এম এস স্বামীনাথন
মানকম্বু সাম্বাসিবন স্বামীনাথন সংক্ষেপে- এম এস স্বামীনাথন (৭ আগস্ট ১৯২৫ - ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩) ছিলেন একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ভারতীয় কৃষি বিজ্ঞানী, উদ্ভিদ জিনতত্ত্ববিদ, প্রশাসক এবং মানবতাবাদী ব্যক্তিত্ব।[১] মূলত ভারতের কৃষিক্ষেত্রে সবুজ বিপ্লবের প্রধান স্থপতি ছিলেন স্বামীনাথন।[২] তার হাত ধরেই ভারতে উচ্চ ফলনশীল গম ও ধানের জাত প্রবর্তন ও জলসেচ ইত্যাদির মাধ্যমে আসে আমূল পরিবর্তন। ভারতের কৃষিক্ষেত্রে আসে নতুন সূর্যোদয়। তাই তিনি ভারতে সবুজ বিপ্লবের জনক।[১][৩] নর্মান বোরলাগের সঙ্গে স্বামীনাথনের সহযোগিতামূলক বৈজ্ঞানিক প্রচেষ্টা কৃষক এবং অন্যান্য বিজ্ঞানীদের মাধ্যমে একটি গণআন্দোলনের জন্ম দেয় এবং জননীতি দ্বারা সমর্থিত হয়। এই গণআন্দোলনই ১৯৬০-এর দশকে ভারত ও পাকিস্তানকে নির্দিষ্ট দুর্ভিক্ষ থেকে রক্ষা করেছিল।[৪] ফিলিপাইন ইন্টারন্যাশনাল রাইস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (আইআরআরআই) মহাপরিচালক হিসাবে তার নেতৃত্বের জন্য ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দে তাকে কৃষিক্ষেত্রের সর্বোচ্চ সম্মান বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার প্রদান করা হয়। জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি তাকে 'ফাদার অফ ইকোনমিক ইকোলজি' বলে অভিহিত করে। তার নেতৃত্বে গঠিত দ্য ন্যাশনাল কমিশন ফর ফার্মার্স (এনএফসি)র রিপোর্ট ভারতে কৃষক সম্প্রদায়ের স্বার্থ রক্ষা করেছে। তাই তিনি ছিলেন 'কৃষক দরদী'ও।[৫]
ড. এম এস স্বামীনাথন | |
---|---|
সদস্য, রাজ্যসভা | |
কাজের মেয়াদ ২০০৭ – ২০১৩ | |
নির্বাচনী এলাকা | মনোনীত |
জন্ম | কুম্ভকোণম, তাঞ্জাবুর জেলা, মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (বৰ্তমানে তাঞ্জাবুর জেলা, তামিলনাডু, ভারত) | ৭ আগস্ট ১৯২৫
মৃত্যু | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | (বয়স ৯৮)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
মাতৃশিক্ষায়তন |
|
দাম্পত্য সঙ্গী | মীনা স্বামীনাথন (বি. ১৯৫৫; মৃত্যু ২০২২) |
সন্তান | সৌম্য স্বামীনাথনসহ তিন |
পুরস্কার | পদ্মশ্রী (১৯৬৭) রমন ম্যাগসেসে পুরস্কার (১৯৭১) পদ্মভূষণ (১৯৭২) বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার (১৯৮৭) পদ্মবিভূষণ (১৯৮৯) |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | উদ্ভিদবিজ্ঞান, উদ্ভিদ বংশগতি তত্ত্ব, বংশাণুবিজ্ঞান, সাইটোজেনেটিক্স, পরিবেশগত অর্থনীতি, উদ্ভিদ প্ৰজনন, ইকোটেকনোলজি |
প্রতিষ্ঠানসমূহ |
|
অভিসন্দর্ভের শিরোনাম | Species Differentiation, and the Nature of Polyploidy in certain species of the genus Solanum–section Tuberarium (১৯৫২) |
ডক্টরাল উপদেষ্টা | এইচ ডব্লিউ হাবাৰ্ড |
বিজ্ঞান ও প্রকৌশল ক্ষেত্রে তার অসামান্য অবদানের জন্য ভারত সরকার ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে 'পদ্মশ্রী', ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে 'পদ্মভূষণ' এবং ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে 'পদ্মবিভূষণ' প্রদান করে।[৬]
স্বামীনাথন সাইটোজেনেটিক্স, আয়নাইজিং বিকিরণ এবং আলু, গম এবং চালের সাথে সম্পর্কিত তেজস্ক্রিয় সংবেদনশীলতার মতো ক্ষেত্রে মৌলিক গবেষণায় অবদান রেখেছিলেন। তিনি পুগওয়াশ কনফারেন্স এবং ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার (IUCN) এর সভাপতি ছিলেন। ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে টাইম পত্রিকা প্রকাশিত বিশ শতকের সবচেয়ে প্রভাবশালী বিশ জন এশীয়দের তালিকায় যে তিনজন ভারতীয় ছিলেন তাদের মধ্যে মহাত্মা গান্ধী ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে তিনি একজন ছিলেন।.[৭] স্বামীনাথন শান্তি স্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার এবং রমন ম্যাগসেসে পুরস্কার পান এবং অ্যালবার্ট আইনস্টাইন ওয়ার্ল্ড সায়েন্স প্রাইজ সহ অসংখ্য পুরস্কার এবং সম্মান পেয়েছে। তিনি ২০০৪ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় কৃষক কমিশনের সভাপতিত্ব করেন যা ভারতের কৃষি ব্যবস্থার উন্নতির জন্য সুদূরপ্রসারী উপায়গুলির সুপারিশ করেছিল। তিনি এমএস স্বামীনাথন রিসার্চ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ।[৭] ১৯৯০-এর দশকে, তিনি 'চিরসবুজ বিপ্লব' শব্দটি ব্যবহার করেন পরিবেশের ক্ষতি না করে টেকসই উৎপাদনের তার স্বপ্নকে বর্ণনা করতে।[২] ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি ভারতীয় সংসদের উচ্চকক্ষের তথা রাজ্যসভার একটি মেয়াদের (২০০৭- ২০১৩) সদস্য মনোনীত হন। তার সময়কালে, তিনি ভারতে মহিলা কৃষকদের স্বীকৃতির জন্য একটি বিল উত্থাপন করেন, কিন্তু তা গৃহীত হয়নি।[৮]
জীবন
সম্পাদনাপ্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা
সম্পাদনাস্বামীনাথন ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দের ৭ আগস্ট ব্রিটিশ ভারতের মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির অধুনা তামিলনাড়ুর তাঞ্জাবুরের কুম্ভকোণম শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চিফ সার্জন ডাঃ এম কে সাম্বাসিভান এবং পার্বতী থাঙ্গাম্মাল সাম্বাসিভানের দ্বিতীয় পুত্র।[৯] এগারো বৎসর বয়সে তার পিতা মারা যাওয়ায় তার পিতৃব্য স্বামীনাথনকে দেখাশোনা করতেন।
তিনি স্থানীয় হাই স্কুলে এবং পরে কুম্ভকোণমের ক্যাথলিক লিটল ফ্লাওয়ার হাই স্কুলে পড়াশোনা করে, সেখান থেকে তিনি ১৫ বৎসর বয়সে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি কৃষিকাজ ও কৃষকের অবস্থার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত ছিলেন। তাদের বর্ধিষ্ণু পরিবার ধান, আম, নারকেল, কফির মতো বিবিধ ফসল ফলানোতে অভ্যস্থ ছিল। তিনি বিধ্বংসী আবহাওয়ার প্রতিকূলতা, কীটপতঙ্গের আক্রমণসহ নানা কারণে, উৎপাদিত ফসলের দামের যথারীতি ওঠানামা এবং তার সরাসরি প্রভাব সম্পর্কে সম্যক অবহিত ছিলেন।[১০]
তার মাতাপিতা চাইতেন, সে ডাক্তারি পড়ুক এবং সেই উদ্দেশ্য মাথায় নিয়ে তিনি প্রাণিবিদ্যা নিয়ে উচ্চশিক্ষা শুরু করেন। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের বাংলার দুর্ভিক্ষের প্রভাব এবং উপমহাদেশ জুড়ে চালের ঘাটতি প্রত্যক্ষ করেন। ভারতে পর্যাপ্ত খাদ্য নিশ্চিত করতে তথা দেশের মানুষের মুখে খাবার যোগাতে তিনি কৃষি গবেষণায় মন দেন।[১১] পারিবারিক পটভূমিতে এবং সেই সময়ে যখন চিকিৎসা ও প্রকৌশলকে অনেক বেশি মর্যাদাপূর্ণ বলে মনে করা হত, তা সত্ত্বেও তিনি কৃষিবিদ্যাই বেছে নেন। [১০]
এরপর তিনি কেরালার তিরুবনন্তপুরমের মহারাজা কলেজ (বর্তমানে কেরালা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ ইউনিভার্সিটি কলেজ, তিরুবনন্তপুরম) থেকে প্রাণিবিদ্যায় স্নাতক হন। এরপর তিনি ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদ্রাজ কৃষি কলেজ (বর্তমানে তামিলনাড়ু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়) কৃষিবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে কৃষি বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এই সময়ে কৃষি বিজ্ঞানের অধ্যাপক কোটা রামস্বামী ছিলেন তার শিক্ষক।[১০]
এরপর ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি জেনেটিক্স এবং উদ্ভিদ প্রজনন বিষয়ে পড়াশোনার জন্য নয়াদিল্লির ভারতীয় কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে (IARI) ভরতি হন।। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে, তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে সাইটোজেনেটিক্সে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি আলুর সোলানাম প্রজাতির উপর গবেষণা করেন। সামাজিক চাপে, তিনি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসেন এবং ভারতীয় পুলিশ সার্ভিসের জন্য নির্বাচিত হন। তবে একই সময়ে, তিনি নেদারল্যান্ডে কৃষির উপর বংশগতি তথা জেনেটিক্সে ইউনেস্কোর ফেলোশিপ লাভ করেন। তিনি শেষোক্ত সুযোগই গ্রহণ করেন।
যুক্তরাজ্য
সম্পাদনা১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে, তিনি উচ্চ শিক্ষার্থে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের' স্কুল অফ এগ্রিকালচারে' উদ্ভিদ প্রজনন ইনস্টিটিউটে যান। ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে, টিউবেরিয়াম বিভাগে, "সোলানামের নির্দিষ্ট কিছু প্রজাতির মধ্যে প্রজাতির মধ্যে প্রজাতির পার্থক্য এবং পলিপ্লয়েডির প্রকৃতি নিয়ে এইচ ডব্লিউ হাবাৰ্ড এর অধীনে গবেষণা করে (পিএইচডি) ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তী বড়দিনে, তিনি এক সপ্তাহ প্রাক্তন ভারতীয় সিভিল সার্ভিস অফিসার ফ্রাঙ্ক লুগার্ড ব্রাইনের, যিনি ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের গ্রামবাসীদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে যথাসাধ্য চেষ্টা করেন, তার দ্বারা প্রভাবিত হন।
ভারত
সম্পাদনা১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে ফিরে তিনি কটকের ন্যাশনাল রাইস রিসার্চ ইনস্টিটিউটে অস্থায়ী সহকারী উদ্ভিদবিদ হিসাবে যোগ দেন। ছয় মাস পর ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবরে নতুন দিল্লির ভারতীয় কৃষি গবেষণা প্ৰতিষ্ঠানে সাইটোজেনেটিস্ট হিসাবে যোগ দেন। সেসময়ে ভারত (৭০ শতাংশ কৃষি নির্ভর) কৃষি প্রধান দেশ হয়েও খাদ্যশস্য আমদানির উপর নির্ভর করত। দেশে আরও খরা ও দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে থাকে। স্বামীনাথন নর্মান বোরলাগের সহযোগিতায় উচ্চ ফলনশীল বীজ ( প্রথমে মেক্সিকান বামন জাতের গম), যান্ত্রিক কৃষি সরঞ্জাম, সেচ সুবিধা, সার ও কীটনাশক ব্যবহারে দেশের পশ্চিম অংশ, মূলত পাঞ্জাব, হরিয়ানায় তিনি আমূল পরিবর্তন আনেন। ভারতের গম উৎপাদন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। তাঁরই হাত ধরে দেশ এক নতুন সূর্যোদয় দেখে কৃষিক্ষেত্রে। ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতে শুরু হয় প্রথম পর্যায়ের সবুজ বিপ্লব। ভারতের কৃষি নবজাগরণে এই বিপ্লব ভারতকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় খাদ্য ঘাটতির দেশ হওয়ার কলঙ্ক থেকে মুক্ত করে এবং পঁচিশ বছরেরও কম সময়ে এটি দেশকে স্বনির্ভর করে তোলে। স্বামীনাথনকে তাই "ভারতে সবুজ বিপ্লবের পথপ্রদর্শক" বা সবুজ বিপ্লবের জনক আখ্যা দেওয়া হয়। কর্মজীবনে তিনি দেশকে কৃষিক্ষেত্রে স্বয়ং সম্পূর্ণ করায় কার্যত ব্রতী ছিলেন। সবচেয়ে বেশিউচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ফলনের বাসমতি চাল তাঁর হাত ধরেই আসে।[১১]
- প্রশাসক ও শিক্ষাবিদ-
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চের মহাপরিচালক তথা ডিরেক্টর জেনারেল পদে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত ছিলেন স্বামীনাথন। তিনি এই প্রতিষ্ঠানে নিউক্লিয়ার রিসার্চ ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দের একটা সময় তিনি ভারত সরকারের কৃষি গবেষণা এবং শিক্ষা দফতরের সচিবও পদেও ছিলেন। ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ইন্টারন্যাশনাল রাইস রিসার্চ ইনস্টিটিউশনেরও মহাপরিচালকের পদে ছিলেন।[৯] ড. এম এস স্বামীনাথনের সভাপতিত্বে ২০০৪ খ্রিস্টাব্দের ১৮ নভেম্বর গঠিত 'দ্য ন্যাশনাল কমিশন অন ফার্মার্স' (এন সি এফ) মূলত ভারতের কৃষকের দুরবস্থার কথা তুলে ধরে তাদের জন্য 'কৃষক দরদী' স্বামীনাথন রিপোর্ট পেশ করে। স্বাধীনতার পর দেশের কৃষিক্ষেত্রে তার রিপোর্ট ছিল ইতিবাচক। তার রিপোর্টে কৃষকদের জন্য "ন্যূনতম সহায়ক মূল্য" ধারনাটি ছিল অন্যতম।[৫]
ব্যক্তিগত জীবন এবং মৃত্যু
সম্পাদনাকেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় মীনা'র সঙ্গে এম এস স্বামীনাথনের আলাপ হয় এবং সেই সূত্রেই ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে তাদের বিবাহ হয়। তারা তামিলনাড়ুর চেন্নাই-এ বসবাস করেন। তাদের তিন কন্যারা হলেন- শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ সৌম্য স্বামীনাথন, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপিকা মধুরা স্বামীনাথন ও ইংল্যান্ডের ইস্ট অ্যাংলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জেন্ডার ও উন্নয়ন বিদ্যার অধ্যাপিকা নিত্য (স্বামীনাথন) রাও।[১১]
মহাত্মা গান্ধী এবং রমণ মহর্ষি তাঁর জীবনকে প্রভাবিত করে। তাদের পরিবারের মালিকানাধীন ২,০০০ একরের এক তৃতীয়াংশ পরিমাণ জমি বিনোবা ভাবের ভুটান আন্দোলনের উদ্দেশ্যে দান করে । ২০১১ খ্রিস্টাব্দের এক সাক্ষাৎকারে, স্বামীনাথন বলেন, যুবাবস্থায় তিনি স্বামী বিবেকানন্দকে অনুসরণ করেন।
এম এস স্বামীনাথন ২০২৩ খ্রিস্টাব্দের ২৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার চেন্নাইতে নিজের বাসভবনে পরলোক গমন করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর।[৯]
সম্মান ও পুরস্কার
সম্পাদনাভারতে সবুজ বিপ্লবের জনক এম এস স্বামীনাথন বিশ্বের চোদ্দটি প্রধান বিজ্ঞান কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। বহু বিশ্ববিদ্যালয়ও সাম্মানিক ডক্টরেট ডিগ্রিতে সম্মানিত করে। কর্মজীবনে ড. স্বামীনাথন অজস্র পুরস্কার ও সম্মান লাভ করেন। তার প্রাপ্ত উল্লেখযোগ্য সম্মাননা ও পুরস্কারগুলি হল নিম্নরূপ[১]
- ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে : বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা পরিষদের জীববিজ্ঞানে শান্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার
- ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে : গোষ্ঠী তথা সম্প্রদায়ের নেতৃত্বের জন্য 'রমন ম্যাগসেসে পুরস্কার'[৯]
- ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে : 'আলবার্ট আইনস্টাইন ওয়ার্ল্ড সায়েন্স অ্যাওয়ার্ড'[৯]
- ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দে : প্রথম ' বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার' (World Food Prize)[৯]
- ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ সংক্রান্ত পুরস্কার 'টাইলার অ্যাওয়ার্ড' ( Tyler Prize for Environmental Achievement)[৯]
- ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে : পরিবেশ প্রযুক্তির জন্য জাপানের 'হোন্ডা পুরস্কার'
- ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে : ফ্রান্সের 'Order du Mérite Agricole' (অর্ডার অফ মেরিট ইন এগ্রিকালচার)
- ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে : যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি বোটানিক্যাল গার্ডেনের 'হেনরি শ মেডেল'
- ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে :'ভলভো ইন্টারন্যাশনাল এনভায়রনমেন্ট অ্যাওয়ার্ড'
- ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে: 'UNESCO গান্ধী স্বর্ণ পদক' -এ সম্মানিত হন।
- ভারত সরকারের বেসামরিক পুরস্কার-
' পদ্মশ্রী ' (১৯৬৭), ' পদ্মভূষণ ' (১৯৭২) এবং ' পদ্মবিভূষণ ' (১৯৮৯) সম্মানিত হন।
প্রকাশনা
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ Spaeth, Anthony (২৩–৩০ আগস্ট ১৯৯৯)। "Asians of the Century: A Tale of Titans. M.S. Swaminathan."। TIME. Time 100। 154 (7/8)। ২৫ জানুয়ারি ২০০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জুলাই ২০২২।
- ↑ ক খ Cabral, Lídia; Pandey, Poonam; Xu, Xiuli (৩ জুলাই ২০২১)। "Epic narratives of the Green Revolution in Brazil, China, and India"। Agriculture and Human Values। 39: 249–267। এসটুসিআইডি 237804269 Check
|s2cid=
value (সাহায্য)। ডিওআই:10.1007/s10460-021-10241-x। - ↑ "Swaminathan, Moncompu Sambasivan"। Ramon Magsaysay Award। ১৯৭১। ২৫ নভেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ নভেম্বর ২০২১।
A cytogeneticist from India who made major advances in breeding sturdier, more productive and better quality plant types
- ↑ Damodaran, Harish (১৩ আগস্ট ২০১৫)। "A living legend: Swaminathan@90"। The Indian Express। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-৩০।
- ↑ ক খ "চাষির মনে বেঁচে থাকবেন এম.এস স্বামীনাথন"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-০৮।
- ↑ "Padma Awards - Interactive Dashboard"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-০৫।
- ↑ ক খ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;:03
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Bedi, Bani (৩০ জুলাই ২০১৮)। "The Centre Is Barely Serious About Recognising Women as Farmers"। The Wire। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০২১।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ "প্রয়াত সবুজ বিপ্লবের জনক এম এস স্বামীনাথন"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-০৮।
- ↑ ক খ গ Gopalkrishnan 2002।
- ↑ ক খ গ "বাংলার দুর্ভিক্ষ তাকে নাড়িয়ে দিয়েছিল,'সবুজ বিপ্লবের জনক' স্বামীনাথনের জীবনসফর একনজরে"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-০৫।
- ↑ "Prime Minister to Release Stamp on "Wheat Revolution"." (পিডিএফ)। Press Information Bureau, Government of India। ১২ জুলাই ১৯৬৮। সংগ্রহের তারিখ ২ ডিসেম্বর ২০২১।
জীবনী
সম্পাদনা- বই
- Gopalkrishnan, G (২০০২)। M.S. Swaminathan: One Man's Quest for a Hunger-free World। Education Development Centre। ওসিএলসি 643489739।
- Iyer, R. D. (২০০২)। Scientist and Humanist: M.S. Swaminathan। Bharatiya Vidya Bhavan। আইএসবিএন 978-81-7276-260-5।
- — Iyer, R. D., An extract from Scientist and Humanist: M. S. Swaminathan., harmonyindia.org, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা
- Kesavan, P. C. (২০১৭)। M.S. Swaminathan: Legend In Science And Beyond। World Scientific। আইএসবিএন 978-981-320-011-1।
- Erdélyi, András (২০০২)। The Man who Harvests Sunshine: The Modern Gandhi: M.S. Swaminathan। Tertia। আইএসবিএন 978-963-9387-08-9।
- Dil, Anwar S; Swaminathan, Monkombu Sambasivan (২০০৫)। Life and work of M. S. Swaminathan toward a hunger-free world। East West Books (Madras)। আইএসবিএন 978-81-88661-33-6। ওসিএলসি 1068850456।
- Deulgaonkar, Atul (২০০০)। स्वामीनाथन: भूकमुक्तीचा ध्यास। Sadhana Prakashan। আইএসবিএন 978-93-86273-19-2।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- mssrf.org
- Search Results for author Swaminathan MS on PubMed.
- Search Results for author Swaminathan, M. S. on AGRICOLA, US National Agricultural Library
- এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকায় এম এস স্বামীনাথন
- M.S. Swaminathan Rajya Sabha profile at PRS Legislative Research
- Official Rajya Sabha, Parliament of India, profile, p. 515
- Catalogue of the Swaminathan papers at the Archives at NCBS