ওংকারেশ্বর
ওংকারেশ্বর (হিন্দি: ओंकारेश्वर, প্রতিবর্ণীকৃত: ওংকারেশ্ভ়র) বা ওঙ্কারেশ্বর ভারতের মধ্য প্রদেশ রাজ্যের খাণ্ডোয়া জেলার একটি নগর পঞ্চায়েত-শাসিত শহর।
ওংকারেশ্বর | |
---|---|
শহর | |
মধ্য প্রদেশ, ভারতে অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২২°১৪′৪৪.১″ উত্তর ৭৬°০৯′০৩.৮″ পূর্ব / ২২.২৪৫৫৮৩° উত্তর ৭৬.১৫১০৫৬° পূর্ব | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | মধ্য প্রদেশ |
জেলা | খাণ্ডোয়া |
আয়তন | |
• মোট | ১২.৬৯ বর্গকিমি (৪.৯০ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১[১]) | |
• মোট | ১০,০৬৩ |
• জনঘনত্ব | ৭৯০/বর্গকিমি (২,১০০/বর্গমাইল) |
ভাষা | |
• সরকারী | হিন্দি, ইংরাজী |
সময় অঞ্চল | আইএসটি (ইউটিসি+৫:৩০) |
যানবাহন নিবন্ধন | MP (এমপি) |
http://omkareshwar.org/English |
জনসংখ্যার উপাত্ত
সম্পাদনা২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ভারতের জনগণনা অনুসারে ওংকারেশ্বর নগর পঞ্চায়েতটির জনসংখ্যা ১০০৬৩ জন, যার মধ্যে ৫৩২২ জন পুরুষ ও ৪৭৪১ জন নারী৷ প্রতি হাজার পুরুষে ৮৯১ জন নারী৷ ৬ বছর অনুর্দ্ধ ১৫৭৭ জন শিশু, যা সমগ্র জনসংখ্যার ১৫.৬৭ %৷ ৬ বছরোর্দ্ধ জনসংখ্যার ৭০.৪৭% অর্থাৎ ৫৯৮০ জন সাক্ষর, যা রাজ্যের ৬৯.৩২% গড় সাক্ষরতা হারের চেয়ে বেশি৷[২] পুরুষ সাক্ষরতার হার ৭৯.৮৮% এবং নারী সাক্ষরতার হার ৬৯.৩২%৷
অবস্থান
সম্পাদনাএটি ভারতের মধ্য-পশ্চিমে অবস্থিত মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের খাণ্ডোয়া জেলাতে অবস্থিত৷ ওংকারেশ্বর নর্মদা নদীর জলে পুষ্ট এবং পলিবহনের ফলে সৃষ্ট৷ এটি ভারতের পবিত্র নদীগুলির মধ্যে অন্যতম এবং বর্তমানে ভারতের বৃৃহত্তর বাঁধপ্রকল্পের মধ্যে একটি৷ ওংকারেশ্বরে অবস্থিত ওঙ্কারেশ্বর মন্দিরটি নর্মদা নদী ও তার উপনদী কাবেরীর তীরে মান্ধাতা দ্বীপে অবস্থিত৷ দ্বীপটি ২.৬ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃৃত এবং নৌপরিবহনের মাধ্যমে মূল ভূখণ্ডের সাথে যুক্ত৷
জ্যোতির্লিঙ্গ
সম্পাদনাওঙ্কারেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ | |
---|---|
ধর্ম | |
অন্তর্ভুক্তি | হিন্দুধর্ম |
ঈশ্বর | ওঙ্কারেশ্বর (শিব) |
শিবপুরাণের স্তোত্র অনুসারে, একদা সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা এবং পালনকর্তা বিষ্ণুর মধ্যে কে শ্রেষ্ট এই নিয়ে তর্ক বাঁধে৷[৩] তাদের উভয়কে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য ভগবান শিব স্বর্গ-মর্ত-পাতাল এই ত্রিভূবনভেদী জ্যোতির্ময় স্তম্ভের কার নেন, যাকে জ্যোতির্লিঙ্গ বলা হয়ে থাকে৷ ব্রহ্মা এবং বিষ্ণু জ্যোতির্লিঙ্গের জ্যোতির শেষ ও শুরু আন্দাজ করতে যথাক্রমে শীর্ষমুখী ও ভিত্তিমুখে গমন করে৷ ব্রহ্মা জ্যোতির শেষ খুঁজে পেয়েছেন বলে মিথ্যাচার করেন ফলে বিষ্ণু তার হার স্বীকার করে৷ অপর একটি জ্যোতিরূপে ভগবান শিব প্রকাশিত হন এবং ব্রহ্মাকে মিথ্যা বলার জন্য অভাশাপ দেন যে, তিনি বাহ্যলোকাকতায় স্থান পাবেন না, অপরপক্ষে বিষ্ণু সৃৃষ্টির শেষদিন অবধি পূজিত হবেন৷ জ্যোতির্লিঙ্গ হলো অনন্ত অখণ্ড সত্য, যা শিবকে উদ্দেশ্য করে৷ এইকারণে ভগবান শিব যেই স্থানে অগ্নিসদৃৃশ স্তম্ভ হিসাবে প্রকাশ পান জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দিরগুলি সেইস্থানেই প্রতিষ্ঠিত করা হয়৷[৪][৫] মহাবিশ্বে ৬৪ টি মূল জ্যোতির্লিঙ্গ আছে বলে অনুমান করা হলেও তার মধ্যে ১২টিকে প্রধান ও স্বতঃশুদ্ধ বলে বিশ্বাস করা হয়৷ [৩] বারো জ্যোতির্লিঙ্গের প্রতিটি স্থানের নাম উদ্দিষ্ট দেবতার নামে উৎসর্গীকৃত এবং প্রতিটিই ভিন্নগুণে শিবের প্রকাশকে দর্শায়৷[৬] ঐসকল স্থানে আরম্ভহীন অনন্তগুণী শিবের প্রতীক হিসাবে স্তম্ভাকৃৃতি শিবলিঙ্গ রয়েছে৷[৬][৭][৮]
মন্দিরের ইতিহাস ও জনশ্রুতি
সম্পাদনাহিন্দুশাস্ত্র মতে বিন্ধ্যাচল পর্বতমালার রক্ষক শূর বিন্ধ্য নিজ পাপ স্খলনের জন্য মহাদেবকে প্রসন্ন করেন৷ তিনি পবিত্র জ্যামিতিক নকশার মাধ্যমে বালি ও পলির মিশ্রণে একটি শিবলিঙ্গ তৈরী করেন৷ ভগবান শিব তার তপস্যায় প্রসন্ন হন এবং দুটি রূপে তার সামনে প্রকাশিত হন৷ মনে করা হয় ঐ দুটি রূপই যথাক্রমে ওঙ্কারেশ্বর এবং অমরেশ্বর (বর্তমানে নাম মমলেশ্বর) শিবলিঙ্গ৷ নদীগর্ভের পলি ঘনীভূত হয়ে দেবনাগরী 'ॐ' (ওঁ) এর আকার ধারণ করলে দ্বীপটির নাম রাখা হয় ওংকারেশ্বর৷ মন্দিরে একটি পার্বতীমূর্তি এবং একটি পঞ্চমুখী গণেশ মূর্তিও রয়েছে৷[৯]
দ্বিতীয় জনশ্রুতিটি মান্ধাতা এবং তার পুত্রের তপস্যা সম্বন্ধীয়৷ শ্রীরামচন্দ্রের পূর্বসুরী তথা সূর্যবংশীয় ইক্ষ্বাকু বংশের রাজা মান্ধাতা ভগবান শিবের লিঙ্গরূপে অবতরণ অবধি এইস্থানেই তপস্যা করেছিলেন৷ কিছু বিদ্বজ্জন মান্ধাতার পুত্রদ্বয় অম্বরীশ এবং মুচুকুন্দের কাহিনীর বর্ণনা দেন৷ তারা এইস্থানে নিজেদের কঠোর প্রায়শ্চিত্ত ও তপস্যার মাধ্যমে ভগবান শিবকে তুষ্ট করেন, একই কারণে ঐ অঞ্চলে অবস্থিত পর্বতটির নাম মান্ধাতা পর্বত৷
তৃতীয় জনশ্রুতিটি হিন্দুপুরাণের গল্প থেকে আধারিত৷ পুরাণ মতে এইস্থানে দেব ও দানবের ভীষণ যুদ্ধে দানবকুলের জয় হয়৷ এটা ছিলো দেবগণের জন্য একটি গুরুতর পরাজয়, ফলে তারা ভগবান শিবকে আহ্বান জানান৷ তাদের আহ্বানে সন্তুষ্ট হয়ে তিনি ওঙ্কারেশ্বর শিবের আকার ধারণ করেন ও দানবকুলের নাশ করেন৷
ওংকারেশ্বরের নিকট আদি শঙ্করাচার্যের গুহা অবস্থিত৷ মনে করা হয় এই গুহাতেই তিনি তার গুরু গোবিন্দপদের সাক্ষাৎ পান৷ গুহাটির অস্তিত্ব বর্তমানে ওংকারেশ্বরে ওঙ্কারেশ্বর মন্দিরের নিচে পাওয়া যায় এবং সেখানে একটি আদি শঙ্করাচার্যের মূর্তিও রয়েছে৷[১০]
আরও দেখুন
সম্পাদনা- ১ম সোমনাথ মন্দির, সৌরাষ্ট্র
- ২য় মল্লিকার্জুন মন্দির, শ্রীশৈলম
- ৩য় মহাকালেশ্বর মন্দির, উজ্জয়িনী
- ৫ম বৈদ্যনাথ মন্দির, পরল্যাম
- ৬ষ্ঠ ভীমশঙ্কর মন্দির, ওড়িশা ডাকিন্যাম
- ৭ম রামেশ্বরম মন্দির, সেতুবন্ধ
- ৮ম নাগেশ্বর মন্দির, দারুকাবন
- ৯ম কাশী বিশ্বনাথ মন্দির, বারাণসী
- ১০ম ত্র্যম্বকেশ্বর মন্দির, গৌতমীতট
- ১১ম কেদারনাথ মন্দির, হিমালয়
- ১২ম ঘুশ্মেশ্বর মন্দির
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ http://www.censusindia.gov.in/2011census/dchb/DCHB.html
- ↑ https://www.census2011.co.in/data/town/306854-shyamdhan-west-bengal.html
- ↑ ক খ R. 2003, pp. 92-95
- ↑ Eck 1999, p. 107
- ↑ See: Gwynne 2008, Section on Char Dham
- ↑ ক খ Lochtefeld 2002, pp. 324-325
- ↑ Harding 1998, pp. 158-158
- ↑ Vivekananda Vol. 4
- ↑ Harshananda, Swami (২০১২)। Hindu Pilgrim centres (2nd সংস্করণ)। Bangalore, India: Ramakrishna Math। পৃষ্ঠা 98–100। আইএসবিএন 81-7907-053-0।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২১ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুন ২০১৯।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ওমকেশ্বর ভ্রমণ গাইড এবং লকডাউন হালনাগাদ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৮ এপ্রিল ২০২১ তারিখে
ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্য বিষয়ক এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |