জীব
জীববিজ্ঞানের ভাষায় জ্ঞাত মহাবিশ্বের যেসমস্ত সত্তা জীবনের বৈশিষ্ট্যাবলি ধারণ ও প্রদর্শন করে, তাদের জীব (ইংরেজি: Organism বা Life form) বলে।
পৃথিবীতে জীবন সময়গত পরিসীমা: Late Hadean - Recent | |
---|---|
These Escherichia coli cells provide an example of a prokaryotic microorganism | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
শ্রেণীবিহীন: | Life on Earth (Gaeabionta) |
Domains and Kingdoms | |
জীবদেরকে শ্রেণীকরণবিজ্ঞানের মাধ্যমে বিভিন্ন দলে ভাগ করা হয়েছে যাদের মধ্যে আছে বহুকোষীয় প্রাণী, উদ্ভিদ ও ছত্রাক শ্রেণীর জীব এবং এককোষীয় অণুজীব যেমন প্রোটিস্ট, ব্যাকটেরিয়া এবং আর্কিয়া শ্রেণীর জীব।[১] সব ধরনের জীব প্রজনন, বৃদ্ধি ও বিকাশ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং উদ্দীপনায় সাড়া দিতে সক্ষম। বহুকোষীয় জীবগুলির দেহ বিকাশলাভের সময় এগুলির কোষগুলির পৃথকীকরণ ঘটে এবং বিশেষ বিশেষ কাজের জন্য দেহকলা ও অঙ্গের উদ্ভব ঘটে।
একটি জীব হয় প্রাককেন্দ্রিক বা সুকেন্দ্রিক। প্রাককেন্দ্রিক জীবগুলিকে দুইটি অধিরাজ্যে (ডোমেইন) ভাগ করা হয়েছে - ব্যাকটেরিয়া ও আর্কিয়া। অন্যদিকে সুকেন্দ্রিক জীবগুলির কোষগুলির ভেতরে ঝিল্লিতে আবৃত একটি কোষকেন্দ্র বা নিউক্লিয়াস থাকে এবং একই সাথে ঝিল্লি দ্বারা আবৃত কোষীয় অঙ্গাণু নামের বিভিন্ন প্রকোষ্ঠ থাকে (যেমন প্রাণীকোষের মাইটোকন্ড্রিয়া এবং উদ্ভিদকোষের প্লাস্টিড)।[২] ছত্রাক, প্রাণী ও উদ্ভিদ হলো সুকেন্দ্রিক জীবসমূহের তিনটি রাজ্যের উদাহরণ।
বিভিন্ন প্রাক্কলন অনুযায়ী পৃথিবীতে বর্তমানে জীব প্রজাতির সংখ্যা ২০ লক্ষ থেকে ১ লক্ষ কোটি পর্যন্ত হতে পারে।[৩] এদের মধ্যে প্রায় ১৭ লক্ষ প্রজাতির জীব সম্পর্কে তথ্য নথিভুক্ত করা হয়েছে।[৪] পৃথিবীর ইতিহাসে এ পর্যন্ত ৫০০ কোটির বেশি প্রজাতির জীবের আবির্ভাব হয়েছে এবং এদের শতকরা ৯৯ ভাগই[৫] বিলুপ্ত হয়ে গেছে বলে ধারণা করা হয়।[৬][৭]
২০১৬ খ্রিস্টাব্দে বর্তমান বিশ্বে বিরাজমান সমস্ত জীবের সর্বশেষ সার্বজনীন অভিন্ন পূর্বপুরুষ জীব-এর ৩৫৫টি বংশাণুর একটি সংকলন চিহ্নিত করা হয়।[৮][৯]
জীবের বৈশিষ্ট্য
সম্পাদনাসমস্ত জীবের নির্দিষ্ট আকার ও আয়তন থাকে এবং জীবদেহ একটি বা অনেকগুলি কোষ নিয়ে গঠিত হয়। জীবকোষে প্রোটোপ্লাজম থাকে। জীবদেহে শ্বসন, রেচনক্রিয়া, পুষ্টি, বৃদ্ধি, চলন ও গমন হয়। জীবের জনন হয়, উত্তেজনায় সাড়া দেয় এবং নির্দিষ্ট জীবনচক্র থাকে। জীবের বিপাকক্রিয়া, পরিব্যক্তি, জন্ম ও মৃত্যু ঘটে।[১০]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Hine, RS. (২০০৮)। A dictionary of biology (6th সংস্করণ)। Oxford: Oxford University Press। পৃষ্ঠা 461। আইএসবিএন 978-0-19-920462-5।
- ↑ Cavalier-Smith T. (১৯৮৭)। "The origin of eukaryotic and archaebacterial cells"। Annals of the New York Academy of Sciences। 503 (1): 17–54। এসটুসিআইডি 38405158। ডিওআই:10.1111/j.1749-6632.1987.tb40596.x। পিএমআইডি 3113314। বিবকোড:1987NYASA.503...17C।
- ↑ Brendan B. Larsen; Elizabeth C. Miller; Matthew K. Rhodes; John J. Wiens (সেপ্টেম্বর ২০১৭)। "Inordinate Fondness Multiplied and Distributed:The Number of Species on Earth and the New Pie of Life" (পিডিএফ)। The Quarterly Review of Biology। 92 (3): 230। সংগ্রহের তারিখ ১১ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ Anderson, Alyssa M. (২০১৮)। "Describing the Undiscovered"। Chironomus: Journal of Chironomidae Research (31): 2–3। ডিওআই:10.5324/cjcr.v0i31.2887 ।
- ↑ Kunin, W.E.; Gaston, Kevin, সম্পাদকগণ (১৯৯৬)। The Biology of Rarity: Causes and consequences of rare – common differences। আইএসবিএন 978-0-412-63380-5। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০১৫।
- ↑ Stearns, Beverly Peterson; Stearns, S.C.; Stearns, Stephen C. (২০০০)। Watching, from the Edge of Extinction। Yale University Press। পৃষ্ঠা preface x। আইএসবিএন 978-0-300-08469-6। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মে ২০১৭।
- ↑ Novacek, Michael J. (৮ নভেম্বর ২০১৪)। "Prehistory's Brilliant Future"। New York Times। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০১৪।
- ↑ Weiss, Madeline C.; Sousa, Filipa L.; Mrnjavac, Natalia; Neukirchen, Sinje; Roettger, Mayo; Nelson-Sathi, Shijulal; Martin, William F. (২০১৬)। "The physiology and habitat of the last universal common ancestor"। Nature Microbiology। 1 (9): 16116। এসটুসিআইডি 2997255। ডিওআই:10.1038/nmicrobiol.2016.116। পিএমআইডি 27562259।
- ↑ Wade, Nicholas (২৫ জুলাই ২০১৬)। "Meet Luca, the Ancestor of All Living Things"। New York Times। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০১৬।
- ↑ মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান: তুষারকান্তি ষন্নিগ্রহী, শ্রীভূমি পাবলিশিং কোম্পানি, কলকাতা,১৯৮৬, পৃঃ ৭