গাজা
গাজা বা গাজ্জা (আরবি: غَزَّة গ়্যজ়্জ়া বা গ্ব্যয্যা), যা গাজা শহর বা গাজা সিটি হিসাবেও পরিচিত, এটি গাজা উপত্যকায় অবস্থিত ফিলিস্তিনের একটি শহর, যার জনসংখ্যা ৫১৫,৫৫৬ জন, যা একে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বৃহত্তম শহরে পরিণত করেছে। খ্রিষ্টপূর্ব কমপক্ষে পঞ্চদশ শতাব্দী পূর্বে এখানে জনবসতি স্থাপিত হয়েছিল, গাজার পুরো ইতিহাস জুড়ে বিভিন্ন শাসক এবং সাম্রাজ্যের আধিপত্য রয়েছে। প্রাচীন মিশরীয়রা প্রায় ৩৫০ বছর ধরে এটি শাসন করার পরে ফিলিস্তিনিরা এটিকে তাদের পেন্টাপোলিসের একটি অংশ করেছিল।
গাজা | |
---|---|
এ শ্রেণীর পৌরসংস্থা | |
আরবী প্রতিলিপি | |
• আরবি | غزة |
• লাতিন | Ghazzah (official) Gaza City (unofficial) |
ফিলিস্তিনে গাজার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ৩১°৩১′ উত্তর ৩৪°২৭′ পূর্ব / ৩১.৫১৭° উত্তর ৩৪.৪৫০° পূর্ব | |
দেশ | ফিলিস্তিন |
গভর্নরেট | গাজা |
প্রতিষ্ঠা | খ্রিষ্ট্রপূর্ব ১৫ শতাব্দীতে |
সরকার | |
• ধরন | শহর (১৯৯৪ থেকে[১]) |
• পৌরসংস্থার প্রধান | নেজার হেজাজী |
আয়তন[২] | |
• মোট | ৪৫ বর্গকিমি (১৭ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১২)[৩] | |
• মোট | ৫,১৫,৫৫৬ |
• জনঘনত্ব | ১১,০০০/বর্গকিমি (৩০,০০০/বর্গমাইল) |
ওয়েবসাইট | www.gaza-city.org |
ইতিহাস
সম্পাদনাগাজার জনবসতি স্থাপনের ইতিহাসটি ৫০০০ বছরের পুরনো, যা এটিকে বিশ্বের প্রাচীনতম শহরগুলির মধ্যে স্থান করে দিয়েছে।[৪] উত্তর আফ্রিকা এবং লেভান্টের মাঝে ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলের পথে অবস্থিত, এর ইতিহাসের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি দক্ষিণ ফিলিস্তিনের মূল শহর এবং লোহিত সাগর পাড়ি দিয়ে মশলা বাণিজ্যের পথে গুরুত্বপূর্ণ অবদান হিসাবে কাজ করেছিল। [৫]
ভূগোল
সম্পাদনাসদর গাজা নিচু এবং গোলাকার পাহাড়ের উপরে অবস্থিত সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপরে যা উচ্চতা ১৪ মিটার (৪৬ ফু)।[৬] আধুনিক শহরটির বেশিরভাগ অংশ পাহাড়ের নিচে সমতলে নির্মিত হয়েছে, বিশেষত উত্তর এবং পূর্ব দিকে গাজার শহরতলি তৈরি করেছে। সৈকত এবং গাজা বন্দরটি ৩ কিলোমিটার (১.৯ মা) অবস্থিত শহরের প্রধান ভাগ পশ্চিমে এবং এর মধ্যবর্তী স্থান পুরোপুরি নিচু পাহাড়ের উপর নির্মিত।[৭]
জনমিতি
সম্পাদনাজনসংখ্যা
সম্পাদনা১৫৫৭ সালে ওসমানী খাজনা নথি অনুসারে, গাজায় পুরুষ করদাতারা ছিল ২৪৭৭ জন[৮] ১৫৯৬ সালের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায় যে গাজার মুসলিম জনসংখ্যায় ৮৬৬ টি পরিবার, ১১৫ জন ব্যাচেলর, ৫৯ জন ধর্মীয় ব্যক্তি এবং ১৯ জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ছিল। মুসলিম ব্যক্তিত্ব ছাড়াও ওসমানী সেনাবাহিনীতে ১৪১ জুনদিয়ান বা "সৈন্য" ছিল। খৃষ্টধর্মীদের মধ্যে ২৯৪ টি পরিবার এবং সাত জন অবিবাহিত ছিল, সেখানে ছিল ৭৩ টি ইহুদি পরিবার এবং আটটি শমরীয় পরিবার। মোট হিসাবে, গাজায় আনুমানিক ৬,০০০ লোক বাস করত, জেরুজালেম এবং সাফাদের পরে এটি ওসমানী ফিলিস্তিনের তৃতীয় বৃহত্তম শহর হিসাবে পরিণত হয়েছিল। [৯]
ধর্ম
সম্পাদনাগাজার জনসংখ্যা অতিমাত্রায় মুসলিমদের সমন্বয়ে গঠিত, যারা বেশিরভাগ সুন্নি ইসলামকে অনুসরণ করে।[১০] ফাতেমী আমলে শিয়া ইসলাম গাজায় প্রাধাণ্য পেয়েছিল, তবে ১১৮৭ সালে সলাহুদ্দিন আয়ুবী শহর জয় করার পরে তিনি কঠোরভাবে সুন্নি ধর্মীয় ও শিক্ষানীতি প্রচার করেছিলেন, যা তাঁর আরব ও তুর্কি সৈন্যদের একত্রিত করার জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল।[১১]
গাজায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার লোকের একটি ছোট ফিলিস্তিনি খৃষ্টধর্মী সংখ্যালঘু সম্প্রদায় রয়েছে।[১২] বেশিরভাগ লোক পুরান শহরের জয়তুন কোয়ার্টারে বাস করে এবং গ্রিক অর্থোডক্স, রোমান ক্যাথলিক এবং ব্যাপটিস্ট সম্প্রদায়ভুক্ত।[১৩] ১৯০৬ সালে প্রায় ৭৫০ জন খ্রিষ্টান ছিল, যার মধ্যে ৭০০ জন অর্থোডক্স এবং ৫০ জন রোমান ক্যাথলিক ছিলেন।[১৪]
গাজার ইহুদী সম্প্রদায়ের বয়স প্রায় ৩,০০০ বছর,[১০] এবং ১৪৮১ সালে ৬০টি ইহুদী পরিবার ছিল।[১৫] তাদের মধ্যে বেশিরভাগই পঞ্চাশটি পরিবার নিয়ে গঠিত ফিলিস্তিন দাঙ্গার পরে গাজা থেকে পালিয়ে এসেছিলেন। সামি হদাবীর জমি ও জনসংখ্যা জরিপে গাজার জনসংখ্যা ছিল ৩৪,২৫০, যার মধ্যে ১৯৪৫ সালে ৮০ জন ইহুদী ছিল।[১৬] তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ১৯৪৮ সালের যুদ্ধের পরে তাদের এবং আরব সংখ্যাগরিষ্ঠদের মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাসের কারণে এই শহর ত্যাগ করেছিল।[১৭]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;PASSIA
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;GazaMunicipality
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ "Localities in Gaza Governorate by Type of Locality and Population Estimates, 2007–2016"। Palestinian Central Bureau of Statistics (PCBS)। ২০১৮-১১-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-১০-২০।
- ↑ Dumper et al., 2007, p. 155.
- ↑ Alan Johnston (২০০৫-১০-২২)। "Gaza's ancient history uncovered"। BBC news। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০২-১৬।
- ↑ "Gaza"। Global Security। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০১-২৫।
- ↑ Robinson, 1841, vol 2, pp. 374-375
- ↑ Cohen and Lewis, 1978.
- ↑ Hütteroth and Abdulfattah, 1977, p.52.
- ↑ ক খ Dumper and Abu-Lughod, 2007, p.155.
- ↑ Filfil, Rania; Louton, Barbara (সেপ্টেম্বর ২০০৮)। "The Other Face of Gaza: The Gaza Continuum"। This Week in Palestine। This Week in Palestine। ২০০৯-০২-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০১-৩০।
- ↑ "Militants bomb Gaza YMCA library"। BBC News। ২০০৮-০২-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০১-১৯।
- ↑ Omer, Mohammed (২০০৮-০২-০৯)। "Gaza's Christian community – serenity, solidarity and soulfulness"। Institute for Middle East Understanding। ২০০৯-০১-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০১-১৯।
- ↑ Meyer, 1907, p.108
- ↑ Gaza, Jewish Encyclopedia
- ↑ Government of Palestine, Department of Statistics. Village Statistics, April, 1945. Quoted in Hadawi, 1970, p. 45
- ↑ "The Disengagement Plan-General Outline"। সংগ্রহের তারিখ ২৮ এপ্রিল ২০১৭।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- Municipality of Gaza ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে
- Gaza at Google Maps
- The achievements of the municipal council for a period of 5 years (2008–2013) in Arabic ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ আগস্ট ২০১৪ তারিখে