পিটার উইলি
পিটার উইলি (ইংরেজি: Peter Willey; জন্ম: ৬ ডিসেম্বর, ১৯৪৯) কাউন্টি ডারহামের সেজফিল্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা ও সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার এবং আম্পায়ার।[১] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৬ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর কাউন্টি ক্রিকেটে নর্দাম্পটনশায়ার ও লিচেস্টারশায়ার এবং দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ইস্টার্ন প্রভিন্স দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন ‘উইল’ ডাকনামে পরিচিত পিটার উইলি। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ ব্রেক বোলিংয়ে সবিশেষ দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | পিটার উইলি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | সেজফিল্ড, কাউন্টি ডারহাম, ইংল্যান্ড | ৬ ডিসেম্বর ১৯৪৯|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | উইল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উচ্চতা | ৬ ফুট ১ ইঞ্চি (১.৮৫ মিটার) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি অফ ব্রেক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৪৬৮) | ২২ জুলাই ১৯৭৬ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২৯ জুলাই ১৯৮৬ বনাম নিউজিল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ৩৯) | ২ জুন ১৯৭৭ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ ওডিআই | ৩১ মার্চ ১৯৮৬ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৬৬–১৯৮৩ | নর্দাম্পটনশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৮২–১৯৮৫ | ইস্টার্ন প্রভিন্স | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৮৪–১৯৯১ | লিচেস্টারশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আম্পায়ারিং তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট আম্পায়ার | ২৫ (১৯৯৬–২০০৩) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই আম্পায়ার | ৩৪ (১৯৯৬–২০০৩) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
এফসি আম্পায়ার | ২৮৩ (১৯৯২–২০১৫) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
এলএ আম্পায়ার | ২৯৮ (১৯৯৩–২০১৫) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৮ এপ্রিল ২০১৯ |
কাউন্টি ক্রিকেট
সম্পাদনাকাউন্টি ডারহামের সীহাম সেকেন্ডারি স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন ছয় ফুট এক ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী পিটার উইলি। কঠোর পরিশ্রমী ও ভীতিহীন গড়নের অধিকারী পিটার উইলি উত্তর-পূর্ব ইংল্যান্ড থেকে এসেছেন।
১৯৬৬ সালে ১৬ বছর বয়সে ডানহাতি ব্যাটসম্যান ও অফ ব্রেক বোলার হিসেবে নর্দাম্পটনশায়ারের পক্ষে কাউন্টি ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। ১৯৮৪ সালে লিচেস্টারশায়ারে চলে যান। ১৯৮৭ সালে লিচেস্টারশায়ার দলের অধিনায়কত্ব করেন। ১৯৯১ সাল পর্যন্ত খেলোয়াড়ী জীবন চালিয়ে যান। এরপর এক মৌসুম নর্দাম্বারল্যান্ডের পক্ষে মাইনর কাউন্টিজ ক্রিকেটে অংশ নেন।
কাউন্টি ক্রিকেটে তার দৃঢ়চেতা মনোভাবের কারণে ১৯৭৬ সালে হেডিংলিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয় পিটার উইলি’র।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
সম্পাদনাসত্তরের দশক থেকে শুরু করে আশির দশকের সূচনাকাল পর্যন্ত বিশ্ব ক্রিকেটে আধিপত্যবাদী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলার জন্য পিটার উইলিকে ইংল্যান্ডের টেস্ট দলের সর্বদাই খেলতে দেখা যেতো। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে অংশগ্রহণকৃত ২৫ টেস্টের মধ্যে ১৫টি খেলেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। একইভাবে অংশগ্রহণকৃত ২৬টি ওডিআইয়ের মধ্যে একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলেছেন ১৩টি ওডিআইয়ে। বাদ-বাকী দুইটি ওডিআই ও নয় টেস্ট খেলেছেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। অন্য দুই টেস্ট খেলেছেন ভারত ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চল্লিশোর্ধ্ব গড়ে। নিজস্ব ১৯তম টেস্ট পর্যন্ত ইংল্যান্ড দলের জয়ের জন্যে তাঁকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল। ১৯৮১ সালে বোথামের খেলায় তিনি টেস্ট জয় দেখেছিলেন।
২১ জুলাই, ১৯৭৬ তারিখে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে পিটার উইলি’র। এর এক বছর পর ম্যানচেস্টারে ২ জুন, ১৯৭৭ তারিখে ওডিআই অভিষেক হয় তাঁর। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুইটি শতরানের ইনিংস খেলেছেন। তবে, তাঁর টেস্ট ব্যাটিং গড় ২৭ রানের নিচে ছিল।[১]
১৪ ডিসেম্বর, ১৯৭৯ তারিখে ওয়াকার পার্থ টেস্টে অস্ট্রেলিয়া ১৬ রানে এগিয়ে থাকে। প্রথম ইনিংসের ন্যায় দ্বিতীয় ইনিংসেও গ্রাহাম ডিলি পুনরায় নতুন বল নিয়ে আক্রমণ শানান। ডিলি ডেনিস লিলিকে গালি অঞ্চলে পিটার উইলি’র কটে পরিণত করে একমাত্র উইকেট পান। স্কোরকার্ডে তখন 'লিলি ক উইলি ব ডিলি ১৯' দেখানো হয় যা বেশ স্মরণীয় বিষয় ছিল।[২][৩]
খেলার ধরন
সম্পাদনাউন্মুক্ত ভঙ্গীমায় ব্যাট হাতে দাঁড়াতেন। এ অবস্থায় ব্যাটসম্যান বোলারের দিকে নজর রাখেন। নিজের কাঁধ বোলারের দিকে রাখা হয়।[১] ফাস্ট বোলারদের কাছ থেকেই অধিকাংশ রান আদায় করে নিতেন। ওয়েস্টে ইন্ডিজের অবিস্মরণীয় পেস বোলারদের বিপক্ষেই নিজেকে মেলে ধরেছেন অধিক ও নিয়মিত খেলেছেন। সে তুলনায় ‘অধিক ভদ্র’ নামে পরিচিত দলগুলোর বিপক্ষে তাকে মাঠের বাইরে রাখা হতো।[১][৪]
ভীতিহীন না হলেও ব্যাটিংয়ে তেমন ভালো করেননি। এমনকি বোলিংও তেমন দর্শনীয় ছিল না যা তাকে আদর্শ অল-রাউন্ডার হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে। তাসত্ত্বেও প্রশ্নাতীতভাবে সাহসী পদক্ষেপে দুইটি টেস্ট শতকের সন্ধান পেয়েছেন। উভয় ক্ষেত্রেই প্রতিপক্ষ ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তখন ইংরেজ দলের অন্যান্য ব্যাটসম্যান পেস আক্রমণে জবুথবু অবস্থায় নিপতিত হয়েছেন।
দলে আসা-যাওয়ার পালায় সর্বদাই নিজেকে ব্যতিব্যস্ত রেখেছেন। ১৯৮২ সালে প্রথমবারের মতো নিষিদ্ধঘোষিত দক্ষিণ আফ্রিকায় যাওয়া বিদ্রোহী ইংরেজ দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। ফলশ্রুতিতে তিন বছরের জন্যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়েছিল।
আম্পায়ারিত্বে অংশগ্রহণ
সম্পাদনাখেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর গ্রহণের পর টেস্ট ক্রিকেটে আম্পায়ারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন পিটার উইলি।[৫] ১৯৯৩ সালে প্রথম-শ্রেণীর আম্পায়ার হিসেবে মনোনীত হন। এর তিন বছর পর আন্তর্জাতিক আম্পায়ার হিসেবে খেলা পরিচালনা করার সুযোগ পান। কাকতালীয়ভাবে উভয় দলের বিপক্ষেই প্রথম ও সর্বশেষ টেস্ট খেলেছিলেন। ১৯ থেকে ২৩ এপ্রিল, ১৯৯৬ তারিখে ব্রিজটাউনে অনুষ্ঠিত ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার খেলার মাধ্যমে আম্পায়ার হিসেবে প্রথমবারের মতো খেলা পরিচালনায় অগ্রসর হন। তবে, ২০০১ সালে আইসিসি আম্পায়ারদের সেরা তালিকা প্রবর্তনের পর পারিবারিক কারণে দেখিয়ে এতে যোগদানে অস্বীকৃতিজ্ঞাপন করেন।[৬]
৬৫ বছর বয়সে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডে টেস্ট খেলায় আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করেন। তরুণ আম্পায়ারদের সুযোগ দিতে এ বয়সে বাধ্যতামূলকভাবে অবসর নিতে হয় তাকে।[৭] উইলি ও নর্দাম্পটনশায়ারের দলীয় সঙ্গী জর্জ শার্প এ সিদ্ধান্তের বিপক্ষে অবস্থানে গ্রহণ করে চাকরি ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ আনয়ণ করলেও ইসিবি’র স্বপক্ষেই চলে যায়।[৮]
উল্লেখযোগ্য ঘটনা
সম্পাদনাজনশ্রুতি রয়েছে যে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ডের মধ্যে টেস্ট খেলা চলাকালে মাইকেল হোল্ডিং উইলির বিপক্ষে বোলিং করেন যা বেতার ধারাভাষ্যকার ব্রায়ান জনস্টন উল্লেখ করেছিলেন। তবে, উইজডেনে মন্তব্য করা হয় যে, জনস্টন কিংবা অন্য কারও বক্তব্যে এ ঘটনার কোন তথ্য তাদের জানা নেই।[৯] জনস্টনের সহযোগী ধারাভাষ্যকার হেনরি ব্লোফেল্ডের অভিমত, এ ঘটনাটি ১৯৭৬ সালে ওভালে সংঘটিত হয়েছিল।[১০] এ গল্পটি বিকৃতভাবে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে যে, উইলি হোল্ডিংকে বোলিং করেছিলেন। তবে, ঐ খেলায় উইলি কোন বোলিংই করেননি।
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনাব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত পিটার উইলি দুই সন্তানের জনক। তন্মধ্যে ডেভিড উইলি ইয়র্কশায়ার ও ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, তার এক নাতি রয়েছে তার।[৬][৮]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 187। আইএসবিএন 1-869833-21-X।
- ↑ Cricket Archive – match scorecard. Retrieved on 5 September 2009.
- ↑ ইউটিউবে Cricket's Greatest Wonders & Blunders
- ↑ https://www.theguardian.com/sport/2009/feb/03/cricket-england-west-indies-2009-cricket[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "International cricketers turned umpires"। International Cricket Council। সংগ্রহের তারিখ ৭ এপ্রিল ২০১৮।
- ↑ ক খ https://www.telegraph.co.uk/sport/cricket/international/3019922/Willey-refuses-to-join-elite-umpire.html
- ↑ https://www.sportskeeda.com/cricket/umpire-peter-willey-challenges-dismissal-grounds-age-discrimination
- ↑ ক খ http://www.espncricinfo.com/county-cricket-2015/content/story/849331.html
- ↑ Wisden archive
- ↑ Test Match Special The comment is also attributed to Richie Benaud in a Television commentary in 1980
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে পিটার উইলি (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে পিটার উইলি (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)