বলবিন্দর সাঁধু
বলবিন্দর সিং সাঁধু (গুরুমুখী: ਬਲਵਿੰਦਰ ਸੰਧੂ; জন্ম: ৩ আগস্ট, ১৯৫৬) বোম্বে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৮২ থেকে ১৯৮৪ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।[১][২][৩]
;ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | বলবিন্দর সিং সাঁধু | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | বোম্বে, বোম্বে রাজ্য, ভারত | ৩ আগস্ট ১৯৫৬|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি মিডিয়াম-ফাস্ট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | বোলার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১৬২) | ১৪ জানুয়ারি ১৯৮৩ বনাম পাকিস্তান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ১২ নভেম্বর ১৯৮৩ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ৪২) | ৩ ডিসেম্বর ১৯৮২ বনাম পাকিস্তান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ ওডিআই | ৩১ অক্টোবর ১৯৮৪ বনাম পাকিস্তান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৮০/৮১–১৯৮৬/৮৭ | বোম্বে | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে মুম্বই দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি মিডিয়াম-ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন বলবিন্দর সাঁধু।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট
সম্পাদনা১৯৮০-৮১ মৌসুম থেকে ১৯৮৬-৮৭ মৌসুম পর্যন্ত বলবিন্দর সাঁধু’র প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। মিডিয়াম-পেস বোলার হিসেবে বলকে সুইং করানোয় দক্ষতা প্রদর্শন করেছিলেন। এছাড়াও কার্যকরী ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন বলবিন্দর সাঁধু। কার্যকরী নিচেরসারির ব্যাটসম্যানের চেয়েও উপরের সারির খেলোয়াড় ছিলেন তিনি। তবে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মাত্র দুই বছর কাটিয়েছেন। তাসত্ত্বেও, এ সময়েই নিজেকে বিচ্ছুরিত করার প্রয়াস চালিয়েছেন।
তুলনামূলকভাবে অধিক বয়সে বলবিন্দর সাঁধু’র ক্রিকেট জগতে প্রবেশ ঘটে। গ্রীষ্মকালীন প্রশিক্ষণ শিবিরে সাবেক প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটার যশবন্ত বাবা সিন্ধের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষমতা দেখান তিনি। পরবর্তী বছর রমাকান্ত আচরেকরের অনুপ্রেরণা ও রঞ্জী ট্রফির খেলোয়াড় হিমু দালভি তাকে উদ্দীপনা যোগান।
১৯৮০-৮১ মৌসুমে বোম্বে দলের নিয়মিত উদ্বোধনী বোলার কারসান গাভ্রি’র জাতীয় দলে অংশগ্রহণের প্রেক্ষিতে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করার সুযোগ ঘটে বলবিন্দর সাঁধু’র। তবে, ঐ মৌসুমের প্রথম দুই খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাননি তিনি। কিন্তু গুজরাতের বিপক্ষে অভিষেক খেলাতেই বাজিমাত করেন তিনি। খেলায় তিনি নয় উইকেট পান। তাসত্ত্বেও, ঐ মৌসুমের চূড়ান্ত খেলায় দিল্লি দলের বিপক্ষে খেলানো হয়নি তাকে। কিন্তু, শেষ মুহূর্তে রবি কুলকার্নিকে দলের বাইরে রাখা হলে তাকে খেলার সুযোগ দেয়া হয়। প্রথমদিনের সকালে দূর্দান্ত বোলিং করে দিল্লীর ইনিংস ১৮/৫ করেন। খেলায় তিনি নয় উইকেট দখল করেন। ঐ মৌসুমে ১৮.৭২ গড়ে ২৫ উইকেট লাভ করেন তিনি।
১৯৮২-৮৩ মৌসুমের শুরুরদিকে দিলীপ ট্রফির খেলায় পশ্চিম অঞ্চলের সদস্যরূপে খেলেন। দক্ষিণ অঞ্চলের বিপক্ষে আট উইকেট পান ও ১১ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫৬ রান তুলেন। ইরানি ট্রফিতে আরও একবার পাঁচ-উইকেট পেলে জাতীয় দলে খেলার পথ সুগম হয় তার। ১৯৮৪-৮৫ মৌসুমে রঞ্জী ট্রফির সেমি-ফাইনালে তামিলনাড়ুর বিপক্ষে ৯৮ রান তুলে বোম্বে দলকে ইনিংসে এগিয়ে নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
সম্পাদনাসমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে আটটিমাত্র টেস্ট ও বাইশটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন বলবিন্দর সাঁধু। ১৪ জানুয়ারি, ১৯৮৩ তারিখে সিন্ধু প্রদেশের হায়দ্রাবাদে স্বাগতিক পাকিস্তান দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১২ নভেম্বর, ১৯৮৩ তারিখে আহমেদাবাদে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।
ভারত দলের সদস্যরূপে পাকিস্তান গমন করেন। হায়দ্রাবাদে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে স্বাগতিক দলের বিপক্ষে অভিষেক ঘটে তার। তিনি পায়ের গোড়ালিতে আঘাতপ্রাপ্ত মদন লালের স্থলাভিষিক্ত হন। উপর্যুপরি দুই বলে মোহসিন খান ও হারুন রশীদকে বিদেয় করে নিজস্ব প্রথম দুই উইকেট লাভ করেন। দীর্ঘ সময় ধরে এটিই ভারত দলের একমাত্র সফলতা ছিল। ৩য় উইকেট জুটিতে ৪৫১ রান তুলে জাভেদ মিয়াঁদাদ - মুদাসসর নজর তৎকালীন বিশ্বরেকর্ড গড়েন। নয় নম্বরে ব্যাট হাতে মাঠে নেমে দ্রুতলয়ে ৭১ রান করেন। এ রানটি দলের সর্বোচ্চ ছিল।
পরের মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে ৬৮ রান তুলে শীর্ষ রান সংগ্রাহক হন। ব্রিজটাউনের কেনসিংটন ওভালে প্রথম ইনিংসে এ রান করেছিলেন। এ পর্যায়ে ভারত দলে ধ্স নেমেছিল। পরবর্তী টেস্টে বোলিং উদ্বোধনে নেমে মাত্র এক রানে তিন উইকেট শিকার করে সাময়িকভাবে দর্শকদেরকে স্তব্ধ করে দেন। কিন্তু, ইংরেজ পরিবেশে তার বল বেশ অকার্যকর ছিল।
১৯৮৩-৮৪ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একটিমাত্র টেস্টে অংশ নেন। তবে, সফলতা পাননি তিনি। তবে, পরবর্তীতে কয়েকটি একদিনের আন্তর্জাতিকে খেললেও টেস্টের জন্যে আর তাকে বিবেচনায় আনা হয়নি। গায়ানায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩/৮৭ পান।
ক্রিকেট বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ
সম্পাদনা১৯৮৩ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ক্রিকেট বিশ্বকাপের তৃতীয় আসরে ভারতের শিরোপা বিজয়ে প্রভূতঃ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ১১ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে সৈয়দ কিরমানী’র সাথে জুটি গড়ে মূল্যবান অবদান রাখেন। এক পর্যায়ে বাউন্সারে মাথায় আঘাত পান। পরবর্তীতে গর্ডন গ্রীনিজকে বড় ধরনের ইনসুইঙ্গারে বাহুতে স্পর্শের মাধ্যমে আউট করেন। এরফলে, গত তিনমাসে তিনবার গ্রীনিজকে বোল্ড করেন তিনি। এরপর ১৯৮৩ সালে পশ্চিম অঞ্চলের সদস্যরূপে সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান একাদশের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত খেলায় চতুর্থবার তাকে বোল্ড করেছিলেন।
ঐ বছরের শেষদিকে আহমেদাবাদের সরদার প্যাটেল স্টেডিয়ামে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি একমাত্র উইকেট লাভ করলেও কপিল দেব একই ইনিংসে ৯/৮৩ পান। এরপর থেকে তার খেলার মান ক্রমশঃ নিচেরদিকে গড়াতে থাকে।
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনাক্রিকেট খেলা থেকে অবসর নেয়ার পর মুম্বই ও পাঞ্জাব দলের কোচের দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়াও ন্যাশনাল ক্রিকেটে একাডেমিতে কাজ করেন বলবিন্দর সাঁধু। ১৯৯০-এর দশকে কেনিয়ায় ক্লাবভিত্তিক ক্রিকেটে অংশ নেন ও কিছু সময়ের জন্যে কোচিং করান।
অল্প সময়ের জন্যে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগের (আইসিএল) সাথে জড়িত ছিলেন। মুম্বইয়ের চেম্বারের কাছাকাছি গোভান্দি এলাকার নীলকণ্ঠ গার্ডেন্সে বসবাস করছেন। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত তিনি। তার দুই কন্যা রয়েছে।
১৯৮৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপকে ঘিরে কবির খান ৮৩ (২০২০) চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এতে পাঞ্জাবী গায়ক ও অভিনেতা অ্যামি বির্ক তার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ List of India Test Cricketers
- ↑ "India – Test Batting Averages"। ESPNCricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
- ↑ "India – Test Bowling Averages"। ESPNCricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে বলবিন্দর সাঁধু (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে বলবিন্দর সাঁধু (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
গ্রন্থপঞ্জি
সম্পাদনা- Pradeep Vijayakar, Cricketer of the year article, Indian Cricket 1983, p 121-125