আবুল কাসেম নোমানী
আবুল কাসেম নোমানী (জন্ম: ১৯৪৭, আরবি ও উর্দু:ابوالقاسم نعمانی) একজন ভারতীয় সুন্নি মুসলিম পণ্ডিত এবং দারুল উলূম দেওবন্দের বর্তমান মুহতামিম। সম্প্রতি জরিপে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ৫০০ জন মুসলিমের মধ্যে স্থান পেয়েছেন।[১]
আবুল কাসেম নোমানী | |
---|---|
ابوالقاسم نعمانی | |
১৩ তম মুহতামিম, দারুল উলুম দেওবন্দ | |
দায়িত্বাধীন | |
অধিকৃত কার্যালয় ২৪ জুলাই ২০১১ | |
পূর্বসূরী | গোলাম মুহাম্মদ বাস্তনভি |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | |
ধর্ম | ইসলাম |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
আখ্যা | সুন্নি |
ব্যবহারশাস্ত্র | হানাফি |
ধর্মীয় মতবিশ্বাস | মাতুরিদি |
যেখানের শিক্ষার্থী | দারুল উলুম দেওবন্দ |
মুসলিম নেতা | |
এর শিষ্য | মাহমুদ হাসান গাঙ্গুহী, মুহাম্মদ জাকারিয়া কান্ধলভি |
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাআবুল কাসেম নোমানী ১৪ই জানুয়ারি ১৯৪৭ সালে ভারতের বারাণসীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম হাজী মুহাম্মদ হানিফ। তিনি প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন নিজ মায়ের কাছে। কুরআন শিক্ষা লাভ করেন মা এবং দাদার কাছে। এরপর ভর্তি হন জামিয়া ইসলামিয়া মদনপুরা বেনারশে। দারুল উলুম মৌ এবং মিফতাহুল উলুম মাদ্রাসায় পড়ার পর ভর্তি হন দারুল উলুম দেওবন্দে। তিনি ১৯৬৭ সালে দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে স্নাতক পাশ করেন। ১৩৮৮ হিজরির শাবান মাসে তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ইসলামি আইনজ্ঞ ডিগ্রি প্রাপ্ত হন।[২]
শিক্ষকবৃন্দ
সম্পাদনানোমানীর উল্লেখযোগ্য ওস্তাদগণের মধ্যে রয়েছেন শায়খুল হিন্দের বিশিষ্ট শাগরেদ মাওলানা ইব্রাহিম বালয়াবী, মাওলানা ফখরুদ্দীন মুরাদাবাদী, ফখরুল হাসান মুরাদাবাদী, মাহমুদ হাসান গাঙ্গুহী, কারী তৈয়ব সাহেব সহ অনেকেই।
কর্মজীবন
সম্পাদনাশিক্ষাজীবন সমাপ্তির পর তিনি ১৩৮৮ হিজরির জিলকদ মাসে প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়া ইসলামিয়া মদনপুরা বেনারশে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এরপর ১৯৯২ সালে দারুল উলুমের মজলিসে শুরার (পরিচালনা কমিটি) সদস্য হন।[১] গোলাম মুহাম্মদ বাস্তানবীর পর, নোমানী ২১ জুলাই ২০১১ সালে দারুল উলুম দেওবন্দের আচার্য নিযুক্ত হন।[৩][৪] তিনি খানখায়ে মাহমুদিয়ায় পরিচালকের দায়িত্বও পালন করেছেন।
তাসাউফ
সম্পাদনাছাত্রাবস্থায় মুহাম্মদ জাকারিয়া কান্ধলভির হাতে ১৩৮৬ হিজরিতে বায়আত গ্রহণ করেন। এরপর ১৩৮৮ হিজরিতে মাহমুদ হাসান গাঙ্গুহীর নিকট বায়আত গ্রহণ করেন। ১৩৯৫ হিজরিতে মাহমুদ হাসান গাঙ্গুহীর নিকট খেলাফত লাভ করেন।
উপাধি
সম্পাদনাতিনি সকলের মুখে নমুনায়ে সালাফ নামে পরিচিত।
ফতোয়া
সম্পাদনাখতমে বুখারী সম্পর্কে নোমানী বলেন,[৫]
আমাদের প্রচলিত খতমে বুখারী বিদআতের পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। তাই এই অনুষ্ঠান বন্ধ করা উচিত। দারুল উলুম দেওবন্দে কোনো অনুষ্ঠান করে বুখারি শরীফ শেষ করা হয় না। এমনকি মাদরাসার শিক্ষক ও ছাত্ররাও জানেন না কখন বুখারী শরীফ সমাপ্ত করা হচ্ছে। সুতরাং এসব বিষয়ে সতর্ক থাকা এবং এসব বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।
— আবুল কাসেম নোমানী
সমালোচনা
সম্পাদনাসম্প্রতি ভারতের সিএএ ও এনআরসি বিল প্রসঙ্গে নারীরা আন্দোলন শুরু করলে নোমানী বলেন, “নারীদের আন্দোলন করা উচিত নয়”। তাঁর এই বক্তব্যে সারাদেশ ব্যাপী সমালোচনা শুরু হয়। পরবর্তীতে নোমানী পূূূূর্বের বক্তব্যে প্রত্যাহার করে বলেন,[৬]
আমি কখনো আন্দোলন বন্ধ করতে বলিনি। আমি বলেছি, যে কাজ আমাদের পুরুষদের করা উচিত তা নারীরা করছে কেন? মিডিয়া আমার নামে মিথ্যাচার করেছে। যাই হোক, আমি আমার পূর্বের বক্তব্যে প্রত্যাহার করে নিলাম।
বই
সম্পাদনাআরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "Abul Qasim Nomani"। TheMuslim500। রয়েল ইসলামিক স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ সেন্টার। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০২০।
- ↑ "মাওয়ায়েজে নু'মানী - হযরত মাওলানা মুফতী আবুল কাসেম নু'মানী দা.বা."। www.rokomari.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-০২।
- ↑ Abantika Ghosh (২৫ জুলাই ২০১১)। "Vastanvi axed as Darul V-C for praising Modi"। The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০২০।
- ↑ "Maulana Mufti Abul Qasim Nomani, New Acting Mohtamim of Darul Uloom Deoband"। DEOBAND ONLINE। ১ এপ্রিল ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ নারী, মাসিক আদর্শ (২০১৯-০৩-২৯)। "খতমে বুখারির প্রথা বিদআতের পর্যায়ে চলে যাচ্ছে : দেওবন্দের মুহতামিম"। মাসিক আদর্শ নারী (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-০২।
- ↑ "Women spurn clerics' appeal to end anti-CAA protest"। hindustantimes.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-০২।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- টাইমস অফ ইন্ডিয়া ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১১-০৯-০৮ তারিখে
- দেওবন্দ অনলাইন নিউজ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১০ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে
- https://web.archive.org/web/20171210232425/http://www.islah-ul-muslimeen.com/index.php