ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা

আন্তর্জাতিক সংস্থা

ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা বা সংক্ষেপে ওআইসি (আরবি: منظمة التعاون الإسلامي, প্রতিবর্ণীকৃত: Munaẓẓama at-Taʿāwun al-ʾIslāmiyy; ফরাসি: Organisation de la coopération islamique) একটি আন্তর্জাতিক ইসলামি সংস্থা। পূর্বে সংস্থাটির নাম ছিল ইসলামি সম্মেলন সংস্থা। ১৯৬৯ সালে গঠিত সংস্থাটিতে ৫৭টি দেশ প্রতিনিধিত্ব করছে যার মধ্যে ৪৯টি মুসলমান প্রধান দেশ। সংস্থাটির মতে তারা ‘মুসলিম বিশ্বের সম্মিলিত কণ্ঠস্বর’ হিসেবে এবং ‘আন্তর্জাতিক শান্তি ও সম্প্রীতি প্রচারের চেতনা নিয়ে মুসলিম বিশ্বের স্বার্থ ধারণ ও সুরক্ষায়’ কাজ করে থাকে।

ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা

Organisation de la Coopération Islamique (ফরাসি)
Organisation of Islamic Cooperation (ইংরেজি)
منظمة التعاون الإسلامي (আরবি)
নীতিবাক্য: "মুসলমানদের স্বার্থরক্ষা ও অগ্রগতি ও মঙ্গল নিশ্চিতকরণ।মুসলিম কোনো দেশের উপর কেউ হামলা করলে একযোগে প্রতি হত করা"
  সদস্য রাষ্ট্র
  পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র
  স্থগিত রাষ্ট্র
প্রশাসনিক কেন্দ্রসৌদি আরব জেদ্দা, সৌদি আরব
দাপ্তরিক ভাষাসমূহ
ধরনধর্মীয়
সদস্য৫৭টি সদস্য রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকালীন ২৪ টি রাষ্ট্র
নেতৃবৃন্দ
হিসেইন ব্রাহীম তাহা
প্রতিষ্ঠিত
• সনদে স্বাক্ষর
২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৬৯
জনসংখ্যা
• ২০১৮ আনুমানিক
১.৮১ বিলিয়ন
জিডিপি (পিপিপি)২০১৯ আনুমানিক
• মোট
$২৭,৯৪৯ ট্রিলিয়ন
• মাথাপিছু
$১৯,৪৫১
জিডিপি (মনোনীত)২০১৯ আনুমানিক
• মোট
$৯.৯০৪ ট্রিলিয়ন
• মাথাপিছু
$৯,৩৬১
মানব উন্নয়ন সূচক (২০১৮)বৃদ্ধি ০.৬৭২
মধ্যম · ১২২তম
ওয়েবসাইট
www.oic-oci.org
জেদ্দায় সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়।

জাতিসংঘ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে ওআইসির স্থায়ী প্রতিনিধি রয়েছে। সংস্থাটির দাপ্তরিক ভাষা আরবী, ইংরেজি ও ফরাসি। সংস্থাটির বর্তমান মহাসচিব হুসেইন ইব্রাহীম তাহা। সদর দপ্তর সৌদি আরবের জেদ্দায় অবস্থিত।

পটভূমি

সম্পাদনা
 
ইসলামি সম্মেলন মিনার, লাহোর, পাকিস্তান

১৯৬৭ সালের ছয়দিনের যুদ্ধের পর ১৯৬৯ সালের ২১ আগস্ট ইসরাইল জেরুজালেমের মসজিদুল আকসায় অগ্নিসংযোগ করে। এর ফলে সমগ্র মুসলিম বিশ্বে প্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ায় ২৫ আগস্ট ১৪টি আরব দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীগণ মিশরের রাজধানী কায়রোতে এক বৈঠকে মিলিত হয়। সৌদি আরব প্রস্তাব করে,

যেহেতু বিষয়টি মুসলিম বিশ্বের জন্য স্পর্শকাতর তাই সকল মুসলিম দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে নিয়েই শীর্ষ বৈঠক আয়োজন করবে। মরক্কো, সৌদি আরব, ইরান, পাকিস্তান, সোমালিয়া, মালয়েশিয়া এবং নাইজারকে নিয়ে প্রস্তুতি কমিটি গঠিত হয়। একই বছরেরই ২২-২৫ সেপ্টেম্বর মরক্কোর রাবাতে ২৫টি মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধানদের নিয়ে এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সম্মেলনে রাষ্ট্রের প্রতিনিধিগণের সিদ্ধান্তক্রমে ইসলামি সম্মেলন সংস্থা নামে এই প্রতিষ্ঠানটি আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৬৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ওআইসি প্রতিষ্ঠিত হয়।[] মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর পশ্চিম আফ্রিকা, মধ্য এশিয়া, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, এবং ভারতীয় উপমহাদেশের ৫৭টি ইসলামি রাষ্ট্র নিয়ে এই সংস্থা গঠিত।

নাম পরিবর্তন

সম্পাদনা

২০১১ সালের ২৮ জুন আস্তানা, কাজাখস্তানে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের কাউন্সিলে প্রতিষ্ঠানটির নাম ইসলামি সম্মেলন সংস্থা (আরবি: منظمة المؤتمر الإسلامي; ফরাসি: Organisation de la Conférence Islamique) পরিবর্তন করে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা করা হয়।[] এই সময়ে ওআইসির লোগোও পরিবর্তন করা হয়।

সদস্য রাষ্ট্রসমূহ

সম্পাদনা

ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার ৫৭টি সদস্য রাষ্ট্র রয়েছে, যার মধ্যে ৫৬টি জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র এবং ৪৯টি রাষ্ট্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ। পশ্চিম আফ্রিকাসহ বেশ কিছু দেশে যদিও অনেক মুসলিম জনসংখ্যা আছে; কিন্তু মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ নয় । উল্লেখযোগ্য মুসলিম জনসংখ্যা সহ কয়েকটি দেশ, যেমন- রাশিয়া এবং থাইল্যান্ড পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র হিসাবে রয়েছে। ২০১৩ সালের হিসাবে ওআইসি সদস্য দেশগুলোর সমষ্টিগত জনসংখ্যা ১.৮+ বিলিয়নের বেশি।

 
ওআইসি সদস্য রাষ্ট্র

আফ্রিকা

সম্পাদনা

এশিয়া

সম্পাদনা

দক্ষিণ আমেরিকা

সম্পাদনা

মহাপরিচালক

সম্পাদনা
ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার মহাপরিচালক[]
নং নাম দেশ কার্যকাল শুরু কার্যকাল শেষ
টুঙ্কু আবদুর রহমান   মালয়েশিয়া ১৯৭০ ১৯৭৪
হাসান আল-তৌহামি   মিশর ১৯৭৪ ১৯৭৫
আমাদো করিম গাই   সেনেগাল ১৯৭৫ ১৯৭৯
হাবিব চাট্টি   তিউনিসিয়া ১৯৭৯ ১৯৮৪
সৈয়দ শরিফুদ্দিন পীরজাদা   পাকিস্তান ১৯৮৪ ১৯৮৮
হামিদ অলগাবিদ   নাইজার ১৯৮৮ ১৯৯৬
[[আজেদ্দিন লারাকি]]   মরক্কো ১৯৯৬ ২০০০
আবদেলাহেদ বেলকেজিজ   মরক্কো ২০০০ ২০০৪
একমেলেদ্দিন ইহসানলু   তুরস্ক ২০০৪ ২০১৪
১০ আইয়াদ বিন আমিন মাদানি   সৌদি আরব ২০১৪ ২০১৬
১১ ইউসেফ আল-ওথাইমিন   সৌদি আরব ২০১৬ ২০২০
১২ হিসেইন ব্রাহীম তাহা   চাদ ২০২০ বর্তমান

ওআইসি সম্মেলন

সম্পাদনা

১৫ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে ইস্তাম্বুলে ওআইসির ১৩তম শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

নং তারিখ দেশ স্থান
১ম ২২–২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৬৯   মরক্কো রাবাত
২য়[] ২২–২৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৪   পাকিস্তান লাহোর
৩য়[] ২৫–২৯ জানুয়ারি ১৯৮১   সৌদি আরব মক্কাতায়েফ
৪র্থ ১৬–১৯ জানুয়ারি ১৯৮৪   মরক্কো কাসাব্লাংকা
৫ম[] ২৬–২৯ জানুয়ারি ১৯৮৭   কুয়েত কুয়েত সিটি
৬ষ্ঠ[] ৯–১১ ডিসেম্বর ১৯৯১   সেনেগাল ডাকার
৭ম ১৩–১৫ ডিসেম্বর ১৯৯৪   মরক্কো কাসাব্লাংকা
১ম বিশেষ ২৩–২৪ মার্চ ১৯৯৭   পাকিস্তান ইসলামাবাদ
৮ম ৯–১১ ডিসেম্বর ১৯৯৭   ইরান তেহরান
৯ম ১২–১৩ নভেম্বর ২০০০   কাতার দোহা
২য় বিশেষ[] ৪–৫ মার্চ ২০০৩   কাতার দোহা
১০ম ১৬–১৭ অক্টোবর ২০০৩   মালয়েশিয়া পুত্রজায়া
৩য় বিশেষ ৭–৮ ডিসেম্বর ২০০৫   সৌদি আরব মক্কা
১১তম[] ১৩–১৪ মার্চ ২০০৮   সেনেগাল ডাকার
৪র্থ বিশেষ[১০] ১৪–১৫ আগস্ট ২০১২   সৌদি আরব মক্কা
১২তম[১১] ৬–৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৩   মিশর কায়রো
৫ম বিশেষ[১২] ৬–৭ মার্চ ২০১৬   ইন্দোনেশিয়া জাকার্তা
১৩তম[১৩] ১৪–১৫ এপ্রিল ২০১৬   তুরস্ক ইস্তাম্বুল


তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. About OIC ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩০ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে. Oic-oci.org. Retrieved on 2014-11-07.
  2. OIC changes name, emblem ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৩ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে পাকিস্তান অবজার্ভার
  3. "Former Secretaries-General–OIC"। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৭ 
  4. "Second Islamic summit conference" (পিডিএফ)। Formun। ২৬ জুন ২০১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ এপ্রিল ২০১৩ 
  5. "Mecca Declaration"। JANG। ২৬ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মার্চ ২০১৩ 
  6. "Resolution of the Fifth Islamic Summit Conference"। IRCICA। ২৬ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ এপ্রিল ২০১৩ 
  7. "Dakar Declaration" (পিডিএফ)। IFRC। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  8. Darwish, Adel (১ এপ্রিল ২০০৩)। "OIC meet in Doha: mudslinging dominated the OIC conference in Qatar"। সংগ্রহের তারিখ ১ এপ্রিল ২০১৩ 
  9. Shah, S. Mudassir Ali (১২ মার্চ ২০০৮)। "Karzai flies to Senegal for 11th OIC summit"Pajhwok Afghan News। Kabul। সংগ্রহের তারিখ ১ এপ্রিল ২০১৩ 
  10. Knipp, Kersten (১৫ আগস্ট ২০১২)। "Islamic group hopes to limit Syrian conflict"Deutsche Welle। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১২ 
  11. Arrott, Elizabeth (৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩)। "Islamic Summit Leaders Urge Action on Mali, Syria"Voice of America। ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  12. Karensa, Edo (৬ মার্চ ২০১৬)। "OIC Extraordinary Summit on Palestine Kicks Off in Jakarta"The Jakarta Globe। ৭ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০১৬ 
  13. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১২ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৭