উলপুর জমিদার বাড়ি

উলপুর জমিদার বাড়ি বাংলাদেশ এর গোপালগঞ্জ জেলার গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ১২নং উলপুর ইউনিয়নের মধ্যপাড়ায় অবস্থিত এক ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি[] ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি দেশ বিভাগের পূর্বে এখানে তৎকালীন উচ্চ সম্ভ্রান্ত বিশেষত হিন্দু জমিদারেরা বসবাস করতো। তৎকালীন হিন্দু জমিদারদের নির্মিত ৩৬০টি জমিদারি ভবন বর্তমানে যার অধিকাংশ ভবন কিছু কুচক্রী দখলদার কর্তৃক তা সম্পূর্ণ বা আংশিক ভেংগে ফেলা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ গোপালগঞ্জ ইউনিট এর এটি আওতাভুক্ত।

উলপুর জমিদার বাড়ি
বিকল্প নামউলপুর রায় চৌধুরীর জমিদার বাড়ি
সাধারণ তথ্যাবলী
ধরনবাসস্থান
অবস্থানগোপালগঞ্জ সদর উপজেলা
ঠিকানাউলপুর
শহরগোপালগঞ্জ সদর উপজেলা, গোপালগঞ্জ জেলা
দেশবাংলাদেশ
উন্মুক্ত হয়েছেআনুমানিক ১৯০০ শতকে
স্বত্বাধিকারীপ্রীতীশচন্দ্র রায় চৌধুরী
কারিগরী বিবরণ
উপাদানইট, সুরকি ও রড

ইতিহাস

সম্পাদনা

প্রায় ২০০ একর জায়গা নিয়ে আনুমানিক ১৯০০ শতকের দিকে জমিদার প্রীতীশচন্দ্র রায় চৌধুরী এই জমিদার বাড়িটি প্রতিষ্ঠা করেন। জানা যায় তিনি ছিলেন একজন রাজকর্মচারী

মধুমতি নদীর অববাহিকায় গড়ে ওঠা জনপদ গোপালগঞ্জ। রাজা বল্লাল সেনের আমলে জেলার পূর্ব সীমানায় হিন্দু ধর্মাবলম্বিরা প্রথম বসবাস শুরু করে। উনবিংশ শতাব্দীর দিকে এ অঞ্চলটি রানি রাসমনির স্টেট জমিদারির অর্ন্তুভূক্ত ছিলো। ফলে এখানে অনেক জমিদারি স্থাপনা গড়ে উঠে। কালের আবর্তে জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলেও তৎকালীন জমিদার কতৃক নির্মিত ভবনগুলো শত শত বছরের ইতিহাস আর ঐতিহ্যকে বুকে নিয়ে স্বগর্বে দাঁড়িয়ে আছে।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, উলপুরের জমিদাররা একশ ঘর শরিক ছিলেন। ১৯০০ শতকে জমিদার প্রীতীশচন্দ্র রায় চৌধুরী প্রায় ২০০ একর জায়গা জুড়ে উলপুর জমিদার বাড়ি প্রতিষ্ঠা করেন। বাড়িটিতে নাটঘর, মেজ বাবুর বাড়ি, ছোট বাবুর বাড়ি ও শ্মশান ছিল। কিন্তু ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পরে তার পরিবার কলকাতা চলে যায়। বাড়িটি চলে যায় সরকারি খাস খতিয়ানে।

কথিত আছে, এক সময় এই জমিদারদের বাড়ির সামনে দিয়ে জুতা খুলে ও ছাতি বন্ধ করে চলাফেরা করতে হতো সাধারণ মানুষদের। এছাড়াও জমিদার বাড়িতে বিচার ও শাসন ব্যবস্থাসহ ছিল জেলখানাও!

জানা যায়, গ্রামে জমিদারদের ৩৬৫টি ভবন ছিল। তবে বর্তমানে উলপুর গ্রামে জমিদারীর কাজে ব্যবহৃত আটটি দোতলা দালানসহ বেশ কয়েকটি ঐতিহাসিক নিদর্শন টিকে আছে। এসব ভবন বর্তমানে তহশিল অফিস, সাব-পোস্ট অফিস, পুরাতন ইউনিয়ন বোর্ড অফিস, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, মাদ্রাসা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

উলপুর জমিদার বাড়ির বেশিরভাগ স্থাপনা অযত্নে ধ্বংস হয়ে গেছে। শুধুমাত্র পিপি হাইস্কুল হিসেবে ব্যবহৃত ভবনটি এখনও বেশ ভালো অবস্থায় রয়েছে। টিকে থাকা ভবনগুলোর স্থাপত্যশৈলী ও কারুকাজ নয়নাভিরাম। দর্শনার্থীরা এখানে এসে এর মনোরম কারুকাজ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হন। এই বাড়িতে বেশ কয়েকটি বড় দিঘীও রয়েছে।[]

অবকাঠামো

সম্পাদনা

২০০ একর জায়গা জুড়ে জমিদার বাড়িটিতে নাটঘর, মেজ, ছোট বাবুর বাড়ি ও শ্মশান ছিল।


চিত্রশালা

সম্পাদনা
 
উলপুর জমিদার বাড়ির একাংশ
 
উলপুর জমিদার বাড়ির একাংশ

বর্তমান অবস্থা

সম্পাদনা

পূর্বে জমিদার বাড়ির অনেক স্থাপনা থাকলেও এখন আর তেমন নাই। বেশিরভাগ স্থাপনাই ধ্বংস হয়ে গেছে। একটি ভবন এখন উলপুর পি.সি উচ্চ বিদ্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং অতি সম্প্রতি জমিদার প্রীতিশ রায় চৌধুরীর উত্তরসূরী নাতি মৃনাল কান্তি রায় চৌধুরী তার পূর্ব পুরুষের জমিদারি স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং এ মর্মে তিনি কতগুলো জমিদারি ভবন পুনঃ সংস্কার করেন এবং একই সাথে কয়েকটি ভবন সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে নির্মাণ করেন যার ফলে প্রতিদিন এখানে শত শত দর্শনার্থী এখানে ভ্রমণ করেন।[]হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "উলপুর রায় চৌধুরীর জমিদার বাড়ি!"। ২৮ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মার্চ ২০২০ 
  2. https://protidinerbangladesh.com/travel/1658/%E0%A6%97%E0%A7%8B%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%97%E0%A6%9E%E0%A7%8D%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%89%E0%A6%B2%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B0-%E0%A6%9C%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A7%9C%E0%A6%BF
  3. "বাংলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান"www.bdselfstudy.com। ২৬ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০২৩