হান্টার হেন্ড্রি

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার

হান্টার স্কট টমাস লরি হেন্ড্রি (ইংরেজি: Hunter Hendry; জন্ম: ২৪ মে, ১৮৯৫ - মৃত্যু: ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৮৮) নিউ সাউথ ওয়েলসের ওলারা এলাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন।[] অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯২১ থেকে ১৯২৯ সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

হান্টার হেন্ড্রি
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
হান্টার স্কট টমাস লরি হেন্ড্রি
জন্ম(১৮৯৫-০৫-২৪)২৪ মে ১৮৯৫
ওলারা, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া
মৃত্যু১৬ ডিসেম্বর ১৯৮৮(1988-12-16) (বয়স ৯৩)
রোজ বে, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া
ডাকনামস্টর্ক
উচ্চতা১.৮৮ মিটার (৬ ফুট ২ ইঞ্চি)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম ফাস্ট
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১১৬)
২৮ মে ১৯২১ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট১ ফেব্রুয়ারি ১৯২৯ বনাম ইংল্যান্ড
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯১৮–১৯২৪নিউ সাউথ ওয়েলস
১৯২৪–১৯৩৪ভিক্টোরিয়া
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১১ ১৪০
রানের সংখ্যা ৩৩৫ ৬৭৯৯
ব্যাটিং গড় ২০.৯৩ ৩৭.৫৬
১০০/৫০ ১/০ ১৪/৩৪
সর্বোচ্চ রান ১১২ ৩২৫*
বল করেছে ১৭০৬ ১৬৬০১
উইকেট ১৬ ২২৯
বোলিং গড় ৪০.০০ ২৯.০২
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৩/৩৬ ৮/৩৩
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১০/০ ১৫২/০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৯ আগস্ট ২০১৯

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলস ও ভিক্টোরিয়া দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম ফাস্ট বোলিং করতেন ‘স্টর্ক’ ডাকনামে পরিচিত হান্টার হেন্ড্রি

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

সম্পাদনা

ছয় ফুট দুই ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী হান্টার হেন্ড্রি সিডনি গ্রামার স্কুলে অধ্যয়ন করেন। এখান থেকে সরাসরি প্রথম স্তরের ক্রিকেটে ঢুকে পড়েন। দীর্ঘ পায়ের গঠনের কারণে এম. এ. নোবেলের কাছ থেকে স্টর্ক ডাকনামে ভূষিত হন।

১৯১৮-১৯ মৌসুম থেকে ১৯৩২-৩৩ মৌসুম পর্যন্ত হান্টার হেন্ড্রির প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। উচ্চতার দিক দিয়েও তিনি বেশ দর্শনীয় ছিলেন। স্টর্ক ডাকনামে পরিচিত হান্টার হেন্ড্রি অবিস্মরণীয় ব্যাটসম্যানের মর্যাদা লাভ করেছিলেন। তার বিপক্ষে বোলারদেরকে বেশ নাস্তানাবুদের শিকার হতে হতো। হান্টার হেন্ড্রি তার উচ্চতার যথার্থ ব্যবহার করেছিলেন। অসাধারণ ফিল্ডার ছিলেন তিনি।

১৯১৯-২০ মৌসুমে শেফিল্ড শিল্ড প্রতিযোগিতা চালু হলে নিউ সাউথ ওয়েলসে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত খেলোয়াড়ে পরিণত করেন। দলটির পক্ষে ৩৮ খেলায় অংশ নিয়ে তিনটি শতরানের ইনিংস খেলেন। এরপর মেলবোর্নে চলে যান। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের মেলবোর্ন ক্রিকেট ক্লাবের প্যাভিলিয়ন ক্লার্ক (মাঠের সচিব) হিসেবে ওয়ারউইক আর্মস্ট্রংয়ের স্থলাভিষিক্ত হন।

১৯২৫-২৬ মৌসুমে ভিক্টোরিয়ার পক্ষে নিজস্ব দ্বিতীয় মৌসুম অতিবাহিত করেন। সফরকারী নিউজিল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে ৩২৩ মিনিটে অপরাজিত ৩২৫ রান তুলেন। ষষ্ঠ উইকেটে ল্যান্সডাউনের (৫১) সাথে ১১৮ মিনিটে ২০৪ ও সপ্তম উইকেটে লিডিকাটের (৪৭) সাথে ৬৩ মিনিটে ১১০ রান তুলেন। ফলে তার দল ৫৯২/৭ তুলে ইনিংস ঘোষণা করে। এ ইনিংসটি তার চৌদ্দটি শতরানের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল। দশটি সেঞ্চুরি করেছেন শেফিল্ড শিল্ডের খেলায়। ১৯২৩-২৪ মৌসুমে ওয়েলিংটনে নিউ সাউথ ওয়েলসের সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে ৮/৩৩ পান। ফলশ্রুতিতে, নমনীয় উইকেটে স্বাগতিকরা ৮৯ রানে গুটিয়ে যায়।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে এগারোটি টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন হান্টার হেন্ড্রি। নিজস্ব ২৬তম জন্মদিন উদযাপনের অল্প কয়েকদিন পরই ২৮ মে, ১৯২১ তারিখে নটিংহামে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১ ফেব্রুয়ারি, ১৯২৯ তারিখে অ্যাডিলেডে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯২১ সালে ইংল্যান্ড সফরে জ্যাক গ্রিগরির সাথে স্লিপে দূর্দান্ত ভূমিকা রাখেন। অংশগ্রহণকৃত এগারো টেস্টের কোনটিতেই অল-রাউন্ডারের সহজাত গুণাবলীর বিকাশ ঘটাতে পারেননি। ২০.৯৩ গড়ে ৩৩৫ রান তুলেন ও ৪০.০০ গড়ে ছয় উইকেট দখল করেন তিনি। এ সময়ে শক্তিধর অস্ট্রেলিয়া দলে তিনি প্রয়োজনের অতিরিক্ত ছিলেন।

টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবনের শেষদিকে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ একমাত্র সেঞ্চুরিটি করেন। ১৯২৮-২৯ মৌসুমে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিডনিতে দ্বিতীয় টেস্টে ১১২ রান তুলেছিলেন তিনি। প্রথম উইকেটের পতনের পর তিনি এ রান তুলেন। তবে, পরবর্তী দুই টেস্টে তিন নম্বর অবস্থানে থেকে খুব কমই সফলতা পেয়েছিলেন। এ পর্যায়ে বোলিং উদ্বোধনেও তিনি নেমেছিলেন। চূড়ান্ত টেস্টে তিন দল থেকে বাদ পড়েন। ১৯২৬ সালে দ্বিতীয়বারের মতো ইংল্যান্ড গমন করলেও জ্বরে আক্রান্ত হন ও কোন টেস্টেই খেলার সুযোগ ঘটেনি তার।

ব্যক্তিগত জীবন

সম্পাদনা

১৬ ডিসেম্বর, ১৯৮৮ তারিখে ৯৩ বছর বয়সে নিউ সাউথ ওয়েলসের রোজ বে এলাকায় হান্টার হেন্ড্রির দেহাবসান ঘটে। মৃত্যুকালীন বয়োঃজ্যেষ্ঠ জীবিত টেস্ট ক্রিকেটার ও শেফিল্ড শিল্ড ক্রিকেটারের সম্মাননা লাভ করেছিলেন।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Australia – Test Batting Averages"। ESPNCricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০১৯ 

আরও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা
পূর্বসূরী
পার্সি ফেন্ডার
বয়োঃজ্যেষ্ঠ জীবিত টেস্ট ক্রিকেটার
১৫ জুন, ১৯৮৫ - ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৮৮
উত্তরসূরী
বিল পন্সফোর্ড