আনবে ছিভাম (তামিল: அன்பே சிவம், অনুবাদ 'প্রেম হচ্ছে ঈশ্বর') ২০০৩ সালে মুক্তি পাওয়া একটি তামিল চলচ্চিত্র যেটি সুন্দর সি. দ্বারা পরিচালিত এবং যৌথ প্রযোজিত হয়েছিল। এই চলচ্চিত্রের কাহিনী অভিনেতা কামাল হাসান লিখেছিলেন, এছাড়া চিত্রনাট্যও তারই লেখা এবং সংলাপ লিখেছিলেন মদন। আনবে ছিভামে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেন কামাল হাসান নিজে, মাধবন, কিরণ রাঠোর, নছর, সান্ত্বনা ভারতী, উমা রিয়াজ খান এবং সীমা।

আনবে ছিভাম
প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পোস্টার
পরিচালকসুন্দর সি.
প্রযোজক
  • কে. মুরালিথরন
  • ভি. স্বামীনাথান
  • জি. ভেনুগোপাল
  • সুন্দর সি.
রচয়িতা
শ্রেষ্ঠাংশে
সুরকারবিদ্যাসাগর
চিত্রগ্রাহকআর্থার এ. উইলসন
সম্পাদকপি. সাই সুরেশ
প্রযোজনা
কোম্পানি
লক্ষ্মী মুভি মেকার্স
পরিবেশকলক্ষ্মী মুভি মেকার্স
মুক্তি১৫ জানুয়ারী ২০০৩[]
স্থিতিকাল১৬০ মিনিট[]
দেশভারত
ভাষাতামিল

১৯৮৭ সালের হলিউড চলচ্চিত্র 'প্লেন্স, ট্রেন্স এন্ড অটোমোবাইলস' দ্বারা অনুপ্রাণিত এই চলচ্চিত্রে দুইজন মানুষের ভুবনেশ্বর থেকে চেন্নাই পর্যন্ত একটি অনিশ্চিত যাত্রার কথা বলা আছে। মানুষ দুজন হলেন নাল্লাছিভাম (কামাল হাসান) এবং অনবরসু (মাধবন)।

দেড় কোটি রূপী দ্বারা নির্মিত এই চলচ্চিত্রে সাম্যবাদ, নাস্তিকতাবাদ এবং পরার্থবাদ দেখানো হয়েছে। চলচ্চিত্রটিতে কমল হাসনের নাল্লাছিভাম চরিত্রটি একটি মানবতাবাদী মানুষের চরিত্র। ২০০৩ সালের 'ভারতের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব'-এর প্যানোরামা সেকশনের অংশ হিসেবে এই চলচ্চিত্রটি প্রদর্শিত হয়েছিল। ৫১তম ফিল্মফেয়ার পুরস্কার দক্ষিণে চলচ্চিত্রটি বিশেষ জুরী পুরস্কার লাভ করেছিল এবং সেরা চলচ্চিত্রসেরা অভিনেতা (কামাল হাসান) শ্রেণীতে মনোনয়ন পেয়েছিলো। ২০০৩-এর ১৫ জানুয়ারী মুক্তি পেয়ে চলচ্চিত্রটি চলচ্চিত্র-সমালোচকদের ইতিবাচক পর্যালোচনা পেয়েছিল, কিন্তু তারপরেও বক্স-অফিসে ভালো পারফরমেন্স দেখাতে পারেনি। যদিও বর্তমানে চলচ্চিত্রটি তামিল চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে একটি 'অর্চনা' হিসেবে বিবেচিত।[][][][][]

কাহিনিসংক্ষেপ

সম্পাদনা

ভুবনেশ্বরের বিজু পাটনায়েক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চেন্নাইয়ের ফ্লাইটের জন্য অপেক্ষারত দুইজন ব্যক্তির মধ্যে আলোচনা শুরু হয়। একজন হচ্ছেন বিজ্ঞাপন নির্মাতা অনবরসু (মাধবন), যিনি তার নামের সংক্ষিপ্তরুপ 'এ. আরশ' পছন্দ করেন, আরেকজন হচ্ছেন খুঁতেল, অঙ্গহীন কিন্তু রসিক ও বুদ্ধিমান সমাজতান্ত্রিক নাল্লাছিভাম ওরফে নাল্লা (কামাল হাসান)। যখন বৃষ্টির কারণে ফ্লাইট দেরী হচ্ছিল তখন আরশ নাল্লাকে জঙ্গী মনে করে কর্তৃপক্ষকে খবর দেন, পরে অবশ্য তার ভুল ভাঙে। যখন পুরো শহর বন্যায় আক্রান্ত তখন তারা দুজন বাধ্য হন একটি রুম শেয়ার করে থাকতে। উভয়েরই চেন্নাই পৌঁছানো জরুরী কারণ আরশকে তার নিজের বিয়ের অনুষ্ঠানে যেতে হবে অপরদিকে নাল্লার ₹৩২,০০,০০০ রুপীর চেক ডেলিভার করতে হবে যেটি তিনি একটি মামলা জেতার পর পেয়েছিলেন, এখন তিনি সেটি একটি শ্রমিক ইউনিয়নের গ্রুপকে দিতে চান। একটি মানসিক আঘাতপূর্ণ রাত এবং ফ্লাইটের কোনো আশা না থাকায় লোকদুইজন করমান্ডেল এক্সপ্রেস ট্রেন ধরার জন্য একটি বাসে ওঠেন। আরশের ব্যাগ চুরি হয়ে যায়, শুধুমাত্র তার ক্রেডিট কার্ড থেকে যায় যেটি কোথাও গ্রহণ করা হয়না। নাল্লা বারবার আরশকে বিভিন্ন বিপদ থেকে রক্ষা করলেও আরশ তাকে ঘৃণা করে এবং তার থেকে দূরে থাকতে চায়। ইচ্ছাপুরম ট্রেন স্টেশনে অপেক্ষা করার সময় নাল্লা আরশকে তার অতীতের কিছু কাহিনি শোনানো শুরু করে।

কয়েক বছর আগে, সুস্থ-সবল নাল্লা বিভিন্ন সড়কমঞ্চে পুঁজিতান্ত্রিক অর্থনীতি বিরোধী নাটকে অভিনয় করতেন। নাল্লার কন্দস্বামী পদয়াচ্চী (নছর) এর সঙ্গে মতভেদ ছিল। কন্দস্বামী একটি কারখানার মালিক যিনি তার শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধিতে রাজী ছিলেননা। নাল্লা কন্দস্বামীকে বিভিন্নভাবে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করতেন তার সড়কমঞ্চের অভিনয়ের মাধ্যমে। নাল্লা হঠাৎ করে কন্দস্বামীর মেয়ে বলসরস্বতীর (বল হিসেবে পরিচিত) প্রেমে পড়েন। নাল্লা এবং বল দুইজনেই বুঝতে পারেন যে কন্দস্বামী তাদের সম্পর্ক মেনে নেবে না, তারা কেরালা পালানোর সিদ্ধান্ত নেন। নাল্লা কেরালার বাসে উঠেন বলের সঙ্গে দেখা করার জন্য তবে বাসটি দুর্ঘটনায় পতিত হয়, নাল্লা গুরুতরভাবে আহত হন এবং তার এক পা খোঁড়া হয়ে যায়, তিনি আংশিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত হন। তিনি কন্দস্বামীদের বাসায় যান এবং কন্দস্বামী তাকে জানান যে বলকে তিনি বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন এবং সে এখন বিদেশ থাকে। কন্দস্বামী এর আগে বলকে মিথ্যা বলেছিলেন যে নাল্লা মারা গেছে।

চেন্নাই পৌঁছানোর পর আরশ নাল্লার ইউনিয়ন শ্রমিকদেরকে চেক ডেলিভারী করে দেয়। আরশ নাল্লাকে তার বিয়েতে আমন্ত্রণ জানায় এবং নাল্লা খেয়াল করে যে তার প্রেমিকা বল হচ্ছে আরশের হবুবউ, সে বলের সামনে আসেনা, লুকিয়ে লুকিয়ে তাকে দেখে। কন্দস্বামী নাল্লাকে দেখে বলে যে সে এখানে কী করছে, নাল্লা জবাব দেয় আরশ তাকে এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। নাল্লা কন্দস্বামীকে শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির কাগজে সই করতে বলে, কন্দস্বামী সই করে দেয়। কাগজ স্বাক্ষর করার পর কন্দস্বামী তার সহকারী (সান্ত্বনা ভারতী) কে বলে নাল্লাকে বাইরে নিয়ে হত্যা করার জন্য। কন্দস্বামীর সহকারী নাল্লাকে বাইরে নিয়ে যায় তবে তাকে হত্যা না করে তার প্রতি মায়া দেখিয়ে তাকে শহর ছেড়ে চলে যেতে বলে, নাল্লা চলে যায়।

চরিত্র

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Anbea Sivam (12A)" (ইংরেজি ভাষায়)। British Board of Film Classification। ১৭ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০১৬ 
  2. "2003 Indian Panorama" (পিডিএফ) (ইংরেজি ভাষায়)। Directorate of Film Festivals। ২৮ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০১৬ 
  3. Arkay (১৬ জানুয়ারি ২০০৩)। "Why would Kamal make himself so ugly?" (ইংরেজি ভাষায়)। Rediff.com। ২৮ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০১৬ 
  4. Kalyanaraman, M. (৮ মে ২০১৫)। "The spiritual Kamal Hassan"The Times of India (ইংরেজি ভাষায়)। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ এপ্রিল ২০১৬ 
  5. Dhananjayan, G. (১ জুন ২০১০)। "Anbe Sivam inspired me: Bala" (ইংরেজি ভাষায়)। Sify। ২৮ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০১৬ 
  6. K. Jha, Subhash (৩০ এপ্রিল ২০০২)। "What it means to be Kamal Haasan" (ইংরেজি ভাষায়)। Rediff.com। ২৬ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০১৬ 
  7. K. Jha, Subhash (৩ মে ২০০২)। "Harrowing time in Toronto"The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। ২৬ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০১৬ 
  8. Pyramid Movies 2014, Opening credits from 01:25 to 03:05।
  9. Pyramid Movies 2014, Clip from 53:18 to 53:25।

গ্রন্থপঞ্জি

সম্পাদনা
  • কামাল হাসান, আর. মাধবন, কিরণ রাথোড়, নছর (৩০ মে ২০১৪)। Anbe Sivam Tamil Full Movie – Kamal Haasan, Madhavan, Kiran (Motion Picture)। India: Pyramid Movies। ২৩ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০১৬ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা