অ্যালান মুলালি
অ্যালান ডেভিড মুলালি (ইংরেজি: Alan Mullally; জন্ম: ১২ জুলাই, ১৯৬৯) এসেক্সের সাউদেন্ড-অন-সী এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ বামহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। পাশাপাশি নিচেরসারিতে ডানহাতে ব্যাটিংয়ে অভ্যস্ত ছিলেন অ্যালান মুলালি। ঘরোয়া ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে হ্যাম্পশায়ার, লিচেস্টারশায়ারের পক্ষে খেলেছেন। এছাড়াও, অস্ট্রেলীয় ঘরোয়া ক্রিকেটে ওয়েস্টার্ন ওয়ারিয়র্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | অ্যালান ডেভিড মুলালি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | সাউদেন্ড-অন-সী, এসেক্স, ইংল্যান্ড | ১২ জুলাই ১৯৬৯|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উচ্চতা | ৬ ফুট ৫ ইঞ্চি (১.৯৬ মিটার) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | বামহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | বোলার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৫৭৬) | ৬ জুন ১৯৯৬ বনাম ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২০ আগস্ট ২০০১ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ১৪২) | ২৯ আগস্ট ১৯৯৬ বনাম পাকিস্তান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ ওডিআই | ২১ জুন ২০০১ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৮৭ - ১৯৯০ | ওয়েস্টার্ন ওয়ারিয়র্স | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৮৮ | হ্যাম্পশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৯০ - ১৯৯৯ | লিচেস্টারশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০০ - ২০০৫ | হ্যাম্পশায়ার (জার্সি নং ১১) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৯ আগস্ট, ২০১৭ |
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাপশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় তার শৈশবকাল অতিবাহিত হয়। এরপর ১৯৮৭-৮৮ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সদস্যরূপে সমপ্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তার অভিষেক হয়। একই মৌসুমের ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার সদস্য হিসেবে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। কুইন্সল্যান্ড বুলসের বিপক্ষে পার্থে শেফিল্ড শীল্ডের চূড়ান্ত খেলায় তার দল জয় পায়। পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আরও কয়েক মৌসুম খেলেন ও প্রভূতঃ সফলতা পান।
মে, ১৯৮৮ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে ও হ্যাম্পশায়ারের পক্ষে অভিষেক ঘটে তার। খেলায় তিনি কোন উইকেট পাননি। মৌসুমের বাদ-বাকি সময় হ্যাম্পশায়ারের দ্বিতীয় একাদশে খেলেন। ১৯৮৮-৮৯ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে এসে নিজেকে আরও শাণিত করেন। ২৩টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট তুলে নেন তিনি। তন্মধ্যে পার্থে অনুষ্ঠিত এমজি কাইলিস কেমপ্লাস্ট ট্রফির খেলায় তামিলনাড়ুর বিপক্ষে সাত উইকেট তুলে নিয়ে দলের ইনিংস বিজয় নিশ্চিত করেন।
১৯৮৯ সালে ইংল্যান্ডে খেলেননি। ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ায় হতাশাব্যঞ্জক মৌসুম পার করেন। মাত্র ১১টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট পেলেও ১৯৯০ সালে কাউন্টি ক্রিকেটে লিচেস্টারশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেন মুলালি। জুনে সফরকারী নিউজিল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে একদিনের খেলায় ৬/৩৮ পান যা লিস্ট এ ক্রিকেটে তার সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ছিল। ঐ শীতে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসেন। ভিক্টোরিয়া বুশর্যাঞ্জার্সের পক্ষে একটিমাত্র খেলায় অংশ নেন।
বেশ কয়েকবছর মুলালি ধারাবাহিকভাবে লিচেস্টারশায়ারের পক্ষে ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেছেন। ১৯৯৩ সালে ক্যাপ লাভ করেন। ৪০ থেকে ৭০টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট ঐ মৌসুমে লাভ করেছেন। ১৯৯৬ সালে তার সফলতম মৌসুম ছিল। ৭০টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট পান। ব্যাটহাতে তেমন সফলতা পাননি। কেবলমাত্র দুইটি প্রথম-শ্রেণীর অর্ধ-শতক রান তুলেছেন ১১ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে। জুনে সারের বিপক্ষে ৬৮ ও সেপ্টেম্বরে মিডলসেক্সের বিপক্ষে ৭৫ রান তুলেন।
খেলোয়াড়ী জীবন
সম্পাদনা১৯৯৬ সালে এজবাস্টনে সফরকারী ভারত দলের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে অংশগ্রহণের জন্যে মনোনীত হন। খেলায় তিনি পাঁচ উইকেট দখল করেন যাতে তার দল আট উইকেটে জয় পায়। ঐ গ্রীষ্মে ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে ছয় টেস্টের সবগুলোতেই তার অংশগ্রহণ ছিল। পাশাপাশি শেষের দলের বিপক্ষে তিনটি ওডিআইয়ে অংশগ্রহণ করেন তিনি। ইংরেজ ক্রিকেটার হিসেবে মুলালি ওডিআইয়ে স্বীয় ক্রীড়াশৈলী উপস্থাপন করেছেন। নিখুঁত বোলিংয়ের দিকে জোর দেন। মিতব্যয়ী বোলিংয়ের কারণে একসময় তাকে বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা বোলারে পরিণত করে। টেস্ট দলে আসা-যাওয়ার পালায় ছিলেন। ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে তার সেরা সময় কাটে। অ্যাশেজ সিরিজের চার টেস্টে ৩০.৩৩ গড়ে ১২ উইকেট পান। তন্মধ্যে ব্রিসবেন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান ৫/১০৫। পরবর্তীতে নিজদেশে সফরকারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন খেলায় ২৭.২৭ গড়ে ১১ উইকেট পান। সীমিত ওভারের খেলায় দলের অপরিহার্য খেলোয়াড় হিসেবে তাকে বিবেচনা করা হতো। ১৯৯৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে মাত্র ১৭.৬০ গড়ে ১০ উইকেট দখল করে ড্যারেন গফের পর দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারিতে পরিণত হন। এছাড়াও প্রতিযোগিতায় যে-কোনো ইংরেজ বোলারের তুলনায় তিনি সেরা মিতব্যয়ী বোলিং করেন। গ্রুপ-পর্বে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান। তবে চতুর্থ স্থান দখল করায় সুপার সিক্স পর্বে খেলার সুযোগ হয়নি ইংরেজ দলের।
২০০০ সালে হ্যাম্পশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলটি বেশ কঠিন সময় কাটাচ্ছিল। এ অবস্থায় শেন ওয়াটসনকে সাথে নিয়ে দল পরিচালনায় অগ্রসর হন। আগস্টে ডার্বিশায়ারের বিপক্ষে সেরা বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান ৯/৯৩। পরবর্তীতে দ্বিতীয় ইনিংসে তুলে নেন ৫/৯৫। সর্বসাকুল্যে খেলায় তার বোলিং বিশ্লেষণ ছিল ১৪/১৮৮। তাস্বত্ত্বেও খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়েছিল। জুন, ২০০১ সালে ওভালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার সর্বশেষ ওডিআইয়ে অংশ নেন। চার ওভারের ২৭ রান দেন। খেলায় তার দল আট উইকেটে পরাজিত হয়েছিল। জানুয়ারি, ২০০০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলার পর হেডিংলিতে একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে আগস্টে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন মুলালি।
ব্যাটসম্যান হিসেবে বেশ দূর্বলতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। ইংল্যান্ড দলে তার ব্যাটিংয়ে অবস্থান ছিল ১১। তবে, ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে মেলবোর্নে গ্লেন ম্যাকগ্রা’র বলে ৬টি চার হাঁকান ও ১৫ বলে ১৬ রান তুলে ইংল্যান্ডকে ১২ রানে জয়লাভে প্রভূতঃ সহায়তা করেন।[১] পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২৪ রান তুলেন। ওয়াসিম আকরামের বলে তিনি বেশকিছু বাউন্ডারি হাঁকিয়েছিলেন। গুজব রয়েছে যে, তৎকালীন ইংরেজ কোচ ডেভিড লয়েড ঐ খেলায় ৩০ রান তুলতে পারলে ৩০ গিনির পিন্ট প্রদানের কথা ছিল।[২]
অবসর
সম্পাদনাপরবর্তীতে কয়েকবছর হ্যাম্পশায়ারের পক্ষে নিয়মিতভাবে খেলেন। ২০০০ ও ২০০১ সালে বলহাতে তার গড় ছিল ২০-এর নিচে। তন্মধ্যে শেষ মৌসুমটিতে ছয়বার পাঁচ উইকেট পেয়েছিলেন। তবে ২০০৩ সালের পর থেকে বোলিংয়ের মান নিচের দিকে যেতে থাকে। ২০০৩ ও ২০০৪ সালে সর্বমোট ৩৫ উইকেট পান তিনি। তাস্বত্ত্বেও কাউন্টি দলে তাকে রাখা হয়। ২০০৪ সালে লিস্ট এ ক্রিকেটে ২২ উইকেট দখল করেন। ২০০৫ সালে আর্থিক সুবিধা মৌসুমের তিনি পুরস্কৃত হন। কেন্টের বিপক্ষে প্রীতিখেলায় অংশগ্রহণের পর এপ্রিল ও মে মাসে টটেস্পোর্ট লীগের তিন খেলায় অংশ নেন। এরপর পুরোপুরিভাবে দলের প্রথম একাদশের বাইরে রাখা হয় তাকে। ২০০৫ মৌসুম শেষে সকল স্তরের ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন তিনি।[৩]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Long live the tail" (English ভাষায়)। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০০৯।
- ↑ "The Jack of all rabbits" (English ভাষায়)। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০০৯।
- ↑ "Player Profile of Alan Mullally" (English ভাষায়)। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০০৯।
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে অ্যালান মুলালি (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে অ্যালান মুলালি (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)