এস এম গণপতি স্থপতি

এস এম গণপতি স্থপতি ( পুরো নাম সত্তনাথ মুথাইয়া গণপতি)  (১৬ এপ্রিল ১৯৩১ - ৭ এপ্রিল ২০১৭)) ছিলেন একজন ভারতীয় স্থপতি এবং ঐতিহ্যবাহী হিন্দু মন্দির-স্থাপত্যের নির্মাতা। [] তিনি নাগার্জুন সাগর বাঁধ সংলগ্ন প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ৪৮ টি মন্দির  জলাশয়ে নিমজ্জনের হাত থেকে রক্ষা করেন। অরিরুক্কই মণিমন্ডপ, ভদ্রাচলমের রামালয়াম এবং কল্যাণ মন্ডপ এবং উত্তরাখণ্ড রাজ্যের বদ্রীনাথ মন্দিরের মহামণ্ডপ নির্মাণ তাঁর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কাজের উদাহরণ। ভারত সরকার তাকে ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মশ্রী প্রদান করে।[]

এস. এম. গণপতি স্থপতি
জন্ম
সত্তনাথ মুথাইয়া গণপতি

(১৯৩১-০৪-২৬)২৬ এপ্রিল ১৯৩১
এলুভানকোত্তাই, রামনাথপুরম জেলা, তামিলনাড়ু, ভারত
মৃত্যু৭ এপ্রিল ২০১৭(2017-04-07) (বয়স ৮৫)
অন্যান্য নামএস. এম. গণপতি স্থপতি
পেশাঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য প্রকৌশলী
পরিচিতির কারণহিন্দু মন্দির-স্থাপত্য
দাম্পত্য সঙ্গীসীতাই অম্মল
সন্তান২ পুত্র,পাঁচ কন্যা
পিতা-মাতামুথু স্থপতি(পিতা)
গৌরী(মাতা)
পুরস্কারপদ্মশ্রী
বদ্রীনাথ মন্দির
 
ভদ্রাচলম
 
বুদ্ধ মূর্তি হোসেন সাগর হায়দ্রাবাদ

সত্তনাথ মুথাইয়া গণপতির জন্ম ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের ২৬ শে এপ্রিল দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের রামনাথপুরম জেলার রামেশ্বরম মন্দির শহর সংলগ্ন এলুভানকোত্তাই নামক এক ছোট্ট গ্রামের স্থপতি পরিবারে। প্রসঙ্গত, এদের পরিবারে স্থপতি ঐতিহ্য প্রজন্ম হতে প্রজন্মে অনুসৃত হয়ে এসেছে প্রাচীন ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত শিল্প শাস্ত্র বা শিল্প বিজ্ঞান তথা বাস্তুশাস্ত্র পরিকল্পিত নকশা ও নির্মাণ পদ্ধতিতে। মুথু স্থপতি এবং তাঁর স্ত্রী গৌরী দেবীর ছয় সন্তানের একজন ছিলেন গণপতি [] স্থপতি পরিবারে সতের বছর ধরে তিনি তাঁর সমসাময়িক শিল্পীদের কাছ থেকে শিল্প শাস্ত্র মতে স্থাপত্য প্রকৌশলে শিক্ষা লাভের পর প্রথম ‘’তিরুমালা তিরুপতি দেবস্থানম’’-এর বসন্ত মণ্ডপম ভেঙ্গে পুনর্গঠনের কাজটি সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি ভদ্রাচলম মন্দিরের রামালয়মকল্যাণ মণ্ডপম  নির্মাণ করেন। ইন্দিরা গান্ধীর প্রধানমন্ত্রীত্বে ভারত সরকার বদ্রীনাথ মন্দির সংস্কারের কাজ নিলে মন্দিরটির মহামণ্ডপম-এর মূল স্থপতি ছিলেন তিনি। [] ইন্দিরা গান্ধীর অধীনে ভারত সরকার যখন মন্দিরের সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেয় তখন তিনি বদ্রীনাথ মন্দিরের মহামন্তপমের স্থপতি ছিলেন। [] নাগার্জুন সাগর বাঁধ সংলগ্ন স্থানে হাজার বছরেরও বেশি পুরানো ৪৮ টি মন্দির জলাশয়ে নিমজ্জনের অবস্থায় পৌঁছেছিল, গণপতি সে সময় তাদের রক্ষার প্রধান দায়িত্ব নিয়ে সেগুলি ভেঙ্গে, অপেক্ষাকৃত উঁচু এবং নিরাপদ স্থানে প্রতিস্থাপন করেন []

অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার তাকে এন্ডোমেন্টস ডিপার্টমেন্টে রাজ্যের মুখ্য স্থপতি হিসাবে নিযুক্ত করে। তিনি সরকারী কর্মচারী হিসাবে কর্মরত থেকে শেষে সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে অবসর নেন তিনি কাঞ্চীপুরমের নিকটস্থ ওরিরুকাইয়ে শ্রী শ্রী শ্রী চন্দ্রশেখরেন্দ্র সরস্বতী স্বামীগাল তথা ৬৮তম শঙ্করাচার্যের স্মৃতিতে মন্দির নির্মাণের প্রকল্পের অধীনস্থ কাঞ্চী কামকোটি পীঠে ১০০ পাথরের স্তম্ভ সম্বলিত মণিমণ্ডপম-এর নকশা ও নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেন তিনি তার দুই পুত্র সহ অনেক উচ্চাকাঙ্ক্ষী স্থপতিকেও শিক্ষা দিয়েছেন। ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকার তাকে চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পদ্মশ্রী প্রদান করে। গণপতি স্থপতি সীতাই অম্মলকে বিবাহ করেন। তাদের পাঁচ কন্যা এবং দুই পুত্র - শঙ্কর স্থপতি ও জয়েন্দ্র স্থপতি। উভয়েই স্থপতি হিসাবে নিজ নিজ ক্ষেত্রে সুপরিচিত হন। তার অনুজ, মুঠিয়াহ স্থপতিও পদ্মশ্রী পুরস্কার বিজয়ী ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যের স্থপতি ছিলেন।

জীবনাবসান

সম্পাদনা

তিনি ২০১৭ খ্রিস্টাব্দের ৭ এপ্রিল চেন্নাই -এ পরলোক গমন করেন। []

আরো দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. P. V. L. Narasimha Rao (২০০৮)। Kanchipuram: Land of Legends, Saints and Temples। Readworthy। পৃষ্ঠা 188। আইএসবিএন 9788189973056 
  2. "Padmasri SM ganapathi Stapathy"। Sree Sankara Silpa। ২০১৫। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "Padmasri SM ganapathi Stapathy" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  3. Man behind Hyderabad's Buddha No more