লজ্জা
লজ্জা (ইংরেজি: Shame) হল একটি নেতিবাচক, যন্ত্রণাদায়ক, সামাজিক আবেগ যা "...নিজ কর্মের সাথে নিজ মতাদর্শিক মানদণ্ডের তুলনার..."[১] ফলাফল হিসেবে উপলব্ধ হয়, কিন্তু এটি নিজের বর্তমান অবস্থার সঙ্গে সমাজের আদর্শ মানদণ্ডের তুলনা থেকেও সমানভাবে উদ্ভূত হতে পারে। এইভাবে, প্রবল ঐচ্ছিক সক্রিয়তা অথবা সহজাত আত্ম শ্রদ্ধা থেকে লজ্জার উৎপত্তি ঘটতে পারে, লাজুক ব্যক্তির সক্রিয়[২] কাজকর্ম করার প্রয়োজন পরে না, স্বাভাবিকভাবে অবস্থান করাই এর জন্য যথেষ্ট হয়। সামাজিকীকরণের মাধ্যমে তুলনা এবং আদর্শিক মানদণ্ড উভয়ই সক্রিয় হয়। যদিও একে একটি আবেগ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, লজ্জাকে বিবিধভাবে একটি মনস্তাত্ত্বিক প্রতিক্রিয়া, চেতনা অথবা মানসিক অবস্থা বা দশা বলেও মনে করা হয়।
কারণসমূহ
সম্পাদনা১)আত্ম-সচেতনতা: লজ্জা অনুধাবন করার জন্য আত্ম সচেতন হতে হয় এই জন্য যে অন্যরা নিয়ে চিন্তা করছে। মানুষ সবাই একটি মানদণ্ডের আওতায় থাকে। তাদেরকে বুঝতে হবে তারা যা করে তা কি সঠিক নাকি ভুল। উদাহরণস্বরূপ, কেউ যদি কোন অনুষ্ঠানে ক্যাজুয়াল ড্রেস পরে যায় তখন সে ভাবে সবাই তার দিকে হয়তো ভিন্নভাবে তাকাচ্ছে।
২) আত্ম-দ্বন্দ্ব:আত্ম-দ্বন্দ্ব থেকে লজ্জা এবং অপরাধ বোধের জন্ম হয়। দৈনন্দিন জীবনে অবশ্যই খারাপ কিছু ঘটতে পারে। এ্যাট্রিবিউশন থিওরি অনুযায়ী মানব জাতি প্রাকৃতিকভাবে সবসময় কার্যকারণনির্ভর ব্যাখ্যা খুঁজে বেড়ায়। ঐ অবস্থাকে মূল্যায়ন করার জন্য হয়তো কেউ তার স্ত্রী অথবা খারাপ আবহাওয়াকে দায়ী করতে পারে। কিন্তু যখন কেউ নিজেকে দোষারোপ করে, ঠিক তখনি সে লজ্জা এবং অপরাধ-বোধে ভুগে। উদাহরণস্বরূপ, কেউ যদি মোটা হয়ে যায় তাহলে ভুলভাবে সে নিজেকে দোষারোপ করে। প্রায়শই ভাবেনা এটা প্রাকৃতিক কারণেও হতে পারে।
৩) মানসম্মত : আমাদের মধ্যে এক ধরনের বিশ্বাস বোধ কাজ করে যে, আমাদের কাজ, চিন্তা-চেতনা এবং অনুভূতিগুলো যেন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য এবং মানসম্মত বলে প্রতীয়মান হয়। উদাহরণস্বরূপ, মৃত্যু-শোভা যাত্রায় হাস্য-কৌতুক করা, এমনকি লোকটি মারা যাওয়ায় কারও খুশি হওয়া সামাজিক রীতি বিরুদ্ধ কাজ বলে গণ্য হবে। ঐ মানসম্মত কাজগুলোকে অবজ্ঞা করার কারণেও কারও মধ্যে লজ্জাবোধ জাগ্রত হতে পারে।
৪) ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য: জনসাধারণের স্বার্থের দিক বিবেচনা করার বিষয়টাও অনেক সময় অধিক লজ্জার কারণ হতে পারে। অন্যদিকে, এমন ব্যক্তিও আমাদের মধ্যে আছেন যারা অন্যদেরকে দোষারোপ করতে পারেন, অথবা নিজেদেরকে দোষারোপ করা থেকে বিরত রাখতে পারেন।
৫) আত্মসম্মান বোধ: আত্মসম্মান বোধকে নিজের প্রতি ব্যক্তির দৃষ্টিভঙ্গি টা কেমন হওয়া উচিত তাকেই বোঝায়। যখন একজন ব্যক্তি নিজেকে দুর্বল মনে করে এবং যখন নেতিবাচক ঘটনাগুলির মুখোমুখি হয়, তখন সে তার নিজের খারাপ দিকটাকে দোষারোপ করে। অধিকন্তু, লজ্জার পুনরাবৃত্তিও কারও আত্মসম্মান বোধকে খাটো করতে পারে ।
লক্ষণ
সম্পাদনাআরো দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Lewis, Michael. Shame: the exposed self. New York: Free Press;, 1992. 10. Print,
- ↑ "ক্যাম্ব্রিজ ডিকশোনারি"। ৫ মার্চ ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ এপ্রিল ২০১৬।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- Brene Brown Listening to Shame, TED Talk, March 2012 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১ মার্চ ২০১৪ তারিখে
- Sample chapter from Phil Hutchinson's book Shame and Philosophy
- Understanding Shame and Humiliation in Torture
- US Forces Make Iraqis Strip and Walk Naked in Public
- Shame
- Humiliation is Simply Wrong (USA Today Editorial/Opinion)
- Hiding from Humanity: Disgust, Shame, and the Law
- Shame and Psychotherapy
- Shame and Group Psychotherapy
- Sexual Guilt and Shame
- Social usage of shame in historical times