নাগার্জুন সাগর বাঁধ
নাগর্জুনা সাগর বাঁধটি নাগার্জুন সাগরে কৃষ্ণা নদী জুড়ে নির্মিত হয়েছিল যা নলগন্ডা জেলা ও গুন্টুর জেলার মধ্যে অবস্থিত। বাঁধের নির্মাণকাল ১৯৫৫ সাল ও ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ছিল। বাঁধটি একটি জলাশয় তৈরি করে যার মোট সঞ্চয় ক্ষমতা ১১.৪৭২ বিলিয়ন কিউবিক মিটার (৪০৫.১ × ১০৯ কিলোওয়াট)। বাঁধটি তার গভীরতম ভিত্ত থেকে ৪৯০ ফুট (১৫০ মিটার) উচু এবং ০.৯৯ মাইল (১.৬ কিমি) দীর্ঘ। বাঁধে ২৬ টি জলকপাটিকা রয়েছে যা ৪২ ফুট (১৩ মি) প্রশস্ত এবং ৪৫ ফুট (১৪ মি) উচু।[২] নাগর্জুন সাগর ভারতে সবুজ বিপ্লব অর্জনের জন্য শুরু হওয়া "আধুনিক মন্দির" নামে অভিহিত বড় অবকাঠামো প্রকল্পের প্রথম দিকে ছিল। এটি ভারতের প্রথম বহুমুখী-উদ্দেশ্য যুক্ত সেচ এবং জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলির মধ্যে একটি। বাঁধটি জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি নালগাঁও, সূর্যপদ, কৃষ্ণ, খাম্মাম, পশ্চিম গোদাবরী, গুন্টুর ও প্রকাশম জেলার জল সরবরাহ করে। ৪০৮ টি.এম.সি. সঞ্চয় ক্ষমতার নাগরজুনা সাগর বাঁধের জলাশয়ে আটককৃত সমস্ত জল ব্যবহারের জন্য বাঁধটির করা হয় যা ভারতে দ্বিতীয় বৃহত্তম জলাধার।[১]
নাগার্জুন সাগর বাঁধ | |
---|---|
আনুষ্ঠানিক নাম | నాగార్జునసాగర్ ఆనకట్ట Nagarjuna Sagar Dam |
অবস্থান | গুন্টুর,অন্ধ্রপ্রদেশ,ভারত নালগন্ডা,তেলেঙ্গানা,ভারত |
স্থানাঙ্ক | ১৬°৩৪′৩২″ উত্তর ৭৯°১৮′৪২″ পূর্ব / ১৬.৫৭৫৫৬° উত্তর ৭৯.৩১১৬৭° পূর্ব |
নির্মাণ শুরু | ১০ ডিসেম্বর ১৯৫৫ |
উদ্বোধনের তারিখ | ১৯৬৭ |
নির্মাণ ব্যয় | ₹১৩২.৩২ কোটি টাকা |
বাঁধ এবং অতিরিক্ত জলনির্গমপথ | |
আবদ্ধতা | কৃষ্ণা নদী |
উচ্চতা | ১২৪ মিটার (৪০৭ ফু) from river level |
দৈর্ঘ্য | ১,৫৫০ মিটার (৫,০৮৫ ফু) |
জলাধার | |
তৈরি | Nagarjuna Sagar Reservoir |
মোট ধারণক্ষমতা | ১১.৫৬×১০ ৯ মি৩ (৯×১০ ৬ acre·ft) (405 Tmcft) |
সক্রিয় ধারণক্ষমতা | ৫.৪৪×১০ ৯ মি৩ (৪৪,১০,২৮০ acre·ft)[১] |
অববাহিকার আয়তন | ২,১৫,০০০ বর্গকিলোমিটার (৮৩,০০০ মা২) |
পৃষ্ঠতলের আয়তন | ২৮৫ কিমি২ (১১০ মা২) |
পাওয়ার স্টেশন | |
কার্যকারক | তেলেঙ্গানা বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থা |
সম্পাদনের তারিখ | ১৯৭৮-১৯৮৫ |
ঘূর্ণযন্ত্র | 1 x 110 MW Francis turbine, 7 x 100.8 MW reversible Francis turbines |
স্থাপিত ক্ষমতা | ৮১৬ মেওয়াট (১০,৯৪,০০০ অশ্বশক্তি) |
ইতিহাস
সম্পাদনা১৯৫৫ সালের ১০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু আনুষ্ঠানিকভাবে বাঁধের নির্মাণ কার্য উদ্বোধন করেন এবং পরের বারো বছরের ধরে প্রকল্পটি নির্মাণ করা হয়। এটি সেই সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা গাঁথনি বাঁধ ছিল, স্থানীয় ভাবে জানা যায় বিজয়ওয়াড়ার সংসদ সদস্যা কানুরি লক্ষ্মণ রাও বাঁধ নির্মাণের প্রকৌশলি কাজে দক্ষ নেতৃত্বে ছিলেন।[৩] ১৯৬৭ সালে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী দ্বারা বাম এবং ডান তীরের খালের মধ্যে জলাধার থেকে জলের প্রবাহ চালু করা হয়।[৪] জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পর ১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৮৫ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সাথে সাথে অতিরিক্ত ইউনিটগুলির বিদ্যুৎ উৎপাদন চালু হয়। ২০১৫ সালে, এই প্রকল্পের উদ্বোধনের হীরকজয়ন্তী উদ্যাপন করা হয়েছিল, এই বাঁধটির জন্য অঞ্চলে যে উন্নয়ন হয়েছে তা মনে রেখে।[৫]
বাঁধ নির্মাণের ফলে একটি প্রাচীন বৌদ্ধ বসতি, নাগার্জুনাকন্ডা জলে নিমজ্জিত হয়ে যায় যা প্রথম এবং দ্বিতীয় শতাব্দীর ইকশভাকু সাম্রাজ্যের রাজধানী এবং পূর্ব দাক্ষিণাত্যে সাতবাহন সাম্রাজ্যের উত্তরসূরি ছিল। এখানে খননকার্য চালিয়ে ৩০ টি বৌদ্ধ মঠ, পাশাপাশি নানা শিল্পকর্ম এবং মহান ঐতিহাসিক গুরুত্বের শিলালিপি পাওয়া গেছে। খনন করে স্মৃতিস্তম্ভগুলি স্থানান্তর করা হয়েছে। কিছু প্রত্নতত্ত্ব জলাধারের মাঝখানে অবস্থিত একটি দ্বীপ, নাগাঞ্জেনকোন্ডায় সরানো হয়েছে এবং অন্যদের অনুপু নামক কাছাকাছি মূল ভূখন্ডে সরানো হয়।[৬]
উপাত্ত
সম্পাদনা- অববাহিকা: ২,১৪,১৮৫ বর্গকিলোমিটার (৮২,৬৯৭ মা২)*
- পূর্ণ জলাধারের স্তর (এফআরএল): ১৭৯.৮৩ ম[রূপান্তর: অজানা একক] এমএসএল
- এফআরএল: ২৮৫ বর্গ কিলোমিটারে ছড়িয়ে
- মোট সঞ্চয়স্থান ৪০৫ টি.এম.সি.
- নদী স্লাইডের MDDL: ১৩৭.৩ মিটার (৪৫০ ফু) এমএসএল
- গাঁথুনি বাঁধ
- স্পিলওয়ে বাঁধের: ৪৭১ মিটার
- অপ্রবাহ বাঁধ: ৯৭৯ মি
- বাঁধ দৈর্ঘ্য: ১৪৫০ মি
- সর্বোচ্চ উচ্চতা: ১২৫ মিটার
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "India: National Register of Large Dams 2009" (পিডিএফ)। Central Water Commission। ২১ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১১।
- ↑ "Nagarjunasagar"। ২০০৭-০১-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০১-২৫।
- ↑ "Nagarjuna Sagar documentary film"। সংগ্রহের তারিখ ৫ নভেম্বর ২০১৭।
- ↑ "The Hindu : Magazine / Focus : Taming the Krishna"। ১৬ অক্টোবর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ এপ্রিল ২০১৮।
- ↑ "Nagarjuna Sagar dam completed 60 years"। ১২ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৫।
- ↑ "Nagarjunakonda"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০১-২৫।