আজমল শাহজাদ
আজমল শাহজাদ (জন্ম: ২৭ জুলাই, ১৯৮৫) পশ্চিম ইয়র্কশায়ারের হাডার্সফিল্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী কোচ ও সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ২০১০-এর দশকের সূচনালগ্নে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। নিজ দশের পক্ষে তিনটি টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিক, এগারোটি একদিনের আন্তর্জাতিক ও একটিমাত্র টেস্টে অংশ নিয়েছেন। একমাত্র টেস্টটি ২০১০ সালে নিজ দেশে সফরকারী বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে খেলেন।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | আজমল শাহজাদ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | হাডার্সফিল্ড, পশ্চিম ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড | ২৭ জুলাই ১৯৮৫|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | আজি, রোডম্যান, রুডবয়, এজে | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উচ্চতা | ৬ ফুট ০ ইঞ্চি (১.৮৩ মিটার) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | বোলার, কোচ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
একমাত্র টেস্ট (ক্যাপ ৬৫০) | ৪ জুন ২০১০ বনাম বাংলাদেশ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ২১৬) | ৫ মার্চ ২০১০ বনাম বাংলাদেশ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ ওডিআই | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১১ বনাম ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই শার্ট নং | ১৩ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০৪–২০১২ | ইয়র্কশায়ার (জার্সি নং ৪) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০১২ | → ল্যাঙ্কাশায়ার (ধারকৃত) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০১৩–২০১৪ | নটিংহ্যামশায়ার (জার্সি নং ১) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০১৫–২০১৭ | সাসেক্স (জার্সি নং ৪) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০১৭ | লিচেস্টারশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৯ জানুয়ারি ২০২১ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ল্যাঙ্কাশায়ার ও ইয়র্কশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন ‘আজি’ ডাকনামে পরিচিত আজমল শাহজাদ।
শৈশবকাল
সম্পাদনাআজমল শাহজাদের জন্ম হাডার্সফিল্ড এলাকায়। তবে, শৈশবকাল অতিবাহিত করেছেন ব্রাডফোর্ডে। আজমল শাহজাদের পিতা পেশায় হিসাবরক্ষক ছিলেন ও পশ্চিম ইয়র্কশায়ারের আইডলেক্লাব ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ব্রাডফোর্ডে শৈশবকাল অতিবাহিত করেন। সেখানকার ব্রাডফোর্ড গ্রামার স্কুল ও উডহাউজ গ্রোভ স্কুলে পড়াশুনো করেছেন তিনি। কাছাকাছি এলাকায় সতীর্থ ক্রিকেটার আদিল রশীদের সাথে সময় কাটাতেন। ব্রাডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি বিষয়ে চার মাস অধ্যয়ন করেন। এরপর, ক্রীড়াবিজ্ঞানে লিডস মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যান ও ক্রিকেটে খেলোয়াড়ী জীবন গড়ে তুলতে উদ্যোগী হন।[১]
প্রথম এশীয় বংশোদ্ভূত ইয়র্কশায়ারে জন্মগ্রহণকারী হিসেবে ২০০৪ সালে ইয়র্কশায়ারের পক্ষে খেলেন।[২][৩] ২৩ মে, ২০০৪ তারিখে ইয়র্কশায়ারের পক্ষে খেলে ক্রিকেটের ইতিহাসের পাতায় স্বীয় নাম লিপিবদ্ধ করেন। প্রথম ব্রিটিশ জন্মগ্রহণকারী এশীয় হিসেবে খেলেন তিনি। দুই বছর পর পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত হিসেবে আদিল রশীদও ইয়র্কশায়ারের পক্ষে খেলে সকলের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন। তবে, পরবর্তীকালে তারা এ ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারেননি।
ডানহাতি ফাস্ট বোলার ও মাঝারিসারিতে নিচেরদিকের কার্যকর ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। বিদ্যালয় জীবনেই তার ক্রীড়া প্রতিভা সকলের কাছে উন্মোচিত হয়। এ পর্যায়ে কোচের দায়িত্বে নিয়োজিত গ্রাহাম রূপ মন্তব্য করেন যে, বয়সের দিক দিয়ে অন্যান্য ছাত্রের তুলনায় তিনি যথেষ্ট এগিয়ে। ব্যাট করার পাশাপাশি ভীতিকর বোলার হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেছেন।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট
সম্পাদনা২০০৬ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত আজমল শাহজাদের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ২০০৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইয়র্কশায়ার, ল্যাঙ্কাশায়ার, নটিংহ্যামশায়ার, সাসেক্স ও লিচেস্টারশায়ার - এ পাঁচটি কাউন্টি ক্লাবের সাথে প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছেন। স্বল্পসংখ্যক ইংরেজ খোলা মাঠের খেলোয়াড় হিসেবে পাকিস্তানি ঐতিহ্য বহন করে ক্রিকেট খেলেন। ব্রাডফোর্ড লীগে উইন্ডহিল সিসি’র সভাপতি প্রতিবেশী হিসেবে বসবাস করতেন। এক পর্যায়ে তাকে অনুশীলনীমূলক খেলায় আমন্ত্রণ জানান। তবে, আঘাতের কারণে তার খেলোয়াড়ী জীবনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
২০০৬ সালে একটিমাত্র প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। খেলায় তিনি কোন উইকেট লাভে ব্যর্থ হন ও মাত্র দুই রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন। তবে, ক্ষুদ্রতর সংস্করণের খেলাগুলোয় বেশ সফল ছিলেন। নিজ কাউন্টির পক্ষে চারটি লিস্ট এ খেলায় পাঁচ উইকেট পান ও ১৮ রান তুলতে সক্ষম হন। একটিমাত্র টুয়েন্টি২০ খেলায় অংশ নিয়ে ২ উইকেট দখল করেন। আঘাত থেকে নিষ্কৃতি পেতে তিনি তার বোলিং ভঙ্গীমা পরিবর্তন করেন। এক পর্যায়ে তার প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটে।
ইয়র্কশায়ার অধ্যায়
সম্পাদনাজাতীয় দলে টিম ব্রেসনানের অংশগ্রহণের ফলে ইয়র্কশায়ারের প্রথম একাদশে খেলার সুযোগ পান। ২০০৯ সালে ৪০ উইকেট লাভের পাশাপাশি মাঝারিসারিতে নিচেরদিকে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৪৫ রান তুলে ইয়র্কশায়ারের শিরোপা বিজয়ে ভূমিকা রাখেন।
তার এ সুন্দর ফলাফলের স্বীকৃতিস্বরূপ দক্ষিণ আফ্রিকা গমনার্থে ইংল্যান্ড পারফরম্যান্স দলের সদস্যরূপে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সেখানে তিনি কোচ অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের প্রশংসা কুড়ান। এরপর, ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সালে বাংলাদেশ গমনার্থে তাকে ইংল্যান্ডের টেস্ট দলে রাখা হয়।
২০১১ সালের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে ৪১.০০ গড়ে ২৫ উইকেট দখল করেন।[৪] সেপ্টেম্বরে ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে পিচ খোঁড়ার অভিযোগে দোষী হন ও £৭৫০ পাউন্ড-স্টার্লিং জরিমানা গুণতে হয়। এ পর্যায়ে মৌসুমের শেষ খেলায় তার দল প্রথম বিভাগ থেকে অবনমিত হয়।[৫]
ল্যাঙ্কাশায়ারে যোগদান
সম্পাদনাএপ্রিল, ২০১২ সালে ইয়র্কশায়ারের নতুন বোলিং কোচ জেসন গিলেস্পি আজমল শাহজাদের প্রচেষ্টা চালানোর ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি মন্তব্য করেন যে, আজমল প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনে চমৎকার অবস্থানে রয়েছেন। তিনি প্রচণ্ড পরিশ্রমী ও আমি মনে করি তিনি দূর্দান্ত ও আকর্ষণীয় বোলার। তবে, ১ মে, ২০১২ তারিখে ইয়র্কশায়ার থেকে আজমল শাহজাদের চলে যাবার কথা ঘোষণা করা হয়।[৬] এক সপ্তাহ পর মৌসুমের বাদ-বাকী সময়ের জন্যে ধারকৃত খেলোয়াড় হিসেবে ল্যাঙ্কাশায়ার দলে যোগ দেন তিনি।[৭]
১০ অক্টোবর, ২০১২ তারিখে ইয়র্কশায়ার দল থেকে তার অবমুক্তি ও তিন বছরের চুক্তিতে নটিংহ্যামশায়ারের পক্ষে খেলার কথা ঘোষণা করেন তিনি।[৮] ২০১৩ সালে প্রায় ৫০ গড়ে মাত্র ২২টি চ্যাম্পিয়নশীপের উইকেট পান। নিজের শক্তিমত্তা সম্পর্কে সজাগ থাকলেও তাকে সহায়তা করার মতো কেউ ছিল না।
লর্ডসে স্টুয়ার্ট ব্রডের উপস্থিতির কথা শুনতে পেয়ে ওয়াইবি চূড়ান্ত খেলায় তিনি আশা ছেড়ে দেন। কিন্তু, নটসের সেমিফাইনালের তারকা জ্যাক বলের আঘাতের কারণে শাহজাদ পরিবর্তিত খেলোয়াড় হিসেবে অংশ নেন। তিন উইকেট নিয়ে দলের বিজয়ে ভূমিকা রাখেন। নটসের নবনিযুক্ত বোলিং কোচ অ্যান্ডি পিক ২০১৪ সালকে ঘিরে আজমল শাহজাদকে আরও একবার সুযোগ দেন। ৭ নভেম্বর, ২০১৪ তারিখে এক বছর পূর্বেই নটিংহ্যামশায়ার দল থেকে অব্যাহতি ও সাসেক্স দলের সাথে তিন বছরের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন তিনি।[৯]
১০ জুলাই, ২০১৭ তারিখে পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে চুক্তি স্থগিত করে সাসেক্স দলে প্রত্যাবর্তন করেন।[১০] চারদিনের খেলার তুলনায় একদিনের ক্রিকেটেই তিনি উপযোগী ছিলেন। দুই বছরের মধ্যে চতুর্থ কাউন্টি দল হিসেবে সাসেক্সে যোগ দেন। দলের কোচ মার্ক রবিনসনের নজরে পড়েন। এ পর্যায়ে তার বয়স ছিল ২৮ বছর। মৌসুমের শুরুতে ওরচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সেরা পাঁচ-উইকেটের সন্ধান পান। তবে, আঘাতের কারণে তার খেলা সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। মাত্র পাঁচটি চ্যাম্পিয়নশীপের খেলায় অংশ নিতে পেরেছিলেন তিনি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
সম্পাদনাসমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একটিমাত্র টেস্ট, এগারোটি একদিনের আন্তর্জাতিক ও তিনটিমাত্র টি২০আইয়ে অংশগ্রহণ করেছেন আজমল শাহজাদ। ৪ জানুয়ারি, ২০১০ তারিখে ম্যানচেস্টারে সফরকারী বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এটিই তার একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। এরপর আর তাকে কোন টেস্টে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি। অন্যদিকে, ৫ মার্চ, ২০১০ তারিখে চট্টগ্রামে একই দলের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিকে অভিষেক ঘটে তার। ১১ মার্চ, ২০১১ তারিখে একই মাঠে ও একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ ওডিআইয়ে অংশ নেন তিনি।
ইংল্যান্ড পারফরম্যান্স প্রোগ্রামের আওতায় দক্ষিণ আফ্রিকা গমনে যান। অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারসহ দলের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপকদের দৃষ্টিতে পড়েন। ফলশ্রুতিতে, নিজ দেশে স্টুয়ার্ট ব্রডের বিশ্রামজনিত কারণে তাকে সফরকারী বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে খেলানো হয়। ওল্ড ট্রাফোর্ডে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে তার অভিষেক হয়। অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার মন্তব্য করেন, তাকে তারুণ্যে উজ্জ্বীবিত খেলোয়াড় হিসেবে দেখা যাচ্ছিল। তিনি কি রকম খেলবেন, তা কেবল তার উপরই নির্ভর করবে।
বাংলাদেশ গমন
সম্পাদনাজানুয়ারি, ২০১০ সালে বাংলাদেশ গমনার্থে তাকে ইংল্যান্ডের টেস্ট ও ওডিআই দলে রাখা হয়।[১১] ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সালে টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অভিষেক ঘটে আজমল শাহজাদের।[১২]
পাকিস্তানের বিপক্ষে টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিক অভিষেকে দুই উইকেট লাভ করেন। উভয়টিই প্রথম ওভারে পেয়েছিলেন তিনি।[১৩] এরপর, বাংলাদেশের বিপক্ষে তার ওডিআই অভিষেক হয়। এবারও প্রথম ওভারেই তিনি উইকেট লাভ করেছিলেন।[১৪]
টেস্ট অভিষেক
সম্পাদনাএর কয়েক মাস পর ২০১০ সালে বাংলাদেশ দল ইংল্যান্ড গমন করলে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে তার অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। টিম ব্রেসনানের পরিবর্তে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। ইংল্যান্ডের ইনিংসে তিনি মাত্র ৫ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হন। প্রথম বোলিং স্পেলে বেশ রান দিলেও দ্বিতীয় স্পেলে তিন ওভারে তিন উইকেট পান ও প্রতিপক্ষকে ফলো-অন এড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা থেকে বিরত রাখেন।
জুলাই, ২০১০ সালে পাকিস্তান দল ইংল্যান্ডে আসলে প্রথম টেস্টের জন্য ইংল্যান্ডের ১২-সদস্যের তালিকায় তাকে রাখা হয়। ঐ খেলার এক সপ্তাহ পূর্বে ইয়র্কশায়ারের পক্ষে খেলাকালীন গোঁড়ালীতে ব্যথা পান। টেস্টের পূর্বদিনেও তিনি অস্বস্তিবোধ করলে টিম ব্রেসনানকে তার পরিবর্তে খেলানো হয়।[১৫]
শাহজাদ তার স্বর্ণালি সময়েও মাঝে-মধ্যে একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নেয়ার সুযোগ পেতেন। ২০১০-১১ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজকে ঘিরে ইংল্যান্ড দলে তার অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি ক্রিকেটবোদ্ধারা আশাবাদ ব্যক্ত করলেও ১৬-সদস্যের সফরকারী দলে তাকে রাখা হয়নি। এ সফরে তাকে সংরক্ষিত খেলোয়াড় হিসেবে রাখা হয়। এ সময়ে তিনি পারফরম্যান্স দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছিলেন ও কোন কারণে দলের আঘাতের ফলে নিজেকে প্রস্তুত রেখেছিলেন।[১৬] গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হওয়া সত্ত্বেও অ্যাডিলেডে তাকে খেলানো হয়নি।
টেস্ট দলে তাকে নেয়া না হলেও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুইটি টি২০আইয়ে অংশ নেন।[১৭] এরপর সাতটি ওডিআই নিয়ে গড়া সিরিজের প্রথম পাঁচটিতে তার অংশগ্রহণ ছিল। পঞ্চম খেলায় পেশীতে টান পড়ে। এ পর্যায়ে তিনি ৪০.৫০ গড়ে ৬ উইকেট দখল করেন। এরপর, ঐ সিরিজে তাকে আর খেলানো হয়নি।[১৮][১৯]
ক্রিকেট বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ
সম্পাদনামার্চ, ২০১১ সালে বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের ১৫-সদস্যের দলে তার ঠাঁই হয়।[২০] ঐ প্রতিযোগিতার প্রথম দুই খেলা থেকে তিন উইকেট পান তিনি।[২১][২২] তবে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলাকালীন আবারও পেশীতে টান পড়লে ঐ প্রতিযোগিতায় বেশ আগেভাগেই তাকে বিদেয় নিতে হয়।[২৩]
ইয়র্কশায়ারে ফিরে তাকে বেশ হিমশিম খেতে হয়। ফলশ্রুতিতে, ২০১১ সালে সফরকারী শ্রীলঙ্কা দলের বিপক্ষে টেস্ট ও ওডিআই দলে তাকে রাখা হয়নি। ২০১১-১২ মৌসুমে ইংল্যান্ড পারফরম্যান্স প্রোগ্রামের জন্যে তাকে মনোনীত করা হয়।[২৪] দলে তাকে নিয়মিতভাবে স্থান করে নিতে ব্যর্থ হতে হয়। ২০১১ সালের বিশ্বকাপের পর দূর্বল ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন ও আঘাতের কারণে আর তাকে বিবেচনায় আনা হয়নি। এরপর, আর তাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে খেলতে দেখা যায়নি।
অবসর
সম্পাদনাঘরোয়া পর্যায়ের ক্রিকেটেও তাকে বেশ হিমশিম খেতে হয়। ইয়র্কশায়ার দল থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। ২০১২ সালের বাদ-বাকী সময়ে ল্যাঙ্কাশায়ার কর্তৃপক্ষ তাকে ধারকৃত খেলোয়াড় হিসেবে খেলায়। ঐ গ্রীষ্মে ল্যাঙ্কাশায়ার দল অবনমনের শিকার হলে তাকে পূর্ণাঙ্গকালীন খেলোয়াড়ের প্রস্তাবনা দেয়া হয়। তবে, তিনি তার খেলায়াড়ী জীবনকে উজ্জ্বীবিত করতে নটিংহ্যামশায়ারে চলে যান।
দল স্থানান্তরের ফলে তার খেলায় বিরূপ প্রভাব ফেলে এবং শারীরিকভাবেও তিনি তা ধরে রাখতে পারেননি। ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে তিনি পারস্পরিক সম্মতিক্রমে সাসেক্স ত্যাগ করেন। ৩১ বছর বয়সেও তিনি প্রস্তাবনা পেতে থাকেন।
খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর গ্রহণের পর শুরুতে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের যুব দলের সহকারী কোচের দায়িত্ব পান। এরপর, ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সালে ক্লাবের প্রধান কোচ হিসেবে স্টিভেন কার্বি’র স্থলাভিষিক্ত হন।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Berry, Scyld (১৭ জুলাই ২০১০)। "England's Ajmal Shahzad is on the fast track to an Ashes spot"।
- ↑ "Shahzam, it's Ajmal"। thisisyork.co.uk। ৩ সেপ্টেম্বর ২০০৫। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ সেপ্টেম্বর ২০০৭।
- ↑ Whitaker, Neil। "Ajmal Shahzad plays for Yorkshire"। World Cricket Centre। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০০৭।
- ↑ Hopps, David (৩১ মার্চ ২০১২)। "'I'm no cheat' – Shahzad"। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০১২।
- ↑ "Yorkshire's Ajmal Shahzad hit with fine"। BBC Sport। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০১২।
- ↑ Hopps, David (১ মে ২০১২)। "Yorkshire drop Shahzad bombshell"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১ মে ২০১২।
- ↑ Dobell, George (৮ মে ২০১২)। "Shahzad to join Lancashire"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০১২।
- ↑ "Ajmal Shahzad joins Nottinghamshire from Yorkshire"। BBC Sport। ১০ অক্টোবর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ "Ajmal Shahzad: Sussex sign Nottinghamshire pace bowler"। BBC Sport। ৭ নভেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "NEWS: Ajmal Shahzad to leave Sussex"। Sussex County Cricket Club। ১০ জুলাই ২০১৭। ১৩ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৭।
- ↑ Bagchi, Rob (১৮ জানুয়ারি ২০১০)। "Alastair Cook appointed England captain for Bangladesh tour"। The Guardian। ২১ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০।
- ↑ "Player Profile: Ajmal Shahzad"। Cricinfo। ২৯ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০।
- ↑ Miller, Andrew (২০ ফেব্রুয়ারি ২০১০)। "Captains laud Razzaq onslaught"। Cricinfo। ৩০ মার্চ ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০।
- ↑ Miller, Andrew (৫ মার্চ ২০১০)। "Kieswetter ton sets up whitewash"। Cricinfo। ১০ মে ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুন ২০১০।
- ↑ "Tim Bresnan replaces Ajmal Shahzad for England v Pakistan first Test"। The Guardian। ২৮ জুলাই ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০১২।
- ↑ McGlashan, Andrew (২৩ সেপ্টেম্বর ২০১১)। "Tremlett and Panesar earn Ashes calls"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০১২।
- ↑ McGlashan, Andrew (১৭ জানুয়ারি ২০১১)। "Shahzad hopes for World Cup spot"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০১২।
- ↑ McGlashan, Andrew (৩০ জানুয়ারি ২০১১)। "England's injury list continues to grow"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০১২।
- ↑ "Records / England in Australia ODI Series, 2010/11 / Most wickets"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০১২।
- ↑ McGlashan, Andrew (১৯ জানুয়ারি ২০১১)। "England choose Matt Prior over Steve Davies"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০১২।
- ↑ "Batting and fielding in ICC World Cup 2010/11 (ordered by average)" । CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০১২।
- ↑ "Bowling in ICC World Cup 2010/11 (ordered by average)" । cricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০১২।
- ↑ "Shahzad ruled out with hamstring injury"। Cricinfo। ১৭ মার্চ ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০১২।
- ↑ "England youngsters set for busy winter"। Cricinfo। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০১২।
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে আজমল শাহজাদ (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে আজমল শাহজাদ (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)