আবদুল আজিজ পাশা

বাংলাদেশি সামরিক ব্যক্তিত্ব
(আজিজ পাশা থেকে পুনর্নির্দেশিত)

আবদুল আজিজ পাশা একজন বাংলাদেশ সেনা অফিসার। যিনি ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। ৩ নভেম্বর ১৯৭৫ সালে জেলহত্যাকাণ্ডেরও অভিযুক্ত তিনি।[]

আবদুল আজিজ পাশা
আনুগত্য বাংলাদেশ
সেবা/শাখা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
পদমর্যাদালেফট্যানেন্ট কর্ণেল

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন

সম্পাদনা

আবদুল আজিজ পাশা মানিকগঞ্জে ঘিওর উপজেলার শ্রীবাড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

কর্মজীবন

সম্পাদনা

লেফটেন্যান্ট কর্নেল হিসেবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিলেন। []

বঙ্গবন্ধু হত্যার দায়

সম্পাদনা

৩ নভেম্বর ১৯৭৫ সালে জেলহত্যাকাণ্ডের পরদিন বঙ্গবন্ধুর খুনিরা বিশেষ বিমানে করে রেঙ্গুন (বর্তমানে ইয়াঙ্গুন) হয়ে থ্যাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক চলে যান। সেখান থেকে পাকিস্তান সরকারের পাঠানো বিশেষ বিমানে করে তাদের লিবিয়ায় পাঠানো হয়। ওই খুনিদের মধ্যে আবদুল আজিজ পাশাও ছিলেন। ১৯৭৬ সালের ৮ জুন বঙ্গবন্ধুর ১২ খুনিকে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেওয়া হয়। আবদুল আজিজ পাশাকে দেওয়া হয় আর্জেন্টিনায় বাংলাদেশ দূতাবাসে। পরে তাকে আলজেরিয়ায় বদলি করা হয়। এরপর জিম্বাবুয়েতেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।[]

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে একটি টাস্কফোর্স গঠন করে। রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমানকে নিয়োগ করা হয় ওই টাস্কফোর্সের সমন্বয়ক। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর ওই টাস্কফোর্স অকার্যকর হয়ে পড়ে। তবে টাস্কফোর্স গঠনের পরই জিম্বাবুয়েতে অবস্থানরত আজিজ পাশাকে ফেরত পেতে ওই দেশের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন টাস্কফোর্সের সদস্যরা। মুগাবে বিশাল অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে পাশাকে ফেরত দিতে রাজি হন। বাংলাদেশ ওই বিপুল অর্থের বিনিময়ে তাকে ফেরত আনতে সম্মত হয়নি।[]

২৭ জানুয়ারি ২০১০ সালে খুনিদের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। এরা হলেন—ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, বজলুল হুদা, মহিউদ্দিন আহমদ ও এ কে এম মহিউদ্দিন। পলাতক ছয়জন হচ্ছেন—লে. কর্নেল (অব.) রাশেদ চৌধুরী, লে. কর্নেল (অব.) নূর চৌধুরী, লে. কর্নেল (অব.) শরিফুল হক ডালিম, লে. কর্নেল (অব.) খন্দকার আবদুর রশিদ, রিসালদার মোসলেমউদ্দিন, ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল মাজেদ। এদের মধ্যে লে. কর্নেল (অব.) রাশেদ চৌধুরী আমেরিকায় এবং লে. কর্নেল (অব.) নূর চৌধুরী কানাডায় আছেন। []

মৃত্যু

সম্পাদনা

আবদুল আজিজ পাশা ২ জুন ২০০১ সালে জিম্বাবুয়েতে মারা যান। তবে তার মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "No move taken to bring back accused"দ্য ডেইলি স্টার। ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ এপ্রিল ২০১৭ 
  2. "No last post for convicts"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ১৩ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ এপ্রিল ২০১৭ 
  3. "বস সবকিছুর ব্যবস্থা নিচ্ছেন"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-০৮ 
  4. "পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে আনা অনিশ্চিত"Bhorer Kagoj। ২০১৯-০৮-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-০৮ 
  5. Welle (www.dw.com), Deutsche। "বঙ্গবন্ধুর খুনিরা কে কোথায়? | DW | 15.08.2017"DW.COM। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-০৮ 
  6. "6 killers still out of reach"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ১৫ আগস্ট ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১৩ এপ্রিল ২০১৭