ঈট
ঈট (অর্থাৎ এখানে) হল ২০১৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি ভারতীয় মালয়ালম প্রণয়ধর্মী চলচ্চিত্র। ছবিটির চিত্রনাট্যকার, সম্পাদক ও পরিচালক ছিলেন বি. অজিতকুমার।[১] এই ছবিটি উত্তর মালাবারের কান্নুরের রাজনৈতিক হিংসার প্রেক্ষাপটে উইলিয়াম শেকসপিয়রের রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট নাটকের একটু আধুনিক পুনর্নির্মাণ।[২] ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেন শেয়িন নিগম ও নিমিশা সজয়ন।[৩][৪] কালেকটিভ ফেজ ওয়ানের সহযোগিতায় ডেল্টা স্টুডিওর ব্যানারে শর্মিলা রাজা এই ছবিটি প্রযোজনা করেন।[৫]
ঈট | |
---|---|
পরিচালক | বি. অজিতকুমার |
প্রযোজক | শর্মিলা রাজা, টিআরএস মুতুকুমার (কার্যনির্বাহী প্রযোজক) |
রচয়িতা | বি. অজিতকুমার |
শ্রেষ্ঠাংশে | শেয়িন নিগম নিমিশা সজয়ন |
সুরকার | জন পি. ভার্কি চন্দ্রন বেয়াট্টুম্মাল |
চিত্রগ্রাহক | পাপ্পু |
সম্পাদক | বি. অজিতকুমার |
প্রযোজনা কোম্পানি | কালেকটিভ ফেজ ওয়ান ডেল্টা স্টুডিও |
পরিবেশক | এলজে ফিল্মস |
মুক্তি |
|
দেশ | ভারত |
ভাষা | মালয়ালম |
কাহিনি-সারাংশ
সম্পাদনাছবির কাহিনির প্রেক্ষাপট কেরল রাজ্যের উত্তর মালাবার অঞ্চল। এমবিএ স্নাতক আনন্দ (শেয়িন নিগম) মহীশূরে একটি বিমা কোম্পানিতে প্রবেশক-স্তরের ব্যবস্থাপক পদে চাকরি করে। ঘটনাচক্রে তার সঙ্গে আলাপ হয় ঐশ্বর্যার (নিমিশা সজয়ন)। ঐশ্বর্যা মহীশূরেরই এক ছাত্রী। প্রারম্ভিক আলাপচারিতা ও কয়েকটি ফোন কলের পর, তারা একে অপরের প্রেমে পড়ে যায়।
আনন্দের পরিবার ও ঐশ্বর্যার পরিবার কান্নুরের পরস্পর বিরোধী দুই রাজনৈতিক দলের সক্রিয় সদস্য। সেই কথা জানতে পেরে ঐশ্বর্যা তার ও আনন্দের সম্পর্ক ভেঙে দিতে চায়। তার ভয় হয়েছিল, এই ঝামেলায় পড়লে আনন্দ হয়তো খুন হয়ে যাবে। কিন্তু আনন্দ অনড় থাকে। ফলে দু’জনের মধ্যে সম্পর্কটিও টিকে যায়।
ঐশ্বর্যার পরিবার এক ঘনিষ্ঠ পারিবারিক বন্ধুর সঙ্গে তার বিয়ের বন্দোবস্ত করে। ঐশ্বর্যা ঠিক করে যে সে রেজিস্ট্রি করে আনন্দকে বিয়ে করবে। তারা দু’জনে মহীশূরের এক ম্যারেজ রেজিস্ট্রারের কাছে গিয়ে রেজিস্ট্রি সারে। যদিও সেই দিনই আনন্দের এক জ্ঞাতিভাই কান্নুরে খুন হয়ে যায়। তার শেষকৃত্যে যোগ দিকে আনন্দ বাড়িতে আসে।
আনন্দ জানতে পারে যে, প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তার পরিবার ঐশ্বর্যার এক জ্ঞাতিভাই কারিপ্পল্লি দীনেশনকে হত্যার পরিকল্পনা করেছে। আনন্দ ঐশ্বর্যার থেকে তার ফোন নম্বর দিয়ে তাকে ফোন করে জানালো যে সে তার সঙ্গে দেখা করতে চায়। আনন্দ দীনেশনকে সতর্ক করে বলল যে, বিরোধী দলটি তাকে খুন করার পরিকল্পনা করছে। কিন্তু দীনেশন সেই কথায় গুরুত্ব দিল না। ফেরার পথে দীনেশন আক্রান্ত হল। আনন্দ আক্রমণকারীদের থামাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হল। আনন্দ দীনেশনকে হাসপাতালে নিয়ে গেল। কিন্তু দীনেশন বাঁচল না।
পুলিশ জানতে পারে যে, সেই দিন আনন্দ দীনেশনকে ফোন করেছিল। সেই কারণে আনন্দই হয়ে ওঠে এই খুনের প্রধান সন্দেহভাজন। পরিবার ও পার্টির চাপে আনন্দকে গা ঢাকা দিতে হয়। আনন্দকে যেহেতু পুলিশের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য নিজের ফোন সুইচ অফ করে রাখতে হয়েছিল, সেই হেতু ঐশ্বর্যাও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারল না। আনন্দকে বাঁচানোর জন্য তাকে পুলিশের মামলার হাত থেকে নিষ্কৃতি দেওয়ার শর্তে সুধাকরণকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে গেল ঐশ্বর্যা।
ঐশ্বর্যার সঙ্গে সুধাকরণের বিয়ে হল ঠিকই, কিন্তু তার সঙ্গে রাত কাটাতে ঐশ্বর্যা অস্বীকার করল। সুধাকরণ চলে গেল বাড়ির ভিতরে। ঐশ্বর্যা বাইরেই বসে রইল। ঐশ্বর্যা ঠিক করল যে, সে আনন্দকে খুঁজতে যাবে। এদিকে আনন্দ যখন ঐশ্বর্যার সঙ্গে দেখা করতে আসছিল, তখন বিরোধী দলের সদস্যরা একটি মন্দিরের কাছে তার উপর হামলা করে। আনন্দ ভাবল, সে এবার খুন হয়ে যাবে। তাই সে পুলিশ ডাকতে ফোন সুইচ অন করল। সেই সময় ঐশ্বর্যাও আনন্দকে ফোন করল। আনন্দ তাকে বলে দিল যে সে কোথায় আছে। শেষ পর্যন্ত দু’জনের দেখা হল এবং সৌভাগ্যক্রমে সেই রাতে গুন্ডারা তাদের দেখতে না পাওয়ায় তারা বেঁচে গেল। ছবির শেষ দৃশ্যে দেখা যায়, দু’জনেই সুখী এবং হাত ধরাধরি করে মুক্তির পথে হেঁটে চলেছে।[৬]
কলাকুশলী
সম্পাদনা- শেয়িন নিগম – আনন্দ বালকৃষ্ণন
- নিমিশা সজয়ন – ঐশ্বর্যা গোপাল
- সৌরভী লক্ষ্মী - পুষ্পলতা
- অ্যালান্সিয়ার লে লোপেজ - গোবিন্দন
- সুজিত শঙ্কর – কারিপ্পল্লি দীনেশন
- মণিকাণ্ডন আচারি - উপেন্দ্রন
- সুধী কোপ্পা – তুলসীধরন
- পি. বালচন্দ্রন – শ্রীরাম ভট্ট
- শেলি কিশোর[৭] - লীলা
- আবু বলয়মকুলম - সুধাকরণ
- রাজেশ শর্মা - উন্নিকৃষ্ণন
- বাবু আন্নুর – গোপালন (ঐশ্বর্যার বাবা)
- সুনীতা - রাধিকা
- বিজয়ন করন্তুর – আনন্দের বাবা
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Desk, Online (১৬ অক্টোবর ২০১৭)। "National award-winning editor Ajithkumar turns director with 'Eeda' - First look poster"। The New Indian Express। ১২ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৭।
- ↑ Suresh, Meera (১৬ অক্টোবর ২০১৭)। "Eeda is an intense love story: Ajithkumar"। The New Indian Express। ১৩ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৭।
- ↑ Soman, Deepa (১৩ জুলাই ২০১৭)। "Nimisha Sajayan plays a college student in 'Eeda'"। The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৭।
- ↑ Soman, Deepa (৬ অক্টোবর ২০১৭)। "Shane Nigam - Nimisha Sajayan film 'Eeda' poster shows their interesting chemistry in the film!"। The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৭।
- ↑ UR, Arya (২৪ জুন ২০১৭)। "Shane Nigam- Rajeev Ravi film is titled as 'Eeda'"। The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৭।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৮ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ UR, Arya (৩ জুলাই ২০১৭)। "I would love to portray a naxalite on screen: Shelly Kishore"। The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৭।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে ঈট (ইংরেজি)