিস ওয়াকার ও আর্থার কার স্বয়ং ব্যাটিংয়ে প্রভাববিস্তারক ছিলেন। ওয়াল্টার কিটন ও তরুণ ব্যাটসম্যান চার্লস হ্যারিস ও জর্জ জন গানকে খুব কমই প্রথম একাদশে খেলার সুযোগ দেয়া হতো। ১৯২৮ সালে কিটন মাত্র পাঁচটি খেলায় অংশ নেন। ১৯২৯ সালে চ্যাম্পিয়নশীপ বিজয়ী দলের মৌসুমে দুইটি খেলায় অংশ নিতে পেরেছিলেন। তন্মধ্যে, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে খেলেন। তবে, ১৯২৭ ও ১৯৩০ সালে কোন খেলাতেই অংশগ্রহণের সুযোগ পাননি তিনি।[৫]
১৯৩০ সালে নটিংহ্যামশায়ার কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করে যে, ৫১ বছর বয়সী গানকে হয়তোবা আর নিয়মিতভাবে খেলতে দেখা যাবে না। ৪৮ বছর বয়সী পেটনের সাথে এ মৌসুম শেষে তরুণ ব্যাটসম্যানকে ব্যাটিং উদ্বোধনে নামানো হবে। ৪৩ বছর বয়সী হোয়াইসল নভেম্বর, ১৯৩০ সালে আকস্মিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। ফলে, কাউন্টি দলটি পূর্বতন নীতি প্রয়োগের পক্ষপাতী নয়। ১৯৩১ সাল থেকে কিটন-সহ নতুন খেলোয়াড়দেরকে নিয়ে আসা হবে।[৬] তবে, এ নীতি পরিমার্জন করে গানকে ১৯৩১ ও ১৯৩২ সালে খেলানো হয়। পেটনকেও ১৯৩১ সালে কয়েকটি খেলায় অংশগ্রহণ করতে দেয়া হয়। প্রায়শঃই গানের সাথে ওয়াল্টার কিটন ইনিংস উদ্বোধনে নামতেন। জুন, ১৯৩১ সালে এসেক্সের বিপক্ষে শতরানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিনি। এরপর থেকে বাদ-বাকী দিনগুলোয় দলে নিয়মিতভাবে খেলতে থাকেন।[৭] প্রথম পূর্ণাঙ্গ মৌসুমে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৩০.০৭ গড়ে ১২৩৩ রান তুলেন।[৮]
প্রথম পূর্ণাঙ্গ মৌসুমের পর কিটনের খেলা আরো বেপরোয়া গতিতে এগিয়ে চলে। পরবর্তী তিন বছর প্রত্যেক মৌসুমেই দুই সহস্রাধিক রান তুলেন।[৮] ১৯৩২ সালে সাতটি সেঞ্চুরি করেন তিনি। তন্মধ্যে, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে অপরাজিত ২০০ রান তুলেন। এটি তার খেলায়াড়ী জীবনের প্রথম দ্বি-শতক ছিল। এ সংগ্রহটি কেমব্রিজ দলের দুই ইনিংস মিলিয়ে সংগৃহীত রানের চেয়েও ৮৫ রান বেশি ছিল।[৯] ঐ বছরের শেষদিকে নিজস্ব ব্যক্তিগত সংগ্রহকে আরো স্ফীত করে তোলেন তিনি। গ্ল্যামারগনের বিপক্ষে ৩৩০ মিনিটে তিন ছক্কা ও ২৭ চারের মারে ২৪২ রান তুলেন।[১০] ঐ মৌসুম শেষে গান আঘাতপ্রাপ্ত হন ও অবসরগ্রহণ করতে বাধ্য হন। ফলশ্রুতিতে, হ্যারিসকে তার সাথে নিয়মিতভাবে ব্যাটিং উদ্বোধনে নামানো হয়। এ জুটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্ব-পর্যন্ত একাধারে খেলতে থাকে। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল নির্বাচকমণ্ডলী কিটনের খেলার মান পর্যবেক্ষণ করছিলেন ও নর্থ ভার্সাস সাউথের খেলাসহ টেস্টের যাচাই-বাছাইয়ের অংশ হিসেবে ইংল্যান্ড বনাম বহিঃএকাদশের মধ্যকার খেলায় তাকে অন্তর্ভুক্ত করেন। তবে, বৃষ্টির কারণে খেলাটি আয়োজন করা হয়নি। ১৯৩২ সালে জেন্টলম্যান বনাম প্লেয়ার্সের মধ্যকার ফোকস্টোনের খেলায় তার খেলা তুলে ধরতে পারেননি।
উইজডেনের ভাষ্য মোতাবেক জানা যায় যে, ১৯৩৩ মৌসুম শেষে দলে সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে পাকাপোক্ত আসন গড়েছিলেন।[১১] কাউন্টি দলের অনুসারীরা অবশ্যই সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে তাকে চিত্রিত করে রাখবেন। রক্ষণাত্মক ঢংসহ রান সংগ্রহের দিকে ধাবিত হবার অপূর্ব সংমিশ্রণ ঘটিয়েছিলেন তিনি। সকল ধরনের স্ট্রোকে দক্ষতা দেখান। তবে, কাটি ও অফ-ড্রাইভের দিকেই তার অধিক ঝোঁক সবিশেষ লক্ষ্যণীয়। অভিজ্ঞতায় কিছুটা ঘাটতি থাকলেও ২৮ বছর বয়সেই নিজস্ব তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ মৌসুমে উইলিয়াম গান, জর্জ গান ও আর্থার শ্রিউসবারির সাথে তাকে উল্লেখ করা হতো।[১১] আগস্ট, ১৯৩৩ সালে একাই সহস্রাধিক রান তুলেন। এক মাসেই ছয়টি সেঞ্চুরি হাঁকান। তন্মধ্যে, পাঁচ ইনিংসেই চারটিতে সেঞ্চুরি ছিল তার। তবে, আবারো মৌসুম শেষের কয়েকটি প্রতিনিধিত্বমূলক ক্রিকেটে তার খেলায় ঘাটতি দেখা যায়।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
সম্পাদনা১৯৩৪ সালে ওয়াল্টার কিটন নটিংহ্যামশায়ারের শীর্ষ রান সংগ্রহকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। ইনিংস প্রতি ৪৩-এর অধিক গড়ে রান তুলেন। তন্মধ্যে, দুইটি দ্বি-শতক রানের ইনিংস ছিল।[৮] জুন মাসে গ্লুচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ২৬১ রান তুলেন। ঐ সময়ে এটিই তার ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল। দূর্বলতম প্রতিপক্ষীয় দলের উইকেট-রক্ষক ব্যতীত সকলেই বোলিং কর্মে অগ্রসর হয়েছিলেন।[১২] এক মাসেরও কম সময়ে ওরচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ২২৩ রান তুলেন।[১৩]
কিছুদিন পর ১৯৩৪ সালে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হার্বার্ট সাটক্লিফ আঘাতের কারণে খেলতে অপারগতা প্রকাশ করলে লিডসে অ্যাশেজ সিরিজের চতুর্থ টেস্ট খেলার জন্যে তার ডাক পড়ে। পরিবর্তিত খেলোয়াড় হিসেবে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয় তার। এ টেস্টটি ইংল্যান্ডের জন্যে সুবিধের ছিল না। চারদিনেরও অধিক সময় ইংল্যান্ড দল সকল বিভাগেই ব্যর্থতার স্বাক্ষর রাখে। দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ড দল ১৬৫ রানে পিছিয়ে থাকা অবস্থায় প্রচণ্ড বজ্রঝড়ে পিচ খেলার অনুপযোগী হয়ে পড়লে আর খেলা সম্ভব হয়নি।[১৪] কোন ইনিংসেই কোন ইংরেজ ব্যাটসম্যান অর্ধ-শতকের কোটা স্পর্শ করতে পারেন। কিটন ২৫ ও ১২ রান তুলেন। সকল প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যান দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পারলেও তেমন সুবিধে করতে পারেননি। এর বিপরীত চিত্র অস্ট্রেলীয়দের মাঝে বিরাজ করে। বিল পন্সফোর্ড ১৮১ ও ডন ব্র্যাডম্যান ৩০৪ রান তুলেন।[১৫] পঞ্চম টেস্টের পূর্বে হার্বার্ট সাটক্লিফ আরোগ্য লাভ করলে কিটনকে স্থানচ্যূত হতে হয়।
এরপর ১৯৩৫ সালের শুরুতে জানুয়ারিতে লরির ধাক্কায় ম্যান্সফিল্ডে নিজ গৃহের কাছাকাছি এলাকায় গুরুতর আহত হন। তার হাড় ও পাঁজর ভেঙ্গে যায়।[১৬] তিন সপ্তাহ তাকে হাসপাতালে অবস্থান করতে হয় ও চিকিৎসকের প্রতিবেদনে ১৯৩৫ মৌসুমের শেষ অবধি তিনি ক্রিকেট খেলার অনুপযোগীরূপে উল্লেখ করা হয়।[১৭] জুন মাসের শেষদিকে নটিংহ্যামশায়ার দলে ফিরে আসেন। দুই মাসেরও কম সময়ে প্রথম খেলেন ও আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে পুনরায় খেলার জগতে ফিরে আসেন। স্বভাবতঃই তার রান সংগ্রহ ও গড়ে ব্যাপক রদবদল হয়।[৮]
১৯৩৬ সালে পুরোপুরি সুস্থ হন ও অসাধারণ মৌসুম না হলেও গড়ের দিক দিয়ে ৩০ রান তুলেন। একবার ১১৫ রানের ইনিংস খেলেন। তাসত্ত্বেও, নটিংহ্যামশায়ারের যে-কোন খেলোয়াড়ের তুলনায় বেশি রান তুলেন।[৮] ১৯৩৭ সালে এর পুণরাবৃত্তি ঘটান। গড় রান ৪৫-এ চলে আসে। আবারো দুই সহস্রাধিক রান তুলেন। কিন্তু, জো হার্ডস্টাফ জুনিয়রের অসাধারণ কৃতিত্বের ফলে তিনি কিংবা অন্য নটিংহ্যামশায়ারের ব্যাটসম্যান ঢাকা পড়ে যায়।[৮] ১৯৩৭ সালে কিটনের উল্লেখযোগ্য দিক ছিল বেশ কয়েকটি ইনিংস দূর্দান্ত খেলেন। তিনটি শতরানের ইনিংসসহ অপরাজিত ৯৯ ও ৯৭ রান তুলেন। এ পর্যায়ে মাত্র আটটি খেলায় এ সাফল্য ধরা দেয়।[১৮] তাসত্ত্বেও, ১৯৩৭ সালে সফরকারী নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে সিরিজের কোন টেস্ট খেলার জন্যে তাকে ডাকা হয়নি। নতুন খেলোয়াড়দেরকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়।
১৯৩৮ সালটি ওয়াল্টার কিটনের জন্যে তেমন সুবিধের হয়নি। ২৯.০৭ গড়ে ১৫১২ রান তুলেন। এবারই প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ মৌসুমে ৩০-এর নিচে গড়ে রান তুলেছিলেন।[৮] উইজডেন মন্তব্য করে যে, মৌসুমের শুরুতে তার ব্যাটিংয়ে ধারাবাহিকতা ছিল না। এর পাশে স্বাস্থ্য সমস্যায়ও ভুগেন তিনি। অক্টোবরে অ্যাপেন্ডিসাইটিসের কারণে অস্ত্রোপাচার করতে হয়েছিল।[১৯] আরোগ্য লাভের পর ১৯৩৯ সালে প্রথমবারের মতো পঞ্চাশোর্ধ্ব গড়ে রান তুলেন। ৫১.৯১ গড়ে ১৭৬৫ রান তুলেছিলেন তিনি।[৮] এ রানগুলোর মধ্যে নটিংহ্যামশায়ারের পক্ষে রেকর্ডসংখ্যক অপরাজিত ৩১২ রানের ইনিংস অন্তর্ভুক্ত ছিল। মিডলসেক্সের ব্যবহৃত মাঠ লর্ডসের মালিকানাস্বত্ত্ব এমসিসির থাকায় এটন বনাম হ্যারোর মধ্যকার খেলা অনুষ্ঠিত হয়। ফলশ্রুতিতে, লর্ডসের পরিবর্তে ওভালে এ খেলাটি অনুষ্ঠিত হয়।[২০] এ ইনিংসটি সোয়া সাত ঘণ্টাব্যাপী স্থায়ী ছিল। ২৮টি চার ও একটি পাঁচের মার ছিল। এ রান সংগ্রহকালে চারবার আউট হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন তিনি।[২১] এ মৌসুমে কিটনের খেলার মান আগ্রহোদ্দীপক হওয়ায় ১৯৩৯ সালে তিন টেস্টের সিরিজ খেলতে আসা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয়বারের মতো চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। বড় ধরনের রানের খেলায় তিনি সফলতা পাননি। প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে বিদেয় নেন। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ২০ রান তুলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে এটিই শেষ টেস্ট ছিল। ফলে, কিটনেরও টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবন সীমিত হয়ে আসে।[২২] কিন্তু, নিজস্ব সর্বাধিক সফলতম মৌসুম অতিবাহিত করার কারণে ১৯৪০ সালের উইজডেন সংস্করণে অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননায় ভূষিত হন ওয়াল্টার কিটন।[২৩]
যুদ্ধোত্তর সময়কাল
সম্পাদনাদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে বেশ কয়েকবার উঁচুমানের খেলা উপহার দিয়েছিলেন ওয়াল্টার কিটন। তন্মধ্যে, ১৯৪৩ সালে জাতীয় পুলিশের সদস্যরূপে আর্মির বিপক্ষে তিনি খেলেছিলেন।[২৪] ১৯৪৬ সালে পুনরায় প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটের প্রচলন হলে নটিংহ্যামশায়ারের পক্ষে খেলতে থাকেন। বিশ্বযুদ্ধ পূর্বেকার খেলার ধরন তখনো তার মাঝে বহমান ছিল। ১৯৪৬ সালে মাত্র সাতজন ইংরেজ ব্যাটসম্যানের একজন হিসেবে দুই সহস্র রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন। পাঁচ সেঞ্চুরি সহযোগে ৪৩.৯৩ গড়ে ২০২১ রান তুলেন।[৮] ১৯৪৭ সালের উত্তপ্ত গ্রীষ্মে রান সংগ্রহ করা দুষ্কর হলেও গড়ের দিক দিয়ে ঠিকই তিনি ধরে রেখেছিলেন। ১৯৪৮ সালে রান সংগ্রহ ও গড়ের দিক দিয়ে পড়তির দিকে চলে যায়। তাসত্ত্বেও, নটিংহ্যামশায়ারের যে-কোন ব্যাটসম্যানের তুলনায় শীর্ষস্থান অধিকার করেছিলেন।[৮] ১৯৪৮ সালে অপরাজেয় নামধারী অস্ট্রেলিয়া দল ইংল্যান্ড সফরে আসে। অস্ট্রেলিয়া একাদশে বিপক্ষে রে লিন্ডওয়ালের বলে হৃদপিণ্ডে গুরুতর আঘাত হানে ও পিচে পড়ে যান। এক্স-রেতে পূর্বেকার লরির আঘাতের স্থানে স্পর্শ না করলেও তিনি আর ইনিংস সম্পন্ন করতে পারেননি ও পরবর্তী দুই খেলায় অংশগ্রহণ করা থেকে নিজেকে বিরত রাখেন।[২৫]
১৯৪৯ সালে ৪৪ বছর বয়সী ওয়াল্টার কিটন তার ব্যক্তিগত সেরা মৌসুম অতিবাহিত করেন। গড়ের দিক দিয়ে যে-কোন সময়ের চেয়ে সেরা ছিল। ৫৫.৩৭ গড়ে ২০৪৯ রান তুলেন। ছয়টি সেঞ্চুরি সহযোগে এ রান তুলেন। এতে নিজস্ব সর্বশেষ দ্বি-শতক রানের ইনিংস ছিল। ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে ২১০ রানের ইনিংসটির জন্যে তাকে ৪০৫ মিনিট ক্রিজে অবস্থান করতে হয়েছিল। এ পর্যায়ে তৃতীয় উইকেট জুটিতে হার্ডস্টাফের সাথে ২৬০ ও রেগ সিম্পসনের সাথে পঞ্চম উইকেটে ১৭৪ রান তুলেন।[২৬] উইজডেনে মন্তব্য করা হয় যে, সামনের বছরগুলোয় খেলার কোন চিহ্ন তুলে ধরতে পারেননি।[২৭] কিন্তু পরের মৌসুমে শুরুতেই কয়েকটি খেলায় অসুস্থতাজনিত অনুপস্থিতি ও পরবর্তী খেলাগুলোয় ভাঙ্গা আঙ্গুল নিয়ে খেলার ফলে পূর্ণাঙ্গকালীন প্রথম একাদশের খেলোয়াড় হবার পর মাত্র দ্বিতীয়বারের মতো সহস্র রানের মাইলফলক স্পর্শ করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন।[৮] ১৯৫১ সালে রান গড়ের দিক দিয়ে আরও পতনের মুখোমুখি হন। ৩০.৭৩ গড়ে ৯২২ রান তুলেন। তবে, শেষবারের মতো সেঞ্চুরি করেন তিনি। ১৪২ রানের ইনিংস করাকালীন কেন্টের বিপক্ষে সিম্পসনের সাথে উদ্বোধনী জুটিতে ২৬৯ রান তুলেছিলেন। [২৮] ১৯৫১ সালে প্রথমবারের নটিংহ্যামশায়ার দল পয়েন্ট তালিকার সর্বশেষ অবস্থানে চলে যায়। ১৯৫২ সালে কাউন্টি কর্তৃপক্ষ তরুণ খেলোয়াড়দের প্রাধান্য দেন। এ মৌসুমে আর একটি খেলায় অংশ নিলেও ব্যর্থ হন। মাইনর কাউন্টিজ চ্যাম্পিয়নশীপে দ্বিতীয় একাদশের পক্ষে গড়ের দিক দিয়ে শীর্ষস্থানে থাকার পর অবসর গ্রহণ করেন।
খেলার ধরন
সম্পাদনাডানহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান - কিটন ও হ্যারিস উভয়ে চল্লিশেরও অধিক শতরানের জুটি গড়েছিলেন। তাদের সাফল্যের উপর দলের ভিত্তি গড়ে উঠতো। রান সংগ্রহ ও গড়ের রেকর্ডও প্রায় মিল ছিল। তবে, ব্যাটিংয়ের ধরনে ভিন্ন ছিল ও অবস্থানের দিকও পৃথক ছিল। সংগৃহীত ৫৪ সেঞ্চুরির সবকটিই নটিংহ্যামশায়ারের পক্ষে করেছেন। একটিবাদে সবগুলোই চ্যাম্পিয়নশীপের খেলায় করেন। অপরাজিত ২০০ রানের একটি সেঞ্চুরি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে করেছিলেন। নটিংহ্যামশায়ারের পক্ষে ৪০ ঊর্ধ্ব গড়ে রান তুলেন। তবে, কয়েকটি খেলায় সফলতার কারণে তার সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনের গড় ৩৯.৫৩-এ এসে দাঁড়ায়।
ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি উচ্চমানসম্পন্ন ফিল্ডার হিসেবে নিজেকে পরিচিত করে তুলেন ওয়াল্টার কিটন। প্রায়শঃই তিনি থার্ড ম্যান এলাকায় অবস্থান করতেন। দলের প্রয়োজনে মাঝে-মধ্যে বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবন মাত্র দুইটি উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। উভয়টিই ১৯৩৪ সালে হরশ্যামে ড্র হওয়া খেলায় পেয়েছিলেন।[২৯]
অবসর
সম্পাদনাক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর ওয়াল্টার কিটন ক্রীড়া সরঞ্জামাদির প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। এছাড়াও, জাতীয় কয়লা বোর্ডে কেরানি হিসেবে কাজ করেন।[৩০][৩১] ১০ অক্টোবর, ১৯৮০ তারিখে ৭৫ বছর বয়সে ম্যান্সফিল্ডের ফরেস্ট টাউনে ওয়াল্টার কিটনের দেহাবসান ঘটে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Player Profile: Walter Keeton"। www.cricketarchive.com। সংগ্রহের তারিখ ২৪ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ "Cricketer of the Year 1940: Walter Keeton"। ESPNcricinfo।
- ↑ "Census return, 1911"। www.ancestry.co.uk। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৩।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "England and Wales, Marriage Index"। www.ancestry.co.uk। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৩।
- ↑ ক খ "First-class Matches Played by Walter Keeton"। www.cricketarchive.com। সংগ্রহের তারিখ ২৪ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ "Notts Matches"। Wisden Cricketers' Almanack। Part II (1932 সংস্করণ)। Wisden। পৃষ্ঠা 185।
- ↑ "Scorecard: Nottinghamshire v Essex"। www.cricketarchive.com। ১০ জুন ১৯৩১। সংগ্রহের তারিখ ২৪ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট "First-class Batting and Fielding in Each Season by Walter Keeton"। www.cricketarchive.com। সংগ্রহের তারিখ ২৪ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ "Scorecard: Cambridge University v Nottinghamshire"। www.cricketarchive.com। ২৫ মে ১৯৩২। সংগ্রহের তারিখ ২৪ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ "Scorecard: Nottinghamshire v Glamorgan"। www.cricketarchive.com। ১৩ আগস্ট ১৯৩২। সংগ্রহের তারিখ ২৪ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ ক খ "Notts Matches"। Wisden Cricketers' Almanack। Part II (1934 সংস্করণ)। Wisden। পৃষ্ঠা 260–261।
- ↑ "Scorecard: Nottinghamshire v Gloucestershire"। www.cricketarchive.com। ২০ জুন ১৯৩৪। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ "Scorecard: Nottinghamshire v Worcestershire"। www.cricketarchive.com। ১৪ জুলাই ১৯৩৪। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ "Australians in England"। Wisden Cricketers' Almanack। Part II (1934 সংস্করণ)। Wisden। পৃষ্ঠা 38–40।
- ↑ "Scorecard: England v Australia"। www.cricketarchive.com। ২০ জুলাই ১৯৩৪। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ "W. Keeton Injured"। The Times (46967)। London। ২১ জানুয়ারি ১৯৩৫। পৃষ্ঠা 7।
- ↑ "Cricket"। The Times (46980)। London। ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৫। পৃষ্ঠা 6।
- ↑ "Nottinghamshire in 1937"। Wisden Cricketers' Almanack (1938 সংস্করণ)। Wisden। পৃষ্ঠা 460।
- ↑ "Nottinghamshire in 1938"। Wisden Cricketers' Almanack (1939 সংস্করণ)। Wisden। পৃষ্ঠা 468।
- ↑ "Scorecard: Middlesex v Nottinghamshire"। www.cricketarchive.com। ১৫ জুলাই ১৯৩৯। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ "Middlesex in 1939"। Wisden Cricketers' Almanack (1940 সংস্করণ)। Wisden। পৃষ্ঠা 390।
- ↑ "Scorecard: England v West Indies"। www.cricketarchive.com। ১৯ আগস্ট ১৯৩৯। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ "Five Cricketers of the Year"। Wisden Cricketers' Almanack (1940 সংস্করণ)। Wisden। পৃষ্ঠা 41।
- ↑ "Police XI v The Army"। The Times (49636)। London। ২৮ আগস্ট ১৯৪৩। পৃষ্ঠা 2।
- ↑ Ray Robinson (১ জুন ১৯৪৮)। "Opening Notts Bat is Knocked Out"। Daily News। Perth, Western Australia। পৃষ্ঠা 9।
- ↑ "Scorecard: Yorkshire v Nottinghamshire"। www.cricketarchive.com। ২৫ জুন ১৯৪৯। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ "Nottinghamshire in 1949"। Wisden Cricketers' Almanack (1950 সংস্করণ)। Wisden। পৃষ্ঠা 461।
- ↑ "Scorecard: Nottinghamshire v Kent"। www.cricketarchive.com। ১ আগস্ট ১৯৫১। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ "Scorecard: Sussex v Nottinghamshire"। www.cricketarchive.com। ৯ জুন ১৯৩৪। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ "National Probate Calendar for William Keeton, 1963"। www.ancestry.co.uk। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৩।
- ↑ "Walter Keeton"। espncricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ২২ নভেম্বর ২০১৭।
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে ওয়াল্টার কিটন (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে ওয়াল্টার কিটন (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)