ইব্রাহিমীয় ধর্ম

ইব্রাহিম বা তার বংশধরদের কর্তৃক প্রচারিত একেশ্বরবাদী ধর্ম
(আব্রাহামিক ধর্ম থেকে পুনর্নির্দেশিত)

ইব্রাহিমীয় ধর্ম বা আব্রাহামীয় ধর্ম (ইংরেজি: Abrahamic Religion), যাকে ইংরেজিতে সেমেটিক ধর্ম (Semitic Religion) বলা হয়। এটি দ্বারা মধ্যপ্রাচ্য এলাকার একেশ্বরবাদী ধর্মগুলোকে বোঝানো হয়, যেগুলোর অনুসারীরা তাদের ধর্মীয় উৎপত্তিকে আব্রাহাম বা ইব্রাহিমের সাথে সম্পর্কিত করে। [] অথবা যেগুলোর মধ্যে ধর্মীয় ইতিহাসগত ধারাবাহিকতা বিদ্যমান।[][][] ভারত, চীন, জাপান ইত্যাদি দেশের উপজাতীয় অঞ্চল বাদ দিয়ে সারা বিশ্বে এই মতবাদের আধিপত্য।[] এই বিশ্বাসের অন্তর্ভুক্ত ধর্মগুলো হলো ইহুদি ধর্ম, খ্রিস্টধর্ম, ইসলাম

ইহুদিধর্মের দায়ূদের তারকা (উপরে), খ্রিস্টীয় ক্রুশ (মাঝে), ইসলামের অর্ধচন্দ্র ও তারা (নিচে)

তবে খ্রিষ্টান ধর্ম ত্রিত্ববাদের (Trinity) জন্য সমালোচিত হয়েছে যেহেতু এটি ইহুদী ধর্মে শেখানো একত্ববাদি বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক।

ইব্রাহিমীয় ধর্মসমূহ

সম্পাদনা

তালিকা

সম্পাদনা

সূচনালগ্ন অনুসারে ক্রমবিন্যাস করলে, প্রধান ইব্রাহিমীয় ধর্মসমূহ হলোঃ []

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা

সম্পাদনা

ইহুদি ধর্ম

সম্পাদনা

ইহুদী ধর্মানুসারীরা নিজেদেরকে আব্রাহামের (ইব্রাহিমের) পৌত্র যাকোব (ইয়াকুব)-এর উত্তরপুরুষ বলে মনে করেন। এই ধর্ম কঠোরভাবে একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী। তাদের মূল ধর্মীয় বিধান বা হালাখা অনুসারে, এই ধর্মের অন্তর্গত সকল শাখার মূলগত ধর্মগ্রন্থ একটিই- তোরাহ বা তানাখ বা তাওরাত বা হিব্রু বাইবেল। ইহুদীদের ইতিহাসজুড়ে বিভিন্ন ধর্মসংশ্লিষ্ট পণ্ডিত ব্যক্তি ইহুদী ধর্মের মূল মত নির্দিষ্ট করার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা প্রস্তাব করেন, যাদের সবগুলোই বিভিন্ন আলোচনা-সমালোচনার মধ্য দিয়ে যায়। সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থা বলে Maimonides প্রদত্ত "বিশ্বাসের তেরোটি নীতি" স্বীকৃত, যা দ্বাদশ শতকে প্রদত্ত হয়। অর্থোডক্স ইহুদী এবং রক্ষণশীল ইহুদী মতে, মোশি (মুসা) সম্পর্কিত ভবিষ্যদ্বাণী সত্য; তিনি পূর্বতন বা পরবর্তী সকল নবী তথা প্রেরিতপুরুষের নেতৃত্বস্থানীয়।

খ্রিস্ট ধর্ম

সম্পাদনা

খ্রিস্টধর্ম সূচিত হয় ইহুদী ধর্মের একটি শাখা হিসাবে। এর উৎপত্তি ভূমধ্যসাগরীয় উপত্যকায় (বর্তমান ফিলিস্তিন ও ইসরাইল), খ্রিষ্টীয় প্রথম শতকে। পরবর্তীতে এটি পৃথক বিশ্বাস এবং ধর্মাচরণযুক্ত আলাদা ধর্ম হিসাবে বিস্তৃত হয়। খ্রিস্টধর্মের কেন্দ্রীয় চরিত্রের নাম নবী যিশু (ঈসা(আ:))- প্রায় সকল মতেই তাকে প্রেরিত মহাপুরুষ বলে মনে করা হয়। ইসলাম ধর্মে নবী হিসেবে তিনি অত্যন্ত সম্মানিত। মৃত মানুষকে জীবিত করাসহ বহু মুজিযা তাঁর মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে । খ্রিস্টীয় ইঞ্জিল শরীফ খ্রিস্টধর্মের প্রধান ধর্মগ্রন্থ হিসাবে বিবেচিত। তবে এক্ষেত্রে ঐতিহ্যগত কিছু মতপার্থক্য পরিলক্ষিত হয়, যেমনঃ- রোমান ক্যাথলিক মত এবং পূর্বস্থিত অর্থোডক্স মত।

ইসলাম অর্থ আত্মসমর্পণ করা।[] যিনি নিজের ইচ্ছাকে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে দেন এবং নিজের ইচ্ছায় জীবন পরিচালিত না করে আল্লাহর দেয়া বিধি-নিষেধ মেনে চলেন তিনিই ইসলাম ধর্মের অনুসারী। আর ইসলামের অনুসারীদেরকে আরবীতে বলা হয় মুসলিম

ইসলাম ধর্ম মতে, হযরত আদম (আঃ) হতেই ইসলাম ধর্মের শুরু। তিনি ইসলামের প্রথম নবী । আল্লাহ মানবজাতিকে পথপ্রদর্শনের জন্য যুগে যুগে অসংখ্য নবীরাসূল (বার্তাবাহক) প্রেরণ করেছেন। কিছু ইসলামী ইতিহাসবেত্তাদের মতানুযায়ী, এসব বার্তাবাহকের সংখ্যা প্রায় এক লক্ষ চব্বিশ হাজার এবং রাসূলের সংখ্যা ৩১৩ জন ।[] তবে এই বর্ণনা সঠিক নয়।[]

এরই ধারাবাহিকতায় ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে জন্ম নেয়া সর্বশেষ ও চূড়ান্ত নবী এবং রাসুল হলেন হযরত মুহাম্মদ (সা:)

ইসলাম ধর্মের মূল বিশ্বাস হলো: আল্লাহ'র কোনো অংশীদার নেই এবং মুহাম্মদ (সা:) হলেন আল্লাহর বান্দা ও একজন রাসূল[১০] এই ধর্মের মূল ধর্মগ্রন্থ হলো কুরআন, । কুরআনের ব্যাখ্যায় দ্বারস্থ হতে হয় সহীহ বা যাচাইকৃত হাদিস সংকলনসমূহের উপর।

এই ধর্মের উল্লেখযোগ্য দিক হলো পবিত্র কুরআনে মুসলমানদের সমস্ত দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পারিবারিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবন। মুসলিমদের বিশ্বাস, ইসলামের প্রবর্তক হলেন হযরত আদম (আঃ)[১১] ইসলাম ধর্ম হচ্ছে শান্তির ধর্ম। মুসলমানদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান সাধারণত দুইটি। একটি ঈদ-ঊল-ফিতরঈদ-ঊল-আজহা[১২]

বাহাই ধর্ম

সম্পাদনা

রাস্তাফারি

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Philosophy of Religion"Encyclopædia Britannica। ২০১০। ২১ জুলাই ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১০ 
  2. Massignon 1949, পৃ. 20–23
  3. Smith 1998, পৃ. 276
  4. Derrida 2002, পৃ. 3
  5. C.J. Classification of religions: Geographical. Encyclopædia Britannica, 2007. Accessed: 15 May 2013
  6. *"Why "Abrahamic"?"। Lubar Institute for Religious Studies at U of Wisconsin। সংগ্রহের তারিখ ৩ মার্চ ২০১২ 
  7. "ইসলাম"উইকিঅভিধান। ২০২৪-০৮-১৭। 
  8. ইবনু হিব্বান, আস-সহীহ ১/৭৬-৭৯
  9. "৪. নবী-রাসূলগণের সংখ্যা: ১ বা ২ লক্ষ ২৪ হাজার"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০২ 
  10. "মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) | হাদিস: ২ [ ]"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০২ 
  11. কুরআন ২:৩০
  12. নাসাঈ ১৫৫৬

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা