এ. জি. মিল্খা সিং
অমৃতসর গোবিন্দসিং মিল্খা সিং (৩১ ডিসেম্বর, ১৯৪১ - মৃত্যু: ১০ নভেম্বর, ২০১৭) তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের মাদ্রাজে জন্মগ্রহণকারী ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন।[১] ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ফিল্ডার হিসেবেও তার যথেষ্ট সুনাম ছিল।
; জন্ম:ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | অমৃতসর গোবিন্দসিং মিল্খা সিং | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | মাদ্রাজ (বর্তমানে চেন্নাই), ভারত | ৩১ ডিসেম্বর ১৯৪১|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১০ নভেম্বর ২০১৭ চেন্নাই, ভারত | (বয়স ৭৫)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | বামহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি মিডিয়াম পেস | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সম্পর্ক | এ. জি. রাম সিং (বাবা) এ. জি. কৃপাল সিং (ভ্রাতা) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৯৭) | ১৩ জানুয়ারি ১৯৬০ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ১১ নভেম্বর ১৯৬১ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৫৮/৫৯ - ১৯৬৮/৬৯ | মাদ্রাজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৮ নভেম্বর ২০১৭ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তামিলনাড়ুর প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ আকর্ষণীয় ভঙ্গীমার অধিকারী বামহাতি মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, দলের প্রয়োজনে মাঝে-মধ্যে ডানহাতে মিডিয়াম পেস বোলার হিসেবে খেলতেন এ. জি. মিল্খা সিং।
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনা১৯০৪ সালে অমৃতসর থেকে মাদ্রাজে স্থানান্তরিত হয় তার পূর্ব-পুরুষ। তামিলনাড়ুর ক্রিকেটে প্রথম পরিবার হিসেবে ছয় দশককালেরও অধিক সময় ক্রিকেট খেলার সাথে জড়িত। এক সুপরিচিত ক্রিকেট পরিবারে মিল্খা সিংয়ের জন্ম। এ পরিবারেই তিন প্রজন্ম ধরে চলমান ধারার অংশ হিসেবে বাবা এ. জি. রাম সিং প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটার ও কোচ ছিলেন। তার আরেক ভাই সফলতম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা এ. জি. কৃপাল সিং এসেছেন। রাম সিংয়ের পাঁচ সন্তানের মধ্যে চতুর্থ পুত্র ছিলেন। ১৩ বছর বয়সে প্রথম ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন। তখন তার পরিবার এম এ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামের পাশে ওয়াল্লাজাহ রোডে বসবাস করতো।
বিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালেই তার মাঝে ক্রিকেটীয় প্রতিভা লক্ষ্য করা যায়। তার এ প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটে ১৬ বছর বয়সে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটার মাঝে। আন্তঃআঞ্চলিক কোচবিহার ট্রফি প্রতিযোগিতায় খেলার জন্য দক্ষিণাঞ্চল বিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করেন। চূড়ান্ত খেলায় পশ্চিমাঞ্চলের বিপক্ষে ১১৪ রান তুলেন তিনি। ফলশ্রুতিতে সর্বভারতীয় বিদ্যালয় ক্রিকেট দলের সহঃ অধিনায়কের মর্যাদা লাভ করেন তিনি ও ১৯৫৫ সালে দলকে নিয়ে সিলন গমন করেন। ঐ প্রতিযোগিতায় তিনি সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ও সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী ছিলেন।
চেন্নাইয়ের লয়োলা কলেজে অধ্যয়ন করেন মিলখা সিং। ভোটের মাধ্যমে দুইবার মহাবিদ্যালয়ের বর্ষসেরা ক্রিকেটার মনোনীত হন। বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজ্য দলের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি।
ঘরোয়া ক্রিকেট
সম্পাদনাএক দশককাল তৎকালীন মাদ্রাজ (পরবর্তীতে: তামিলনাড়ু) দলের প্রধান ব্যাটিং মেরুদণ্ড ছিলেন মিল্খা সিং। সচরাচর তিন নম্বর অবস্থানে ব্যাট হাতে মাঠে নামতেন। ৩৫.৪৪ গড়ে আট সেঞ্চুরি সহযোগে ৪,৩২৪ রান সংগ্রহ করতে পেরেছেন।
১৭ বছর বয়সে রঞ্জী ট্রফিতে অভিষেক ঘটে তার। কেবলমাত্র রঞ্জী ট্রফিতে তামিলনাড়ুর পক্ষে ৪১.৩৫ গড়ে ২,১৫০ রান তুলেন। এছাড়াও, দিলীপ ট্রফিতে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে সেঞ্চুরি করেছিলেন। ১৯৬১-৬২ মৌসুমে মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত দিলীপ ট্রফির উদ্বোধনী খেলায় দক্ষিণ অঞ্চলের সদস্যরূপে উত্তর অঞ্চলের বিপক্ষে ১৫১ রানের মনোজ্ঞ শতরান তুলেন। ষাটের দশকের শুরু থেকে মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে দূর্দান্ত খেলেছিলেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
সম্পাদনাসমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ভারত দলের পক্ষে দুই বছরেরও কম সময়ের মধ্যে চার টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পান তিনি। অষ্টাদশ জন্মদিনের অল্প কিছুদিন পরই ১৯৫৯-৬০ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্টে অভিষিক্ত হন মিল্খা সিং। ১৯৬০-৬১ মৌসুমে পাকিস্তান সফরে যান ও ১৯৬১-৬২ মৌসুমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এক টেস্টে অংশগ্রহণ করেন তিনি। তন্মধ্যে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনিসহ বড় ভাই এ. জি. কৃপাল সিং ও বমন কুমার অংশ নিয়েছিলেন যা তিনজন তামিলনাড়ুর খেলোয়াড়ের একযোগে অংশগ্রহণের একমাত্র ঘটনা ছিল। ওয়েস হল ও সনি রামাদিনের ন্যায় বোলারদের বিপক্ষে দৃঢ়চিত্তে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন তিনি। সর্বশেষ টেস্টে অংশগ্রহণকালীন তার বয়স ছিল মাত্র ১৯ বছর। ২০ বছর পূর্তির আগেই টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে।
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনাখেলায় অংশগ্রহণের জন্য কোনরূপ অর্থ পেতেন না। আর্থিক নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ১৯৬২ সালে ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্কে চাকরি গ্রহণ করেন। ষাটের দশকের শেষার্ধ্ব থেকে শুরু করে সত্তরের দশকের শুরুর দিক পর্যন্ত সাবেক লেগ স্পিনার ভিভি কুমারসহ ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্ক দলের প্রধান সদস্য ছিলেন তিনি।
মিল্খার বড় ভাই প্রয়াত এ. জি. কৃপাল সিং ডানহাতি ব্যাটসম্যান ও অফ স্পিনার ছিলেন। ১৯৫৫ থেকে ১৯৬৪ সময়কালে ভারতের পক্ষে কৃপাল সিং ১৪ টেস্টে অংশ নেন। হায়দ্রাবাদে সফরকারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টেই তিনি অপরাজিত ১০০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন কৃপাল। কনিষ্ঠ ভ্রাতা সত্যেন্দর তামিলনাড়ুর পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
১০ নভেম্বর, ২০১৭ তারিখে ৭৬ বছর বয়সে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধের কারণে চেন্নাইয়ে এ. জি. মিল্খা সিংয়ের দেহাবসান ঘটে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Former TN and India cricketer AG Milkha Singh dies aged 75"। ESPN Cricinfo। ১০ নভেম্বর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০১৭।
আরও দেখুন
সম্পাদনাগ্রন্থপঞ্জি
সম্পাদনা- V. Ramnarayan, Mosquitos and other Jolly Rovers
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে এ. জি. মিল্খা সিং (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে এ. জি. মিল্খা সিং (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)