ভ্রান্ত ভারসাম্য
ভ্রান্ত ভারসাম্য (ইংরেজিঃ False balance) হচ্ছে একপ্রকার গণমাধ্যম পক্ষপাত; যেখানে সাংবাদিকরা কোনো একটি বিষয়কে নিরপেক্ষভাবে প্রকাশ করতে গিয়ে পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ প্রকাশ করার চেয়ে বিরোধীপক্ষের মত উপস্থাপনকে বেশি জোর দেন। এতে করে এক পক্ষের অন্য পক্ষের চেয়ে অত্যধিক রকমের তথ্যপ্রমাণ থাকলেও দুই পক্ষই এক কাতারে নেমে আসে। যা সাধারণ মানুষের সঠিক তথ্য জানার স্পৃহা এবং অধিকারকে বাধাগ্রস্থ করে।
সায়েন্সের প্রতিবেদন অনুসারে ভ্রান্ত ভারসাম্য এর উদাহরণ হলো পরিবেশের এ অবস্থা মানুষের তৈরী না জলবায়ু পরিবর্তনমুলক বিতর্ক, অটিজমের সাথে থাইমেরোসলের অভিযোগ[১] এবং বিবর্তনবাদ বনাম বুদ্ধিদীপ্ত নকশা।[২]
ভ্রান্ত ভারসাম্যকে ভুল তথ্য ছড়ানো নামেও অভিহিত করা হয়।[৩] ভ্রান্ত ভারসাম্য এর একটি উদাহরণ হলঃ বৈশ্বিক উষ্ণায়ন নিয়ে বিতর্ক; যদিও বৈজ্ঞানিক মহল এক বাক্যে এটা স্বীকার করেছেন যে; বৈশ্বিক উষ্ণায়ন শিল্প বিপ্লবের প্রভাবের ফলে বৃদ্ধি পেয়েছে[৪][৫][৬][৭] তবুও খুবই স্বল্প সংখ্যক বিজ্ঞানী আছেন, যারা এই ব্যাখ্যাকে অস্বীকার করেন।[৮][৯][১০] যদি উভয় পক্ষের বিজ্ঞানীদের সমান সুযোগ দেওয়া হয় এবং সাধারণ মানুষের কাছে সংখ্যা উল্লেখ না করে, দুই পক্ষের বিজ্ঞানীর তথ্য উপস্থাপন করা হয়; তাহলে সাধারণ মানুষের কাছে একটা ভুল তথ্য যাবে। তারা ধরেই নিবে বৈজ্ঞানিক মহলের ভিতরে এই বিষয়ে গুরুতর দ্বন্দ্ব বিরাজমান। যখন মোটের উপর বৈজ্ঞানিক মহলে সম্পুর্ণভাবে ধরে নিয়েছে মানুষ কর্তৃক বৈশ্বিক উষ্ণায়ন হচ্ছে।
ভ্রান্ত ভারসাম্য উত্তেজনাকরসন্ধিৎসার মত প্রবৃত্তিমুলক কাজের সাথে সংহতিপুর্ণ হতে পারে। যখন প্রযোজক এবং সম্পাদক যাবেন যদি চলমান বিতর্ককে ঘিরে সত্য এবং মিথ্যা তথ্যকে জগাখিচুড়ি বানিয়ে একটা গল্প তৈরী করা হয়; তাহলে গল্পটি বাণিজ্যিকভাবে বেশি সফল হবে। প্রযোজক এবং সম্পাদক দৃষ্টিকোণকে স্বচ্ছভাবে পরীক্ষণ করতে গিয়ে দ্বিধাগ্রস্থ হতে পারেন। তাদের সীমাবদ্ধ জ্ঞানের ক্ষেত্রের জন্য দুই পক্ষকে নিরপেক্ষভাবে উপস্থাপন করে থাকেন। যদিও এক পক্ষের তথ্য ভুল থাকে; তা তারা ধরতে পারেন না।[১১]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Gross L (২০০৯)। "A broken trust: lessons from the vaccine—autism wars"। PLoS Biol। 7 (5): 756–9। ডিওআই:10.1371/journal.pbio.1000114। পিএমআইডি 19478850। পিএমসি 2682483 । ২৫ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১৭।
- ↑ Scott, Eugenie C. (২০০৯)। Evolution vs. Creationism: An Introduction (পিডিএফ) (Second সংস্করণ)। Westport, CT: Greenwood Press। আইএসবিএন 9780313344275। ২ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৭।
- ↑ Boykoff, Maxwell T; Boykoff, Jules M। "Balance as bias: global warming and the US prestige press"। Global Environmental Change। 14 (2): 125–136। ডিওআই:10.1016/j.gloenvcha.2003.10.001।
- ↑ Edenhofer, Ottmar; Pichs-Madruga, Ramón; Sokona, Youba; ও অন্যান্য, সম্পাদকগণ (২০১৪)। Climate Change 2014: Mitigation of Climate Change: Working Group III contribution to the Fifth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change। Cambridge, UK; New York: Cambridge University Press। আইএসবিএন 9781107058217। ওসিএলসি 892580682। ডিওআই:10.1017/CBO9781107415416।
- ↑ America's Climate Choices: Panel on Advancing the Science of Climate Change; National Research Council (২০১০)। Advancing the Science of Climate Change। Washington, D.C.: National Academies Press। আইএসবিএন 0-309-14588-0।
- ↑ Unger, Nadine; Bond, Tami C.; Wang, James S.; Koch, Dorothy M.; Menon, Surabi; Shindell, Drew T.; Bauer, Susanne (২০১০-০২-২৩)। "Attribution of climate forcing to economic sectors"। Proceedings of the National Academy of Sciences of the United States of America। 107 (8): 3382–7। ডিওআই:10.1073/pnas.0906548107। পিএমআইডি 20133724। পিএমসি 2816198 । বিবকোড:2010PNAS..107.3382U।
- ↑ Committee on Surface Temperature Reconstructions for the Last 2,000 Years, National Research Council (২০০৬)। Surface Temperature Reconstructions for the Last 2,000 Years। Washington, D.C.: The National Academies Press। আইএসবিএন 0-309-10225-1।
- ↑ Anderegg, William R. L.; Prall, James W.; Harold, Jacob; Schneider, Stephen H. (২০১০-০৭-০৬)। "Expert credibility in climate change"। Proceedings of the National Academy of Sciences। 107 (27): 12107–9। ডিওআই:10.1073/pnas.1003187107। পিএমআইডি 20566872। পিএমসি 2901439 । বিবকোড:2010PNAS..10712107A।
- ↑ Oreskes, Naomi (২০০৪-১২-০৩)। "The Scientific Consensus on Climate Change"। Science। 306 (5702): 1686। ডিওআই:10.1126/science.1103618। পিএমআইডি 15576594।
- ↑ Doran, Peter T.; Zimmerman, Maggie Kendall (২০০৯-০১-২০)। "Examining the Scientific Consensus on Climate Change" (পিডিএফ)। Eos। 90 (3): 22–23। ডিওআই:10.1029/2009EO030002। বিবকোড:2009EOSTr..90...22D। ২০১৯-০৯-২৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-০৮।
- ↑ Krugman, Paul (জানুয়ারি ৩০, ২০০৬)। "A False Balance"। New York Times।