কলকাতা পৌরসংস্থা

কলকাতা শহরের স্থানীয় স্বায়ত্ত্বশাসন সংস্থা
(Kolkata Municipal Corporation থেকে পুনর্নির্দেশিত)

কলকাতা পৌরসংস্থা (ইংরেজি: Kolkata Municipal Corporation), পূর্বনাম কলিকাতা পৌরসংস্থা (ইংরেজি: Calcutta Municipal Corporation), পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা শহরের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন সংস্থা। এটি একটি বিধিবদ্ধ সরকারি সংস্থা। কলকাতা শহরের ২০৬.০৮ বর্গ কিলোমিটার (৭৯.৫৭ বর্গ মাইল) অঞ্চলের পুর পরিষেবা দেওয়া ও নগরাঞ্চলের উন্নয়ন কলকাতা পৌরসংস্থার প্রাথমিক দায়িত্ব। পুরসভার নেতৃত্ব দেন মহানাগরিক (মেয়র)।

কলকাতা পৌরসংস্থা
কলকাতা পৌরসংস্থার লোগো
কলকাতা পৌরসংস্থার লোগো
ধরন
ধরন
ইতিহাস
শুরু১৮৭৬; ১৪৮ বছর আগে (1876)
নেতৃত্ব
মেয়র
ডেপুটি মেয়র
অতীন ঘোষ
গঠন
আসন১৪৪
রাজনৈতিক দল
শাসক (১৩৭)
  •   তৃণমূল: ১৩৪

বিরোধী (৭)

নির্বাচন
সর্বশেষ নির্বাচন
১৯ ডিসেম্বর, ২০২১
পরবর্তী নির্বাচন
২০২৬
নীতিবাক্য
পুরশ্রী বিবর্ধন
অর্থ: "শহরের উন্নয়ন"
সভাস্থল
পৌরসংস্থা ভবন
ওয়েবসাইট
www.kmcgov.in

ভারতীয় জাতীয়তাবাদী নেতা সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ১৯২২ সালে গণতান্ত্রিক সায়ত্ত্বশাসন সংস্থা হিসেবে কলকাতা পৌরসংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৫১ ও ১৯৫৬ সালে দুই বার কর্পোরেশন আইন সংশোধন করা হয়েছিল। বর্তমান পৌরসংস্থাটি ১৯৮০ সালের সংশোধিত পৌর আইনের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। ফিরহাদ হাকিম কলকাতা পৌরসংস্থার বর্তমান মহানাগরিক।

প্রতীক

সম্পাদনা

‘কর্পোরেশন অব ক্যালকাটা’-র প্রথম প্রতীক জনসমক্ষে আসে ১৮৯৬ সালে। এই প্রতীকে দেখা যায় সাপ ঠোঁটে দুই পাখি কাঁধে রাজমুকুট বহন করছে। স্বাধীনতার পর ১৯৬১ সালে এই ব্রিটিশ প্রবর্তিত প্রতীকটি পরিবর্তিত করে ফেলা হয়। এই সময়ই প্রতিষ্ঠিত নতুন ‘ক্যালকাটা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন’।

নতুন প্রতীকের উপরে ও নিচে প্রাচীন বাংলা হরফে খোদিত হয় যথাক্রমে ‘পুরশ্রী বিবর্ধন’ ও ‘কলকাতা পৌরসংস্থা’ কথাদুটি। সর্বনিম্নে তিনটি তরঙ্গরেখার উপর একটি ময়ূরপঙ্খী নৌকা প্রাচীন ও আধুনিক দক্ষিণ-পশ্চিমবঙ্গের নৌবাণিজ্যের সুমহান ঐতিহ্যের প্রতীক হিসাবে খোদিত হয়। প্রতীকের চারকোন এইরূপ - উপরে ডানদিকে শিল্প ও প্রগতির প্রতীক আটটি দণ্ডযুক্ত চাকা; উপরে বামদিকে সৌন্দর্য ও সংস্কৃতির প্রতীক আটটি পাপড়িযুক্ত পদ্ম; নিচে ডানদিকে উচ্চ চিন্তা ও বিদ্যুৎ শক্তির প্রতীক দুটি বজ্র এবং নিচে বামদিকে সর্বমঙ্গলের প্রতীক স্বস্তিক মুদ্রিত। দুধারের প্যানেলে খাদ্যসরবরাহের প্রতীক ধানের শিষ ও তার নিচে মঙ্গলচিহ্নরূপে দুটি মাছ অঙ্কিত। কেন্দ্রে অগ্নিধারী হস্ত দুর্নীতিমুক্ত শাসনব্যবস্থা ও ব্যাধি ও অমঙ্গল দূরীকরণের প্রতীক। []

ইতিহাস

সম্পাদনা
মহানাগরিকগণের তালিকা[]
  • দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, (১৬/০৪/১৯২৪-১৭/০৭/১৯২৫)
  • দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত,(১৭/০৭/১৯২৫-০২/০৪/১৯২৮)
  • বিজয়কুমার বসু,(০২/০৪/১৯২৮-১০/০৪/১৯২৯)
  • দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত,(১০/০৪/১৯২৯-২২/০৮/১৯৩০)
  • সুভাষচন্দ্র বসু,(২২/০৮/১৯৩০-১৫/০৪/১৯৩১)
  • ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়,(১৫/০৪/১৯৩১-০৯/০৪/১৯৩৩)
  • সন্তোষকুমার বসু,(০৯/০৪/১৯৩৩-০৪/০৭/১৯৩৪)
  • নলিনীরঞ্জন সরকার,(০৪/০৭/১৯৩৪-৩০/০৪/১৯৩৫)
  • আবুল কাশেম ফজলুল হক,(৩০/০৪/১৯৩৫-২৯/০৪/১৯৩৬)
  • স্যার হরিশঙ্কর পাল,(২৯/০৪/১৯৩৬-২৮/০৪/১৯৩৭)
  • সনৎকুমার রায়চৌধুরি,(২৮/০৪/১৯৩৭-২৯/০৪/১৯৩৮)
  • এ কে এম জাকারিয়া,(২৯/০৪/১৯৩৮-২৬/০৪/১৯৩৯)
  • নিশীথচন্দ্র সেন,(২৬/০৪/১৯৩৯-২৪/০৪/১৯৪০)
  • আবদুর রহমান সিদ্দিকি,(২৪/০৪/১৯৪০-২৮/০৪/১৯৪১)
  • ফণীন্দ্রনাথ ব্রহ্ম,(২৮/০৪/১৯৪১-২৯/০৪/১৯৪২)
  • হেমচন্দ্র নস্কর,(২৯/০৪/১৯৪২-৩০/০৪/১৯৪৩)
  • সাঈদ বদরুদ্দোজা,(৩০/০৪/১৯৪৩-২৬/০৪/১৯৪৪)
  • আনন্দিলাল পোদ্দার,(২৬/০৪/১৯৪৪-২৭/০৪/১৯৪৫)
  • দেবেন্দ্রনাথ মুখার্জি,(২৭/০৪/১৯৪৫-২৯/০৪/১৯৪৬)
  • সাঈদ মহম্মদ উসমান,(২৯/০৪/১৯৪৬-২৯/০৪/১৯৪৭)
  • সুধীরচন্দ্র রায়চৌধুরি,(২৯/০৪/১৯৪৭-০১/০৫/১৯৫২)
  • নির্মলচন্দ্র চন্দ্র,(০১/০৫/১৯৫২-০৬/০৩/১৯৫৩)
  • নরেশনাথ মুখার্জি,(০৬/০৩/১৯৫৩-২৫/০৪/১৯৫৫)
  • সতীশচন্দ্র ঘোষ,(২৫/০৪/১৯৫৫-২৯/০৪/১৯৫৭)
  • ডাঃ ত্রিগুণা সেন,(২৯/০৪/১৯৫৭-০৮/০৪/১৯৫৯)
  • বিজয়কুমার ব্যানার্জি,(০৮/০৪/১৯৫৯-০৮/০৬/১৯৬০)
  • কেশবচন্দ্র বসু,(০৮/০৬/১৯৬০-২৮/০৪/১৯৬১)
  • রাজেন্দ্রনাথ মজুমদার,(২৮/০৪/১৯৬১-০৮/০৪/১৯৬৩)
  • চিত্তরঞ্জন চ্যাটার্জি,(০৮/০৪/১৯৬৩-২৬/০৪/১৯৬৫)
  • ডাঃ প্রীতিকুমার রায়চৌধুরি ,(২৬/০৪/১৯৬৫-২৪/০৪/১৯৬৭)
  • গোবিন্দচন্দ্র দে,(২৪/০৪/১৯৬৭-১৩/০৬/১৯৬৯)
  • প্রশান্তকুমার শূর ,(১৩/০৬/১৯৬৯-২৩/০৪/১৯৭১)
  • শ্যামসুন্দর গুপ্ত ,(২৩/০৪/১৯৭১-৩০/০৭/১৯৮৫)
  • কমলকুমার বসু ,(৩০/০৭/১৯৮৫-৩০/০৭/১৯৯০)
  • প্রশান্ত চ্যাটার্জি ,(৩০/০৭/১৯৯০-১২/০৭/২০০০)
  • সুব্রত মুখার্জি, (১২/০৭/২০০০-০৫/০৭/২০০৫)
  • বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, (০৫/০৭/২০০৫-১৬/০৬/২০১০)
  • শোভন চট্টোপাধ্যায়,(১৬/০৬/২০১০-২০/১১/২০১৮)
  • ফিরহাদ হাকিম ,(৩/১২/২০১৮-বর্তমান)

কলকাতায় ইংরেজ বসতি স্থাপিত হয় ১৬৯০ সালে। এরপর থেকেই এই অঞ্চলে দ্রুত নগরায়ণ শুরু হয়। তবে প্রথমদিকে কলকাতায় কোনও পৌর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। বিচারকাজ সম্পাদনের উদ্দেশ্যে ১৭২৬ সালে প্রথম রাজকীয় সনদবলে একটি ‘মেয়রস কোর্ট’ বা মেয়রের আদালত চালু হয়। এই সংস্থা কিছু পৌর পরিষেবার দায়িত্বও গ্রহণ করেছিল। ১২ আগস্ট ১৭৬৫ তারিখে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার দেওয়ানি লাভ করলে, কিছু পৌর প্রশাসনিক সংস্কার সাধনের ক্ষমতাও লাভ করে। ১৭৭৩ সালে কলকাতাকে ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী ঘোষণা করা হলে একটি শক্তিশালী পৌরসংগঠনের দাবি জোরালো হয়। সেই সময় ছোটখাট একটি পরিষেবা ব্যবস্থা ও একটি ক্ষুদ্রাকার পুলিশ ব্যবস্থা স্থাপিত হয়। ১৭৯৪ সালে পৌর প্রশাসনের দায়িত্ব কালেক্টরের হাত থেকে ‘জাস্টিস অফ দ্য পিস ফর দ্য টাউন’-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়।

উনিশ শতকে কলকাতা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় নগরে পরিণত হলে বাংলার গভর্নর-জেনারেল নানাভাবে শহরের পৌরকাঠামোর উন্নতিসাধনের চেষ্টা করতে থাকেন। ১৮৪৭ সালে করদাতাদের দ্বারা নির্বাচিত ৭জন বেতনভুক কর্মচারীর অধীনে একটি পৌরবোর্ড স্থাপিত হয়। এই বোর্ড শহরের উন্নয়নের জন্য সম্পত্তি ক্রয় ও রক্ষণ, রাস্তা-সংস্কার এবং নিকাশি-সংস্কারের দায়িত্ব পায়। ১৮৫২ সালে দুজন নির্বাচিত ও দুজন সরকার মনোনীত সদস্যযুক্ত নতুন একটি বোর্ড এই বোর্ডের স্থলাভিষিক্ত হয়। গৃহনির্মাণ, আলো, ঘোড়া ও গাড়ির উপর কর ধার্য হয়। ১৮৬৩ সালে আরেকটি নতুন বোর্ড স্থাপিত হয় যেটি তার নিজস্ব ভাইস-চেয়ারম্যান নির্বাচন করে ও একজন নিয়মিত স্বাস্থ্য আধিকারিক, ইঞ্জিনিয়ার, সার্ভেয়ার, ট্যাক্স কালেক্টর ও অ্যাসেসর নিয়োগ করে। এই সময়েই নিকাশি ও জলসরবরাহ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটে। ১৮৭৪ সালে নিউ মার্কেট ও ১৮৬৬ সালে মিউনিসিপ্যাল স্লটার হাউস স্থাপিত হয়। ফুটপাথ নির্মাণসহ, রাস্তাঘাটের উন্নতি ঘটে।

১৮৭৬ সালে ৭২ জন কমিশনার নিয়ে নতুন কর্পোরেশন স্থাপিত হয়। তাদের মধ্যে ৪৮ জন ছিলেন করদাতাদের দ্বারা নির্বাচিত ও ২৪ জন সরকার মনোনীত। এই সময় হাওড়াশিয়ালদহ স্টেশনদুটি হ্যারিসন রোড (বর্তমানে মহাত্মা গান্ধী রোড) দ্বারা যুক্ত হয়।

১৯২৩ সালে সুরেন্দ্রনাথ বাংলা সরকারের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন মন্ত্রী নিযুক্ত হলে তিনি আইন মোতাবেক কলকাতা কর্পোরেশনের গণতন্ত্রীকরণ করেন। সংস্থার দায়িত্ব বৃদ্ধি পায় ও সরকারের এর উপর হস্তক্ষেপের অধিকার খর্ব করা হয়। মানিকতলা, কাশীপুর, চিৎপুরগার্ডেনরিচ এবং নতুন বন্দর অঞ্চলের বিরাট অংশ কলকাতা কর্পোরেশনের এক্তিয়ারভুক্ত হয়। মহিলারা ভোটাধিকার অর্জন করেন। পরবর্তীকালে সুরেন্দ্রনাথের সম্মানে কর্পোরেশনের সম্মুখস্থ পথটি সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি রোড নামে চিহ্নিত করা হয়।

স্বাধীনতার পর ১৯৫১ ও ১৯৫৬ সালে কর্পোরেশন আইন সংশোধন করা হয়। ১৯৮০ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার শেষবার এই আইন সংশোধন করেন ও এই সংশোধনী কার্যকর হয় ১৯৮৪ সালে। ১৯৯২ সালে ভারতীয় সংবিধানের ৭৪তম সংশোধনী বলে পশ্চিমবঙ্গের আইনসভা সামাজিক ন্যায় ও আর্থিক উন্নয়নের স্বার্থে পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষমতা দান করে কলকাতা পৌরসংস্থাকে। ২০০১ সালে কলকাতা শহরের ইংরেজি নাম ‘ক্যালকাটা’ বদলে ‘কলকাতা’ করা হলে, পৌরসংস্থাও নাম পরিবর্তন করে ‘কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন’ নামে পরিচিত হয়। []

 

বর্তমান আইন অনুসারে কলকাতা পৌরসংস্থা, মেয়র-ইন-কাউন্সিল ও মেয়র বা মহানাগরিক – এই তিনটি অংশ কলকাতা পৌরপ্রশাসনের কর্তৃত্ব ভোগ করেন।

  • কর্পোরেশন – কর্পোরেশন একটি বিধানিক বা লেজিসলেটিভ সংস্থান। এর সদস্যগণ হলেন –

১৪৪ জন পারিষদ বা কাউন্সিলর, যাঁরা সর্বজনীন প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকার দ্বারা প্রতি পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হন।

কর্পোরেশনের সভা পরিচালনার জন্য কাউন্সিলদের মধ্যে থেকে একজন চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। তার ভূমিকা হয় আইনসভার স্পিকারের মতোই। পৌরসংস্থার প্রথম অধিবেশনে নির্বাচিত সদস্যরা তাদের মধ্যে থেকে একজনকে মহানাগরিক নির্বাচন করেন। মহানাগরিক উপমহানাগরিক বা ডেপুটি মেয়রকে নির্বাচিত করেন।

  • মেয়র-পারিষদ বা মেয়র-ইন-কাউন্সিল – নতুন আইন অনুসারে মেয়র-পারিষদের গঠন-কাঠামো সুস্পষ্ট আকারে বলা হয়েছে। এই কাউন্সিলে একজন মেয়র, ডেপুটি মেয়র ও অনধিক ১০ জন নির্বাচিত সদস্য। এই কাউন্সিল কর্পোরেশনের কাছে যৌথভাবে দায়িত্ববদ্ধ থাকে। মেয়র-পারিষদ সদস্যদের বেতন ও ক্ষমতা আইন দ্বারা স্থীরিকৃত হয়। এই কাউন্সিলের কাজ অনেকটা কেন্দ্রীয় বা রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্যদের মতোই।
  • মহানাগরিক – কর্পোরেশনের প্রথম অধিবেশনে নির্বাচিত সদস্যদের মধ্যে থেকে একজন পাঁচ বছরের জন্য মহানাগরিক বা মেয়র নির্বাচিত হন। তিনি মেয়র-পারিষদের সব সভা পৌরহিত্য করেন। এক মুখ্য রাজনৈতিক পরিচালক হিসাবে তিনি মেয়র-পারিষদের দপ্তর ও ক্ষমতা বণ্টন করে দেন। তারই নির্দেশে পৌর প্রশাসনের যাবতীয় কাজ সম্পাদিত হয়ে থাকে।

কলকাতা পৌরসংস্থার উত্তর ও উত্তর পূর্বে রয়েছে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা, দক্ষিণ, দক্ষিণ পশ্চিম ও দক্ষিণ পূর্বে রয়েছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা এবং উত্তর পশ্চিম দিকে রয়েছে হাওড়া জেলা। পৌরসংস্থার মোট জনঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ২৪ হাজার ৩০৬ জন।

 

বিস্তার

সম্পাদনা

কলকাতা পৌরসংস্থা বর্তমানে ২০৬.০৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে প্রসস্থ।

প্রশাসনিক বিভাগ

সম্পাদনা

কলকাতা পৌরসংস্থাকে কাজের সুবিধার জন্য মোট ১৬টি বরোতে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি বরোয় রয়েছে কর্পোরেশন নির্ধারিত সংখ্যক ওয়ার্ড। কলকাতায় মোট ১৪৪টি ওয়ার্ড রয়েছে। এই ওয়ার্ডগুলি কাউন্সিলরদের নির্বাচনী ক্ষেত্র রূপে বিবেচিত হয়। ৭৪তম সংবিধান সংশোধনী আইন মোতাবেক পৌরসংস্থা ওয়ার্ড কমিটি গঠনেও সক্ষম।

জল সরবরাহ

সম্পাদনা
জলের স্টেশন[]
নাম স্থান অবস্থা
ইন্দিরা গান্ধী জল শোধনাগার নবাবগঞ্জ , পালতা , বারাকপুর
গার্ডেন রিচ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট সন্তোষপুর , গার্ডেন রিচ
জয় হিন্দ জল প্রকাশ ধাপা
জোড়াবাগান ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট জোড়াবাগান
ওয়াটগঞ্জ পানি শোধনাগার ওয়াটগঞ্জ
গার্ডেন রিচ ওয়াটার ওয়ার্ক গার্ডেন রিচ নির্মীয়মান

কার্যাবলি

সম্পাদনা

কলকাতা পৌরসংস্থা মূলত দুই ধরনের কাজ করে থাকে – বাধ্যতামূলক ও স্বেচ্ছাধীন।

জল সরবরাহ, পয়ঃপ্রণালী, কঠিন বর্জ্য নিষ্কাষণ, রাস্তা নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ, নগর-পরিকল্পনা, জমি ব্যবহারের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ, দূষণ রোধ, জঞ্জাল অপসারণ, সেতু, কার্লভার্ট, উড়ালপুল, সাবওয়ে ইত্যাদি তৈরি, রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা করা, রাস্তার নাম ও নম্বর দেওয়া, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধীকরণ, রোগ প্রতিরোধে টীকার ব্যবস্থা, পৌর বাজার, সৌধ ও কসাইখানা রক্ষণাবেক্ষণ করা পৌরসংস্থার বাধ্যতামূলক কাজ।

এছাড়াও স্বেচ্ছাধীন যে কাজগুলি পৌরসংস্থা ইচ্ছা করলে করতে পারে সেগুলি হল – শিক্ষার প্রসার, প্রাথমিক শিক্ষা ও খেলার মাঠ সংরক্ষণ, গ্রন্থাগার, সংগ্রহশালা ও চিত্রশালা নির্মাণ, কৃতি নাগরিকদের সম্মানদান, মেলা ও প্রদর্শনী আয়োজন, বিশ্রামাগার ও অনাথ আশ্রম তৈরি করা, পরিত্যক্ত ও অক্ষম ব্যক্তিদের পুনর্বাসন ইত্যাদি।

শ্মশান ঘাটসমূহ

সম্পাদনা
ঘাটসমূহ[]
নাম ঠিকানা ব্যুরো চুল্লী
নিমতলা মহাশ্মশান ২ পি, স্ট্র্যান্ড ব্যাংক রোড, কলকাতা -৭০০০০৬
কেওড়াতলা মহাশ্মশান ১১৩, টালিগঞ্জ রোড, কলকাতা -৭০০০২৬
গড়িয়া আদি মহাশ্মশান ১৩৮, বোরাল মেইন রোড, কলকাতা - ৭০০০৮৪ ১০
শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ মহাশ্মশান ৫ -চন্দ্র কুমার রায় লেন, কলকাতা - ৭০০০৩৬
সিরিটি শ্মশান বিএল সাহা রোড, কলকাতা - ৭০০০৪১ ১২
বীরজুনালা শ্মশান জেড -২০, লেনিন রোড, কলকাতা - ৭০০০৪৪ ১৫
কাশী মিত্র শ্মশানঘাট ১-স্ট্যান্ড ব্যাংক রোড, কলকাতা -৭০০০০৬

ঘাটের বর্তমান দাহ সংখ্যা জানতে পৌরসংস্থার ওয়েবসাইট রয়েছে : শ্মশান ঘাটের অবস্থা

সাক্ষরতার হার

সম্পাদনা

কলকাতা পৌরসংস্থার মোট সাক্ষরতার হার ৮৬.৩১%, যা পশ্চিমবঙ্গে দ্বিতীয়। পুরুষ সাক্ষরতার হার ও নারী সাক্ষরতার হার যথাক্রমে ৮৮.৩৪ ও ৮৪.০৬ শতাংশ।

 
কলকাতা পৌরসংস্থার ওয়ার্ড ভিত্তিক সাক্ষরতার হার

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "KMC Election Result 2021: জয়ী হয়েই তৃণমূলের পথে তিন নির্দল প্রার্থী, 'সবুজ-সঙ্কেত' ছিল আগেই?"। ২১ ডিসেম্বর ২০২১। ৫ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০২২ 
  2. http://www.kolkatamycity.com/about_kmc_emblem.asp
  3. কলকাতা পৌরসংস্থার ওয়েবসাইট, কলকাতা পৌরসংস্থার মহানাগরিকগণের তালিকা
  4. http://www.kolkatamycity.com/about_kmc.asp
  5. "Water Stations" 
  6. "Name of the Burning Ghat" 
  • কলকাতা পৌরসংস্থার সরকারি ওয়েবসাইট
  • ভারতীয় প্রশাসন, শিউলি সরকার, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুস্তক পর্ষৎ, কলকাতা, ২০০৫

পাদটীকা

সম্পাদনা


বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা