হরে কৃষ্ণ স্বর্ণ মন্দির
হরে কৃষ্ণ স্বর্ণ মন্দির (তেলুগু: హరే కృష్ణ గోల్డెన్ టెంపుల్) ভারতের হায়দ্রাবাদের বানজারা পাহাড়ে অবস্থিত। এটি তেলেঙ্গানায় নির্মিত প্রথম স্বর্ণ মন্দির। মন্দিরটি ২০১৮ সালে ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি শ্রী ভেঙ্কাইয়া নাইডু দ্বারা উদ্বোধন করা হয়েছিল। [১][২]
হরে কৃষ্ণ স্বর্ণ মন্দির | |
---|---|
ধর্ম | |
অন্তর্ভুক্তি | হিন্দুধর্ম |
জেলা | হায়দ্রাবাদ |
ঈশ্বর | শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ, লক্ষ্মী নৃসিংহ |
উৎসবসমূহ | জন্মাষ্টমী, রাধাষ্টমী, গোবর্ধন পূজা, বৈকুণ্ঠ একাদশী |
অবস্থান | |
অবস্থান | বাঞ্জারা হিলস |
রাজ্য | তেলেঙ্গানা |
দেশ | ভারত |
স্থানাঙ্ক | গুগল। "হরে কৃষ্ণ স্বর্ণ মন্দির" (মানচিত্র)। গুগল ম্যাপস। গুগল। |
স্থাপত্য | |
ধরন | হিন্দু মন্দির স্থাপত্য |
সম্পূর্ণ হয় | ২০১৮ |
ওয়েবসাইট | |
www |
হরে কৃষ্ণ পাহাড়
সম্পাদনাহরে কৃষ্ণ পাহাড় টিলার উপর এই মন্দিরটি অবস্থিত। হরে কৃষ্ণ আন্দোলন হায়দ্রাবাদ হল একটি দাতব্য সমাজ যার উদ্দেশ্য সারা বিশ্বে কৃষ্ণভাবনা প্রচার করা।
মন্দিরের বৈশিষ্ট্য
সম্পাদনাপ্রায় ৭০০০ বছর পূর্বে ভগবান স্বয়ম্ভু শ্রী লক্ষ্মী নরসিংহ স্বামী রূপ ১২ নং রোডের বানজারা পাহাড়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন। ভগবান স্বয়ম্ভু শ্রী লক্ষ্মী নরসিংহ স্বামীর সাথে ভগবান শিবও একই স্থানে স্বয়ম্ভু শ্রী পাঞ্চজন্যেশ্বর স্বামী রূপে নিজেকে প্রকাশ করেছিলেন।'হরে কৃষ্ণ স্বর্ণ মন্দির' হল তেলেঙ্গানার ১ম স্বর্ণ মন্দির। ভগবানের এই চিন্ময় মন্দিরে রয়েছে ৫০ ফুট 'স্বর্ণ ধ্বজা স্তম্ভ', ৪৬০০ বর্গফুট 'মহা মণ্ডপম্' এবং পাঁচটি সোনার সিঁড়ি 'রাজগোপুরম্'। [৩] এই স্থানে ভগবানের প্রকাশের অনন্যতা হল যে ভগবান এবং তাঁর চিরন্তন সহধর্মিণী শ্রী লক্ষ্মী দেবী স্ব-প্রকাশিত অবস্থানে রয়েছেন। এখানে ভগবান নরসিংহদেব আনন্দময় ঐশ্বরিক অবস্থায় আবির্ভূত হন এবং মা লক্ষ্মী দেবী করুণার সাথে তাঁর অভয়া হস্ত প্রদর্শন করছেন এবং সকল ভক্তকে কৃপা আশীর্বাদ করছেন।মন্দিরে ধ্বজা স্তম্ভের ঠিক পরে অবস্থিত 'হরিনাম জপ মণ্ডপ' রয়েছে। এটি ভগবানের দর্শনের জন্য এগিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর পবিত্র নাম জপ করে ভগবান কৃষ্ণকে স্মরণ ও মহিমান্বিত করার একটি অনন্য উপায় প্রদান করে। মন্দিরের দর্শনার্থীরা 'হরিনাম মন্তপের' মধ্য দিয়ে যেতে পারেন অথবা সরাসরি ভগবান শ্রী লক্ষ্মী নরসিংহের দর্শনের জন্য যেতে পারেন। জপ মন্তপের ১০৮টি ধাপ রয়েছে এবং প্রতিটি ধাপে ভক্তরা দাঁড়িয়ে হরে কৃষ্ণ মহা-মন্ত্র উচ্চারণ করেন।মন্দিরের অধিষ্ঠাতা দেবতা স্বয়ম্ভু শ্রীলক্ষ্মী নরসিংহ স্বামীর গর্ভালয়মে রাখা একটি বিরল শালগ্রাম শিলা রয়েছে। এই শালগ্রাম শিলা গণ্ডকী নদীতে (মুক্তিনাথ মন্দিরের কাছে, নেপাল) পাওয়া গিয়েছিল এবং ভগবানের অচিন্ত্য শক্তির প্রভাবে অলৌকিকভাবে এই ক্ষেত্রমে পৌঁছেছিল।
মন্দির (বেদী)
সম্পাদনাহরে কৃষ্ণ স্বর্ণ মন্দিরে দুটি মন্দির রয়েছে:
- প্রথম মন্দিরটি স্বয়ম্ভু শ্রী লক্ষ্মী নরসিংহ স্বামীকে উৎসর্গ করা হয়েছে
- দ্বিতীয় মন্দিরটি শ্রী শ্রী রাধা-গোবিন্দকে উৎসর্গ করা হয়েছে।
দর্শন সময়
সম্পাদনাসকালের অধিবেশনে সকাল ৭.১৫ থেকে ১২.১৫ পর্যন্ত এবং সন্ধ্যার অধিবেশনে বিকেল ৫.১৫ থেকে রাত ৮.১৫ পর্যন্ত মন্দিরটি সর্বসাধারণের দর্শনের জন্য খোলা থাকে। মন্দিরে মঙ্গল-আরতি নামক একটি মহান আরতি অনুষ্ঠান এবং তুলসী দেবীর পূজা, শ্রী নরসিংহ আরতির মাধ্যমে দিনের সূচনা হয়। প্রতিটি আরতি অধিবেশনের সময় ভক্তরা হরে কৃষ্ণের (মন্ত্র) তালে গান গায় এবং নৃত্য করে।
হরে কৃষ্ণ স্বর্ণ মন্দিরের সময়:
সকাল
- মঙ্গল আরতি - ০৪.৩০ AM (পূর্ব-মধ্যাহ্ন)
- দর্শন আরতি - ০৭.১৫ AM
- পল্লকী ও গুরু পূজা- ০৭.৩৫ - ০৮.২০ AM
- শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ ক্লাস- ০৮.৩০ AM
- দর্শন বন্ধ- ১২.১৫ PM (উত্তর-মধ্যাহ্ন)
সন্ধ্যা
- প্রথম দর্শন- বিকাল ৫.১৫ মিনিট
- তুলসী আরতি - ০৬.৪৫ PM
- সন্ধ্যা আরতি - ০৭.০০ PM
- শয়ন আরতি - ৮.০০ PM
- দর্শন বন্ধ- ৮.১৫ PM
সপ্তাহান্তে
- বিকেলের বন্ধের সময়- সপ্তাহের দিনগুলিতে ১২.১৫ PM এবং সপ্তাহান্তে ১২.৩০ PM
- সন্ধ্যা বন্ধের সময়- ০৮.৪৫ PM [৪]
মন্দিরের উৎসব
সম্পাদনা'হরে কৃষ্ণ আন্দোলন স্বর্ণ মন্দির' ভগবান বিষ্ণুর অবতার বা বৈদিক সংস্কৃতির সাথে সম্পর্কিত উৎসব উদ্যাপন করে। মন্দিরে উদ্যাপিত প্রধান উৎসবগুলি হল:
- রাম নবমী
- ব্রহ্মোৎসব
- নৃসিংহ জয়ন্তী
- পানিহাটি চিড়া-দধি
- রথযাত্রা
- বলরাম জয়ন্তী
- ঝুলন উৎসব
- শ্রীকৃষ্ণ জন্মাষ্টমী
- ব্যাস পূজা
- শ্রী রাধাষ্টমী
- দীপোৎসব
- গোবর্ধন পূজা
- বৈকুণ্ঠ একাদশী
- নিত্যানন্দ ত্রয়োদশী
- গৌর পূর্ণিমা
- শ্রী লক্ষ্মী নরসিংহ স্বামী অভিষেকম্-প্রতি মাসে স্বাতী নক্ষত্র দিবস
সামাজিক সেবাসমূহ
সম্পাদনাহায়দ্রাবাদের 'হরে কৃষ্ণ আন্দোলন স্বর্ণ মন্দির' অক্ষয় পাত্রের মতো বিভিন্ন খাদ্য বিতরণ কর্মসূচির মাধ্যমে অভাবীদের বিনামূল্যে খাবার সরবরাহ করে, বিশ্বের বৃহত্তম এনজিও পরিচালিত 'মিড-ডে মিল প্রোগ্রাম' প্রতিদিন ১৮ লক্ষেরও অধিক স্কুলের শিশুদের খাদ্য পরিবেশন করে। [৫][৬][৭] এবং অন্যান্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে, ভোজনামৃত [৮][৯][১০] সদ্দিমুতা [১১] এবং অন্নপূরণ প্রকল্প। [১২][১৩] মন্দিরে দর্শনার্থীদের নিত্য অন্নদান সেবার মাধ্যমে দুপুর ১২.৩০ থেকে বিনামূল্যে মধ্যাহ্নভোজ প্রদান করা হয়।
চিত্রকক্ষ
সম্পাদনা-
শ্রীল প্রভুপাদের মন্দির
-
স-পার্ষদ শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দের বেদী
-
শ্রীরাধা গোবিন্দ
-
শ্রীনিতাই গৌরাঙ্গ
-
বিরল প্রকারের শালগ্রাম
-
শ্রীলক্ষ্মী নরসংহের মন্দির
-
শ্রীগরুড় দেবের মন্দির
-
জপ আঞ্জনেয় স্বামী
-
জপ মণ্ডপম্
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "HKM Hyderabad inauguration"। ২০১৮-০৪-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-২৩।
- ↑ "first Golden temple of Telangana"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-২২।
- ↑ HKM Temple Hyderabad website, Temple Information[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "darshan timings"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-০৯।
- ↑ "Akshaya patra joins with Infosys to set up kitchen in khandi"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১২-০৭।
- ↑ "Biggest khandi kitchen"। The Hindu। ২৮ মার্চ ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৩-২৮।
- ↑ "mahabub nagar akshaya patra kitchen"। The Hindu। ২৩ জুলাই ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-২৩।
- ↑ "MEIL Bhojanamrita"। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-০৭।
- ↑ "HKM Bhojanamrita"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-০৯।
- ↑ "HKM charitable foundation Bhojanamrita"। ২০১৯-১২-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-০৯।
- ↑ "Telangana Annaporna schems"। ২০১৯-১২-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-০৯।
- ↑ "Biggest Bhojanamrita kitchen"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৩-০২।
- ↑ "Annaporna counters in Hyderabad"। ২০১৯-১২-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-০৫।