হার্বি কলিন্স
হার্বার্ট হার্বি লেসলি কলিন্স (ইংরেজি: Herbie Collins; জন্ম: ২১ জানুয়ারি, ১৮৮৮ - মৃত্যু: ২৮ মে, ১৯৫৯) নিউ সাউথ ওয়েলসের সিডনি এলাকার ডার্লিংহার্স্টে জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার ও অধিনায়ক ছিলেন। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯২১ থেকে ১৯২৬ সময়কালে ১৯ টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন হার্বি কলিন্স। তন্মধ্যে এগারো টেস্টে অস্ট্রেলিয়া দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। এসময়ে পাঁচ টেস্টে জয়, চার টেস্টে ড্র ও দুই টেস্টে পরাজিত হয় তার দল।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | হার্বার্ট লেসলি কলিন্স | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | ডার্লিংহার্স্ট, এনএসডব্লিউ, অস্ট্রেলিয়া | ২১ জানুয়ারি ১৮৮৮|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ২৮ মে ১৯৫৯ লিটল বে, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া | (বয়স ৭১)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উচ্চতা | ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি (১.৭৩ মিটার) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | স্লো লেফট আর্ম অর্থোডক্স | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | অল-রাউন্ডার, অধিনায়ক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১০৬) | ১৭ ডিসেম্বর ১৯২০ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ১৪ আগস্ট ১৯২৬ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯০৯/১০–১৯২৫/২৬ | নিউ সাউথ ওয়েলস | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৬ মে ২০১৭ |
দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার ছিলেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে তার টেস্ট জীবনে ব্যাপক প্রভাববিস্তার করে। বিশ্বযুদ্ধের কারণে টেস্ট জীবন দেরীতে শুরু হয়। ৪৫.০৬ গড়ে ১,৩৫২ রান তোলেন। তন্মধ্যে চারটি সেঞ্চুরিও ছিল তার।
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাসিডনির কাছাকাছি ডার্লিংহার্স্টে হিসাবরক্ষক ও এমা (বিবাহ-পূর্ব চার্লটন) দম্পতির সন্তান তিনি। আলবিওন স্ট্রিট সুপারিয়র স্কুলে অধ্যয়ন করেন। সেখানে থাকাবস্থায় ক্রিকেট এবং রাগবি ইউনিয়নে তার দক্ষতার বিচ্ছুরণ ঘটতে থাকে।[১] শুরুর দিকে প্যাডিংটন ক্রিকেট ক্লাবের বামহাতি স্পিনার হিসেবে খেলেন। ব্যাটিংয়েও সফলতা পেয়েছেন তিনি। ১৯ বছর বয়সে নিউ সাউথ ওয়েলস ক্রিকেট দলে খেলার জন্য নির্বাচিত হন।[২]
১৯০৯-১০ মৌসুমে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। কিন্তু উভয় ইনিংসে ৩ ও ১ এবং ১/৩৫ লাভে সক্ষম হন।[৩] ঐ মৌসুমে ভিক্টোরিয়া বুশর্যাঞ্জার্সের বিপক্ষে আরও একটি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন।[২] পরবর্তী দুই মৌসুমে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে খেলার সুযোগ কম পেলেও সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন।[২]
রাগবি লীগের ফুটবলার হিসেবেও সফলতা পেয়েছেন কলিন্স। ১৯১১ সালের এনএসডব্লিউআরএফএল মৌসুমের গ্র্যান্ড ফাইনালে ইস্টার্ন সাবার্বস ক্লাবসহ কুইন্সল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেন।
১৯১২-১৩ মৌসুমে প্রথমবারের মতো পুরো সময় অতিবাহিত করেন। দশ খেলায় ৪২.৭১ গড়ে ৫৯৮ রান তোলেন।[৪] হোবার্টে তাসমানিয়ার বিপক্ষে ২৮২ তোলে মৌসুমের সমাপ্তি ঘটান।[৫] ১৯১৩ সালের শীতে উত্তর আমেরিকা সফরে কলিন্স দলের অন্যতম সদস্য মনোনীত হন। ফিলাডেলফিয়া জেন্টলম্যান, কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্মিলিত দলের সদস্য হন।[৪]
বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ
সম্পাদনাপ্রথম অস্ট্রেলিয়ান ইম্পেরিয়াল ফোর্সের ৪,১৭,০০০ অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সদস্যরূপে ১৯১৫ সালে অন্তর্ভুক্ত হন। সিনাই ও ফিলিস্তিন যুদ্ধে অংশ নেন। পরবর্তীতে পশ্চিম রণাঙ্গনে জার্মান সীমান্তরেখায় যুদ্ধের অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধের শেষে কলিন্স ল্যান্স কর্পোরাল পদে নিযুক্ত হন।[৬]
কলিন্স তুখোড় জুয়াড়ি ছিলেন। মহান যুদ্ধকালীন সৈনিকের দায়িত্ব পালনকালে অবসর সময়ে এ অভ্যাস গড়ে উঠে তার। যুদ্ধের পর অস্ট্রেলিয়ান ইম্পেরিয়াল ফোর্সেস ক্রিকেট দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া সফর করেন। পরবর্তীতে ঐ দলের অধিনায়ক মনোনীত হন। তেমন দৃষ্টিনন্দন বা আগ্রাসী ব্যাটসম্যান ছিলেন না। দুই ধাঁপ পেরিয়ে স্লো লেফট আর্ম অফ স্পিন বোলিং করতেন। এআইএফ একাদশের বৈশ্বিক সফর শেষে অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসেন।
টেস্ট ক্রিকেট
সম্পাদনাবিশ্বযুদ্ধের পর টেস্ট ক্রিকেটে প্রাণ ফিরে পায়। ১৯২০ সালে ইংল্যান্ড দল অস্ট্রেলিয়া সফর করে। কলিন্স দল নির্বাচকমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য হন। এআইএফ একাদশের ছয়জনের একজনরূপে সিরিজের প্রথম টেস্টে অভিষেক ঘটে তার।[৭] কলিন্সের নিজ মাঠ সিডনি ক্রিকেটে গ্রাউন্ডে প্রথম টেস্টে অংশ নেন। নিজমাঠে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে ৭০ ও ১০৪ রান তোলেন।[৮] দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৪ রানের মনোমুগ্ধকর সংগ্রহশালার ফলে পঞ্চম অস্ট্রেলীয় হিসেবে অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি করার কীর্তিগাথা রচনা করেন।[৯] তৃতীয় টেস্টে আরও একটি সেঞ্চুরি করেন তিনি। অ্যাডিলেড ওভালে ২৫৮ মিনিটে ১৬২ রান তুলে অস্ট্রেলিয়াকে ১১৯ রানের জয়ে প্রভূতঃ ভূমিকাই রাখেন।[১০] ১৯২০-১৯২১ মৌসুমের সিরিজগুলোয় ৬১.৮৮ গড়ে ৫৫৭ রান তোলেন।[১১]
নিয়মিত অধিনায়ক ওয়ারউইক আর্মস্ট্রংয়ের অসুস্থতাজনিত কারণে ১৯২১ সালে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দলের অধিনায়কত্ব করেন।
অবসর
সম্পাদনাদূর্ভাগ্যজনকভাবে তার টেস্ট জীবনের সমাপ্তি ঘটে। ১৯২৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পঞ্চম টেস্টে পরাজিত হবার পাশাপাশি অ্যাশেজ খুঁইয়ে ফেলে। কিন্তু কয়েকজন সাবেক খেলোয়াড়ী ও ক্রিকেটে প্রশাসকগণ ধারণা পোষন করেন যে, ঐ খেলাটি পাতানো ছিল। তবে এ ধারনার স্বপক্ষে কোন জোরালো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়ার পর কলিন্স তার অভিজ্ঞতালদ্ধ জুয়ারি জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় সম্পৃক্ত হন। সেখানে তিনি বাজিকর ও কমিশন এজেন্টরূপে অংশ নেন।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Andrews, B. G. (১৯৮১)। "Collins, Herbert Leslie (1889 - 1959)"। Australian Dictionary of Biography। Australian National University। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১২-২৭।
- ↑ ক খ গ Pollard, p. 294–296.
- ↑ "South Australia v New South Wales: Sheffield Shield 1909/10"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১২-২৭।
- ↑ ক খ "First-class Batting and Fielding in Each Season by Herbie Collins"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১২-২৭।
- ↑ "Tasmania v New South Wales: Other First-Class matches 1912/13"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১২-২৭।
- ↑ Robinson, p. 148.
- ↑ Haigh, pp. 270, 284.
- ↑ "Australia v England: Marylebone Cricket Club in Australia 1920/21 (1st Test)"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১২-২৮।
- ↑ "Hundred on debut"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১২-২৮।
- ↑ "Australia v England: Marylebone Cricket Club in Australia 1920/21 (3rd Test)"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১২-২৮।
- ↑ "Test Batting and Fielding for Australia: Marylebone Cricket Club in Australia 1920/21"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১২-২৮।
আরও দেখুন
সম্পাদনাগ্রন্থপঞ্জি
সম্পাদনা- Haigh, Gideon (২০০১)। The Big Ship: Warwick Armstrong and the making of modern cricket। Melbourne: Text। আইএসবিএন 1-877008-84-2।
- Harte, Chris (2003), The Penguin History of Australian Cricket. Melbourne. Penguin. আইএসবিএন ০-৬৭০-০৪১৩৩-৫.
- 200 Seasons Of Australian Cricket.Sydney. Ironbark. আইএসবিএন ০-৩৩০-৩৬০৩৪-৫
- Perry, Roland (2000). Captain Australia: A History of the Celebrated Captains of Australian Test Cricket. Sydney. Random House. আইএসবিএন ১-৭৪০৫১-১৭৪-৩.
- Pollard, Jack (১৯৮৮)। Australian Cricket: The game and the players। Sydney: Angus & Robertson। আইএসবিএন 0-207-15269-1।
- Robinson, Ray; Haigh, Gideon (১৯৯৬)। On Top Down Under: Australia's Cricket Captains (revised edition)। Adelaide: Wakefield Press। আইএসবিএন 1-86254-387-9।
- Whiticker, Alan, Hudson, Glen (2007). The Encyclopedia Of Rugby League Players. (6th ed.) NSW. আইএসবিএন ৯৭৮-১-৮৭৭০৮২-৯৩-১
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে হার্বি কলিন্স (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে হার্বি কলিন্স (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
পূর্বসূরী ওয়ারউইক আর্মস্ট্রং |
অস্ট্রেলীয় টেস্ট ক্রিকেট অধিনায়ক ১৯২১/২২-১৯২৬ |
উত্তরসূরী ওয়ারেন বার্ডসলি |