হিল্টন অ্যাকারম্যান

দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার
(Hylton Ackerman থেকে পুনর্নির্দেশিত)

হিল্টন মাইকেল অ্যাকারম্যান (ইংরেজি: Hylton Ackerman; জন্ম: ২৮ এপ্রিল, ১৯৪৭ - মৃত্যু: ২ সেপ্টেম্বর, ২০০৯) ট্রান্সভাল প্রদেশের স্প্রিংস এলাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা দক্ষিণ আফ্রিকান প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটার ছিলেন। ঘরোয়া দক্ষিণ আফ্রিকান প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ বামহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও ডানহাতি মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন হিল্টন অ্যাকারম্যান

হিল্টন অ্যাকারম্যান
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
হিল্টন মাইকেল অ্যাকারম্যান
জন্ম(১৯৪৭-০৪-২৮)২৮ এপ্রিল ১৯৪৭
স্প্রিংস, ট্রান্সভাল, দক্ষিণ আফ্রিকা
মৃত্যু২ সেপ্টেম্বর ২০০৯(2009-09-02) (বয়স ৬২)
কেপ টাউন, দক্ষিণ আফ্রিকা
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাউদ্বোধনী ব্যাটসম্যান
সম্পর্কএইচ. ডি. অ্যাকারম্যান (পুত্র)
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৬৩/৬৪–১৯৬৫/৬৬বর্ডার
১৯৬৬/৬৭–১৯৬৭/৬৮নর্থ ইস্টার্ন ট্রান্সভাল
১৯৬৭–১৯৭১নর্দান্টস
১৯৬৮/৬৯–১৯৬৯/৭০নাটাল
১৯৭০/৭১–১৯৮১/৮২ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ২৩৪ ৭৪
রানের সংখ্যা ১২,২১৯ ১,৯৭৫
ব্যাটিং গড় ৩২.৪৯ ৩১.৮৫
১০০/৫০ ২০/৬০ ২/১৩
সর্বোচ্চ রান ২০৮ ১২৭
বল করেছে ২,৪৭৭ ১৬২
উইকেট ৩২
বোলিং গড় ৪৩.৭৫ ২৪.৬০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৪/৬১ ৩/২৯
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১৯৯/– ৩০/–

শৈশবকাল

সম্পাদনা

ডেল কলেজ বয়েজ হাই স্কুলে অধ্যয়ন করেন। সেখানে তিনি ‘হেড বয়’ ছিলেন। আক্রমণাত্মক ধাঁচে বামহাতে ব্যাটিং উদ্বোধনে নামতেন হিল্টন অ্যাকারম্যান। ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে বর্ডার দলের সদস্যরূপে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১৬ বছর বয়সী ঐ তরুণ তখন বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। চৌদ্দ বছর আট মাস বয়সে দক্ষিণ আফ্রিকা বিদ্যালয়ের তৎকালীন সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

সম্পাদনা

প্রায় ২০ বছর প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় পদচারণ ছিল তার। এ সময়ে বারো হাজারেরও অধিক রান সংগ্রহ করেছিলেন। ১৬ বছর বয়সে বর্ডারের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। পরের বছর সফরকারী এমসিসি দলের বিপক্ষে নিজস্ব প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকান। এরফলে দ্বিতীয় বিদ্যালয় ছাত্র হিসেবে কোন আন্তর্জাতিক দলের বিপক্ষে এ বিরল কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন।

আঠারো বছর বয়সে সাউথের সদস্যরূপে নর্থের বিপক্ষে খেলার জন্যে মনোনীত হন। এ খেলাটি পরবর্তী মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে যাচাই-বাছাইয়ের অংশ ছিল। ৮৪ রান সংগ্রহ করেন তিনি।

১৯৬৭ থেকে ১৯৭১ সময়কালে নর্দাম্পটনশায়ারের সদস্যরূপে সফলতার সাথে চার মৌসুম খেলেন। তন্মধ্যে, তিন মৌসুমে সহস্রাধিক রান তুলেন। ১৯৭৭-৭৮ মৌসুমে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের কারি কাপের শিরোপা বিজয়ে নেতৃত্ব দেন। ১৯৮১-৮২ মৌসুম পর্যন্ত ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের পক্ষে খেলায় চালিয়ে যেতে থাকেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

সম্পাদনা

বহিঃবিশ্ব একাদশের সদস্যরূপে সুনীল গাভাস্কারের সাথে ব্যাটিং উদ্বোধনে নেমেছিলেন। অনুমোদনহীন প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরিসহ শেষ দুই টেস্টে অর্ধ-শতকের ইনিংস খেলেন। ঐ সফরে ৩৭.৪১ গড়ে রান তুলেন।

১৯৬৬-৬৭ মৌসুমে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিপক্ষে দুইবার খেলার সুযোগ পান। কিন্তু, শক্তিধর টেস্ট দলটিতে অংশগ্রহণের জন্যে তা যথেষ্ট ছিল না। ১৯৬৯-৭০ মৌসুমেও টেস্ট দলে ঠাঁই হয়নি তার। ১৯৭১-৭২ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া গমনের জন্যে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের সদস্য করা হয়। কিন্তু বর্ণবৈষম্যবাদের কারণে আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে দক্ষিণ আফ্রিকার উপর নিষেধাজ্ঞা প্রদানে করা হলে এ সফরটি বাতিল হয়ে যায়। এর পরিবর্তে বিকল্প সিরিজ আয়োজনের ব্যবস্থা করা হলে তিনি বিশ্ব একাদশের সদস্যরূপে খেলেন। ঐ সিরিজে ৪৬.১৪ গড়ে ৩২৩ রান তুলেন।

ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন। তার ছত্রচ্ছায়ায় কিশোর হাশিম আমলা’র ন্যায় বিখ্যাত ক্রিকেটারের উত্থান ঘটে। এরপর টেলিভিশনের ধারাভাষ্যকারের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[]

২০০০ সালে জিম্বাবুয়ে জাতীয় ক্রিকেট দলের কোচের জন্যে মনোনীত হন। তবে, দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেট বোর্ড তাকে এ দায়িত্ব নিতে মানা করে ও দক্ষিণ আফ্রিকা এ দল এবং অনূর্ধ্ব-১৯ দলের দায়িত্বভার প্রদান করে।

ব্যক্তিগত জীবন

সম্পাদনা

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন তিনি। তার সন্তান হিল্টন ডি. অ্যাকারম্যান ১৯৯৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের পক্ষে খেলেন ও ২০০৯ সালে লিচেস্টারশায়ার থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

২ সেপ্টেম্বর, ২০০৯ তারিখে ৬২ বছর বয়সে কেপটাউনে হিল্টন অ্যাকারম্যানের দেহাবসান ঘটে।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Telford Vice, "The Man with a Gleam in His Eye" Cricinfo, September 4, 2009
  2. "Hylton Ackerman dies aged 62"। cricinfo.com। ২০০৯-০৯-০২। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৯-০২ 

আরও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা