ইন্দিরা দেবী চৌধুরানী
ইন্দিরা দেবী চৌধুরাণী (২৯ ডিসেম্বর ১৮৭৩ – ১২ আগস্ট ১৯৬০) সঙ্গীতশিল্পী, লেখক ও অনুবাদক। ঠাকুরবাড়ির মেয়েদের মধ্যে তিনিই প্রথম বি.এ পাশ করেন। ইন্দিরা দেবী’র সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি একজন অনুবাদক।
ইন্দিরা দেবী চৌধুরাণী | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ১২ আগস্ট ১৯৬০ | (বয়স ৮৬)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
পেশা | সঙ্গীতশিল্পী, লেখক ও অনুবাদক |
দাম্পত্য সঙ্গী | প্রমথ চৌধুরী |
পিতা-মাতা |
|
আত্মীয় | সুরেন্দ্রনাথ ঠাকুর (ভ্রাতা) |
জন্ম ও পরিবার
সম্পাদনাইন্দিরা দেবী চৌধুরাণী সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জ্ঞানদানন্দিনী দেবীর মেয়ে। ২৯ ডিসেম্বর, ১৮৭৩ সালে ইন্দিরা দেবীর জন্ম তৎকালীন বোম্বাই প্রদেশের কারোয়ারে (বর্তমান কর্ণাটক রাজ্যে)। পৈতৃক নিবাস কলকাতা জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি। তাঁর মাতা জ্ঞানদানন্দিনীও ছিলেন একজন ব্যতিক্রমী, বিদুষী ও প্রগতিশীল মহিলা। একমাত্র দাদা সুরেন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর চেয়ে দেড় বছরের বড়। ইন্দিরা দেবী ১৮৯৯ সালে তিনি তাঁর স্বনির্বাচিত পাত্র প্রমথ চৌধুরীর সঙ্গে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন।
শিক্ষাজীবন
সম্পাদনা১৮৮১ সালে প্রথমে সিমলার অকল্যান্ড হাউজে এবং পরে কলকাতার লরেটো হাউজে পড়াশোনা করেন। ১৮৮৭ সালে তিনি এন্ট্রান্স ও পরে এফএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৮৯২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএ পরীক্ষায় মেয়েদের মধ্যে প্রথম স্থান লাভ করে তিনি ‘পদ্মাবতী’ স্বর্ণপদকে ভূষিত হন।
সাহিত্যচর্চা
সম্পাদনাবাদ্রিদাস মুকুলের নিকট উচ্চাঙ্গসঙ্গীত শিক্ষা গ্রহণ করেন। কিছুদিন সেতার বাজানও শিখেছিলেন। অনুবাদক হিসেবে ইন্দিরা দেবী অল্পবয়সেই খ্যাতি অর্জন করেন। কৈশোরে তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পরিচালিত ও মাতা জ্ঞানদানন্দিনী সম্পাদিত বালক পত্রিকায় রাস্কিনের রচনার বাংলা অনুবাদ প্রকাশ করেন। পরে ফরাসি শিখে তিনি রেনে গ্রুসের ভারতবর্ষ, পিয়ের লোতির কমল কুমারিকাশ্রম এবং মাদাম লেভির ভারতভ্রমণ কাহিনী অনুবাদ করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বহু কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধসহ জাপানযাত্রীর ডায়রী-র ইংরেজি অনুবাদও তিনি প্রকাশ করেন। পরবর্তীকালে বামাবোধিনী, বঙ্গলক্ষ্মী, সাধনা, পরিচয়, সবুজপত্র প্রভৃতি পত্রিকায় সঙ্গীত ও সাহিত্যবিষয়ে তার অনেক মৌলিক রচনা প্রকাশিত হয়। বঙ্গনারীর শুভাশুভ বিষয়ে তার মতামত নারীর উক্তি নামক প্রবন্ধটি ছাপানো হয়।[১]
মৌলিক রচনা
সম্পাদনাইন্দিরা দেবীর কয়েকটি মৌলিক রচনা হলো:-
- শ্রুতি স্মৃতি,
- রবীন্দ্রসঙ্গীতে ত্রিবেণী সঙ্গম (১৯৫৪)
- রবীন্দ্রস্মৃতি (৫ খন্ড, ১৯৫৯)।
তার সম্পাদিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে:-
- নারীর উক্তি (১৯২০),
- বাংলার স্ত্রী-আচার (১৯৫৬),
- স্মৃতিকথা,
- পুরাতনী (১৯৫৭)
- গীতপঞ্চশতী।
পদক
সম্পাদনা১৯৪৪ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ‘ভুবনমোহিনী’ স্বর্ণপদক, ১৯৫৭ সালে বিশ্বভারতী ‘দেশিকোত্তম’ এবং ডি-লিট ডিগ্রী লাভ করেন এবং ১৯৫৯ সালে রবীন্দ্রভারতী সমিতি প্রথমবারের মতো ‘রবীন্দ্র পুরস্কার’-এ ভূষিত করে।
মৃত্যু
সম্পাদনা১৯৬০ সালের ১২ আগস্ট তিনি মারা যান।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ সেলিনা হোসেন ও নুরুল ইসলাম সম্পাদিত; বাংলা একাডেমী চরিতাভিধান; দ্বিতীয় সংস্করণ: ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭; পৃষ্ঠা: ৮৫-৮৬, আইএসবিএন ৯৮৪-০৭-৪৩৫৪-৬