গোপালগঞ্জ

গোপালগঞ্জ জেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের একটি শহর

গোপালগঞ্জ বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের একটি বিখ্যাত শহর। এটি রাজধানী ঢাকা থেকে ১২৭ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে মধুমতি নদীর তীরের অবস্থিত। এর আয়তন ১৪.২৫ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা ৫১,৩৪৬ জন। এটি একই নামের জেলা ও উপজেলার (গোপালগঞ্জ জেলাগোপালগঞ্জ সদর উপজেলা) প্রশাসনিক রাজধানী। শহরটি ক শ্রেণীর পৌরসভা দ্বারা শাসিত হয়। গোপালগঞ্জ টাউন কমিটি ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। রেলপথের সাথে সংযুক্ত থাকলেও শহরের যোগাযোগের প্রধান উপায় সড়ক পথ। যশোর বিমানবন্দর গোপালগঞ্জের সবচেয়ে নিকটবর্তী আভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর। শহরটি সমুদ্র সমতল থেকে ৯ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত[] এবং এর আবহাওয়া গরম ও আর্দ্র জলবায়ু বিশিষ্ট। বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ রেহানা টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং কলেজ, শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ সহ বেশকিছু উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়াও এই জেলার সদরে পুলিশ লাইন সংলগ্ন স্থানে বাংলাদেশ বেতারের একটি আঞ্চলিক কেন্দ্র রয়েছে।

গোপালগঞ্জ
শহর
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগঢাকা বিভাগ
জেলাগোপালগঞ্জ জেলা
উপজেলাগোপালগঞ্জ সদর উপজেলা
সরকার
 • ধরনপৌরসভা
 • শাসকগোপালগঞ্জ পৌরসভা
আয়তন
 • মোট১৪.২৫ বর্গকিমি (৫.৫০ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা
 • মোট৫১,৩৪৬
 • জনঘনত্ব৩,৬০০/বর্গকিমি (৯,৩০০/বর্গমাইল)
সময় অঞ্চলবাংলাদেশ সময় (ইউটিসি+৬)

ইতিহাস

সম্পাদনা

অনেক দিন আগে গোপালগঞ্জ জেলা রাজগঞ্জ নামে পরিচিত ছিল। তখন ছিল ব্রিটিশ রাজত্ব।গোপালগঞ্জ অঞ্চলটি মাকিমপুর ষ্টেটের জমিদার রাণি রাসমনির দায়িত্বে ছিল।তিনি এক জেলে কন্যা ছিলেন। তিনি একদিন এক ইংরেজ সাহেবের প্রাণ রক্ষা করেন।তখন ছিল সিপাই মিউটিনির সময়। পরবর্তীতে তারই পুরস্কার স্বরূপ ইংরেজরা তাকে সম্পূর্ণ মাকিমপুরে অঞ্চল দিয়ে দেন। রানী রাসমনির নাতি ছিলেন গোপাল। সেই গোপালের নামানুসারে রাজগঞ্জের নাম হয় গোপালগঞ্জ। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে গোপালগঞ্জ ফরিদপুর জেলার মাদারীপুর মহকুমাথানাধীন ছিল। ঐ সময়ে মাদারীপুরের সাথে এ এলাকায় জলপথ ছাড়া কোন স্থল পথের সংযোগ ছিল না। কোন স্টীমার বা লঞ্চ চলাচলও ছিল না। কেবলমাত্র বাচাড়িনৌকা, পানসি নৌকা, টাবুরিয়া নৌকা, গয়না নৌকা, ইত্যাদি ছিল চলাচলের একমাত্র বাহন। যোগাযোগ অসুবিধার দরুন ১৮৭০ সালে গোপালগঞ্জ থানা স্থাপিত হয়। ১৮৯৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর কলকাতা গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এর সীমানা নির্ধারিত হয়। ১৯০৯ খ্রি. সদর মহকুমা থেকে কাশিয়ানী ও মুকসুদপুর থানা এবং মাদারীপুর থেকে গোপালগঞ্জ ও কোটালীপাড়া থানা নিয়ে গোপালগঞ্জ মহকুমা স্থাপিত হয়। গোপালগঞ্জ টাউন কমিটি ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠত হয়, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ২০ জানুয়ারি গোপালগঞ্জ পৌরসভা গঠিত হয়। ১৯৮৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে গোপালগঞ্জ সদর থানা উপজেলায় উন্নীত হয়। বাংলাদেশের মহান নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালে এই জেলার টুঙ্গীপাড়া উপজেলায় জন্ম গ্রহন করেন।


গোপালগঞ্জ রাজধানী ঢাকা থেকে দক্ষিণ পশ্চিমে ১২৭ কিলোমিটার এবং খুলনা থেকে উত্তর পূর্বে ৫৪ কিলোমিটার দুরে,[] এবং ২৩°০'২৪" উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৯°৪৯'৪২" পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত।[] সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর গড় উচ্চতা ৯ মিটার। বাংলাদেশের ভূ প্রকৃতি অনুসারে এটি গাঙ্গেয় জোয়ার-ভাটা প্লাবনভূমিতে অবস্থিত।

জনসংখ্যা

সম্পাদনা

২০১১ আদমশুমারী অনুযায়ী গোপালগঞ্জের মোট জনসংখ্যা ছিল ৫১,৩৪৬ জন।[] যার মধ্যে পুরুষ হল ২৬৩৬৯ জন এবং নারী হল ২৪৯৭৭ জন।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Geographic coordinates of Gopalganj, Bangladesh. Latitude, longitude, and elevation above sea level of Gopalganj"dateandtime.info। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-০১ 
  2. "Distance Matrix" (পিডিএফ)www.rhd.gov.bd/। ১ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১৯ 
  3. "23.006838, 89.828464 Latitude longitude Map"www.latlong.net। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-০১ 
  4. "GOPALGANJ ZILA"। Population & Housing Census-2011 [আদমশুমারি ও গৃহগণনা-২০১১] (পিডিএফ) (প্রতিবেদন)। জাতীয় প্রতিবেদন (ইংরেজি ভাষায়)। ভলিউম ৩: Urban Area Rport, 2011। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। মার্চ ২০১৪। পৃষ্ঠা ১০৫। ১১ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১৯