ইট্রিয়াম
ইট্রিয়াম একটি রাসায়নিক মৌল, এর প্রতীক Y ও পারমাণবিক সংখ্যা ৩৯। এটি রুপার মত দেখতে একটি অবস্থান্তর ধাতু যার রাসয়নিকধর্ম ল্যান্থানাইড মৌলগুলোর মত এবং এটি একটি বিরল মৃত্তিকা ধাতু। এটি প্রকৃতিতে মুক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় না কিন্তু খনিতে অন্যান্য ল্যান্থানাইড মৌলের সাথে আকরিক অবস্থায় পাওয়া যায় [৪]। এর একমাত্র সক্রিয় আইসোটোপ 89Y, যা ভুগর্ভে পাওয়া যায়।
উচ্চারণ | /ˈɪtriəm/ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
উপস্থিতি | silvery white | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আদর্শ পারমাণবিক ভরAr°(Y) | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
পর্যায় সারণিতে ইট্রিয়াম | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
পারমাণবিক সংখ্যা | ৩৯ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
গ্রুপ | গ্রুপ ৩ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
পর্যায় | পর্যায় ৫ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্লক | ডি-ব্লক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ইলেকট্রন বিন্যাস | [Kr] ৪d১ ৫s২ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
প্রতিটি কক্ষপথে ইলেকট্রন সংখ্যা | 2, 8, 18, 9, 2 | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভৌত বৈশিষ্ট্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
গলনাঙ্ক | 1799 কে (1526 °সে, 2779 °ফা) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
স্ফুটনাঙ্ক | 3203 K (2930 °সে, 5306 °ফা) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘনত্ব (ক.তা.-র কাছে) | 4.472 g·cm−৩ (০ °সে-এ, ১০১.৩২৫ kPa) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
তরলের ঘনত্ব | m.p.: 4.24 g·cm−৩ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ফিউশনের এনথালপি | 11.42 kJ·mol−১ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বাষ্পীভবনের এনথালপি | 363 kJ·mol−১ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
তাপ ধারকত্ব | 26.53 J·mol−১·K−১ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বাষ্প চাপ
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
পারমাণবিক বৈশিষ্ট্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জারণ অবস্থা | 3, 2, 1 (a weakly basic oxide) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
তড়িৎ-চুম্বকত্ব | 1.22 (পলিং স্কেল) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আয়নীকরণ বিভব | ১ম: 600 kJ·mol−১ ২য়: 1180 kJ·mol−১ ৩য়: 1980 kJ·mol−১ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
পারমাণবিক ব্যাসার্ধ | empirical: 180 pm | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সমযোজী ব্যাসার্ধ | 190±7 pm | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বিবিধ | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
কেলাসের গঠন | hexagonal close-packed (hcp) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শব্দের দ্রুতি | পাতলা রডে: 3300 m·s−১ (at 20 °সে) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
তাপীয় প্রসারাঙ্ক | α, poly: 10.6 µm·m−১·K−১ (at r.t.) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
তাপীয় পরিবাহিতা | 17.2 W·m−১·K−১ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
তড়িৎ রোধকত্ব ও পরিবাহিতা | α, poly: 596 nΩ·m (at r.t.) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
চুম্বকত্ব | paramagnetic[৩] | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ইয়ংয়ের গুণাঙ্ক | 63.5 GPa | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
কৃন্তন গুণাঙ্ক | 25.6 GPa | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আয়তন গুণাঙ্ক | 41.2 GPa | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
পোয়াসোঁর অনুপাত | 0.243 | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্রিনেল কাঠিন্য | 200–589 MPa | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ক্যাস নিবন্ধন সংখ্যা | 7440-65-5 | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ইট্রিয়ামের আইসোটোপ | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ইট্রিয়ামের সংস্পর্শে ফুসফুসের ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে কিন্তু জীবদেহে এর ভূমিকা এখনো অজানা [৫]।
আবিষ্কারের ইতিহাস
সম্পাদনা১৭৮৭ সালে সুইডিশ রসায়নবিদ, কার্ল আক্সেল এরিনাস সুইডেনের ইট্রারবায়ে একটি নতুন খনিজ আকরিকের সন্ধান পান। তিনি গ্রামের নামানুসারে এর নাম দেন ইটারবাইট [৬]। পরবর্তিতে ১৭৮৯ সালে জন গাডোলিন আবিষ্কার করেন আকরিকটি মূলত ইট্রিয়াম অক্সাইড। ১৮২৮ সালে ইট্রিয়াম ধাতু প্রথম পৃথকিকরণ করেন ফ্রেডরিখ ভোলার [৭]।
প্রাচুর্যতা
সম্পাদনাইট্রিয়াম বিরল খনিজ যা আকরিক অবস্থায় পাওয়া যায় [৮]। এটি ইউরেনিয়ামের আকরিকে ও পাওয়া যায় কিন্তু ভূগর্ভে মুক্ত অবস্থায় কখনো পাওয়া যায় না[৯]। প্রাচুর্যতার দিক থেকে ইট্রিয়াম ভূগর্ভের ২৮ তম ধাতু। এটি ভূগর্ভে ৩১ প্রতি-অংশ অঙ্কানুপাত হারে পাওয়া যায় যা রুপার তুলনায় ৪০০ গুন বেশি [১০]। এটি মাটিতে ১০-১৫০ প্রতি-অংশ অঙ্কানুপাত ( শুকনো ভরে ২৩ প্রতি-অংশ অঙ্কানুপাত ) এবং সমূদ্রের পানিতে ২৩ প্রতি-অংশ অঙ্কানুপাত হারে পাওয়া যায় [১০]। অ্যাপোলো মহাশূন্য অভিযানে সংগ্রহকৃত চন্দ্র পাথর নমুনায় অতি উচ্চ মাত্রায় ইট্রিয়ামের উপস্থিতি লক্ষ করা যায় [১১]।
ইট্রিয়াম প্রায় সকল জীবদেহে পাওয়া যায় তথাপি জীবে এর ভূমিকা এখনো অজানা। মানবদেহের যকৃত, বৃক্ক, প্লীহা, ফুসফুস এবং হাড়ে এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়[১২]। সাধারণত, সমগ্র মানবদেহে মাত্র ০.৫ মিলিগ্রাম ইট্রিয়াম পাওয়া যায়। বুকের দুধে ৪ পিপএম ইট্রিয়াম পাওয়া যায়। গাছপালায় ২০ পিপিএম পর্যন্ত ইট্রিয়াম পাওয়া যায়। সবচেয়ে বেশি ১০০ পিপিএম পাওয়া যায় বাধাকপিতে। গাছের বীজে সবচেয়ে বেশি ৭০০ পিপিএম পর্যন্ত ইট্রিয়াম পাওয়া গেছে [১৩]।
২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে জাপানের ছোট একটি দ্বীপে বিশাল পরিমাণ বিরল মৃত্তিকা ধাতুর মজুদ আবিষ্কৃত হয়। মিনামি-তরি-সিমা দ্বীপটি মারকাস দ্বীপ নামেও পরিচিত যেখানে বিরল মৃত্রিকা ধাতু এবং ইট্রিয়ামের বিশাল মজুদ রয়েছে। সাইন্টিফিক রিপোর্ট প্রকশিত এক বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধে বলা হয় বিরল মৃত্তিকা ধাতু এবং ইট্রিয়াম যুক্ত কাদার প্রচুর সম্ভাবনা আছে। প্রবন্ধটিতে আরও বলা হয় নিকট ভবিষ্যতে ১৬ মিলিয়ন টনের অধিক ইট্রিয়াম সহ অন্যান্য বিরল মৃত্তিকা উপাদান আহরণ করা সম্ভব, যা ক্যামরা লেন্স এবং মোবাইল ফোনের পর্দায় ব্যবহার হবে[১৪]।
বৈশিষ্ট্য
সম্পাদনাভৌত ধর্ম
সম্পাদনাইট্রিয়াম নরম, রুপ্য বর্ণের, খুবই উজ্জ্বল এবং স্ফটিক বিরল মৃত্তিকা ধাতু। প্রাকৃতিকভাবে এটি অন্যান্য বিরল মৃত্তিকা ধাতু সাথে যৌগ গঠন করে থাকে। [১৫]। বিশুদ্ধ ইট্রিয়াম খুবই অস্থিতিশীল ধাতু। এদের আঘাত করা হলে প্রজ্জলিত হয় যা ৪০০ °C পর্যন্ত তাপমাত্রা সৃষ্টি করতে পারে [৭]।
রাসায়নিক ধর্ম
সম্পাদনাইট্রিয়ামের রাসয়নিকধর্ম ল্যান্থানাইড মৌলগুলোর সাথে খুবই সদৃশ। মুক্ত অবস্থায় বাতাসে এদের গায়ে ইট্রিয়াম অক্সাইডের (Y2O3) প্রলেপ পড়ে যা ৭৫০ °C তাপমাত্রায় ১০µm পুরু হতে পারে। অতি উচ্চ (১০০০ °C) তাপমাত্রায় এরা ইট্রিয়াম নাইট্রাইড (YN) তৈরি করে [৭]।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Standard Atomic Weights: ইট্রিয়াম"। CIAAW। ২০২১।
- ↑ Prohaska, Thomas; Irrgeher, Johanna; Benefield, Jacqueline; Böhlke, John K.; Chesson, Lesley A.; Coplen, Tyler B.; Ding, Tiping; Dunn, Philip J. H.; Gröning, Manfred; Holden, Norman E.; Meijer, Harro A. J. (২০২২-০৫-০৪)। "Standard atomic weights of the elements 2021 (IUPAC Technical Report)"। Pure and Applied Chemistry (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 1365-3075। ডিওআই:10.1515/pac-2019-0603।
- ↑ Lide, D. R., সম্পাদক (২০০৫)। "Magnetic susceptibility of the elements and inorganic compounds"। CRC Handbook of Chemistry and Physics (পিডিএফ) (86th সংস্করণ)। Boca Raton (FL): CRC Press। আইএসবিএন 0-8493-0486-5।
- ↑ IUPAC contributors (2005). Connelly N G; Damhus T; Hartshorn R M; Hutton A T (eds.). Nomenclature of Inorganic Chemistry: IUPAC Recommendations 2005 (PDF). RSC Publishing. p. 51. ISBN 978-0-85404-438-2. Archived from the original on 2009-03-04. Retrieved 2007-12-17
- ↑ Occupational Safety and Health। Routledge। ২০১৭-০৫-০৯। পৃষ্ঠা 227–234। আইএসবিএন 9781138035058।
- ↑ van der Krogt, Peter (2005-05-05). "39 Yttrium". Elementymology & Elements Multidict. Retrieved 2008-08-06
- ↑ ক খ গ CRC contributors (2007–2008). "Yttrium". In Lide, David R. (ed.). CRC Handbook of Chemistry and Physics. 4. New York: CRC Press. p. 41. ISBN 978-0-8493-0488-0
- ↑ Whynne-Hammond, Charles. (১৯৮৫)। Elements of human geography (2nd ed সংস্করণ)। London: Allen & Unwin। আইএসবিএন 0049100815।
- ↑ "Contributors"। Social Text। 26 (2): np–np। ২০০৮। আইএসএসএন 0164-2472। ডিওআই:10.1215/01642472-26-2_95-np।
- ↑ ক খ Emsley, John (সেপ্টেম্বর ২০০১)। "Good news is no news"। Nature। 413 (6852): 113–113। আইএসএসএন 0028-0836। ডিওআই:10.1038/35093175।
- ↑ "Population Growth, Change, and Impact Eve Stwertka Albert Stwertka"। The American Biology Teacher। 46 (6): 349–349। সেপ্টেম্বর ১৯৮৪। আইএসএসএন 0002-7685। ডিওআই:10.2307/4447866।
- ↑ Alexander, G. V.; Nusbaum, R. E. (মে ১৯৫২)। "Emission Spectrographic Analysis of Organic Solids for Inorganic Constituents"। Analytical Chemistry। 24 (5): 793–795। আইএসএসএন 0003-2700। ডিওআই:10.1021/ac60065a009।
- ↑ Emsley, John (অগাস্ট ২০০১)। "Good news is no news"। Nature। 413 (6852): 113–113। আইএসএসএন 0028-0836। ডিওআই:10.1038/35093175।
- ↑ "Imports, billions of US dollars"। dx.doi.org। ২০১৮-১২-১১। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-১৪।
- ↑ Greenwood, N. N.; Earnshaw, A. (1997). Chemistry of the Elements (2nd ed.). Oxford: Butterworth-Heinemann. ISBN 978-0-7506-3365-9.