সাইফুদ্দিন শাবান
মালিকুল কামিল সাইফুদ্দিন শাবান বিন মুহাম্মাদ বিন কালাউন, যিনি কামিল শাবান নামে বেশি পরিচিত, ১৩৪৫ সালের আগস্ট থেকে ১৩৪৬ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত মিশরের মামলুক সুলতান ছিলেন। তিনি তার ভাই সালিহ ইসমাইলের স্থলাভিষিক্ত হয়ে সুলতান হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী নাসির মুহাম্মাদের পঞ্চম পুত্র ছিলেন। শাবানের ভাই মুযাফফর হাজ্জির হয়ে লড়াই করা আমির শামসুদ্দিন আকসুনকুর দ্বারা সংগঠিত তার শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের সময় সিংহাসনচ্যুত ও নিহত হন।
শাবান | |||||
---|---|---|---|---|---|
মালিকুল কামিল | |||||
মিশরের সুলতান | |||||
রাজত্ব | আগস্ট ১৩৪৫ – সেপ্টেম্বর ১৩৪৬ | ||||
পূর্বসূরি | সালিহ ইসমাইল | ||||
উত্তরসূরি | মুযাফফর হাজ্জি | ||||
জন্ম | অজ্ঞাত কায়রো, মামলুক মিশর | ||||
মৃত্যু | ২১ সেপ্টেম্বর ১৩৪৬ কায়রো, মামলুক সালতানাত | ||||
| |||||
রাজবংশ | কালাউনি | ||||
পিতা | নাসির মুহাম্মাদ | ||||
ধর্ম | সুন্নি ইসলাম |
জীবনী
সম্পাদনাশাবান ছিলেন দীর্ঘ রাজত্বকারী এবং একনায়কতান্ত্রিক মামলুক সুলতান নাসির মুহাম্মাদ এবং তার একজন উপপত্নীর পুত্র। উপপত্নীর নাম মামলুক-যুগের সূত্র দ্বারা সরবরাহ করা হয়নি।[১] নাসির মুহম্মাদ মারা গেলে তার বেশ কয়েকজন পুত্র সুলতান হিসেবে তার স্থলাভিষিক্ত হন। আবু বকর, কুজুক, নাসির আহমাদ এবং সালিহ ইসমাইল ধারাবাহিকভাবে এই পদে অধিষ্ঠিত হন; যদিও তাদের মধ্যে অনেকেই শুধুমাত্র নামে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিলেন; বেশিরভাগ সময়ে প্রভাবশালী মামলুক আমিররাই প্রকৃত ক্ষমতায় ছিলেন। ১৩৪৫ সালের আগস্ট মাসে শাবানের আপন ভাই সালিহ ইসমাইল অসুস্থতার কারণে মারা যান এবং শাবান তার স্থলাভিষিক্ত হন, তারপর থেকে তিমি কামিল শাবান নামে পরিচিত হন।[২]
শাবান নেতৃস্থানীয় মামলুক আমিরদের সাথে একটি চুক্তি করেছিলেন। তাদের মধ্যে প্রধান ছিলেন তার সৎ পিতা আরঘুম আলাই। নেতৃস্থানীয় আমিরদের সাথে চুক্তি করা সত্ত্বেও, শাবান সিরিয়ার মামলুক গভর্নর এবং তার ব্যক্তিগত গার্ডের অফিসারদের সাথে তুলনামূলকভাবে দ্রুত তাদের বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। ফলস্বরূপ, ১৩৪৬ সালের সেপ্টেম্বরে তার শাসনের বিরুদ্ধে একটি বিদ্রোহ সংঘটিত হয়।[২] শাবানের ভাই মুযাফফর হাজ্জির পক্ষে মামলুক আমির শামসুদ্দিম আকসুনকুর এই বিদ্রোহ সংগঠিত করেছিলেন।[৩] শাবান পরবর্তীকালে ২১শে সেপ্টেম্বর ১৩৪৬ তারিখে বন্দী হন ও তার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। আর আরঘুম আলেকজান্দ্রিয়ায় বন্দী হন এবং সেখানেই মারা যান।[২] শাবানকে তার ভাই ইউসুফ ইবনে মুহাম্মাদের পাশে দাফন করা হয়।[৪] মারা যাওয়ার আগে শাবানের একটি পুত্র ছিল যে শৈশবে মারা গিয়েছিল এবং আয়েশা নামে একটি কন্যা ছিল, যাকে রজব নামের একজন আমির বিয়ে করেছিলেন।[৪]
মামলুক-যুগের ইতিহাসবিদ ইবনে তাগরিবিরদী শাবানকে "অন্যায় ও অনৈতিকতার দিক থেকে সবচেয়ে খারাপ শাসকদের একজন বলে বর্ণনা করেছেন। তার সময়ে দেশটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। তার বিনোদনের প্রতি অনুরাগ এবং মদ্যশালার প্রতি আনুগত্য এবং গায়কদের প্রতি অনুরাগের কারণে।"[৫]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Bauden, Frédéric (২০০৯)। "The Sons of al-Nāṣir Muḥammad and the Politics of Puppets: Where Did It All Start?" (পিডিএফ)। Middle East Documentation Center, The University of Chicago: 63।
- ↑ ক খ গ Holt 1986, p. 123.
- ↑ Williams, p. 86.
- ↑ ক খ Bauden, Frédéric। "The Qalawunids: A Pedigree" (পিডিএফ)। University of Chicago। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০২-২৫।
- ↑ Lewicka, p. 528.
গ্রন্থপঞ্জি
সম্পাদনা- Holt, Peter Malcolm (১৯৮৬)। The Age of the Crusades: The Near East from the Eleventh Century to 151। Addison Wesley Longman Limited। আইএসবিএন 9781317871521।
- Holt, Peter Malcolm (১৯৯৮)। "Literary Offerings: A Genre of Courtly Literature"। Philipp, Thomas; Haarmann, Ulrich। The Mamluks in Egyptian Politics and Society। Cambridge University Press। আইএসবিএন 9780521591157।
- Lewicka, Paulina (২০১১)। Food and Foodways of Medieval Cairenes: Aspects of Life in an Islamic Metropolis of the Eastern Mediterranean। Brill। আইএসবিএন 9789004194724।
- Williams, Caroline (২০০৮)। Islamic Monuments in Cairo: The Practical Guide। American University in Cairo Press। আইএসবিএন 9789774162053।
রাজত্বকাল শিরোনাম | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী সালিহ ইসমাইল |
মামলুক সুলতান আগস্ট ১৩৪৫–সেপ্টেম্বর ১৩৪৬ |
উত্তরসূরী মুযাফফর হাজ্জি |